আত্মার খোরাক (৭)
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ০৪ এপ্রিল, ২০১৫, ০৭:৩৪:৫০ সন্ধ্যা
ইয়াতীম সম্পর্কে হাদীসঃ-
আসুন জেনে নেই আমরা যারা ইয়াতীম লালন-পালন করছি তারা কত সওয়াবের ভাগী হচ্ছি। আর যারা এই নেকীর কাজ থেকে দুরে আছি তাদের কতটা বদনসীব। মহান আল্লাহ তার পছন্দনীয় পথে পরিচালিত করুন আমাদেরকে।
হযরত আবু হুরায়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সঃ) বলেছেনঃ মুসলমানদের ঘরের মধ্যে সেই ঘরটিই সবচেয়ে উত্তম যে ঘরে কোন ইয়াতীম বসবাস করে এবং তার সাথে উত্তম ব্যবহার করা হয়। আর সেই ঘরটিই সবচেয়ে নিকৃষ্ট যেখানে কোন ইয়াতীম বসবাস করে এবং তার সাথে নির্দয় ব্যবহার করা হয়।
(ইবনে মাজা)
হযরত খোয়াইলেদ ইবনে আমর (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেন হে আমার পরওয়ারদিগার আমি দুই শ্রেণীর দূর্বল লোকের হক্বকে অত্যধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকি ইয়াতীম এবং নারী।
(নাসাঈ)
ব্যাখ্যাঃ- আসলামের পূর্বে ইয়াতীম ও নারীর প্রতি চরম অবিচার করা হতো। সাধারণভাবে ইয়াতীমের প্রতি দূর্ব্যবহার করা হতো এবং তাদের সম্পদ আত্মসাৎ করা হতো। নারী জাতিকেও তদানীন্তন সমাজে বিশেষ কোন মর্যাদা দেয়া হতো না এবং তাদেরকে নানারুপ নির্যাতন করা হতো। হুযুর (সঃ) আল্লাহর তায়ালার নির্দেশে পয়গাম্বর ও ইসলামী হুকুমতের প্রধান হিসেবে এই উভয় শ্রেণীর দূর্বল লোকের হক্ব প্রতিষ্ঠার জন্য যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছেন। হুযুর (সঃ) এর উপরোক্ত উক্তি হতে তারই প্রমাণ মিলে।
হযরত সায়াল ইবনে সায়াদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, নবী করীম (সঃ) এরশাদ করেছেনঃ আমি এবং ইয়াতীম ও কাঙ্গালের লালন-পালনকারী জান্নাতে এভাবে অবস্থান করবো। এই বলে হুযুর (সঃ) তার শাহাদাত এবং মধ্যাঙ্গুলীর মধ্যে সামান্য ফাঁক করে এ দিকে ইঙ্গিত করলেন।
(বুখারী, মুসলিম)
ব্যাখ্যাঃ- ইয়াতীমের প্রতিপালক যে জান্নাতে বিশেষ মর্যাদার অধিকারী হবে, সে কথারই উল্লেখ করা হয়েছে।
পরিশেষেঃ-মহান আল্লাহর কাছে এই মর্মে প্রার্থনা করি যে, তিনি আমাদের সকলের মন-মানষিকতাকে সুন্দর ও কোমল করে দিন যেন আমরা ইয়াতীম, মিসকিন, গরীব, বিধবা ও প্রবাসী(যারা প্রবাসে এসে সব খুঁইয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে) এবং যাদের কণ্যাকে অর্থাভাবে বিয়ে দিতে পারছেন না তাদেরকে, ও নওমুসলিমকে সহানুভূতি দেখাই, সহযোগীতার হাতকে বাড়িয়ে দেই! আর যারাই নানা রকম অসুস্থতা সহ সমস্যাতে জড়িয়ে আছে তাদেরকে আল্লাহর জন্য সাহায্য করি! মহান আল্লাহ আমাদের ইচ্ছাকে কবুল করুন। আমিন
বিষয়: সাহিত্য
১০৮০ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইয়াতিম সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টি জানিয়ে দিতে আপনার আজকের পোস্ট অনেক গুরুত্বের
মাশা-আল্লাহ আপু, এতিমদের সম্পর্কে সুন্দর চমৎকার হাদিসগুলো লিখলেন। অনেক ভালো লাগলো। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে এতিমদের সেবা করার তাওফীক দান করুন। বর্তমানে বাংলাদেশের বেসরকারী মাদরাসাগুলোতে সবচেয়ে বেশী এতিমদের বরনপোষণসহ বিশুদ্ধ ইসলামী শিক্ষার আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছে। এসমস্ত এতিমদের সেবায় এগিয়ে আসতে পারলে দুটি লাভ হবে, প্রথমত উল্লেখিত হাদিসগুলোর উপর আমল হবে, দ্বিতীয়ত ইসলামী শিক্ষায় সহায়তার কারণে ঐ এতিম আলেমগণ মৃত্যু পর্যন্ত যে সমস্ত আমল করবে তার ছাওয়াবও পাওয়া যাবে। হাদিসে আছেঃ সৎকাজে সহযোগীতা ও পথ দেখানো সৎকাজ করার মতই সাওয়াব। জাযাকিল্লাহ খাইর আপু।
ভাইয়া সুন্দর পরামর্শ দিলেন মহান আল্লাহ আমাদেরকে তৌফিক দিন তার পছন্দনীয় কাজ করতে। আমিন
মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা উনি যেন আমাদের সকলকেই ইয়াতীম, মিসকিন, গরীব, বিধবাসহ অসহায় মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে যাওয়ার তৌফিক দান করেন।
মূল্যবান লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর আপু।
জাজাকিল্লাহু খাইর
একমাত্র ইসলাম ধর্মেই এমন মহানুভবতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রয়েছে। এখানে শূদ্র ক্ষত্রিয় ব্রাহ্মণ জাত অজাত ভেদাভেদ। এর চাইতে শ্রেষ্ঠ ধর্ম আর কি হতে, যেখানে ইসলামের শ্রেষ্ঠ মানুষটির পাশে থাকবে দূর দূর করে সবার থেকে তাড়িত ইয়াতিম মিসকিনরা।
বোন আমার, আল্লাহ্ আপনাকে এমন সুন্দর সুন্দর বিষয়গুলো শেয়ার করার প্রতিদান হিসেবে উত্তম কিছু দিয়ে সুখে সমৃদ্ধিতে আপনার জীবন ভরে দিক।
দেরি হয়ে গেলো!
আপনার দোয়ার সাথে আমিন আমিন আমিন ছুম্মা আমিন! আর আপনার জন্যেও অনুরুপ দোয়া!
মন্তব্য করতে লগইন করুন