Rose Roseআয়, বোনাস ও আমাদের ধান্ধা ... Rose Rose

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ১২ আগস্ট, ২০১৬, ০৫:১৬:৫২ সকাল

আয়, বোনাস ও আমাদের ধান্ধা ... আপনি একটি অফিসে চাকরী করেন। আপনার মাসিক বেতন ৩০,০০০/০০ (ত্রিশ হাজা টাকা)। তাহলে, আপনার দৈনিক বেতন দাঁড়ায় ১,০০০/০০ টাকা, যা আপনি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত মোট ৮ ঘন্টা কাজ করে আয় করেন। সেই হারে আপনার প্রতি ঘণ্টায় রুজী ১২৫/০০ টাকা।

এখন আপনার বস অতিরিক্ত ডিউটিতে উৎসাহিত করার জন্য একটি বিশেষ ঘোষণা করলেন যে, যেই ব্যক্তি ওভারটাইম করবে তাকে প্রতি ঘন্টা ওভারটাইমের জন্য তার একদিনের পুরা বেতনের সমান টাকা দেয়া হবে এবং এই ওভারটাইমের কোন 'লিমিট' নেই, অর্থাৎ আপনি দৈনিক যত ঘন্টা ইচ্ছা ওভারটাইম করতে পারবেন, এমনকি ছুটির দিনেও! আপনি যদি তখন ওভারটাইম কাজ করেন তাহলে প্রতি ঘন্টা ওভারটাইমের জন্য আপনার অতিরিক্ত আয় হবে ১,০০০/০০ টাকা! আপনি যদি দৈনিক গড়ে তিন ঘন্টা ও ছুটির দিনে একটু বেশী ওভারটাইম করেন, তাহলে মাসে প্রায় লাখ খানেক টাকা অতিরিক্ত কামাই করার একটি মহাসুযোগ আপনার সামনে! এমন একটি সুযোগ কি আপনি হাতছাড়া করবেন? কোন সুস্থ বিবেকবান মানুষ কি এ ধরণের বিশেষ সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে? অবশ্যই নয়। বরং, এমন সুযোগ লুফে নিয়ে যত বেশী সম্ভব কামাই করে নিতে সবাই চেষ্টা করবে।

আসলে, আমাদের সকলের ধান্ধাই এক - নিজের জন্য যত বেশী লাভ বা কামাই করে নেয় যায়।

এক্ষেত্রে, বৈধ উপায়ে, আল্লাহ নির্ধারিত সীমারেখার ভিতরে থেকে বেশী আয় কিন্তু মহান আল্লাহ কোথাও নিষেধ করেন নি। তবে, সবচেয়ে আশ্চার্য ও অত্যন্ত দূঃখজনক হলো, আমাদের এই ধান্ধা কেবল "দুনিয়া লাভের" ক্ষেত্রেই অনেক প্রবল দেখা যায়; কিন্তু আখেরাতের "লাভ" নিয়ে আমাদের কোন পেরেশানী নেই! কোন দৌড়াত্ত নেই! কি করলে বা বললে আখেরাতে "লাভ" বেশী হবে কিংবা কি না করলে বা না বললে আখেরাতে ফায়দা বেশী হবে - এসব আমরা জানিনা, জানতে চাই না; আর জানলেও তা পালনে আমাদের মাঝে তা পালনে আন্তরিকতার অভাব পুরো মাত্রায়! এই উদাসীনতা অত্যন্ত বেদনাদায়ক।

রমাদ্বান মাস এলো চলেও গেলো "ওপারের জীবনের" জন্য "কামাই" করার এক মহাসুযোগও আমরা পেলাম। কিন্তু কে কতটুকুন সেই মহা সুযোগকে কাজে লাগাতে পারলাম? কে কত বোনাস এড করতে পারলাম আখেরাতে ব্যাংকে? আমাদের আখেরাতে আয় কত হলো? কত বোনাস নেকী আমরা অর্জন করলাম? আমাদের ধান্ধা কি সঠিক কাজে লেগেছে? এসব প্রশ্নের উত্তর আমাদের মনে তো আসেই না। বরং প্রশ্নটারও উদয় হয়না। এই মাসে আপনার অফিসের সেই একঘণ্টায় একদিনের আয়ের অপূর্ব সুযোগ রয়েছে! আসলে, এটা একঘন্টায় একদিনের কামাই নয়, বরং অনেক অনেক গুণ বেশী, একঘন্টায় এক সপ্তাহেরও বেশী কামাই করার সুযোগ এই মাসে। আমরা যারা আখেরাতের "ব্যালেন্স" বৃদ্ধির আকাঙ্ক্ষা করি, এটা আমাদের অপূর্ব এক সুযোগ!

আফটার অল, আমার ধান্ধা তো আমাকেই করতে হবে। তাই, যখন "কেউ কারো নয়", সেই সময়ে আমার জন্য আমাকেই কিছু করে রাখতে হবে। কেবল দুনিয়ার ধান্ধায় ব্যস্ত থেকে 'দম ফুরাইলেই শেষ' হয়ে যাবার পর যে অনন্ত অসীম জীবন, সেটার ধান্ধা না থাকাটা কি বুদ্ধিমানের কাজ হবে? নিজের ভাল নাকি পাগলও বুঝে! তবে আমরা ভালো মানুষেরা কেন বুঝিনা?????????????????

বিষয়: বিবিধ

১৩৬১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

376149
১২ আগস্ট ২০১৬ সকাল ০৭:০১
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : বুবু, খুব প্রাসঙ্গিক বিষয় নিয়ে লিখেছেন।
আমি এক্সেক্ট টাইমে অফিসে ঢুকি, বেরও হই এক্সেক্ট টাইমে। ওভার টাইমের গোষ্ঠী কিলাই। ওভার টাইম করলে বেশি টাকা পাওয়া যায় কিন্তু শরীরের কর্ম ক্ষমতা দ্রুতই নষ্ট হয়ে যেতে পারে
376155
১২ আগস্ট ২০১৬ সকাল ১১:৩৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার পোষ্টটিরজন্য অনেক ধন্যবাদ।
376162
১২ আগস্ট ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:১৫
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ পিলাচ
376176
১৩ আগস্ট ২০১৬ রাত ০৩:০৪
কুয়েত থেকে লিখেছেন : আখেরাতের "লাভ" নিয়ে আমাদের কোন পেরেশানী নেই! কোন দৌড়াত্ত নেই অনেক অনেক ধন্যবাদ ভালো লাগলো
376192
১৩ আগস্ট ২০১৬ সকাল ১০:৫৭
দ্য স্লেভ লিখেছেন : হুমম কথা ঠিক কিন্তু হিসাব নিলে তো আমি শেষ। মাফ করলে সেটাই কাম্য। আর উপরি আয়ের রাস্তা ইসলমে প্রচুর কিন্তু বিষয়টা বাকী হওয়াতে মানুষ উদাসীন। আল্লাহ তার অনুগত বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করুন !
376202
১৩ আগস্ট ২০১৬ সকাল ১১:৫৭
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : জাযাকাল্লাহ, যথার্থ বলেছেন।
376389
১৭ আগস্ট ২০১৬ সকাল ১০:১৬
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : আমি বুঝতে পারছিনা আমার কি করা উচিত তাই বাধ্য হয়ে সাহায্য চাওয়া। প্লিজ আপি যদি পারেন একটু সাহায্য করেন। যাহরাহ এর বাবা ইসলামকে গুরুত্ব দেননা, গতানুগতিক জীবন তার। পারিবারিক কলহের জন্য যাহরাহ এর চাচাদের সাথে সম্পর্ক নেই। মামা,খালা-খালু অর্থাৎ মায়ের দিকের আত্নীয়রা অধিকাংশই ব্যাংকার। মামা, খালারা নিত্যনতুন ব্যাংকার ছেলের প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয় যাহরাহ এর বাবার কাছে। যাহরাহ তার বাবাকে বোঝাতে পারেনা যে, সুদ রিলেটেড কাজকর্ম কত জঘন্য ব্যাপার, আর ইসলামের দৃষ্টিতে কত ভয়ানক। "আরে এত ইসলাম মেনে এই যুগে চলা যায় নাকি? সরকারী ব্যাংকার ছেলের পাওয়ার, টাকা পয়সা, পরিচিতি কোনটার অভাব? জীবনে টাকা পয়সা ছাড়া চলা যায় নাকি? এমন ভাবেই তার বাবা ভাবেন।" সপ্তাহখানেক আগেই বাবা তাকে এক ব্যাংকার পাত্রকে দেখানোর জন্য বাধ্য করেই নিয়ে যায়। আমাকে বলল, কি করণীয়? বলেছিলাম, নিকাব পরে যেতে। যদি বরের পুরুষ কোন আত্নীয়-স্বজন সাথে আসে তবে তাদের সরাসরি বলতে যে, ইসলাম এটা এলাউ করেনা যে, আপনাদের সামনে আমি মুখ খুলব আর আপনারা আমাকে দেখবেন, তাই আমি শুধু বরের সামনে মুখ খুলতে রাজি আছি। বর যখন তোমার সাথে কথা বলতে চাইবে বা মুখ খুলতে বলবে, তখন বরকে বলবে, "নেকাব খোলার আগে আমার কিছু কথা আছে। আমার আপনার ব্যাংক জব নিয়ে আপত্তি আছে। দেখেন আল্লাহ বলেছেন, যারা সুদের পক্ষ অবলম্বণ করে তারা যেন আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুতি নেয়। সুদের দ্বারা ৭০টির বেশি গুনাহ হয় তার মাঝে নিম্নতম গুনাহ হল নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচার। সুদ দাতা, সুদ গ্রহীতা, সুদের লেখক ও তার সাক্ষী সকলেই সমান অপরাধী এবং জাহান্নাম তাদের আবাস। নামাজ কবুলের ফরজ হল-পবিত্র শরীর, পবিত্র কাপড়, পবিত্র নামাজের স্হান, পবিত্র কাপড় দ্বারা সতর ঢাকা। কিন্তু ইবাদত কবুলের পূর্বশর্ত হল হালাল ইনকাম। হারাম ইনকামের টাকায় কেনা খাবারে যে শরীর গড়ে ওঠে তা অপবিত্র ও হারাম, যে কাপড় কেনা হয় তা অপবিত্র ও হারাম, যে ঘর তৈরী করা হয় সেই জায়গাও অপবিত্র সেই জায়গায় নামাজও হারাম। তাই আপনার সুদের সাথে জড়িত থেকে আপনার নামাজ, রোজা, হজ্জ কোন ইবাদতই কবুল হবেনা। আপনার সাথে আমার বিয়ে হলে আমিও আপনার হারাম উপার্জনের ভাগিদার, হারাম ভক্ষণকারীণী হব, জাহান্নামের আগুন আমার জন্যও বৈধ হয়ে যাবে। তাই আমি রাজি হতে পারছিনা।"
আমি জানতাম ও পারবে কারণ ওর যে পরিমাণ সাহস তা আজকালকার দীনি ছেলেদের মাঝেও খুব কম দেখা যায়। আর ও সত্যি সত্যি বরের সামনে আর তার ফ্যামিলির সামনে আমার কথাগুলো মুখস্ত বলে গেছে। পাত্র তার মা বাবা আর চাচা, ভাইকে নিয়ে আসছিল ওকে দেখার জন্য। পরে ওকে পাত্রও নেকাব খুলতে বলার সাহস পায়নি তারা চলে গেছে। এরপর থেকেই যাহরাহ এর বাবা ওর উপর মারাত্নক রেগে গেছে। আর রাগটা এমন পর্যায়ের যে তার চিন্তাভাবনা এমন হয়ে দাড়িয়েছে, আমি তোকে চরম শিক্ষা দিব। আমি তোকে ব্যাংকার পাত্রের সাথেই বিয়ে দিব দেখি তুই কি করতে পারিস? তার মামা, খালা, খালুরাও উঠে পরে কাজে লেগে গেছে। এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ছেলে ঠিক করা হয়েছে। তার খালাও এমন কিছু পাত্র নিয়ে হাজির হয়েছে। আমি আমার পরিচিত মানুষজনের কাছে বেশ কিছুদিন যাবত দীনি পাত্রের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছি কিন্তু এখন পর্যন্ত পাইনি। যাদের পাই সবাই গতানুগতিক। ভাল চেহারা, ভাল চাকরি এখন সুন্দর বউ চাই। দীনি পাত্র দাবিদার একজন দুজন পেলেও তারাও ইসলামের নানান অনুষঙ্গ পালনে অজুহাত পেশ করে। আবার অন্যরা একদম বেকার। জানিনা কি হতে যাচ্ছে? যেন তামাশা হচ্ছে। যাহরাহ দীনের ব্যাপারে খুবই কড়া। ইসলামের এটা মানছি কিন্তু ওটা মানতে রাজিনা- এমন ব্যাপারগুলো সে মানতে রাজিনা। দীনি পাত্র বলতে সে দীনি ছেলেই মিন করে, যারা অজুহাত পেশ করেনা। আপনার পরিচিতদের মাঝে এমন কেউ কি আছে, যে দীনি,হালাল ইনকাম করেন আর দীনি পাত্রী খুঁজছেন? যাহরাহ বিবিএ ২য় বর্ষের ছাত্রী, চট্টগ্রামের স্হানীয়। আপু একটু জানাবেন প্লিজ।
১৭ আগস্ট ২০১৬ দুপুর ০৩:২৪
312077
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

শ্বশুর-শাশুড়ির অপছন্দনীয় হয়ে বিয়ে করতে রাজী হওয়া সহজ কথা নয়! এমন কাজে ছেলের নিজেরও বাবা-মা নাখোশ হতে পারেন!

মেয়ে নিজে স্বচ্ছল বা স্বাবলম্বী হলে কোন ইয়াতীম (পিতৃ-মাতৃহীন) বেকার পাত্র খুঁজে নিতে পারবেন!
আপাততঃ তাকে নিজ পরিবারেই সংগ্রাম করে পরীক্ষা দিয়ে সংগ্রামী জীবনে পাশ করতে হবে! তা না হলে বিয়ের পর সংসার ভেঙ্গে যাবার আশংকা শতভাগ!

আল্লাহতায়ালা সাহায্য করুন!
376437
১৮ আগস্ট ২০১৬ সকাল ১০:৫৯
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম আপু। আমার ইমেইল এড্রেস যদি সম্ভব হয় পাত্রের বায়োডাটা আমার ঠিকানায় একটু দিবেন আপু। আমি ইনশাআল্লাহ পাত্রীর কাছে পৌছে দিব। যদি পাত্রীর পছন্দ হয় তবে আমি ইনশাআল্লাহ আপনার কাছে পাত্রীর বায়োডাটা পাঠিয়ে দিব।
২০ আগস্ট ২০১৬ সকাল ০৫:১০
312113
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ!‍ আপু আপনাকে মেইল পাঠিয়েছি। রিপ্লাই দিবেন সময় করে। তারপর বায়োডাটা পাঠাবো ইনশা-আল্লাহ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File