আত্মার খোরাক (১১)
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ১৬ এপ্রিল, ২০১৫, ০২:১২:৫৬ দুপুর
গরীব মিসকিনের হক্ব সম্পর্কিত হাদীসঃ-
"হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ অবশ্যই আল্লাহ তা'য়ালা কিয়মাতের দিনে ( আদম সন্তানকে লক্ষ্য করে) বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে খাদ্য চেয়েছিলাম, কিন্তু তুমি আমাকে খাদ্য দাওনি। আদম সন্তান বলবে, হে পরওয়ারদিগার! আমি কি করে তোমাকে খাওয়াতে পারি, অথচ তুমি সমগ্র বিশ্বের প্রতিপালক? আল্লাহ বলবেন, তোমার কি মনে নেই তোমার কাছে আমার অমুক বান্দাহ খাদ্য প্রার্থনা করেছিলো, কিন্তু তুমি তাকে খাদ্য দাওনি। তুমি কি জানতে না যে, সেদিন যদি তুমি তাকে খাদ্য দিতে তাহলে অবশ্যই তা তুমি আমার কাছে পেয়ে যেতে। আল্লাহ (অতপরঃ অন্য একজনকে লক্ষ করে) বলবেন, হে আদম সন্তান! আমি তোমার কাছে পানি পান করতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি আমাকে পানি পান করাওনি। আদম সন্তান বলবে, হে পরওয়ারদিগার! আমি কি করে তোমাকে পানি পান করাতে পারি, অথচ তুমি তো সমগ্র বিশ্বের রক্ষক! আল্লাহ বলবেন, তোমার কাছে কোন এক বান্দাহ পানি পান করতে চেয়েছিল কিন্তু তুমি তাকে পানি পান করাওনি। যদি তুমি সেদিন তাকে পানি পান করাতে, তাহলে আজ তা তুমি আমার কাছে পেতে।" ( অর্থ্যাৎ তার প্রতিদান আজ তোমাকে দেয়া হতো)
(মুসলিম)
হযরত আনাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ সর্বোত্তম দান হলো কোন ক্ষুধার্তকে পেট পুরে খাওয়ানো।"
(মিশকাত)
হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি বিধবা ও মিসকীনের সমস্যা নিয়ে ছুটা-ছুটি করে, সে যেন আল্লাহর রাহে জিহাদে লিপ্ত। (বর্ণনাকারী বলেন) আমার ধারণা হুযুর (সঃ) যেন একথা ও বলেছিলো যে, সে যেন ঐ সব ব্যক্তির ন্যায়, যে সারা রাত নামাজে কাটায় এবং সারা বছরই রোজা রাখে।"
(বুখারী,মুসলিম)
হযরত নবী করীম (সঃ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরে এক মুঠো দু'মুঠো অন্ন কিংবা একটি দু'টি খোরমা ভিক্ষে করে বেড়ায় সে মিসকীন নয়। প্রকৃত পক্ষে মিসকীন হলো সেই ব্যক্তি; যে তার প্রয়োজন পর্রন করার মত সম্পদ রাখে না। অথচ (লজ্জা ও শালীনতার কারনে) সে কারো কাছে কিছু প্রার্থনাও করে না এবং কেউ তার দরিদ্রতার খবরও রাখে না যে সে তাকে দান করবে।"
(বুখারী, মুসলিম)
ব্যাখ্যাঃ- বর্ণিত হাদীস সমূহে আল্লাহর নবী (সঃ) মুসলমানদেরকে সমাজের অসহায়, গরীব, মিসকীন, ইয়াতীম, বিধবা ইত্যাদি অভাবী লোকদের খোজ-খবর নিতে, তাদের অভাব মোচন করতে এবং তারা ক্ষুধার্ত থাকলে তাদেরকে খাদ্য দান করতে আদেশ করেছেন। এমন কি যারা অভাবী লোকের সাহায্যের ব্যাপারে চেষ্টা-সাধনা করে, তাদের একাজটা যে নফল ইবাদতের চেয়েও উত্তম বরং কোন কোন ক্ষেত্রে আল্লাহর পথে জিহাদের সমতূল্য, নবী (সঃ) তারও উল্লেখ করেছেন। শেষোক্ত হাদীসটিতে আল্লাহর নবী (সঃ) মিসকীনদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে পরোক্ষে মুসলমানদেরকে হিদায়াত দিয়েছেন যে, তোমাদের উচিৎ সেই সমস্ত অভাবী (মিসকীন) লোককে খুজে খুজে দান করা, যারা লজ্জার কারনে তাদের অভাবের কথা প্রকাশ করেনা। অথচ অভাব মোচনের মত প্রয়োজনীয় সম্পদ তাদের কাছে নেই।
পরিশেষে মহান আল্লাহ আমাদের অন্তরকে গরীব মিসকীনদের প্রতি সহানুভুতিশীল করে দিন আর আমাদেরকে কবুল করে নিন।
বিষয়: বিবিধ
৯৮৬ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
একদম যথার্থ , আমাদের এলাকায় ভিক্ষুকে লাভের উপর টাকা লাগায় । জাজাকাল্লাহু খায়ের শ্রদ্ধেয় আপা
প্রিয় নবী (সঃ) যখন যা-ই বলেছেন তাতেই আমাদের জন্য রয়েছে কল্যাণ! মহান আল্লাহ আমাদেরকে সব সময় কল্যাণের মধ্যে রাখুন!
আমিন ছুম্মা আমিন!
উৎসাহ মূলক মন্তব্যের জন্য আপনার শুকরিয়া!
মন্তব্য করতে লগইন করুন