"রমাদ্বান উপলক্ষ্যে ব্লগ আয়োজনের ৬ষ্ঠ ও শেষ পর্বে" "অপেক্ষার শেষ সময়ে"
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ০২ জুলাই, ২০১৬, ০৬:১৯:৪৮ সন্ধ্যা
রোকেয়া সন্ধ্যার আকাশ পানে তাকিয়ে ভাবছে রমাদ্বানের আর মাত্র সাতদিন বাকি। মনের দু-কূলে উচ্ছাসে আনন্দের জোয়ার। আর সে জোয়ারে যেন টুইটুম্বর হয়ে গেছে হৃদয়। মনে হচ্ছে বহু অপেক্ষার পর বিশালাকাংখিত মাস আসছে। যার জন্য মু'মিন মু'মিনাতেরা অপেক্ষায় থাকে। যে মাসে সওয়াবের পরিমাণ লুফে নিতে প্রতিযোগীতায় ব্যস্ত হয় নবী (সঃ) এর চরিত্র অবলম্বনকারি উত্তম উম্মতগণেরা। রমাদ্বান মাস নিয়ে রোকেয়ার মনের সকল আনন্দানুভূতি। মু'মিন মু'মিনাত রমাদ্বানের আগমনে সন্তুষ্ট চিত্তে বলেন আলহামদুলিল্লাহ। রোকেয়া ও সেভাবেই বলল আলহামদুলিল্লাহ। অথচ রমাদ্বানের খরচের কোনটাই করা হয়নি। রোকেয়ার স্বামী চাকরীজীবি তাই প্রতি মাসেই তাকে খুব হিসাব কষে চলতে হয়। সৎ চাকুরীজিবি মানেই চাহিদার প্রত্যেক ক্ষেত্রে দরকষা-কষি। মন কোন কিছু চাইলেও হিসাবের বাহিরে কিছু করার শক্তি নেই এই পরিবার গুলোর। সন্তানদের পড়া-শুনার খরচ, শশুর-শাশুড়ীর খরচ, ঔষধ খরচ, পোষাক খরচ বাবদ শুধুমাত্র বাসা ভাড়াটা বাদে সবই করতে হয় বেতনের টাকা থেকেই। রোকেয়া সে জন্য পেরেশান নয়। জীবনের সকল চাহিদাকে একপাশে রেখে সে পেরেশান রোজাকে পরিপূর্ণ ভাবে রাখতে পারবে তো? রিযিকের মালিক আল্লাহ তা'য়ালা তিনিই সে ব্যবস্থা করবেন। রিযিক নিয়ে পেরেশানি করা রোকেয়ার কাছে বোকামি ছাড়া কিছুই মনে হয়না।
রোকেয়ার মনে উঁকি মারতে থাকে জানা-অজানা অনেক অনেক চিন্তা সেখানেও আছে আত্মার অনেক খোরাক। সে ভাবে এমাসের যথাযথ সম্মান করতে পারবে তো? বেশী বেশী ইবাদত করতে পারবে তো? প্রতিবেশীদের মাঝে এমাসের আনন্দ বিতরন করতে পারবে তো? তার মনের মাঝে মহা মহীয়ানের পক্ষ থেকে একটি কথাই উপলদ্ধি করাতে থাকে ইনশা-আল্লাহ পারবো। আমার যতটুকু সাধ্য আছে চেষ্টা করবো সে একান্তমনে মহান রবেব নিকট সাহায্য প্রার্থনা করতে থাকে। হে আল্লাহ আমাকে অল্পে তুষ্ট রাখো। আমাদের যা আছে তা থেকেই মানুষকে দান করার মন-মানষিকতা তৈরি করে দাও। আর মনের মাঝে উৎফুল্লতা নিয়ে ইবাদত করার শক্তি বৃদ্ধি করে দাও। রোকেয়া নীলাকাশ পানে তাকিয়ে সর্বশক্তিমান আল্লাহ্ এর কাছে প্রার্থনা করতে থাকে, হে পরম করুনময়, নীলাকাশের বুকে উজ্জলতা বা অন্ধাকারাচ্ছন্নতার কারনে তার বিশালতা কমে যায়না। আমাকেও তুমি আকাশের বিশালতার মতো উদরতা দান করো। শয়তানের ধোঁকায় বা অজ্ঞ মানুষের কথায় আমি যেন নেকি অর্জনে পিছিয়ে না পড়ি। তুমি আমাকে নেকি অর্জনে অগ্রে যেতে সাহায্য করো। কারন তুমিই একমাত্র সাহায্যকারি মানবকূলের।
রমাদ্বান মাস নিয়ে রোকেয়া ও আসাদ (স্বামী স্ত্রী) আলোচনা করে কিভাবে কি করলে ভালো হয়। রোকেয়া বলে আমি চাই আমাদের অল্পকিছু থেকেও মানুষকে কিছু দিতে যাতে করে রমাদ্বানের আনন্দ সবার মাঝে না হোক কতেকের মাঝে পৌছে দিতে। সে প্রতিদিনই কাউকে ইফতারি করানোর কথাও জানায় আসাদকে। সে জন্যে বাড়তি কিছু খেজুর ও বাড়তি কিছু মুরির ব্যবস্থার কথাও জানায়। আসাদের কিছুটা বিরক্তি বোধ করে বুঝে রোকেয়া। সে বলে আসাদকে শুন জানু; আল্লাহ্ তা'য়ালা বলছেনঃ “আল্লাহ্ তা'য়ালাকে (সত্যিকারভাবে) ভয় করে তাকওয়া অনুসরন করলে আল্লাহ্ তা'য়ালা বান্দার বিভিন্ন বিষয়গুলো সহজ করে দিবেন।” (সূরা তালাক : আয়াত-৮) কওমী মাদ্রাসায় পড়ুয়া রোকেয়া ইবাদতে অনেক এগিয়ে। শুধু ইবাদতই নয় স্বামী সংসার সন্তান সবকিছুতেই সে যেন আল্লাহ্ এর বিধান কায়েমে নিয়োজিত। আর আসাদ জেনারেল শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও সত্যকে সহজভাবে গ্রহণ করার জন্য তার খুবই সুন্দর একটি মন আছে। রোকেয়া কখনোই তর্কে না জড়িয়ে, কোরআন হাদীসের রেফারেন্স দিয়ে কোন কথা বললে আসাদ তা সহজেই গ্রহণ করে। সে বলে আমার রোকে হলো হুম মিনিস্টারঃ তার ইচ্ছাই আমার ইচ্ছা। আসাদ আরো বলে রোকেয়া তোমাকে বাড়তি কিছু ছোলা ও বেসন এনে দেবো তুমি আরো একটু কষ্ট করো ও সওয়াবের অংশীদার হও আর আমিও এতে কিছুটা নেকের ভাগী হই। আর শুন গতবারের মতো এবারেও যয়নব আর যুবায়েরকে রোজা পালনে উৎসাহ দিবে। যদিও যয়নবের বষয় নয় মাত্র শেষ হতে চলেছে আর যুবায়েরের আট শুরু। তোমার প্রচেষ্টায় তারা রোজা রাখবে আর আমার আমলনামায়ও কিছু বোনাস নেকি জমা হবে। আচ্ছাঃ আচ্ছাঃ কষ্ট করবো আমি আর নেকের ভাগী হতে চান আপনি তাইনা বলেই দুজনেই হেসে ওঠে। হাসতে হাসতে আসাদ বলে এবার আমিও তোমার মতো করে কোরআন ও হাদীস অধ্যয়নে সময় দিবো ইনশা-আল্লাহ্
রোকেয়ার মনের আরেকটি দোয়া কবুল হতে চলেছে যা পৃথিবীর কেউ জানতো না জানতো শুধু অন্তর্যামী। সে শত-সহস্রবার প্রার্থনাতে বলেছে আসাদ যেন কোরআন ও হাদীস চর্চায় আগ্রহী হয়। আসাদের কথায় রোকেয়ার প্রার্থনা কবুলের নিদর্শন রয়েছে। রোকেয়া মনে মনে শুকরিয়া আদায় করে অন্তর্যামীর। রোকেয়া ও আসাদ স্বতস্ফূর্তভাবে সিয়াম পালন শুরু করে। রাতের ইবাদত মানে তারাওয়ী, তাহাজ্জুদ ও তেলোয়াতে নিজেদেরকে মশগুল রাখে। তারা উভয়েই প্রতিদিন ইফতারের পরের সময়টাকে বেছে নিয়ে কোরআন ও হাদীস অধ্যয়নের জন্য। তারা সিডিউল করে নিয়েছে প্রতিদিন কোরআন থেকে তিন আয়াত অর্থ ও ব্যখ্যা পড়বে আর সহীহ হাদীস থেকেও তিনটি হাদীস অর্থসহকারে পড়বে। একপৃষ্ঠা করে ইসলামী সাহিত্য পড়বে এরপর আস্তে আস্তে বাড়াতে থাকবে। এবারের রমাদ্বান মাস যেন রোকেয়াকে সবচেয়ে বেশী পুলকিত করেছে। তার কাছে বিগত বছরগুলো থেকে এবারে বেশী উৎফুল্লবোধ হচ্ছে। তার কাছে সবগুলো বিষয়কেই সহজ মনে হচ্ছে। কারন আগেকার বছর গুলোতে সে একাকি কোরআন ও হাদীস অধ্যয়নে মত্ত হতো এবার আসাদ ও তার সাথে কোরআন ও হাদীস চর্চায় মত্ত। দুজনের মাঝেই প্রায় প্রতিযোগীতাকারে এই অধ্যয়ন চলে। রোকেয়া মনে মনে আবারো প্রার্থনা করতে থাকে হে অন্তর্যামী আমাদের এই কাজকে জীবনের শেষদিন পর্যন্ত করিয়ে নিও। আস্তে আস্তে সে আমিন শব্দটিও বলে।
তারা যে, কয়েক কেজি খেজুর ও কয়েক কেজি মুরি কিনে রাখে সেখান থেকেই কয়েকটি খেজুর ও একবাটি করে মুরি রমাদ্বানের প্রতিদিনই বিলিকরে মনের মাঝে আনন্দের ধারা বইয়ে দেয়। সে মনে করে আমাদের যদি অনেক অনেক সম্পদ থাকতো তো আমরা আরো বেশী বেশী করে বিলাতে পারতাম। তবুও তারা দুজনে অল্প দান করেও মনের মাঝে প্রশান্তি অনুভব করে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলে যে, তাদের অল্প থেকেই তারা কাউকে কিছু দিতে পারছে। রোকেয়ার স্বামী আসাদ রোকেয়ার এই আনন্দ দেখে সে নিজেও মনের মাঝে আনন্দানুভব করে। আসাদ বিকেলে বাসায় এসে কাপড় ছেড়েই রোকেয়াকে সাহায্যের জন্য আসে। এটা সেটা করে দেয় মাঝে মাঝে ফলের জুস তৈরি করে। রোকেয়া নিষেধ করলেও সে শোনে না। যদিও এটা খুব কঠিন কাজ না তারপরও রোকেয়া খুবই খুশি হয় মনে মনে। রোকেয়া বলে সারাদিন বাহিরে কষ্ট করে বাসায় এসে কিছুটা সময় রেস্ট নেবে তা না করে উনি এসেছেন রান্না ঘরে মাশ-আল্লাহ এনার্জি আছে ভালো। আসাদ বলে তুমি পড়নি? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর স্ত্রীদের ঘরের কাজে সহযোগিতা করতেন।
عَنِ الأَسْوَدِ، قَالَ: سَأَلْتُ عَائِشَةَ، مَا كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَصْنَعُ فِي أَهْلِهِ؟ قَالَتْ: «كَانَ فِي مِهْنَةِ أَهْلِهِ، فَإِذَا حَضَرَتِ الصَّلاَةُ قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ»
আসওয়াদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঘরে তার স্ত্রীদের সাথে কী কী করতেন তা জিজ্ঞেস করা হলো। তিনি বললেন, “তিনি স্ত্রীদের কাজে সহযোগিতা করতেন, আর যখন নামাযের সময় হতো তখন তিনি নামাযে যেতেন”। আমি সেই প্রিয় রাসূল (সঃ) এরই উম্মত। সেখান থেকে কিছুটা এনার্জি আর তোমার মতো জীবন সঙ্গীনি যার আছে তার সকল কাজেই এনার্জি আসবে গো। রোকেয়া থাক থাক রোজা রেখে এত আবেগের কথা বলা ঠিক নয়। তারা সকলে ইফতার করে যথারীতি নামাজের পড়েই বসে যান সিডিউল করা অধ্যয়নে। আজকে রোকেয়া পড়ছে সূরা ইব্রাহিমের সাত নং আয়াত ও অর্থঃ وَإِذْ تَأَذَّنَ رَبُّكُمْ لَئِن شَكَرْتُمْ لأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِن كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ
07
যখন তোমাদের পালনকর্তা ঘোষণা করলেন যে, যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তবে তোমাদেরকে আরও দেব এবং যদি অকৃতজ্ঞ হও তবে নিশ্চয়ই আমার শাস্তি হবে কঠোর। (কুরআনুল কারীম বাংলা অনুবাদ ও সংক্ষিপ্ত তাফসীর) তারা অল্প অল্প করে পড়ে আমল করতে লেগে যায়।
রমাদ্বানের প্রথম সপ্তাহেই আসাদ বেতন পেয়ে রোকেয়ার হাতে দিয়ে বলে এই নাও সারা মাসের খরচ এখানে থেকেই হবে। তুমি যেটা যেখানে খরচ করার করো। রোকেয়া বলে তোমার হাতে রাখলেই ভালো হতো না? আসাদ বলে তুমিও তো আমার একাউন্ট জমা থাকলেও থাকলো। খরচ হলেও হলো। আর তুমি তো আলহামদুলিল্লাহ সবকিছু সুন্দর ভাবে সমাধান দাও যা আমি নিজেও পারবোনা। ঈদের আগে আরেকটা বেতন হওয়ার আছে সেখান থেকেই ঈদ খরচ চলবে। রোকেয়া বলে আমার কিছু লাগবেনা পুরনো গুলোকেই ধুয়ে নতুন করে পরিধান করবো। নতুন জামা কেনার যে ট্রাডিশন চালু হয়েছে, আমার কাছে তাকে এক ধরনের অপচয় মনে হয়। যখন প্রয়োজন তখন কিনবো। ঈদের কেনা কাটা ফজর, ওয়াজিব, সুন্নত, মুস্তাহাব কোনটাই না। তবে প্রতি বছর বছর কেন অপচয়ের গুনাহ বাড়াবো? আসাদের ও একই কথা। যখন প্রয়োজন প্রয়োজনের তাকিদে কিনবো অপ্রয়োজনে কেন অপচয় করবো। জানো রোকেয়া আমার নানী বলতেন বেগার লাইগা বেগী মিলে আর রাজার লাইগা মিলে রাজমোহদেবী। আমি যেমন তুমিও আমার মনের মতোন।
রোকেয়া আসাদ নিয়মিত কোরআন ও হাদীস অধ্যয়ন করে। তারা জানতে পারে উত্তম প্রতিবেশী হতে হলে কি করা উচিৎ। রোকেয়া নিজেকে উত্তম প্রতিবেশী বানাতে সচেষ্ট। তারা হাদীসের কিতাবে পড়েছেঃ উত্তম প্রতিবেশী পার্থিব জীবনে বিরাট এক নেয়ামত! উত্তম প্রতিবেশী ভালো থাকার মাধ্যম! উত্তম প্রতিবেশী বিপদে আপদে সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেয়! উত্তম প্রতিবেশী সবসময়ের বন্ধু হয়ে থাকে! প্রতিবেশীর আচরণে প্রতিবেশী জানতে পারে প্রতিবেশীর ভাল-মন্দ! বিধায় আচরনেই প্রমানিত হয়ে যায় মন্দ বা সৎ ও উত্তম প্রতিবেশী কারা? এর প্রমান সহীহ হাদীস শরীফের মধ্যেই পাওয়া যায়। নবী (সঃ) বলেন,"আল্লাহ্ তা'য়ালার নিকট সেই সাথী উত্তম যে নিজ সাথীদের নিকট উত্তম। আল্লাহ্ তা'য়ালার নিকট সেই প্রতিবেশী উত্তম যে নিজ প্রতিবেশীর নিকট উত্তম।" -বুখারী আদাবুল মুফরাদ
ইবন মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ " এক ব্যক্তি নবী (সঃ) এর নিকট বললোঃ হে আল্লাহর রাসুল (সঃ) আমি ভালো করছি না মন্দ করছি তা কি করে জানবো? নবী (সঃ) বললেনঃ যখন তোমার প্রতিবেশীদের বলতে শুনবে যে, তুমি ভালো করেছো, তবে প্রকৃতই ভালো করেছো, আর যখন প্রতিবেশী বলবে তুমি মন্দ করেছো তবে মনে করবে তুমি মন্দ করেছো। " ইবনে মাজাহ।
নবী (সঃ) আরও বলেছেন,"একজন মুসলমানের জন্য বাসভবন, সৎ প্রতিবেশী ও আরামদায়ক বাহন সৌভাগ্যের নিদর্শন। "বুখারী আদাবুল মুফরাদ।
উত্তম প্রতিবেশী সম্পর্কে রাসুল(সঃ) আরও বলেছেন, "আল্লাহ তা'য়ালা একজন সৎকর্মশীল মুসলমানের কল্যানে তার প্রতিবেশীর মধ্য থেকে একশোটি পরিবারকে বিপদ-মুসিবত থেকে রক্ষা করেন। এরপর তিনি সূরা আল বাকারার ২৫১ নং আয়াতের নিম্নের অংশটুকু তিলাওয়াত করেন--"আল্লাহ তা'য়ালা যদি কিছু লোককে অপর কিছু লোক দ্বারা প্রতিহত না করতেন তাহলে পৃথিবী অরাজকতায় ভরে যেত।"
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত; নবী (সঃ) এর একটি দু'আ হলোঃ" হে আল্লাহ! আমি আমার আবাসস্থলে তোমার নিকট দুষ্ট প্রতিবেশী থেকে আশ্রয় চাই। কেননা দুনিয়ার প্রতিবেশীতো পরিবর্তন হয়ে থাকে।
" বুখারী আদাবুল মুফরাদ।" "এ প্রসঙ্গে আল্লাহর রাসুল(সঃ) আরও বলেন, "তিন ব্যক্তি চরম বিপজ্জনকঃ
(১) এমন নেতা যার সাথে ভালো ব্যবহার করলেও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেনা, আবার কোন ভুল করলে ক্ষমাও করেনা।
(২)এমন অসৎ প্রতিবেশী , যে উপকার পেলে লুকিয়ে ফেলে, আর অন্যায় কিছু পেলে তা সর্বত্র প্রকাশ করে।
(৩) এমন স্ত্রী, যার কাছে থাকলে কষ্ট দেয়, আর যার কাছ থেকে দূরে গেলে বিশ্বাসঘাতকতা করে।"
"তবারানী,আত-তারগীব ওয়াত-তাহরীব ৩য় খন্ড ১৩০৫নং।"
রোকেয়া উত্তম প্রতিবেশী হতে চায়, হতে চায় উত্তম স্ত্রী বা সহধর্মীনি, উত্তম মা, আর সে আল্লাহর কাছে একান্তে নিভৃতে প্রার্থনা করে উত্তম প্রতিবেশী পাওয়ার জন্যে। আসাদ বলে রোকে..... আমি তোমার মতো এত ইবাদত করিনি এত এত তেলোয়াত করিনি তবে আমার কি উপায় হবে? রোকেয়া স্বামীকে বলেঃ তুমি যে তোমার এই অপরগতা বুঝতে পারছো এটাই তোমার জন্য আল্লাহ্ রাহমানুর রাহীমের পক্ষ থেকে বিরাট নেয়ামত। আর আমার জানামতে কোন বান্দা যদি নিজ গুনাহের ব্যপারে অনুতপ্ত হয় আল্লাহ্ তা;য়ালা তাকে সবচেয়ে বেশী পছন্দ করেন। শুনে আসাদ বলে তোমার মতো নেককার স্ত্রী যেন ঘরে ঘরে থাকে। আগত প্রত্যেকটি কণ্যার মাঝে যেন থাকে এই নেক স্বভাব। এইরকম চরিত্রে ভরে গেলে পৃথিবীটা হবে জান্নাতের নমুনা। আমি শুকরিয়া আদায় করি তোমার মতো স্ত্রী পেয়ে এবং প্রার্থনা করি দুনিয়াতেও তুমি আমার আর জান্নাতেও যেন মহান আল্লাহ্ তোমাকেই দেন। রোকেয়া বলে তোমার মনের মতো মন নিয়ে যেন সবাই পৃথিবীতে আসে। এভাবে প্রায় প্রতিরাতেই শেষরাতে তাহাজ্জুদে দুজনের একজন দোয়া করে আরেকজন আমিন বলে। রোকেয়া আসাদের ঘর যেন পৃথিবীর জান্নাত এজান্নাত থেকে খুশবু (শিক্ষা) নিয়ে যেন সকল ঘরগুলোও জান্নাতের রুপ লাভ করে..........................।
বিষয়: বিবিধ
১২৬৩ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একটা হাদীশের গল্প বলতেই হচ্ছে। কেন বলছি আশা করি তা বোঝাতে হবে না।
রসুল সঃ কোন এক যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবে সবার কাছে সাহায্যের আবেদন করলেন। সাধ্যমত অনেকেই মাল মাত্তা এনে স্তুপ করলেন। এক গরীব সাহাবীর সমবল বলতে ছিল তার শ্রম। তিনি দূরে কোন এক খেজুর বাগানে সারাদি পানি দেবার কাজে গেলেন। সন্ধ্যায় মজুরী পেলেন কিছু খেজুর বাড়ি এসে তার অর্ধেক নিজ পরিবারের জন্য রেখে বাকী অর্ধেক নিয়ে হুজুরের খেদমতে গেলেন সাহায্য দিতে। রসুল বল্লেন, তোমার খেজুর গুলি সব মালের উপর ছড়িয়ে দাও। ও গুলো সবার মালের চাইতে ভারী।
লিখাটি ভালো লাগলো। সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
মন্তব্য করতে লগইন করুন