ভাল বন্ধু হয়ে!! ( ধারাবাহিক গল্প ৭)
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ৩০ মার্চ, ২০১৫, ০৮:১০:১৪ রাত
দুর থেকেই ডাকতে থাকে রোকেয়ার স্বামী চাচী ও চাচী আমার বোইনে কই? কি হইছে আমার বোইনের? কে কি কইছে আমার বোইনেরে? চাচী কও না। পরশের মা চুপ করে থেকে বলে বাবারে তোমরা দুইজনে এত পাগল হইছো কেন আমার মেয়াটাকে নিয়ে? কথায় আছে মারলে হাত ধরা যায় কিন্তু বদনাম করলে কি মুখ ধরা যায়? আর তোমার বউয়ের বয়ষ আর আমার মেয়ের বয়ষ কি এক? রোকেয়ার স্বামী বলে চাচী আপনি শুধু নাম বলেন কে কি বলছে আমার বোইনেরে? আর কে আমার বোইনের চোখের পানি ঝরাইছে আমি তার জি্হব টেনে ছিড়ে ফেলবো। পরশ ভেতর থেকে বোরখা পরিধান করে ভাইয়াকে কিছু কথা বলতে আসে ভাইয়া তার আগে থেকেই বলতে থাকে পরশ আমার বোন, পরশ আমার ঘরে যাবে, পরশ আমার ঘরে থাকবে, আমার ঘরে খাবে, পরশ আমার ঘরে সবকিছু করবে কে কি বলবে সাহস থাকে তো আমার সামনে এসে বলুক।
পরশ রোকেয়া ভাবিকে লক্ষ করে বলে ভাবি আপনার ও ভাইয়ার সুন্দর ও ভালো ব্যবহারে আমি মুগ্ধ! আপনাদের আদর স্নেহের কাছে আমি ঋনি আমি ও আপনাদের উভয়কে খুবই শ্রদ্ধা ও সম্মান করি! তাই আপনাদেরকে অনুরোধ করবো কোন কারনে আমি আপনাদের ঘরে না গেলে আপনারা মনে কষ্ট নেবেন না। আপনাদের ঘরে যাবার জন্য কখনো আমাকে জোর করবেন না আমি নিজে থেকেই ইচ্ছা করে যাবো তবে আগের মত নয়! হঠাৎ হঠাৎ যাবো ইনশা-আল্লাহ। আপনারা আমার জন্য যা কিছু করেছেন আমি তো তার প্রতিদান দিতে পারবোনা আল্লাহই এর উত্তম প্রতিদান দেবেন। আপনারা সব সময় ভালো থাকেন আমি সব সময় সেই দোয়াই করবো!
রোকেয়ার স্বামী বেচারা বলে তুই না আমার বোন? তুই আমাকে বল কে তোকে কি বলেছে, আমি তার কাছে জানতে চাইবো আমরা তার কি ক্ষতি করেছি? কেন সে তোকে নিষেধ করেছে আমার ঘরে যেতে আমি তার কাছে জানতে চাইবো? পরশ চুপ করে থাকে! এবার রোকেয়া ভাবি পরশকে দুই কাঁধ ধরে ঝাঁকিয়ে জানতে চায় তুই চুপ করে থাকিস না আমাকে বল কে তোকে কি বলেছে? কেন তুই আমার ঘরে যাবিনা? তুই আমার ঘরে না গেলে আমি কার কাছে কোরআন শিখবো? কে আমাকে দেখাবে সত্যিকারের আলোর পথ? আমি তো তোর কাছ থেকেই আল্লাহ ও তার রাসূল (সঃ) এর সম্পর্কে জানতে পেরেছি এখন তুই না গেলে কে আমাকে জাহান্নাম থেকে বের করে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে? কে আমাকে ভুল পথ থেকে হাত ধরে সত্য পথে আনবে? তুই আমার ঘরে আসবি না আমি তা মানতেও পারবোনা।
পরশও কাঁদে কিন্তু পরশ কি বলবে জবাব খুজে পায়না। পরশ ভাইয়াকে বলে ভাইয়া আমি আপনাদের শ্রদ্ধা ও সম্মান করি আমি সব সময় সে সম্মান করে যাবো কিন্তু আপনারা দু'জনেই ধৈর্য করেন। আমি যখন আপনাদের ঘরে যেতম না তখন তো আপনারা ভালোই ছিলেন এখনো ভালো থাকবেন না গেলে। রোকেয়ার স্বামী বলে নারে বোন আগে তো এত ভালো ছিলাম না, আগে তোর ভাবি আমাকে বকা-ঝকা করতো আমি ও করতাম কিন্তু তুই তো আমার আপন বোন হয়ে আমাদের মাঝে এসেছিস তুই যাবার পর থেকে এখন আর সেসব ঝামেলা হয়না। তুই আসা-যাওয়ার করার পর থেকে তোর ভাবি নিয়মিত নামাজ পড়ে পর্দা ও করতে শুরু করেছে, কোরআন শিখতে চেষ্টা করছে সবকিছুই তো তুই আসা-যাওয়া করার পর থেকে করছে। এখন তুই যদি আমাদের ঘরে যাওয়া বন্ধ করিস তবে আবারো সেই ঝামেলা শুরু হবে। তুই যে আমাদের ঘরে আল্লাহর রহমত নিয়ে এসেছিস তুই আসাতে আমাদের ঘরে আল্লাহর দেয়া সুখ শান্তি ফিরে এসেছে। তুই সব সময় আমাদের পাশে থাকলে শয়তান আমাদেরকে আর ধোঁকা দিতে পারবেনা। আমি বড় ভাই হয়ে তোকে অনুরোধ করবো তুমি আগের মত আমাদের ঘরে আসবি, থাকবি, খাবি কেউ কিছু বললে আমি দেখবো।
চলছে.....চলবে।
বিষয়: বিবিধ
১৩১০ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসুন..........।
সময় করে আগের পর্বগুলো পড়ে নেয়ার অনুরোধ থাকলো, তাহলে পুরো বিষয়টা বোঝবেন আশা করি! উৎসাহ মূলক মন্তব্যের জন্য যাযাকুমুল্লাহ খাইরান!
শুকরিয়া!
আপু মাঝে মাঝে নানা কারনে গ্যাপ হয়ে যায় ইনশা-আল্লাহ সচেষ্ট হবো নিয়মিত লিখতে! দোয়া করবেন আমার জন্য! আপনার জন্যেও দোয়া রইলো!
এ অনেক বড় মহান এবং কঠিন কাজ, বিবদমান দুটি বিপরীতমুখী, ঝগড়াপ্রবণ মানুষ কে শান্তি পূর্ন সহাবস্থানে নিয়ে আসা, যা পরশদের মত লোকেরাই প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছে, যে জাযা পাওয়ার তাগিদে এমন মহান কাজ করছে, আল্লাহ্ তাদের তা পরিপূর্নরুপে দান করুন। আমিন।
ভাইয়া সুন্দর মন্তব্য দিয়ে সঠিক কথাই বলেছেন! আমাদের মাঝে এখনো কিছু ভালো মানুষ আছে বলেই আল্লাহ পৃথিবীকে এখনো টিকিয়ে রেখেছেন! আল্লাহ সর্ব পৃথিবীকে শান্তিময় করুন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন