আত্মার খোরাক(১৬)(মাহে রমাদ্বানের আলোচনায়)
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২০ জুন, ২০১৫, ০৬:০০:০২ সন্ধ্যা
গীবত সম্পর্কিত হাদীস সমূহঃ-
আসুন এই রমাদ্বানে কয়েকটি হাদীস পড়ি ও নিজেকে গীবতের গুনাহ থেকে বাঁচাই! আমরা সকলে চেষ্টা করি যেন আমাদের রোজাটা হয় আল্লাহর খুশি মোতাবেক! কারন এর প্রতিদান আল্লাহ ছাড়া অন্যকেউ দেবেনা! এই রোজার প্রতিদান দেবেন একমাত্র প্রতিপালক মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন! মহান আল্লাহ আমাদেরকে সুন্দর ও সঠিক ভাবে রোজা রাখার তৌফিক দিন! এবং কবুল করে নিন আমাদের সকল আমলগুলোকে!
হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, একদা নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ তোমরা কি জানো গীবত কাকে বলে? সাহাবী (রাযি..আনহুম) জবাব দিলেন, আল্লাহ এবং তার রাসূল (সঃ) ই সবচেয়ে ভালো জানেন। ( এ ছিলো সাহাবায়ে কেরামের একটি বিনয় সূচক বাক্য, যা দ্বারা তারা রাসূল (সঃ) এর কাছে নিজেদের অজ্ঞতা প্রকাশ করতেন।) হুযুর (সঃ) বললেনঃ গীবত হলো তুমি তোমার মুসলমান ভাইয়ের বর্ণনা ( তার অসাক্ষাতে) এমন ভাবে করবে যে, সে তা শুনলে অসন্তুষ্ট হবে। অতঃপর হুযুর (সঃ) কে প্রশ্ন করা হলো হে আল্লাহর রাসূল (সঃ)! আমি কিছু বলবো তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে ও কি তা গীবত হবে? হুযুর (সঃ) জবাব দিলেনঃ তুমি যা বলছো তা যদি তার মধ্যে পাওয়া যায় তাহলে সেটা হবে গীবত। আর যদি না পাওয়া যায় তাহলে হবে বোহতান।"
(মেশকাত)
ব্যাখ্যাঃ- যদি কেহ কোন মুসলমানের ত্রুটির কথা সমাজে প্রচার করে তাকে লোক-চক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়, তাহলে সেটা গীবত এবং গীবত হলো শরীয়তের দৃষ্টিতে একটি মারাত্মক পাপ। কোরআন মাজীদে গীবতকারীকে মৃত মানুষের গোশত ভক্ষনকারীর সাথে তুলনা করা হয়েছে। তবে সংশোধনের নিয়তে তার উর্ধ্বতন কোন দায়িত্বশীল কর্তা ব্যক্তিকে বলা গীবত নয়। অনুরুপ ভাবে যে ব্যক্তি খোলা-খুলি আল্লাহর নাফরমানীতে লিপ্ত এবং মানুষের উপর জুলুম অত্যাচার করে, তার দোষত্রুটি প্রচার করে লোকদেরকে সাবধান করে দেওয়াও গীবত নয়। বরং এটা একটি প্রয়োজনীয় কাজ।
হযরত আবু সাইদ খুদরী (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ গীবত হলো ব্যভিচারের চেয়েও মারাত্মক! হুযুর (সঃ) বললেনঃ কোন ব্যক্তি যেনা করার পর যখন তওবাহ করে, আল্লাহ তার তওবাহ কবুল করেন। কিন্তু গীবতকারীকে যার গীবত করা হয়েছে সে যদি মাফ না করে আল্লাহ মাফ করবেন না।"
(বায়হাকী, মোশকাত)
হযরত আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন, গীবতের কাফফারা হলো এই যে, তুমি যার গীবত করেছো তার জন্য মাগফিরাতের দোয়া করবে। তুমি দোয়ায় এই বলবে যে, হে আল্লাহ তুমি আমার এবং তার গুনাহ মাফ করো।"
(বায়হাকী, মেশকাত)
ব্যাখ্যাঃ- যার গীবত করা হয়েছে সে ব্যক্তি যদি জীবিত থাকে তাহলে তার কাছ থেকে মাফ চেয়ে নিতে হবে। আর যদি সে জীবিত না থাকে, তাহলে তার গুনাহ মাফির জন্যে আল্লাহর কাছে দোয়া করবে।
পরিশেষে মহান আল্লাহর কাছে তৌফিক চেয়ে বলতে চাই, তিনি এই রমাদ্বান মাসসহ বছরের বারো মাসই গীবত সহ সকল গুনাহ থেকে মুক্ত রাখুন! হে আল্লাহ আপনি আমাদেরকে গুনাহ থেকে মুক্ত রাখুন ও হেদায়াতের সাথে রাখুন! আমিন ছুম্মা আমিন!
ছবির জন্য ধন্যবাদান্তে গুগল মামু......।
বিষয়: বিবিধ
১০৪০ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দুঃখের বিষয় অনেক মহিলাকে এই বিষয়ে সাবধান করলেও বলেন যে গিবত নাকি নারিদের অভ্যাস তাই জায়েজ!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন