একটি চিঠি তারপর আনন্দের ঢেউ মনে!!
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২৮ মার্চ, ২০১৫, ০৯:১৯:৫৯ রাত
পৃথিবীতে কেউ প্রেম করে বিয়ে করে আর কেউ বিয়ে করে প্রেম করে! আমার কাছে বিয়ের আগে লুকোচুরি না করে বিয়ে করে সরাসরি প্রেম করাই ভালো মনে হয়! মহান আল্লাহ এত সুন্দর রীতি-নীতি নির্ধারণ করার পরও কেন যে মানুষ সে সুন্দর পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে কবিরাহ গুনাহে লিপ্ত হয় আমার বুঝে আসেনা! নবীর সুন্নত মোতাবেক বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পর স্বামী-স্ত্রী হয়! একে অন্যের উপর অধিকার লাভ করে কতটা সুন্দর আল্লাহর বিধান সুবহানাল্লাহ! তখন গুনাহের ভয় থাকে না, থাকেনা লোকলজ্জার ভয়ও! কিন্তু আজকালকার ছেলে-মেয়েরা কি যে বুঝে আমি বলতে পারবোনা বাপু! আমার কাছে আল্লাহর বিধানটিই খুব ভালোলাগে! কোন গুনাহের ভয় নেই,লজ্জার ভয় নেই একেবারে সরাসরি আল্লাহ ও তার প্রিয় হাবীব (সঃ) এর সুন্নত পালন করে বিয়ে যেন সরাসরি আল্লাহর নবী (সঃ) র সার্টিফিকেট পাওয়ার মত! আমাদের বিয়েটাও হয়েছিলো আম্মু-আব্বু ও আত্মীয় স্বজনের সম্মতিতে! এবং বিয়ে সম্পন্ন হয়েছিলো নবী (সঃ) এর সুন্নতী পন্থায়! আমার বিয়ের মোহরানা দিয়েই বিয়ে সংঘটিত হয় আলহামদুলিল্লাহ! আমরা আল্লাহর ইচ্ছায় খুবই সুখে শান্তিতে আছি! মহান আল্লাহ আমাদেরকে সঠিক বুঝ দিয়ে সে পথেই পরিচালিত করুন সবসময়!
মেরেজ ডে বা বিয়ে বার্ষিকী আমরা পালন করিনা কারন আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) এমনটি করতেন না! এসব বিয়ে বার্ষিকীতে কেক কাঁটা আমাদের রসম নয় হিন্দু বা খ্রীষ্টানীয় রসম! তবে আমাদের প্রিয় নবী (সঃ) আমাদের শিক্ষা দিয়েছেন হাদীয়া (উপহার) লেন-দেন করো ভালোবাসা স্থাপিত হবে! এই কথার পেক্ষীতে আমরা একে অপরকে হাদিয়া দিতে ও নিতে পারি তবে দিন, তারিখ ধার্য করে নয়! যে কোন সময়ই একজন একজনকে উপহার বা হাদিয়া দেয়া যায়! উপহার পেতে কে না ভালোবাসে? সবাই উপহার পেতে ভালোবাসে! কেউ কেউ দিতেও ভালোবাসে! আমি পাওয়ার চেয়ে দিতে ভালোবাসি! তবে সব সময় দামী জিনিস দিতে পারিনা বলে মনে অনেক কষ্ট পাই!
মহানবী (সা.) ফুল ভালোবাসতেন! তিরমিজির একটি হাদিস থেকে ফুল উপহার দেয়ার বিষয়ে মহানবী (সঃ) এর পছন্দের কথা জানা যায়! তবে যাকে তাকে বা যেন-তেন উদ্দেশ্যে নয়! অবৈধ উদ্দেশ্য এবং নিয়তে কাউকে ফুল দেয়াও অবৈধ! পক্ষান্তরে বৈধ সম্পর্কের কাউকে সুন্দর নিয়ত বা উদ্দেশ্যে ফুল উপহার দিলে সে উপহার বয়ে আনবে পুণ্য। হযরত উসমান আন-নাহদি (রাযি) বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন- যদি কাউকে ফুল উপহার দেয়া হয়, সে যেন তা ফিরিয়ে না দেয়। কেননা তা জান্নাত থেকে আনিত। রাসূল (সা.) এর অভ্যাস ছিল- কেউ তাকে ফুল উপহার দিলে তিনি তা ফিরিয়ে দিতেন না। (সহিহ বোখারী)
এরপর আসে সামর্থ থাকলে কেউ স্বর্ন জাতীয় উপহার দিতে পারে! তবে সেটা হতে হবে আন্তরিক ভাবে দেয়া উপহার! তাতে পাওয়ার আনন্দ অটুট থাকলো! আর যে দিলো সে ও খুশি মনে দিলো! পক্ষান্তরে আত্মীয়-স্বজন থেকে বা স্বামী থেকে স্ত্রী, বা কেউ জোর পূর্বক কিছু আদায় করে নিলো সেটা আর উপহার থাকেনা সেখানে প্রকৃত আনন্দ ও বিরাজ করেনা! আমার ও পছন্দ হলো তরতাজা সু-গন্ধী যুক্ত ফুল যে ফুলের সু-ঘ্রান মনের মাঝে সজীব ভালোবাসার উদয় করে! আর সাথে পছন্দ হলো আমার প্রিয় প্রিয় মানুষদের থেকে খুব সামান্য মূল্যের হলেও ছোট ছোট উপহার পাওয়া!
আর প্রিয়তম স্বামীর কাছ থেকে জোর করে নয় তার আন্তরিতায় পাওয়া ছোট্ট উপহার যা একটি ফুল-ই হোক না কেন বা তার হাতের লেখা কোন লেখাই হোক না কেন তাতে আমার মন ভরে যায়! আমি তৃপ্ততা বোধ করি আমার অন্তরের গভীরে! তেমনী এইবার আমার প্রানপ্রিয় স্বামীর কাছ থেকে পেয়েছি একটি উপহার! কিন্তু সেই উপহার আমার কাছে খুবই মূল্যবান! পৃথিবীর কোন কিছু দিয়েই সেই উপহারের তুলনা হবেনা! অলংকারই শুধু দামী নয় প্রিয়জনের উপহার ও দামী হয়! আর এর সাথে পেয়েছি ছোট ছোট ভাইবোনদের থেকে ছোট ছোট মেসেজ যা আমার ও আমার স্বামীর মনকে খুবই পুলকিত করেছে!
অনেক সময় খুব দামী কিছু দিয়েও মানুষের মনকে খুশি করা যায়না আবার ক্ষনেতে স্বল্প মূল্যের বস্তু পেয়েও মানুষের আত্মা প্রশান্তি লাভ করে! আরো পেয়েছি প্রতিবেশী ভাবীর কাছ থেকে একটি স্বর্নের আংটি! বর্তমানে আত্মীয়-স্বজন থেকে দুরে থাকি বলেই হয়তো বেশী অসহায় বোধ করি আর এই জন্যই কারো মেসেজ পেলে মন আনন্দে ভরে ওঠে! এই প্রবাস জীবনে যে বা যারাই আমাকে ও আমার পরিবারকে মনে করেছে ছোট্ট ছোট্ট উপহার দিয়ে বা মোবাইল থেকে একটি মেসেজ দিয়ে বা মূল্যবান জিনিস দিয়ে মহান আল্লাহ তাদেরকে ও সবচেয়ে মূল্যবান বস্তু দিয়ে খুশি করেন! আর সেটা যেন হয় পৃথিবীর সব বস্তু থেকে দামী ও মূল্যবান! এই মেরেজ ডে তে প্রিয়তম স্বামীর একটি চিঠি আমাকে খুবই আনন্দিত করেছে! আর আমি সেই আনন্দ একাকি রাখতে পারছিনা সকলের মাঝে ছড়িয়ে দিতে চাই আমার বুক ভরা আনন্দের স্রোতকে সকলের অন্তরে!
প্রিয় লায়লা,
জীবনের পরিপূর্ণ সময়ে আমার ভালবাসার সেটুকু নিও, যেটুকু একজন বন্ধুর জন্য, একজন প্রেমিকার জন্য, একজন স্ত্রীর জন্য, একজন জীবন সঙ্গিনীর জন্য নির্ধারিত।
ইতি
তোমার নুসাইবাহ-নুসাইরার বাবা।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৮ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আগে ফাষ্টু হই, না হলে গাজী কিন্তু এসে যাবে। মন্তব্য পরে আসছে...........
অল্পের জন্য মিস হয়ে গেল!!
তবু ১নং মন্তব্যের ঘরেই জায়গা করে নিলাম
এমন প্রাপ্তি কেবল ভাগ্যবতীদের ভাগ্যেই জোটে।
খুব ভালো লাগল।
ধন্যবাদ।
আপনাদের দুজনের জন্য অশেষ দোআ, শুভেচ্ছা আর শুভকামনা রইলো! জাযাকিল্লাহু খাইর!
সুন্দর মন্তব্য রেখে যাবার জন্য আপনাকে যাযাকুমুল্লাহ!
আপনাদের জন্য দোয়া ও শুভেচ্ছা রইলো।
শুকরিয়া আপনার প্রিয় আপুমনি! আপনার দোয়ার সাথে আমিন!
আসলেই স্ত্রীকে তোষামোদী না করলে সংসারে শান্তি আসে না তা যতই শরীয়ত বিরোধী হোক না কেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন