সালাত_পরিত্যাগকারি_কাফের (বিস্তারিত দলিল সহকারে) পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পুরোটাই পড়ে,শেয়ার করুন।
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ০৫ জুন, ২০১৬, ০৭:২২:৩৬ সন্ধ্যা
সালাত_পরিত্যাগকারি_কাফের (বিস্তারিত দলিল সহকারে) পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পুরোটাই পড়ে,শেয়ার করুন।
প্রশ্ন ১: আমার বড় ভাই তিনি সালাত পড়েন না, এ কারণে আমি কি তার সঙ্গে সম্পর্ক রাখব, না সম্পর্ক ছিন্ন করবো? প্রকাশ থাকে যে, তিনি আমার সৎ ভাই (বিমাতার ছেলে)।
উত্তর ১: যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে সালাত পরিত্যাগ করে, যদি সে সালাত ওয়াজিব হওয়ার (অপরিহার্যতার) বিষয়টি স্বীকার করে, তবে ওলামাদের -দু'টি মতের সবচেয়ে সহীহ- মত অনুযায়ী সে বড় কুফরী করবে। আর যদি সালাত ওয়াজিব হওয়ার বিষয়টি অস্বীকারকারী- বা অবিশ্বাসী হয়, তা হলে
ওলামাদের সর্বসম্মত মতে সে কাফের হয়ে যাবে। এ সম্পর্কে নাবী কারীম
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এরশাদ হলো :
ﺭَﺃْﺱُ ﺍﻟْﺄَﻣْﺮِ ﺍﻟْﺈِﺳْﻼَﻡُ؛ ﻭَﻋَﻤُﻮْﺩُﻩُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ؛ ﻭَﺫُﺭْﻭَﺓُ ﺳَﻨَﺎﻣِﻪِ
ﺍﻟْﺠِﻬَﺎﺩُ ِﻓﻲْ ﺳَﺒِﻴْﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ
"কর্মের মূল হচ্ছে ইসলাম, তার স্তম্ভ হচ্ছে সালাত এবং তার সর্বোচ্চ চূড়া
হচ্ছে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ বাসংগ্রাম করা।"[হাদীসটি ইমাম আহমাদ, তিরমিযী এবং ইবনে মাজাহ সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন] নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর আরো এরশাদ হলো,
ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞِ ﻭَﺍﻟْﻜُﻔْﺮِ ﻭَﺍﻟﺸِّﺮْﻙِ ﺗَﺮْﻙُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ )"ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ছেড়ে দেয়া।"[মুসলিম] নাবী কারীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো এরশাদ করেন:
(( ﺍَﻟْﻌَﻬْﺪُ ﺍﻟَّﺬِﻱْ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻬُﻢُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ﻓَﻤَﻦْ ﺗَﺮَﻛَﻬَﺎ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﻔَﺮَ ))
"আমাদের এবং তাদের (কাফেরদের) মধ্যে যে প্রতিশ্রুতি, তা হলো সালাত। অতএব যে সালাত ছেড়ে দিল সে কুফরী করল।" [হাদীসটি ইমাম আহমাদ এবং আহলে সুনান সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন] সালাত ত্যাগ করা কুফরী, এর কারণ হলো যে, যে ব্যক্তি সালাত ওয়াজিব হওয়া
অস্বীকার করে সে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সঃ), আহলে ইলম ও ঈমান এর সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের মিথ্যা প্রতিপন্নকারী। যে ব্যক্তি অলসতা করে সালাত ছেড়ে দিল তার থেকে উক্ত ব্যক্তির কুফরী খুবই মারাত্বক। উভয় অবস্থাতেই মুসলিম শাসকগণের প্রতি অপরিহার্য হলো যে, তারা সালাত ত্যাগকারীদেরকে তাওবাহ করার নির্দেশ দিবে, যদি তওবাহ না করে, তা হলে এ'বিষয়ে বর্ণিত দলীলের ভিত্তিতে তাদেরকে হত্যা করার নির্দেশ প্রদান করবে। অতএব সালাত ত্যাগকারীকে বর্জন করা এবং তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা ওয়াজিব এবং সালাত ত্যাগ করা থেকে আল্লাহর কাছে তওবাহ না করা পর্যন্ত তার দা'ওয়াত গ্রহণ করা যাবে না। সাথে সাথে তাকে ন্যায়ের পথে আহ্বান ও নসিহত প্রদান করা ওয়াজিব এবং দুনিয়া ও আখেরাতে সালাত ত্যাগ করার কারণে যে শাস্তি তার প্রতি নির্ধারিত আছে তা থেকে সাবধান করতে হবে। এর ফলে হয়তো বা সে তাওবাহ করতে পারে এবং আল্লাহ পাক তার তওবাহ কবুলও করতে পারেন। ফাতওয়া প্রদানে : মাননীয় শাইখ আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রাহিমাহুল্লাহ) "ফাতাওয়া ওলামাইল বালাদিল হারাম" নামক কিতাব থেকে সংগৃহীত। পৃ - ১৪৫
প্রশ্ন ২: কোন ব্যক্তি যদি তার পরিবার-পরিজনকে সালাত পড়ার জন্য নির্দেশ দেয়, কিন্তু তারা তার নির্দেশের প্রতি যদি কোন গুরুত্ব না দেয়, তা হলে সে তার পরিজনের সাথে কি ধরনের ব্যবহার করবে? সে কি তাদের সাথে [একসাথে] বসবাস এবং মিলে মিশে থাকবে, নাকি সে বাড়ী থেকে অন্যত্র চলে যাবে?
উত্তর ২: এ সমস্ত পরিবার যদি একেবারেই সালাত না পড়ে, তা হলে তারা অবশ্যই কাফের, মুরতাদ (স্বধর্মত্যাগী) ও ইসলাম থেকে খারিজ-বহির্ভূত হয়ে যাবে এবং উক্ত ব্যক্তির জন্য তাদের সাথে একই সংগে অবস্থান এবং বসবাস করা জায়েয নয়। তবে তাদেরকে [সংশোধনের জন্য] দাওয়াত বা আহ্বান করা তার প্রতি ওয়াজিব। বিনয় এবং প্রয়োজনে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে তাদেরকে বারবার সালাত পড়ার জন্য আহ্বান জানাতে হবে। এর ফলে হয়তো আল্লাহ পাক তাদেরকে হিদায়াত দান করতে পারেন, কারণ সালাত ত্যাগকারী কাফের। আল্লাহ পাক [এ'থেকে] রক্ষা করুন। এ বিষয়ে আল্লাহর কিতাব, রাসূল (সঃ) সুন্নাত বা হাদীস ও সাহাবায়ে কিরামের উক্তি এবং সঠিক বিবেচনা-পর্যবেক্ষণ উল্লেখ করা হলো। প্রথমে পবিত্র কোরআন থেকে প্রমাণ: আল্লাহ তা'আলা মুশরিকদের সম্পর্কে এরশাদ করেন :
] ﻓَﺈِﻥ ﺗَﺎﺑُﻮﺍْ ﻭَﺃَﻗَﺎﻣُﻮﺍْ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ ﻭَﺁﺗَﻮُﺍْ ﺍﻟﺰَّﻛَﺎﺓَ ﻓَﺈِﺧْﻮَﺍﻧُﻜُﻢْ ﻓِﻲ
ﺍﻟﺪِّﻳﻦِ ﻭَﻧُﻔَﺼِّﻞُ ﺍﻵﻳَﺎﺕِ ﻟِﻘَﻮْﻡٍ ﻳَﻌْﻠَﻤُﻮﻥَ [
"অতএব যদি তারা তাওবাহ করে নেয় এবং সালাত পড়তে থাকে ও যাকাত দিতে থাকে, তবে তারা তোমাদের ধর্মের দিক দিয়ে ভাই হয়ে যাবে; আর আমি জ্ঞানী লোকদের জন্যে বিধানাবলী বিস্তারিত বর্ণনা করে থাকি।" [সূরা আত তাওবাহ: ১১] আয়াতের অর্থ থেকে বোঝা যায় যে, যদি তারা উক্ত কাজ গুলো না করে, তা হলে তারা আমাদের [মুসলমানদের] ভাই নয়।
তবে গোনাহ যত বড়ই হোক না কেন, গোনাহর কারণে ঈমানী ভ্রাতৃত্ব নষ্ট
হবে না। কিন্তু ইসলাম থেকে খারিজ হওয়ার কারণে ঈমানী বন্ধন শেষ হয়ে
যাবে। এ বিষয়ে হাদীস থেকে প্রমাণ: নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম এরশাদ করেন:
(( ﺑَﻴْﻦَ ﺍﻟﺮَّﺟُﻞِ ﻭَﺍﻟْﻜُﻔْﺮِ ﻭَﺍﻟﺸِّﺮْﻙِ ﺗَﺮْﻙُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓِ ))
"ব্যক্তি এবং শিরক ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য হলো সালাত ছেড়ে
দেয়া।" [মুসলিম] এ সম্পর্কে হাদীসের সুনান গ্রন্থ গুলিতে আবু বোরায়দাহ (রাযিঃ) নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণনা করেন :
(( ﺍَﻟْﻌَﻬْﺪُ ﺍﻟَّﺬِﻱْ ﺑَﻴْﻨَﻨَﺎ ﻭَﺑَﻴْﻨَﻬُﻢُ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓُ ﻓَﻤَﻦْ ﺗَﺮَﻛَﻬَﺎ ﻓَﻘَﺪْ ﻛَﻔَﺮَ ))
"আমাদের এবং তাদের (কাফেরদের) মধ্যে যে প্রতিশ্রুতি তা হলো সালাত,
অতএব যে সালাত ছেড়ে দিল সে কুফরী করল।"[হাদীসটি ইমাম আহমাদ এবং আহলে সুনান সহীহ সূত্রে বর্ণনা করেছেন।] সাহাবায়ে কিরামের উক্তি :
[ক] আমীরুল মু'মিনিন উমার (রাযিঃ) বলেন:(( ﻻَﺣَﻆَّ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺈِﺳْﻼَﻡِ ﻟِﻤَﻦْ ﺗَﺮَﻙَ ﺍﻟﺼَّﻼَﺓَ )) "যে ব্যক্তি সালাত ছেড়ে দিল তার ইসলামে কোন অংশ নেই।'আল্ হায্যু' শব্দটি এ স্থানে নাকেরাহ বা অনির্দিষ্ট, যা না বাচক
বর্ণনা প্রসংগে ব্যবহার হওয়ার ফলে ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থাৎ
সালাত ত্যাগকারীর ইসলামে তার কম এবং বেশি কোনই অংশ নেই।
[খ] আব্দুল্লাহ বিন শাকীক [রাহিমাহুল্লাহ] বলেন: নাবী কারীম (সাঃ) এর সাহাবাগণ সালাত ত্যাগ করা ছাড়া অন্য কোন আমলকে কুফরী
মনে করতেন না। সঠিক বিবেচনার দিক থেকে: প্রশ্ন হলো এটা কি কোন জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তার কথা হতে পারে যে, কোন এক ব্যক্তির অন্তরে যদি সরিষার দানা পরিমাণও ঈমান থাকে এবং সে নামাযের মহত্ত্ব ও মর্যাদা বোঝে এবং আল্লাহ পাক নামাযের যে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন তাও সে জানে, এর পরেও কি সে সালাতকে লাগাতর ছেড়ে দিতে পারে? ... এটি কখনই সম্ভব হতে পারে না। যারা বলেন যে [ সালাত ত্যাগ করার কারণে] সে কুফরী করবে না, তারা যে সমস্ত দলীলের ভিত্তিতে বলে থাকেন, আমি তাদের দলীল গুলো গভীরভাবে চিন্তা ও গবেষণা করে দেখেছি যে, তাদের ঐ সমস্ত দলীল ও প্রমাণ পাঁচ অবস্থার বাইরে নয়।[১] হয়তো বা উক্ত দলীলগুলো দলীল হিসেবে মূলত: গ্রহণীয় নয়।
[২] অথবা তাদের ঐ সমস্ত দলীল কোন অবস্থা অথবা বিশেষ বৈশিষ্টের সাথে শর্তযুক্ত ও সীমাবদ্ধ করে দেয়া হয়েছে, যার মাধ্যমে তাকে সালাত ত্যাগ করতে বাঁধা প্রদান করে থাকে।[৩] অথবা কোন অবস্থার সাথে শর্ত যুক্ত করে দেয়া হয়েছে, যারা সালাত ত্যাগ করে তাদের পক্ষে ওজর ও কৈফিয়ত হিসেবে পেশ করা হয়।[৪] অথবা দলীল গুলো আ'ম বা ব্যাপক,
সালাত ত্যাগকারীর কুফরীর হাদীস দ্বারা তা খাস বা নির্দিষ্ট করা হয়েছে।[৫] কিংবা ঐ সমস্ত দলীল দূর্বল যা প্রমাণ হিসেবে অগ্রহণীয়।
এ কথা যখন স্পষ্ট হয়ে গেল যে, সালাত পরিত্যাগকারী কাফের, তাই অবশ্যই তার প্রতি মুরতাদের হুকুম বর্তাবে। এবং নুসূস বা কোরআন ও হাদীসে এমন কোন প্রমাণ নেই যে, সালাত ত্যাগকারী মু'মিন অথবা সে জান্নাতে প্রবেশ করবে অথবা সে জাহান্নাম থেকে নাজাত পাবে, ইত্যাদি। যার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি যে সালাত পরিত্যাগকারীর কুফরীকে তাবীল বা অপব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, সে নিম্নতর কুফরীতে লিপ্ত
হবে। সালাত ত্যাগকারীর প্রতি শরীয়তের বিধানঃ
প্রথমত: তাকে (কোন মুসলিম মহিলার সাথে) বিবাহ দেয়া শুদ্ধ হবে না।
সালাত না পড়া অবস্থায় যদি তার আক্দ বা বিবাহ সম্পাদন করা হয়, তা হলে ও তার নিকাহ বা বিবাহ বাতিল বলে গণ্য হবে। এবং এই বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে উক্ত স্ত্রী স্বামীর জন্য হালাল হবেনা। আল্লাহ পাক [মক্কা থেকে মদীনায়] মুহাজির মহিলাদের সম্পর্কে এরশাদ
করেন :] ﻓَﺈِﻥْ ﻋَﻠِﻤْﺘُﻤُﻮﻫُﻦَّ ﻣُﺆْﻣِﻨَﺎﺕٍ ﻓَﻠَﺎ ﺗَﺮْﺟِﻌُﻮﻫُﻦَّ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟْﻜُﻔَّﺎﺭِ ﻟَﺎ ﻫُﻦَّ
ﺣِﻞٌّ ﻟَّﻬُﻢْ ﻭَﻟَﺎ ﻫُﻢْ ﻳَﺤِﻠُّﻮﻥَ ﻟَﻬُﻦَّ [
"যদি তোমরা জানতে পার যে, তারা মু'মিন নারী, তবে তাদেরকে কাফিরদের নিকট ফেরত পাঠিয়ে দিও না। মু'মিন নারীরা কাফিরদের জন্যে বৈধ নয় এবং কাফিররা মু'মিন নারীদের জন্যে বৈধ নয়।" [সূরা মুমতাহিনাহ্ : ১০] দ্বিতীয়: বিবাহ বন্ধন সম্পাদন হওয়ার পর যদি সে সালাত ত্যাগ করে, তা হলেও তার বিবাহ বাতিল হয়ে যাবে এবং
পূর্বে যে আয়াত আমরা উল্লেখ করেছি সে আয়াতের নির্দেশ মোতাবেক স্ত্রী
তার জন্য হালাল হবে না। এ বিষয়ে আহলে ইলমদের নিকট ব্যাখ্যা ও
বিশ্লেষণ প্রসিদ্ধ রয়েছে। বিবাহ বাতিল হওয়ার ব্যাপারে স্ত্রী মিলনের
আগে হোক বা পরে হোক এতে কোন পার্থক্য নেই। তৃতীয় : যে ব্যক্তি সালাত পড়ে না, তার জবাইকৃত পশু খাওয়া যাবে না। কেন তার
জবেহকৃত পশু খাওয়া যাবে না? .. এর কারণ হলো যে, উক্ত জবেহকৃত পশু
হারাম।[অথচ] যদি কোন [আহলে কিতাব] ইহূদী অথবা খৃষ্টান জবাই করে তা আমাদের জন্য খাওয়া হালাল। আল্লাহ রক্ষা করুন। উক্ত সালাত ত্যাগকারীর কোরবানী ইহূদী এবং নাসারার কোরবানী
থেকেও নিকৃষ্ট। চতুর্থ: অবশ্যই তার জন্য মক্কা এবং হারামের সীমানায় প্রবেশ করা হালাল নয়। এ সম্পর্কে আল্লাহ তা'আলার বাণী :
] ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟْﻤُﺸْﺮِﻛُﻮﻥَ ﻧَﺠَﺲٌ ﻓَﻼَ ﻳَﻘْﺮَﺑُﻮﺍْ
ﺍﻟْﻤَﺴْﺠِﺪَ ﺍﻟْﺤَﺮَﺍﻡَ ﺑَﻌْﺪَ ﻋَﺎﻣِﻬِﻢْ ﻫَﺬَﺍ [
"হে মুমিনগণ! মুশরিকরা হচ্ছে একেবারেই অপবিত্র, অতএব তারা যেন এ
বছরের পর মসজিদুল হারামের নিকটেও আসতে না পারে।" [সূরা তাওবাহ ২৮আয়াত] পঞ্চম: উক্ত সালাত ত্যাগকারী ব্যক্তির যদি কোন নিকটাত্মীয় বা জ্ঞাতি মারা যায়, তা হলে সে সম্পত্তির কোন মীরাছ পাবে না। যেমন: কোন ব্যক্তি যদি এমন সন্তান রেখে মারা গেল, যে সালাত পড়ে না (উক্ত মুসলিম ব্যক্তি সালাত পড়ে এবং ছেলেটি সালাত পড়ে না) এবং
তার অন্য এক দূরবর্তী চাচাতো ভাই (স্বগোত্র ব্যক্তি-জ্ঞাতি) এই দু'জনের
মধ্যে কে মীরাছ পাবে? উক্ত মৃত ব্যক্তির দূরবর্তী চাচাতো ভাই ওয়ারিছ
হবে, তার ছেলে কোন কিছুর ওয়ারিস হবে না। এ সম্পর্র্কে ওসামা বর্ণিত
হাদীসে নাবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী উল্লেখ্য:
(( ﻻَ ﻳَﺮِﺙُ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻢُ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮَ ﻭَﻻَ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮُ ﺍﻟْﻤُﺴْﻠِﻢَ (( ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
"মুসলিম কাফেরের ওয়ারিছ হবে না এবং কাফের মুসলিমের ওয়ারিস হবে
না।" [বুখারী ও মুসলিম] রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম বলেন:(( ﺃَﻟْﺤِﻘُﻮْﺍ ﺍﻟْﻔَﺮَﺍﺋِﺾَ ﺑِﺄَﻫْﻠِﻬَﺎ ﻓَﻤَﺎ ﺑَﻘِﻲَ ﻓَﻠِﺄَﻭْﻟَﻰ ﺭَﺟُﻞٍ ﺫَﻛَﺮٍ ((
ﻣﺘﻔﻖ ﻋﻠﻴﻪ
"ফারায়েজ তাদের মৌল মালিকদের সাথে সংযোজন করো। অর্থাৎ সর্ব প্রথম তাদের অংশ দিয়ে দাও যাদের অংশ নির্ধারিত। অতঃপর যা অবশিষ্ট থাকবে তন্মধ্যে (মৃতের) নিকটতম পুরুষ আত্মীয়দেরই হবে অগ্রাধিকার।" [বুখারী ও মুসলিম] এটি একটি উদাহরণ মাত্র এবং একই ভাবে অন্যান্য ওয়ারিসদের প্রতিও এই হুকুম প্রয়োগ করা হবে।
ষষ্ট: সে মারা গেলে তাকে গোসল দেয়ার কোন প্রয়োজন নেই, দাফনের জন্য কাফন পরানো হবে না এবং তার উপর জানাযার সালাতও পড়া হবে না এবং মুসলমানদের কবর স্থানে দাফনও করা যাবে না। এখন প্রশ্ন হলো যে উক্ত মৃত ব্যক্তিকে আমরা কি করবো? এর উত্তর হলো যে, আমরা তার মৃতদেহকে মরুভূমিতে (খালি ভূমিতে) নিয়ে যাবো এবং তার জন্য গর্ত খনন করে তার পূর্বের পরিধেয় কাপড়েই দাফন-কবরস্থ করবো। কারণ
ইসলামে তার কোন পবিত্রতা ও মর্যাদা নেই। তাই কারো জন্যে বৈধ নয় যে, যার সম্পর্কে সে জানে যে সে সালাত পড়তো না, এমন কেউ মারা গেলে মুসলমানদের কাছে জানাযার নামাযের জন্য তাকে উপস্থাপন করা।
সপ্তম : কিয়ামতের দিন ফিরআউন, হামান, কারূন এবং উবাই ইবনে খালাফ কাফেরদের নেতা ও প্রধানদের সাথে তার হাশর-নাশর হবে। আল্লাহ রক্ষা করুন। সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না এবং তার পরিবার ও পরিজনের তার জন্য কোন রহমত ও মাগফিরাতের দু'আ বৈধ নয়। কারণ সে কাফের, মুসলমানদের প্রতি তার কোন হক বা অধিকার নেই। এসম্পর্কে আল্লাহ তা'আলার বাণী :] ﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻟِﻠﻨَّﺒِﻲِّ ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮﺍْ ﺃَﻥ ﻳَﺴْﺘَﻐْﻔِﺮُﻭﺍْ ﻟِﻠْﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ ﻭَﻟَﻮْ
ﻛَﺎﻧُﻮﺍْ ﺃُﻭْﻟِﻲ ﻗُﺮْﺑَﻰ ﻣِﻦ ﺑَﻌْﺪِ ﻣَﺎ ﺗَﺒَﻴَّﻦَ ﻟَﻬُﻢْ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏُ ﺍﻟْﺠَﺤِﻴﻢِ
[ (১১৩) ﺳﻮﺭﺓ ﺍﻟﺘﻮﺑﺔ
"নবী (সঃ) এবং অন্যান্য মু'মিনদের জন্য জায়েয নয় যে, তারা মুশরিকদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। যদিও তারা আত্মীয়ই হোক না কেন, একথা প্রকাশ হওয়ার পর যে তারা জাহান্নামের অধিবাসী।" [ সূরা তাওবাহ : ১১৩ আয়াত প্রিয় ভাই ও বোন সকল ! বিষয়টি অত্যন্ত জটিল এবং ভয়াবহ: দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় যে, কোন কোন মানুষ বিষয়টিকে অবহেলা করে খুবই খাট করে দেখছে। এবং যারা সালাত পড়ে না তাদেরকে একই বাড়ীতে থাকার স্থান করে দিচ্ছে। অথচ এটা জায়েয
নয়। আল্লাহই ভাল জানেন। আমাদের প্রিয় নাবী (সঃ), তাঁর পরিবার-
পরিজন এবং তাঁর সাহাবাগণের প্রতি দরূদ ও ছালাম বর্ষিত হোক।
ফাতওয়া প্রদানে: মাননীয় শাইখ মুহাম্মদ বিন সালেহ আল ওসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) "ফাতাওয়া ওলামাইল বালাদিল হারাম" নামক
কিতাব থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। পৃষ্ঠা ১৪৬-১৪৯ নারী ও পুরুষ উভয়ের জন্য সালাত ত্যাগের এটিই হলো বিধান। আমি সেই সমস্ত ভাইদেরকে আহ্বান জানাচ্ছি, যারা সালাত ছেড়ে দিয়েছে এবং সালাত ছাড়াকে সহজ মনে করছে। তুমি তোমার বাকি জীবনটা ভাল আমল করে পূর্বের আমলের ক্ষতিপূরণ ও সংশোধন করে নিবে। তুমি অবগত নও যে, তোমার
বয়সের আর কত বাকী আছে। তা কি কয়েক মাস, কয়েক দিন অথবা কয়েক ঘন্টা? এবিষয়ের জ্ঞান আল্লাহর কাছে। সব সময় নিম্নলিখিত আল্লাহর বাণীর কথা স্মরণ করবে।
] ﺇِﻧَّﻪُ ﻣَﻦ ﻳَﺄْﺕِ ﺭَﺑَّﻪُ ﻣُﺠْﺮِﻣًﺎ ﻓَﺈِﻥَّ ﻟَﻪُ ﺟَﻬَﻨَّﻢَ ﻟَﺎ ﻳَﻤُﻮﺕُ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻭَﻟَﺎ
ﻳَﺤْﻴﻰ [ (৭৪) ﻃـﻪ
" যে তার প্রতিপালকের নিকট অপরাধী হয়ে উপস্থিত হবে তার জন্যে তো আছে জাহান্নাম, সেখানে সে মরবেও না, বাঁচবেও না।" [সূরা ত্বাহা :৭৪ আয়াত] আল্লাহ পাক এরশাদ করেন :] ﻓَﺄَﻣَّﺎ ﻣَﻦ ﻃَﻐَﻰ (৩৭) ﻭَﺁﺛَﺮَ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓَ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ (৩৮) ﻓَﺈِﻥَّ
ﺍﻟْﺠَﺤِﻴﻢَ ﻫِﻲَ ﺍﻟْﻤَﺄْﻭَى [ (৩৯)
"অনন্তর যে সীমালংঘন করে, এবং পার্থিব জীবনকে বেছে নেয়, জাহান্নামই হবে তার অবস্থিতি স্থান।" [সূরা আন নাযি'আত ৩৮-৩৯
আয়াত] আল্লাহ যেন তোমাকে প্রতিটি ভাল ও নাজাতের কাজের তাওফীক দান করুন এবং তিনি যেন তোমাকে বাকি দিনগুলো শরীয়তের ছায়া এবং আশ্রয়ে থেকে দাওয়াত, ইলম, আমল, সুখ, সমৃদ্ধি ও স্বাচ্ছন্দ্যময় রাখেন।
সমাপ্ত লেখক: আব্দুল আযীয বিন আব্দুল্লাহ বিন বায (রহঃ)(মুহাম্মদ বিন সালেহ আল ওসাইমীন (রহঃ)
ﺗﺄﻟﻴﻒ:ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻌﺰﻳﺰ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﺑﺎﺯ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ
ﻣﺤﻤﺪ ﺻﺎﻟﺢ ﺍﻟﻌﺜﻴﻤﻴﻴﻦ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ অনুবাদক: আব্দুন্ নূর বিন আব্দুল জব্বার
ﺗﺮﺟﻤﺔ: ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻨﻮﺭ ﺑﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﺠﺒﺎﺭ সম্পাদনা: কাউসার বিন খালিদ
সূত্র: ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ, সৌদিআরব
ﺍﻟﻤﻜﺘﺐ ﺍﻟﺘﻌﺎﻭﻧﻲ ﻟﻠﺪﻋﻮﺓ ﻭﺗﻮﻋﻴﺔ ﺍﻟﺠﺎﻟﻴﺎﺕ ﺑﺎﻟﺮﺑﻮﺓ ﺑﻤﺪﻳﻨﺔ
ﺍﻟﺮﻳﺎﺽ
সংগৃহীতঃ
বিষয়: বিবিধ
১১৯২ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার মনে প্রশ্ন জাগে-
"ঈমান" ও "কুফর" এর মীজানে "কাফির" ও "ফাসিক" এর ওজনে কোন তফাত আছে কি?
থাকলে সেটা কেমন?
না থাকলে তার ব্যাখ্যা কী?
*********
আল্লাহতায়ালা ক্ষমা করুন- আমি সলাত পরিত্যাগকারীদের পক্ষে বলছিনা, বরং এখানে কিছু প্রান্তিক বক্তব্য দেয়া হয়েছে তার সাথে একমত হতে পারছিনা!
উপরোক্ত ফাতাওয়ায় এমন কিছু বক্তব্য রয়েছে যেগুলো ইসলামের অন্যান্য বিধি ও আদর্শের সাথে সাংঘর্ষিক!!
মূলতঃ "কাফির" সাব্যস্ত করা থেকেই বাকি রায়গুলো এসেছে!
মুরতাদের হুকুম বর্তাবে??
আল্লাহতায়ালাই ভালো জানেন!!
এটা বাস্তবায়ন করা হয়না কেন??
মন্তব্য করতে লগইন করুন