আত্মার খোরাক (৬)
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২৩ মার্চ, ২০১৫, ০৭:১৫:৫২ সন্ধ্যা
আমরা এই হাদীস গুলো পড়ে জেনে নেই কিসে আমাদের লাভ আর কিসে আমাদের ক্ষতি! আরো জেনে নিন কন্যা সন্তান পালন করলে কি পুরষ্কার লাভ করবেন?
হাদীসঃ-
হযরত আবু হুরয়রা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, একদা নবী (সঃ) কে প্রশ্ন করা হলো যে, মহিলাদের মধ্যে কোন মহিলাটি সবচেয়ে উত্তম? হুযুর (সঃ) বললেনঃ ঐমহিলাটি, যার দিকে দৃষ্টি করে স্বামী আনন্দ পায়, যাকে কোন হুকুম করলে সে তা মান্য করে এবং স্বামীর মন মত নয়- এমন কোন কাজ সে নিজের কিংবা সহায়-সম্পদের ব্যাপারে করেনা।"
(নাসাই)
হযরত ছাওবান (রাযিঃ) বলেন, আমরা নবী (সঃ) এর সাথে সফরে ছিলাম, এমতাবস্থায় নিম্নলিখিত আয়াত অবতীর্ণ হয়ঃ
"আর যারা স্বর্ণ-রৌপ্য জমা করে রাখে"...........(কোরআন) আমাদের কেউ কেউ বলল, এ আয়াত তো স্বর্ণ-রৌপ্য সম্পর্কে অবতীর্ণ হলো। (সুতরাং তা জমা করা যাবেনা) আমরা যদি জানতে পারতাম কোন মাল সবচেয়ে উত্তম, তাহলে তা আমরা সংগ্রহ করে রেখে দিতাম। হুজুর (সঃ) বললেনঃ সবচেয়ে উত্তম সম্পদ হলো, আল্লাহর যিকিররত জিহবা, আল্লাহর নেয়ামতে কৃতজ্ঞতায় পরিপূর্ণ অন্তর এবং ঈমানদার বিবি, যে দ্বীনের কাজে স্বামীকে সাহায্য করে।"
(তিরমিযী)
হযরত আবু মাসউদ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সঃ) বলেছেনঃ পরোকালের ছওয়াবের নিয়্যতে যখন কোন ব্যক্তি আপন পরিবার-পরিজনের জন্য প্রয়োজনে ব্যয় করে, তখন তা তার জন্য সদকা স্বরুপ হয়।" (অর্থ্যাৎ আল্লাহর রাস্তায় সদকা বা দান করে যেভাবে মানুষ ছওয়াবের অধিকারী হয়, উপরোক্ত ব্যক্তিও নেক নিয়্যতের ফলে আপনজনের প্রয়োজনে ব্যয় করেও অনুরুপ ছওয়াবের অধিকারী হবে।)
(বুখারী মুসলিম)
হযরত আয়েশা (রাযিঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা একজন বিপন্ন মহিলা তার দুটি কন্যা সন্তানসহ আমার কাছে কিছু পাওয়ার আশায় এসেছিলো। কিন্তু আমার কাছে তখন একটি খোরমা ব্যতীত অন্য কোন খাদ্য বস্তু ছিলোনা। আমি তাই তাকে দিলাম। মহিলাটি খোরমাটি দু'ভাগ করে দুই কন্যাকে দিলো এবং নিজে কিছুই খেলোনা। অতঃপর সে চলে যাওয়ার পর পরই নবী (সঃ) ঘরে প্রবেশ করলেন এবং আমি তাকে ঘটনা-টি আদ্যপান্ত বললাম হুজুর (সঃ) শুনে বললেনঃ যাকে আল্লাহ এধরনের কন্যা সন্তান দ্বারা পরীক্ষায় ফেলেছে, অতঃপর সে কন্যাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করে। (কিয়ামতে) কন্যাই তার জন্য জাহান্নামের ঢাল স্বরুপ হবে।"
(বুখারী, মুসলিম)
ব্যাখ্যাঃ- মানুষ সাধারণভাবে পুত্র সন্তানদেরকে কন্যা সন্তানদের উপর প্রাধান্য দিয়ে থাকে। কেননা কন্যা সন্তানরা বিবাহের পর স্বামীর বাড়ীতে চলে যাবে। অতঃপর তার দ্বারা পিতা-মাতার এবং তাদের সংসারের বিশেষ কোন উপকার হবেনা। ফলে কন্যা সন্তানদের ব্যয়ভারকে একটি অপ্রয়োজনীয় বোঝা বলে মনে করা হয়। উপরে উল্লেখিত হাদীসটিতে পিতা-মাতার উক্ত মনোভাবকে ইঙ্গিতে গর্হিত বলা হয়েছে এবং কন্যা সন্তানদের ব্যয়ভারকে একটি মহৎ কাজ বলে আখ্যা দেয়া হয়েছে। এমন কি, সন্তুষ্ট চিত্তে কন্যা সন্তানদের ব্যয়ভার করাকে জাহান্নাম হতে নাজাতের কারন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বর্ণিত হাদীটির মাধ্যমে আমরা একটি বিষয়ের সন্ধান পাই। তা এই যে, কখনো দো-জাহানের সর্দার হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর ঘরে একটি খোরমার বেশী কিছু থাকতো না। আবার সে ক্ষেত্রেও ক্ষুধার্থ ব্যক্তির প্রয়োজনে ঐ একটিমাত্র খোরমাও দান করে দিতে আদৌও কুন্ঠাবোধ করা হতো না।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৩ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আলহামদুলিল্লাহ্। আমার পাঁচ বোন। আমার বা মা কতই না সৌভাগ্যবান।
সত্যি মায়েরা কেন হয়য়, কিভাবে পারে, কতটা ধৈর্যের গোলা হলে সন্তানের ব্যপারে এতো সয়ে যেতে পারেন!!! ক্ষুধা থাকা সত্ত্বেও নিজে না খেয়ে সন্তান কে আগে খাওয়ান, তারপর যতসামান্য যা থাকে, তা নিজে খান নয়ত উপবাস থাকেন।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে। এমন অত্যন্ত একটা পোস্ট করার জন্য।
হে ভাইয়া! আপনার মন্তব্য পড়ে খুবই ভালো লাগলো! আসলেই তাই!
মন্তব্য আসছে.........
ভাই আবু জান্নাত!
লিখাটির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ, জাযাকিল্লাহু খাইর।
যে ইসলাম আমাদেরকে সঠিক পথ চিনিয়েছে, যে ইসলাম আমাদের অধিকার আদায় করেছে, যে ইসলাম আমাদেরকে সম্মানের আসনে বসিয়েছে, যে ইসলাম আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে পরিপাটি করেছে, যে ইসলাম আমাদের অগ্রে-প্রশ্চাত্তে সবসময় আলোর বর্তিকা ছড়িয়েছে আজকের তরুন সমাজ তাকেই পায়ে দোলে চলছে এতে কি আমাদের সুখ শান্তি আসবে? নাকি আমরা ভেসে যাবো অজ্ঞতার সাগরে, মানব সভ্যতার খাতিরে ইসলাম আমাদেরকে অনেক কিছু দিলেও আমরা তার থেকে কিছুই নিতে পারিনি, শুধু অবহেলা আর অবজ্ঞা করেছি সবাই! এবার দেখি ছোট ছোট হাদীস পড়ে পড়ে কোন জ্ঞানের উদয় হয় কিনা! আল্লাহ আমাকে সহ সবাইকে সহীহ বুঝ দান করুন আর তার সহজ সরল পথে চালিয়ে নিন যেন আখেরাত সহজ হয় আমাদের জন্য!
আমিন ছুম্মা আমিন!
সুন্দর একটি হাদীস দিয়ে মন্তব্য করেছেন এই হাদীসটি তিরমিযীর! আপনার মন্তব্য পড়ে খুবই ভালো লাগলো আল্লাহ এই উছিলায় আপনার গুনাহ গুলো ক্ষমা করে নেকী গুলো বাড়িয়ে দিন! আপনার সর্বাঙ্গীন কল্যাণ কামনা করছি! দোয়া করবেন যেন সুন্নতের পাবন্দি করতে পারি! আপনার জন্যেও অনুরুপ দোয়া!
হাদীসে বলা হয়েছে - যার ৩ টি কন্যা আছে এবং উত্তম রূপে লালন পালন করে তার জন্যে জান্নাত,একজন বলল যার ২ টি রয়েছে ? তিনি(সাঃ)তার জন্যেও..আবার বলা হল যার ১টি রয়েছে?..তিনি(সাঃ)বললেন হা তার জন্যেও...।
জাজাকাল্লাহ খায়রান।
আমিন ছুম্মা আমিন!
মন্তব্য করতে লগইন করুন