Rose Rose "সময় থাকতে কাজে লাগান"Rose Rose

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২৭ জুলাই, ২০১৬, ০৫:২৫:২৯ সকাল

সাদিয়া পপির বিয়ের তিনমাস পরেই স্বামী প্রবাসী হলেন! সাদিয়া পপি ছোট বেলা থেকেই খুব লাজুক প্রকৃতির মেয়ে! বিয়ের পরে যেন লজ্জা আরো বেড়ে গেছে! স্বামী প্রবাসী হবার পর ক্লাস মেট সবাই ওদের বাসায় এসে বলে কিরে পপি তুই কেমন আছিস? পপি বললঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। তোরা সবাই কেমন আছিস? ওদের জবাব ভালো। পপিকে ঘরের ভেতর লম্বা হাতার জামা, বড় ওড়না দিয়ে মাথা পেচানো দেখে বলে কি রে পপি তুই দেখি আরো লাজুক হয়েছিস! ভেবে ছিলাম বিয়ের পর তোর লজ্জা কিছুটা কমবে! এখন দেখি উল্টোটা! তুই আরো লজ্জাবতী হয়েছিস! পপি চুপ থাকে! চুপ থেকে একসময় বলে লজ্জা ঈমানের অঙ্গ বা অংশ! যার লজ্জা নেই বুঝতে হবে তার ঈমান নেই! সবার মুখ কালো হয়ে গেল পপির একটি কথায়! পপি দেখি আগের পপি নেই সে এখন অনেক বদলে গেছে! কিরে পপি তোর স্বামী তোকে তিন মাসেই এতকিছু শিখিয়েছে আর সবসময় দেশে থাকলে তো তুই এদেশের ইমাম হয়ে যেতিস! ওরা আরো বলে এখন থেকে পপির সাথে হিসেব করে কথা বলতে হবে! পপি এখন সে আগের পপি নেই! পপি বলে শুনো আমার প্রিয় বোনেরা একসময় ভুল করেছি সময় অপচয় করে আড্ডা দিয়েছি! এখন মনে হয় সবই বৃথা গেছে! যদি সেই সময়টা বসে বসে ভালো কাজে কাটাতাম তো তার প্রতিদান আখেরাতে পেতাম! তাই এখন অতীতের কথা স্বরণ করে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই। আর ভবিষ্যতে না করার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি। শুনোঃ প্রিয় বোনেরা তোমাদেরকে বলি এখন থেকে বেহুদা আড্ডায় আর সময় ব্যয় নয়! এখন থেকে সময়ের সৎব্যবহার করতে হবে! আর সময়ের কাজ সময়েই করার অভ্যাস করতে হবে। পপির কথা শুনে সাদেকা বাদে সবাই উঠে চলে গেলো! বসে রইলো সাদেকা! সাদিয়ার খুব কাছের বান্ধবী! সে সাদিয়ার কথা গুলো মন দিয়ে শুনলো; হয়তো সাদিয়াকে কিছুটা বুঝলো! সাদেকা বললো পপি তুই তো অনেক কিছু জেনেছিস কিভাবে রে? পপি প্রথমেই বললো আমাকে এখন থেকে আর পপি বলে ডাকবি না কারন পপি নামটা কোন অর্থবোধক নাম নয়! বরং আমাকে সাদিয়া বলেই ডাকিস! সাদেকা সম্মতি জানালো!

সাদেকা সবাই চলে যাওয়াতে খুবই উৎসুক হলো। কারন সে এখন সাদিয়ার সাথে মন খুলে কথা বলতে পারবে! সাদিয়ার ব্যবহারে সাদেকা নিজেকে নিয়ে ভাবতে শুরু করেছে! এর আগে যেন নিজেকে নিয়ে ভাববার সময় পায়নি! দুজনের বাসা পাশাপাশি হওয়ায় সুবিধা হয়েছে! প্রিয় নবী (সঃ) ঈমানের আলোচনা করতে গিয়ে বলেছেনঃ- লজ্জা ঈমানের অঙ্গ! নারী পুরুষ সকলের মধ্যেই লজ্জাশীলতা থাকা অপরিহার্য!

রাসূলুল্লাহ (সঃ) আরো বলেছেন, ঈমানের ৭০টিরও অধিক শাখা প্রশাখা রয়েছে । তন্মধ্যে সর্বোত্তম হল 'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' একথা বলা এবং সর্বনিন্ম স্তর হল রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরিয়ে দেয়া! আর লজ্জা হল ঈমানের একটি শাখা!

(বুখারী, মুসলিম, মিশকাত)

নবী করীম (সঃ) আরও বলেছেন, 'লজ্জা ও ঈমান অঙ্গাঅঙ্গী ভাবে জড়িত; সুতরাং এর একটি তুলে নেয়া হলে অপরটিও তুলে নেয়া হয়! অন্য বর্ণনায় আছে, "যখন উভয়ের কোন একটিকে ছিনিয়ে নেয়া হয়, তখন অপরটি তার পশ্চাতে অনুগমন করে"

(বায়হাক্বী, হাকিম, মিশকাত)

আবু উমামা (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সঃ) হতে বর্ণনা করেন, 'লজ্জা ও মিতভাষীতা (অল্প কথা বলা) ঈমানের দুটি শাখা! আর অশ্লীলতা ও বাকপটুতা (বাচালতা) মুনাফিকীর দুটি শাখা'

(তিরমিযী, মিশকাত)

রাসূল (সঃ) আরো বলেছেন, লজ্জা ঈমানের অঙ্গ! আর ঈমানের স্থান জান্নাত! পক্ষান্তরে নির্লজ্জতা দুশ্চরিত্রের অঙ্গ! দুশ্চরিত্রের স্থান জাহান্নাম"

(আহমাদ, তিরমিযী)

তিনি আরো বলেন, 'পূর্ববর্তী নবীগণের বাণী হতে পরবর্তী লোকেরা (অবিকৃতাবস্থায়) যা পেয়েছে এবং (যা অদ্যাবধি বিদ্যমান) তা হল, তুমি যখন নির্লজ্জ (বেহায়া) হয়ে যাবে, তখন তোমার যা ইচ্ছা তাই কর"

(বুখারী)

সাদেকা খুব মনোযোগ সহকারে সাদিয়ার কথাগুলো শুনছে আর ভাবতে থাকে ইস; সাদিয়া কত কিছু শিখেছে! সে কত ভালো কাজ করছে আর আমি এসব কিছুই জানিনা! কি হবে আমার শেষ পরিণতি? সাদিয়া তোর স্বামী তোকে এই অল্পদিনে এতকিছু শিখিয়েছে? বাব্বাহঃ অবাক না হয়ে পারিনা। সাদিয়া বললঃ বাব্বাহ না বলে, বল মাশ-আল্লাহ। প্রত্যেক কাজের আগেই আল্লাহর নাম যোগ করে বলতে হয়। আর আল্লাহর নামের সাথে শুরু করা কাজগুলো পূর্ণতা লাভ করে। সে কাজে শয়তান কোন ক্ষতি সাধন করতে পারেনা। ধরঃ কেউ তোকে জিজ্ঞাসা করল সাদেকা কেমন আছো? এর উত্তরে তুই কি বলবি? সে বললঃ বলবো ভালো আছি এটাই তো জবাব তাইনা? সাদিয়া বললঃ হাঁ তা তো বলবিই। কিন্তু এখানেও বলতে হবে আলহামদুলিল্লাহ; ভালো আছি। সাদেকা যত শুনে ততই যেন মুগ্ধ হতে থাকে। আর শেখার তৃষ্ণা বাড়তে থাকে সাদেকার মনে। এভাবে প্রত্যেকটা কাজেই আল্লাহর নামের সাথে শুরু করা। যেমন ভালো আছি কিনা প্রশ্নে বলতে হবে আলহামদুলিল্লাহ, কোন সু-খবর শুনে বলতে হবে মাশ-আল্লাহ, আগামিতে কোন কাজের ইচ্ছা করলে বলতে ইনশা-আল্লাহ। এভাবে আমাদের প্রত্যেক কাজই আল্লাহর নামের সাথে করা উচিৎ। প্রত্যেক কাজের শুরুতেই বিসমিল্লাহ বলে শুরু করা। সাদেকা সাদিয়ার কথা যত শুনে ততই যেন অবাক হতে থাকে। আর মনে মনে অনুশোচনা হয় তার কেন সে আরো আগে থেকে ইসলমাকে জানার চেষ্টা করেনি? কেন ঘরে ইসলামই বইয়ের এত স্তুপ থাকতেও কখনো খুলেও দেখেনি? এসব ভেবে সাদেকার চোখের কোণে না বলেই কিছু অশ্রু জমা হতে থাকে। নিরবে কয়েক ফোটা ঝরেও পড়ে। সাদিয়া বলে সাদেকা তুই যে বুঝতে পেরেছিস এটাও আল্লাহর বিশেষ রহমত। আল্লাহ্ তোকে ইসলামের সর্ব বিষয় জানার তৌফিক দিন। চল যহুরের নামাজের সময় চলে যাচ্ছে আগে নামাজ পড়ি এরপর আবারো গল্প করা যাবে। সাদিয়া বলেই নামাজের জন্য উঠে যায় সাদেকা বলে সাদিয়া আমি যে গোসল করিনি তাতে কি নামাজ হবে? সাদিয়া বলে হাঁ হবে। কিন্তুঃ কোন কিন্তু নেই। গোসল ফরজ না হলে গোসল করে নামাজ পড়তে হবেনা। বরং অযু করেই নামাজ পড়া যায়। সন্দেহ থাকলে শুধু পরিধানের কাপড় গুলো পরিবর্তন করেই নামাজ পড়তে পারিস বলেই সাদিয়া অযু করতে চলে যায় পিছু নেয় সাদেকাও।

একে একে দুজনে অযু করে আসে সাদিয়া সাদেকাকে তার একটি ফুলহাতার থ্রী পিজ দিয়ে বলে সাদেকা তুই এটা পরিধান করে নে। আমি নামাজের মুসাল্লা নিয়ে আসি। সাদেকা সাদিয়ার জামা পরিধান করে একটু একটু লজ্জাও পাচ্ছিলো। তারপরও নামাজ তো পড়তে হবে। তাই সে লজ্জা টুকুকে আর মাথা উঁচু করার সুযোগ দেয়না সে। সাদিয়া নামাজের মুসাল্লা এনে দুজনেই যহুরের নামাজ আদায় করে। সালাম ফিরানোর পর সাদিয়া সাদেকাকে বলে এত তাড়াতাড়ি নামাজ পড়তে হয়না। আরো ধীরে ধীরে শান্ত চিত্যে খুশু-খুজুর সাথে নামাজ আদায় করতে হয়। এতে মনের মাঝে প্রশান্তি আসে। খুশু-খুজু কি জিনিস? (সাদিয়া বলে খুশু-খুজু হলো একমাত্র আল্লাহর ধ্যানে নামাজ পড়া।) পাঁচ ওয়াক্ত সালাত নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট নিয়মে আদায় করতে হয়। দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস রাখতে হবে যে, সালাত দ্বীনের খুঁটি। যে সালাত কায়েম করবে সে দ্বীন কায়েম করবে। আর যে সালাত ছেড়ে দেবে সে দ্বীনকে ধ্বংস করবে। সালাত কায়েম ইসলামের সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ আমল। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূল (সঃ) কে প্রশ্ন করলাম, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি উত্তর দিলেন 'সময়মতো সালাত আদায় করা'। আমি বললাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, 'পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার'। আমি আবারো বললাম, এরপর কোনটি? রাসূল (সঃ) বললেন, 'আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ' (বুখারী ও মুসলিম) সাদেকা বলে ঠিক আছ এখন থেকে সেভাবেই পড়তে চেষ্টা করবো। সাদিয়া সাদেকাকে বলে সাদেকা তোকে খুবই সুন্দর লাগছে সুন্নতী পোষাকে মনে হচ্ছে যেন তুই জান্নাতে হুর। সাদেকা লজ্জা পায়। সাদিয়া বলে আমার কথা বিশ্বাস না হলে তুই নিজে আয়নায় দেখ আমি যা বলেছি তা সত্যি বলেছি। সাদেকা আয়নায় দাড়ায় সত্যি সত্যিই সাদেকা যেন নিজেকে চিনতে পারেনা। আসলেই এ তো অন্য সাদেকা একঘন্টা আগের সাদেকা তো ছিলো জেনারেল লাইনে পড়ুয়া সাদেকা আর এখনের এই সাদেকা তো ইসলামকে সদ্য জানা আরেক সাদেকা। তুই ঠিকই বলেছিস সাদিয়া এই সাদেকা ও সাদেকার পোষাক সত্যিই জান্নাতের হুরের মতো। আমি সত্যিই এতদিন অনেক ভুল করেছি, অনেক গুনাহ করেছি, আল্লাহ কি আমাকে ক্ষমা করবেন? আমি কি আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাবো? সাদিয়ে বলে অব্যশই পাবি। মহান আল্লাহ তো বান্দা-বান্দিকে ক্ষমা করার জন্য নানা রকম বাহানা খুজেন। সামান্য ইস্যুতেই বান্দা-বান্দির পাহাড়সম গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তবে এর জন্য তোকে যা করতে হবে, তোকে খাস ভাবে তওবা করতে হবে।

সাদেকা বুঝলাম না বিষয়টা। সাদিয়া বলতে থাকে তওবা হল প্রতিশ্রুতি করা, প্রতিজ্ঞা করা বা প্রমিজ করা। আর তওবা বা প্রমিজ করাটা শুধুমাত্র মুখের কথা নয়, যে- মুখে বলেই দায়িত্ব শেষ। সেটা পূরণের জন্য অবশ্যই নিজের মধ্যে তাকিদ অনুভব করতে হবে। এবং তা বাস্তবায়ন করতে হবে। কোন কারনে সে অবস্থান থেকে পিছু হটা যাবেনা। বরং সবর্বস্থায় সেই কথার উপর অটল অবিচল থাকতে হবে। বুঝলি না? ধর তুই কোন বান্ধবির সাথে কথা দিলি দেখা করবি, বা কোন একটা বিষয়ে নোট দিবি এবং প্রমিজ করলি অমুক দিন এটা তোকে দেব বলে, তখন তুই কি করবি? কথামত দিতে চেষ্টা করবি না কি করবি না? সাদেকা বলে হাঁ অবশ্যই দিতে চেষ্টা করবো এবং সময় মতোই দিবো। সাদিয়াঃ আল্লাহর সাথে প্রমিজ করাটাও ঠিক এমনই। বরং আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সাদেকাঃ সাদিয়ার কথা শুনতে শুনতে সাদেকার দুচোখের কোণে কখন যে অশ্রু এসে জমা হয়ে আবার ঝরেও গেছে সাদেকা বুঝতেই পারেনি। সাদেকা হাঁ বুঝলাম। সাদেকার কান্না জড়িত কন্ঠ শুনে সাদিয়া তাকিয়ে দেখে সাদেকা অঝরে কাঁদছে, সাদিয়া বলে কাঁদ সাদেকা আরো বেশী করে কাঁদ, আর কেঁদে কেঁদে অতীতের সকল গুনাহ সমূহকে ক্ষমা করিয়ে নে বলেই সাদিয়াও কাঁদতে থাকে। সাদেকা কথা বলে ওঠে, আমি একটি বিষয়ে খুবই আশ্চার্য বোধ করছি, তোর বিয়ে হয়েছে মাত্র তিন কি সাড়ে তিনমাস হয়েছে আর তুই এতকিছু শিখে ফেলেছিস কিভাবে? অবশ্য তুই আগেও ইসলামী বই পড়তিস। সাদিয়া বলে; সত্যি বলতে কি, আল্লাহর বিশেষ রহমত ও মানুষের স্ব-ইচ্ছাই মানুষকে অনেক অনেক অগ্রগামি করে ইসলামের ব্যপারে। আর আমি ভাগ্যবতীই বলতে হবে এমন একজন স্বামী আমি পেয়েছি, যিনি ইসলামের ব্যপারে অনেক জ্ঞান রাখে এবং খুব গুরুত্ব সহকারে তা পালন করতে চেষ্টা করে। আমি তা বুঝতে পেরেছি বিয়ের প্রথম রাতেই। সাদেকা কিভাবে?

উনি বাসর ঘরের দরজার কাছে এসেই সালাম দিলেন এবং প্রবেশের অনুমতি চাইলেন আমি সালামের জবাব দিয়ে বললাম, এতো আপনার ঘর আর আপনার ঘরে আপনি প্রবেশ করতে কি অনুমতির প্রয়োজন আছে? তিনি বললেন হাঁ প্রয়োজন আছে, এজন্য যে,কেউ আপমার সাথে অবস্থান করতে পারে আর আমি সরাসরি অনুমতি না নিয়ে প্রবেশ করলে তাতে পর্দার সমস্যা হতে পারে। আমি চুপ করে শুনলাম উনার কথাগুলো। এরপর আমার কৌশলাদি জেনে বললেন, আপনার কি অযু করা আছে? না থাকলে অযু করে আসুন দু'রাকাত শুকরানা নামাজ পড়তে হবে। আমি বললাম আমি তো এ'শার নামাজই পড়িনি, তিনি বললেন, যান অযু করে এসে আগে এ'শার নামাজ আদায় করুন এরপর দুই রাকাত নামাজ পড়ুন। নামাজ আদায়ের পর উনি খুব সুন্দর ভাষায় ও শান্ত ভাবে আমাকে বললেন, কবুল বলার আগ পর্যন্ত আপনি ছিলেন আপনার বাবা মানে আমার শশুরের অধিনস্ত। আর কবুল বলার পর থেকে ইনশা-আল্লাহ বাকি জীবন আপনি আমার অধিনস্ত। আর তাই আজ থেকেই আপনার ভালো, মন্দ, সুস্থতা, অসুস্থতা, দুঃখ, সুখ, চাওয়া, পাওয়া, সবকিছুর খবরা-খবর রাখার দায়িত্ব আমার। আমি এখন আপনাকে কিছু কথা বলবো, যা শুধু দুনিয়ার জন্য নয়, দুনিয়ার কল্যাণ ও আখেরাতের চিরস্থায়ী কল্যাণের জন্য আপনাকে মানতে হবে। আমি তার কথাগুলো মন দিয়ে শুনলাম। তার পরামর্শ হলো ইসলামী বই বেশী বেশী পড়ার। আমি তাই শুরু করলাম বিয়ের পরেরদিন থেকেই। এবং তিনিও আমাকে অজানা অনেক বিষয় শিখিয়েছেন। আর আমার ভেতরে উৎসাহ যুগিয়েছেন সুন্দর করে নিজেকে গড়ার। জানিস, বিয়ের পর থেকেই আমি দোয়া করে আসছি অবিবাহিত প্রত্যেক নারীই যেন সৎ চরিত্রবান ভালো মনের উত্তম বর পায়। সত্যিই আমি পৃথিবীর সেরা উপহার পেয়েছি। যার হাত ধরে জান্নাতের পথে এগিয়ে যেতে পারবো। সাদেকা বলে দোয়া করিস আমার জন্য যেন আমিও তোর মতো একজন উত্তম বর পাই। ইনশা-আল্লাহ পাবি। মহান আল্লাহ্ তোর জন্যে উত্তম বরের ব্যবস্থা করে দিন। তুই বেশী বেশী দোয়া করতে থাক আল্লাহই উত্তম ফায়সালা করবেন। দুজনেই সমস্বরে বলে ওঠে ইনশা-আল্লাহ...................।

সাদিয়া বলেঃ সাদেকা তুই পছন্দ করলে তবে আমার বরকে বলে তোর জন্য একজন দ্বীনদার পাত্রের খোজ করতে বলবো। তুই চিন্তা করে আমাকে জানাস।

সত্যিই সাদিয়া তুই খুবই সৌভাগ্যশীলা। তুই সবসময় লজ্জাশীল ছিলি আল্লাহ্ ও তোকে খুবই দামী উপহার দিয়ে ধন্য করেছেন। আমি কথা দিচ্ছি সাদিয়া। আজকে থেকে আমি আর বেপর্দা হবোনা। নামাজ ত্যাগ করবো না। আড্ডবাজি করবোনা। সময়ে সৎ ব্যবহার করবো ইনশা-আল্লাহ্। তুই আমাকে সবসময় উত্তম বন্ধু হয়ে সৎ ও সুন্দর পরামর্শ দিবি। সাদিয়া বলে ইনশা-আল্লাহ্ দেব। তোর যখন যে সহযোগীতা প্রয়োজন হবে আমি করবো। সাদিয়া সাদেকাকে বুঝাতে পেরে মনের মাঝে পরিতৃপ্তি লাভ করে বলে আলহামদুলিল্লাহ্ আল্লাহ্ সব সময় তোর সহায় হোন। সময় থাকতেই সময়কে কাজে লাগাতে হবে সাদেকা। সাদেকা ইনশা-আল্লাহ আমি পরিপূর্ণ চেষ্টা করবো আল্লাহ কবুল করুন দুজনেই একসাথে আমিন বলে। সাদিয়া বলে ছুম্মা আমিন।

পরিশেষেঃ এই মেসেজ পৌছিয়ে দেয়া যে, দ্বীনদার ফরহেজগার স্বামী স্ত্রী উভয়েই জান্নাতের হুর গেলেমান। আমরা যদি কাউকে দ্বীন শিখতে সুযোগ দেই তবে আল্লাহ্ তা'য়ালাও আমাদেরকে হেদায়াতের সুযোগ দেবেন। অনেক মেয়েরা আছেন যারা আলেম স্বামী পছন্দ করেনা। আবার অনেক ছেলেরাও আছে যারা পর্দানশীলা মেয়েকে পছন্দ করেনা। তাদের কাছে পৌছে দিতে চাই এই মেসেজ যে, একজন পর্দানশীলা নারী পৃথিবীর বেপর্দা সকল নারী থেকে উত্তম। আর একজন আলেম চরিত্রবান স্বামী পৃথিবীর সকল পুরুষ থেকে উত্তম। জীবনের মহামূল্যবান সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন না। আগে তিতা পরে মিঠা ভালো। আগে মিঠা খেয়ে সারাজীবন তিতা ভালো না।

বিষয়: বিবিধ

১৭৯১ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

375359
২৭ জুলাই ২০১৬ সকাল ১১:৩৭
আফরা লিখেছেন : জাজাকিল্লাহ খায়ের আপু । অনেক শিক্ষনীয় গল্প ।
২৮ জুলাই ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:২২
311301
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! ছোট্টবোনটিকে অনেকদিন পর পেলাম। কেমন আছেন আপু? আপনার প্রথম উপস্থিতি সত্যি অনুপ্রেরণার। শুকরান ইয়াহাবীবী।
375374
২৭ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০২:০৯
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : শেষ কথাটায় আপু আপত্তি আছে। কুরান কিন্তু স্পস্ট করেই বলছে, মুমিন নারী যেন বিয়ে করে শুধুমাত্র মুমিন পুরুষকেই এবং মুমিন পুরুষ যেন বিয়ে করে শুধুমাত্র মুমিন নারীকেই। মুনাফিক, মুশরিক, কাফির তাদের জন্য হারাম যদিও তাদের সৌন্দর্য তোমাদের আকর্ষিত করে। তাই এটা কখনো কখনোই কাম্য হওয়া উচিত নয় যে, যে ছেলে নামাজ পড়েনা, দ্বীনি নয় তার স্ত্রী হিসেবে গৃহে প্রবেশ করবে নামাজী, পর্দানশীলা নারী। বা যে নারী মোটেও পর্দার কথা সহ্য করতে পারেনা বা প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেনা সে মুমিন পুরুষের জীবন সাথী হোক। এসব সম্পর্কগুলো সুন্দর হয়না। মানুষ বলে যে, ভালবাসা দিয়ে হাজবেন্ড বা স্ত্রীকে পরিবর্তন করা যায় কিন্তু এটা তো মানুষের মুখের কথা ছাড়া আর কিছুইনা যেখানে হেদায়েত একমাত্র আল্লাহর নিয়ন্ত্রণাধীন। রাসূল (সাঃ) সবচাইতে বেশি ভালবাসতেন তার চাচা আবু তালিবকে আবার তার চাচাও তাকে নিজের সন্তানের চেয়ে বেশি ভালবাসতেন কিন্তু এই ভালবাসা কি তার চাচার মুখ থেকে কালিমা বের করতে পেরেছে?
ইসলাম খুব সাধারণ কথা বলেছে। তুমি মুমিন হয়েছ তাই জীবনসঙ্গী হিসেবে মুমিনকে বেছে নাউ মুমিন সন্তানের জন্য মেহনত কর। অথচ আমাদের বিশ্বাস ও মুখের কথা হল, ছেলের জন্য ধার্মিক বউ আনা লাগবে কারণ বউয়ের ভালবাসায় ছেলে নামাজ কালাম পড়বে। বা মেয়ে কিছুটা উশৃংক্ষল তাই তার জন্য নামাজ কালামী ছেলে দরকার যার হাতে পরে মেয়েটা একটু জাত হবে। এসব কথার ভিত্তি কি? ভিত্তিহীন কথা। কিন্তু গল্পটা মাশাআল্লাহ চমৎকার যদিও বাস্তবতা ভিন্নই হয়।
২৮ জুলাই ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:৩৩
311304
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! আপা আপনার আপত্তির বিষয়টা বুঝতে পারিনি। কোন লাইনটাতে আপনার আপত্তি আছে যদি বুঝিয়ে দিতেন তবে উপকৃত হতাম। এখানে স্বামী চরিত্র ও স্ত্রী চরিত্রের কেউই মাদ্রাসায় পড়ুয়া আলেম নয়। তবে প্রবাসে আক্বিদা সম্পন্ন আলেমের সহচর্জ ও নিজের আন্তরিকতা ও সত্যকে গ্রহণ করার সুন্দর মন মানষিকতার কারনে ও সহীহ হাদীসের বই পড়ার কারনে সে ইসলামকে বুঝেছে ও প্রচার করেছে। আর তার সেই বুঝটা স্ত্রীকে বুঝাতে পেরেছে তাই দুজনের সম্পর্ক মাধূর্যপূর্ণ হয়েছে। স্বামী চরিত্রের লোকটি তার স্ত্রীকে ইসলামের সৌন্দর্য বুঝাতে সক্ষম হয়েছেন আর সাদিয়া নামের নব-বিবাহিতা স্ত্রীও সত্যকে গ্রহণ করার সুন্দর মন আছে বলে সে ইসলামের ছায়ায় আসতে পেরেছে। মূলত আল্লাহ্ তা'য়ালাই তাদেরকে উত্তম হেদায়াত দিয়েছেন। জাযাকুমুল্লাহ।
২৮ জুলাই ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:১৬
311312
ঘুম ভাঙাতে চাই লিখেছেন : ওয়ালাইকুম আসসালাম। আমি আপনার লেখা নিয়ে কিছু বলিনি আপু। বলেছি এই অংশ নিয়ে
অনেক মেয়েরা আছেন যারা আলেম স্বামী পছন্দ করেনা। আবার অনেক ছেলেরাও আছে যারা পর্দানশীলা মেয়েকে পছন্দ করেনা। তাদের কাছে পৌছে দিতে চাই এই মেসেজ যে, একজন পর্দানশীলা নারী পৃথিবীর বেপর্দা সকল নারী থেকে উত্তম। আর একজন আলেম চরিত্রবান স্বামী পৃথিবীর সকল পুরুষ থেকে উত্তম। জীবনের মহামূল্যবান সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করবেন না। আগে তিতা পরে মিঠা ভালো। আগে মিঠা খেয়ে সারাজীবন তিতা ভালো না।
২৮ জুলাই ২০১৬ রাত ০৯:৫৫
311322
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! আমি এই অংশটুকু বাস্তবতার নিরিখে উল্লেখ করেছি। আধুনিক ছেলেরা শুধু আধুনিকা মেয়ে পছন্দ করে। আর আধুনিকা মেয়ে আধুনিক ছেলে পছন্দ করে। আলেম সমাজকে যেন আন্তরিক ভাবে তারা তুচ্ছ মনে করে। আসলে একজন আলেমা মেয়ে আর একজন আলেম ছেলে মানুষের হক্ব যতটা বুঝবে সাধারনে তা বুঝেনা। তাই মন-মানষিকতায় পরিবর্তন আনতেই এই লেখা। আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে শুভেচ্ছা। বুঝাতে পেরেছি আশা করি।
375376
২৭ জুলাই ২০১৬ দুপুর ০৩:৪৮
আবু জান্নাত লিখেছেন : জাযাকিল্লাহ খাইর
২৮ জুলাই ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:৩৪
311305
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! জাযাকুমুল্লাহ।
375385
২৭ জুলাই ২০১৬ বিকাল ০৫:৫১
কুয়েত থেকে লিখেছেন : চুপ থাকে! চুপ থেকে একসময় বলে লজ্জা ঈমানের অঙ্গ বা অংশ! যার লজ্জা নেই বুঝতে হবে তার ঈমান নেই!খুবই ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২৮ জুলাই ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:৩৫
311306
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! আপনার ভালোলাগা আমার অনপ্রেরণার বাতি, তাকে করলাম সাথি। জাযাকুমুল্লাহ।
৩১ জুলাই ২০১৬ রাত ০৩:০৮
311400
কুয়েত থেকে লিখেছেন : وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته كيف الحال يا اختي الكريمة جزاك الله خيرا
০১ আগস্ট ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:০১
311522
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! আলহামদুলিল্লাহ্ ভাইয়া ভালো আছি। দোয়া করবেন পরিবারে প্রধান ব্যক্তি অসুস্থ। আল্লাহ্ যেন তাকে শিফায়ে কামেলা দান করেন। আপনার শুকরিয়া।
০৯ আগস্ট ২০১৬ রাত ০৩:৪৫
311807
কুয়েত থেকে লিখেছেন : وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته بارك الله فيك وجزاك الله خيرا وشكرا لك يا اختي الكريمة الله شافي وبارك الله فيك
১২ আগস্ট ২০১৬ সকাল ০৬:৫০
311933
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আপনার জন্যেও অনুরুপ দোয়া।
375575
৩০ জুলাই ২০১৬ রাত ০৮:১৯
শাহাদাত হুসাইন নবীনগর লিখেছেন : সবটা লেখা পড়লাম। খোব ভাল লাগলো। আমরা অনেকই বিয়ের পাত্র-পাত্রী দেখার সময় লেখা-পড়া,ব্বংষ পরিচয়, অর্থনৈতিক অবস্থা আর সৌন্দর্যটাই দেখি। পাত্র-পাত্রীর দ্বীনদারিটা দেখিনা। যে কারনে পরিবারগুলোতে অনেক অশান্তি লেগে থাকে।
০১ আগস্ট ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:৫৯
311519
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! আপনার সাথে সহমত প্রকাশ করছি। জাযাকুমুল্লাহ্

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File