একটি শিক্ষনীয় গল্প!!
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ১০ আগস্ট, ২০১৫, ০৭:২৯:২৮ সন্ধ্যা
প্রবাসীর কাংখিত অনুভুতি!
মানুষের জীবনে চাহিদার শেষ নেই! শেষ নেই সে চাহিদাকে বাস্তবে পূর্ণতা দেয়ার চেষ্টাও! প্রত্যেকটি মানুষের চাহিদাই আলাদা আলাদা! কেউ সচেষ্ট হয় ভালো কাজ করতে আর কেউ খারাপ কাজে লিপ্ত হয় ছয়/ নয় না ভেবে। এখানে ছয়/ নয় এজন্যই বললাম দুনিয়া বা আখেরাতের চিন্তা না করেই! কথায় বলে কেউ মদ বিক্রি করে দুধ পান করে আর কেউ দুধ বিক্রি করে মদ পান করার মত! কেউ হালাল পথে উপার্জন করে হালাল ভাবেই খরচ করে নেকী অর্জন করে। আর কেউ হালাল পথে উপার্জন করেও হারাম পথে ব্যয় করে শুধু মাত্র বুদ্ধি বিবেচণা না করার কারনে! মনে করে যে, আমি কামাই করছি আমি খরচ করবো কাকে জিজ্ঞাসা করবো? আমার যা ইচ্ছা তাই করবো! সে মতেই সে কাটিয়ে দেয় জীবনের মহা-মূল্যবান সময়গুলো! হয়তো এরই মাঝে কেউ কেউ সঠিক পথের সন্ধান পায় আর কেউ কেউ সঠিক পথের সন্ধান তো দুরের কথা কোনদিন তার মনেই হয়নি সে ভুল পথের পথিক ছিলো!
বাংলাদেশী এক ভাইয়া সৌদির প্রবাসী একটি কোম্পানির আন্ডারে কাজ করতেন! যে মালিক ছিলো সে খ্রীষ্টান! সৌদিতে থাকার সুবাদে মক্কা-মদিনা জেয়ারত করার ইচ্ছা তার অন্তরে খুব প্রখর ছিলো! কিন্তু কোম্পানির মালিকের কাছে এ বছর হজ্জের কথা বললে, বলে যে, আগামী বছর, পরের বছর বললে, বলে যে, আগামী বছর এভাবে থাকতে থাকতে লোকটা অসহ্য হয়ে যায় তবুও আগামী বছর হজ্জ বা উমরাহ করার অনুমতি দেবে সেই আশায় বুক বেঁধে রাখে কিন্তু অর্ধযুগ হয়ে গেলে ও হজ্জ বা উমরাহ কিছুই করতে পারেনা! এদিকে চাকরীও ছেড়ে দিতে পারে না স্বদেশী পরিবারের কথা চিন্তা করে! মনকে বলে মন আরেকটু ধৈর্য ধর আগামী বছর যাবো ইনশা-আল্লাহ!
পরের বছর আবারো মালিককে বলে অনুমতি চায় হজ্জে বা উমরাহ করতে যেতে, মালিক বলে আমি শুনেছি মুসলমানেরা কা'বা তাওয়াফ করে, এই বলেই মালিক একটি চেয়ার নিয়ে রুমের মাঝখানে বসে বলে, আমিই কা'বা! আমার চারিদিকে ঘুরে তাওয়াফ করো তারপরও ছুটি নাই! লোক তখন সাতবার ঘুরে তাওয়াফ শেষ করলো! এরপর সে ছোট্ট একটি পাথর নিয়ে মালিকের কপাল বরাবর মারলো! সাথে সাথেই মালিক লোকটা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলো! তখন প্রবাসী লোকটাই আবার তাকে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে চিকিৎসা করালো!
যখন মালিকের জ্ঞান ফিরলো তখন সে প্রবাসী ভাইটার কাছে জানতে চাইলো কেন তুমি পাথর মেরেছো? সে বললো আমাদের কা'বা তাওয়াফের পর শয়তানকে পাথর মারার নিয়ম আছে তাই আমি তাওয়াফ শেষ করে পাথর মেরেছি! আমি আপনাকে পাথর মারিনি আমি পাথর মেরেছি শয়তানকে আর ঐ সময় শয়তান আপনার উপর উপবেশন করেছিলো তাই আপনার কপালে লেগেছে! মালিক বললো তুমি পালিয়ে গেলে না কেন? লোকটা বললো মুসলমান কখনো সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পায়না তাই আমি পালাইনি আর আপনি তখন অসুস্থ একজন মুসলমানের সামনে একজন মানুষ মারা যাবে সেটা কি করে হয় তাই আমি আপনার চিকিৎসার জন্য এখানে এনেছি। মালিক এবার আরো উৎসাহিত হয়ে জানতে চাইলো তোমার ধর্ম সম্পর্কে আমাকে বলো। আমি জানতে চাই তোমার ধর্মের আরো যা আছে। লোকটা সুযোগ পেয়ে সুন্দর করে ইসলাম ধর্মের পরিচয় বর্ণনা করলেন এতে করে মালিক লোকটা খুবই অভিভূত হয়ে মুসলমান হয় এবং পরের বছর প্রবাসী ভাইটিকে সাথে করে একসাথে হজ্জে যায়!
আজ আমি তোমাদেরকে আনুগত্যের বিধান ( জীবন বিধান ) পরিপূর্ণ করে দিলাম , তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জীবন বিধান হিসাবে মনোনিত করলাম । মায়েদাঃ ৩ ( সত্য অস্বীকারকারীর দল কি ) আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তে অন্য দ্বীন অনুসন্ধান করে ? অথচ আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীতের যা কিছু আছে তারা সকলেই আল্লাহুর দ্বীনের অনুগত ।
আল ইমরানঃ ৮৩
আল্লাহ ছাড়া কারো বিধান দেয়ার ক্ষমতা নেই। তিনি আদেশ দিয়েছেন যে , তিনি ব্যতীত অন্য কারো ইবাদত করো না। এটাই সরল পথ। কিন্তু অধিকাংশ লোক তা জানে না।
ইউসুফঃ ৪০সুনানে ইবনে মাজাহ , হাদীস নং ৩৯৮২
রাসূল ( সাঃ ) বলেছেন, “ মূসা (আঃ) এর কওম ৭১ ভাগে ভাগ হবে, ৭০ ভাগ জাহান্নামে যাবে, এক ভাগ জান্নাতে। ঈসা (আঃ) এর কওম ৭২ ভাগে ভাগ হবে, ৭১ ভাগ জাহান্নামে যাবে, এক ভাগ জান্নাতে। যে আল্লাহর হাতে আমার প্রান তার শপথ, আমার কওম ৭৩ ভাগে ভাগ হবে, ৭২ ভাগ জাহান্নামে যাবে, এক ভাগ জান্নাতে। তাকে জিজ্ঞাসা করা হল ইয়া রাসুলুল্লাহ (সাঃ) ঐ এক ভাগ কারা? তিনি উত্তরে বললেন ‘আল জামাহ’।”
আল জামাহ ’এর ব্যাখ্যায় হাদীস বিষেশজ্ঞগন বলেছেনঃ
১। এরা‘আহ্লুস-সুন্নাহ ওয়াল জামাহ’অর্থ্যাৎ এই দল রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর সুন্নাহ এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে।
২। অন্য ব্যাখ্যায় এরা সেই দল যারা রাসুলুল্লাহ ( সাঃ ) এবং তার খোলাফায়ে রাশেদিন এর সুন্নাহ এর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে।
শিক্ষনীয়ঃ- একেই বলে কপালে চাঁদ ওঠা! লোকটা অন্য ধর্ম থেকে মুসলমান হলো একমাত্র ইসলাম ধর্মের মহানুভবতা দেখে! আর আমরা মুসলমান, নামেই মুসলমান হয়ে রইলাম সারা জীবন! হিদায়াত কবে হবে আমাদের? হে আল্লাহ তুমি সহায় হও! মহান আল্লাহ যাকেই হিদায়াত দিতে চান সে বেধর্মী থেকেও মুসলমান ধর্মে এসে মুসলমান হয়ে যায়! আর যাকে হিদায়াত দিতে চান না সে ইসলাম ধর্ম থেকে বের হয়ে গোমরাহ হয়ে যায়! হে আল্লাহ আপনি সব সময় আপনার হিদায়াতের ছায়ায় আমাদেরকে স্থান দিন! আমাদের ছোট ছোট আমলকে কবুল করে নিন! আমাদেরকে মরন পর্যন্ত আপনার পথেই পরিচালিত করুন! আমাদেরকে ও সেই হেকমত দান করুন যেন অমুসলিমরাও আমাদের ব্যবহার দেখে মুসলমান ধর্মের অনুসারী হয়!
ছবির জন্যে কৃতজ্ঞতায় গুগল.....।
বিষয়: বিবিধ
১২৭৩ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যদিও আপনার কথাগুলো (ভূমিকা ও উপসংহার) চিন্তনীয় ও শিক্ষনীয়-
কিন্তু ঘটনাটি গল্প, না কি সত্য তা বুঝতে পারলামনা!
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকিল্লাহ
ধন্যবাদ আপু ।
বাস্তব ঘটনা, নাকি কল্পনা? মদিনাপি?
সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
জাযাকিল্লাহ খাইর
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..
আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে হিদায়েত দান করুন।
আপু আপনার লেখাটা অনেক গুছানো হয়েছে.....
মন্তব্য করতে লগইন করুন