আত্মার খোরাক (১৫)
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ০৪ মে, ২০১৫, ১১:৪৫:৩৭ সকাল
চরিত্রগত ত্রুটি সমূহ সম্পর্কে হাদীসঃ-
হযরত আবু বাকারাতা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, একদা আমরা নবী করীম (সঃ) এর দরবারে উপস্থিত ছিলাম। হঠাৎ তিনি বললেনঃ আমি কি তোমাদেরকে সবচেয়ে বড় গুনাহের কথা বলে দিবো না? কথাটা তিনি তিনবার বললেন। অতঃপর তিনি বললেন, তা হচ্ছে আল্লাহর সাথে কাউকে শরীক করা, পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া কিংবা মিথ্যা কথা বলা। হুযুর (সঃ) হেলার দিয়ে বসা অবস্থায় (কথাগুলো বলতে) ছিলেন। হঠাৎ তিনি (কথার গুরুত্ব উপলদ্ধি করাবার নিমিত্তে) সোজা হয়ে বসলেন এবং উক্ত কথাটি বারবার বলতে থাকলেন। এমন কি আমরা মনে মনে বলছিলাম, আহা! হুযুর যদি এখন থেমে যেতেন।"
(বুখারী, মুসলিম)
ব্যাখ্যাঃ- আলোচ্য হাদীসটি নবী করীম (সঃ) কবীরা গুনাহ সমূহের মধ্য হতে তিনটি মারাত্মক গুনাহের কথা উল্লেখ করেছেন। এর একটি হলো, আল্লাহর সাথে শরীক করা। দ্বিতীয়টি হলো পিতা-মাতার অবাধ্য হওয়া এবং তৃতীয়টি হলো মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া। আর মিথ্যা কথা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া উভয়টাই কবীরা গুনাহ। তবে মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া অধিক দোষণীয়।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ চারটি স্বভাব যার মধ্যে পাওয়া যাবে সে সন্দেহতীত ভাবে খাঁটি মোনাফেক। আর চারটি স্বভাবের কোন একটি যদি কারো মধ্যে পাওয়া যায়, তা হলে তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মোনাফেকের একটি স্বভাব আছে বলে ধরে নিতে হবে। উক্ত চারটি কু-স্বভাব হলো, তার কাছে আমানত রাখা হলে সে তা খেয়ানত করে, সে যখন কথা বলে তখন মিথ্যা বলেম ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে এবং এগড়ার সময় সে অশালীন কথা বলে।"
(বুখারী, মুসলিম)
হযরত সুফিয়ান ইবনে উসায়িদ হাযারামী (রাযিঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সঃ) কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, সবচেয়ে বড় খেয়ানত হলো তুমি তোমার ভাইয়ের কাছে এমন কথা বলবে, যা সে সত্য বলে গ্রহণ করবে, অথচ তুমি তাকে মিথ্যা বলেছ।"
(আবু দাউদ)
ব্যাখ্যাঃ- মিথ্যা কথা বলা গুনাহে কবীরা। কোরআন-হাদীসে একে শিরকের সমতুল্য পাপ বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হুযুর (সঃ) মিথ্যা কথাকে মোনাফেকীর লক্ষণ বলে অভিহিত করেছেন। সরলমনা লোককে মিথ্যা বলে ধোঁকা দেয়া আল্লাহর নবী (সঃ) সবচেয়ে বড় খেয়ানত বলে অভিহিত করেছেন। সুতরাং আমাদের উচিৎ মিথ্যা পরিহার করে আল্লাহর আযাব থেকে বাঁচা।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযিঃ) বলেছেনঃ কৌতুক ছলে ও গৌরব প্রদর্শন কোন অবস্থায়ই মিথ্যা সমীচীন নয়। আর তোমাদের সন্তানদের সাথে তোমরা এমন কোন ওয়াদা করবে না, যা তোমরা পূরণ করতে পারবেনা।"
(আল-আদাবুল মুফরাদ)
ব্যাখ্যাঃ বাচ্চাদেরকে ফাঁকি দেয়া এবং তাদের সাথে মিথ্যা বলাকে মানুষ সাধারণ ভাবে দোষণীয় মনে করে না। অথচ হাদীসে নবী করীম (সঃ) বাচ্চাদের সাথে মিথ্যা কথা বলা, বাচ্চাদেরকে ফাঁকি দেয়া এবং তাদেরকে কোন জিনিস দেওয়ার ওয়াদা করে তা না দেয়াকে অপরাধ বলে গণ্য করেছেন। কেন না এর ফলে পিতা-মাতার থেকে বাচ্চাদের চরিত্রের উপর এর খারাপ প্রতিক্রিয়া হয়।
বিষয়: বিবিধ
১২৫৬ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
'মিথ্যা সকল পাপের মুল'
অনৈতিকতা আর পাপের বিস্তার ঘটাতে মিথ্যার প্রভাব অনেক বেশী!
মানব কুলের চারিত্রিক ত্রুটি এই মিথ্যা পরিহার করা অবশ্যই কর্তব্য!!
সুন্দর উপস্হাপনায় জাযাকিল্লাহু খাইরান হে শ্রদ্ধেয়া!!
হে আল্লাহ আপনি ভাইয়াকে সুস্থ্য করেদিন আমার আপুর কষ্ট, পেরেশানি দুর করে দিন ।আমার আপুর জন্য সব কিছু সহজ করে দিন । আপু-ভাইয়াকে দুনিয়া আখিরাতে কল্যাণ দান করুন । আমীন ।
আবার আসবো ফিরে,
পোস্ট পড়ার তরে,
ছালসাবিল বেশে,
নয়ত ছালসাবিল হয়ে।
তুলি দুই হাত-করি মোনাজাত,
হে মহান রব,
লায়লাপির ভাগ্যে ছালসাবিলকে
অবশ্যই রাখবে।
{কানেকানে: ভয় পাবেন না আপপপপি, ছালসাবিল জান্নাতের একটা নহর }
হে প্রিয় ছোট্ট ভাই! হপে
আপনি অনেক ভালো আপপপি
চমৎকার বর্ণনা অনেক ভালো লাগলো আপুনি।
জীবন ঘনিষ্ট হাদীসগুলো শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন