Rose Rose হে প্রিয় ভাই ও বোন আপনাকেই বলছি (ক)! Rose Rose

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২০ মার্চ, ২০১৫, ০৭:২১:০৬ সন্ধ্যা

হে ভাই ও বোন আপনাকেই বলছি (ক)!

সংসার সাজাতে-গুছাতে স্বামী ও স্ত্রীর ভূমিকা অপরিসীম- ইসলামের আলোকে বিয়ের মাধ্যমেই একজন ছেলে ও একজন মেয়ের সাংসারিক বন্ধনের সূত্রপাত ঘটে। বিয়ের ক্ষেত্রে ছেলেরা মেয়েদের হরেক রকম গুনের খোঁজ করে। ভাইয়ারা ভাবে রুপে ও সকল গুণে গুনাণ্বিতা মেয়ে পেলেই বিয়ে করি। কিন্তু তা কি আর সম্ভব? তাই বিবাহের পূর্বে কণে নির্বাচনের সময় পাত্রকে ধরে নিতে হবে যে, একজন কণের সর্বগুণ এক সাথে পাওয়া সম্ভব নয়। পৃথিবীর এক এক মেয়ে এক এক গুনে গুনান্বিতা। পাত্রীর কোন গুণটিকে পাত্র অগ্রাধিকার দেবেন, সে দ্বায়িত্ব তার নিজের

পাত্রী নির্বাচনের বিষয়ে কতিপয় হাদীসঃ-হযরত আবু হোরায়রা (রাঃ) হতে বর্নিত একটি হাদীসে আমরা পাই, নবী করীম (সাঃ) বলেছেন“মেয়েদেরকে সাধারনত চারটি বিষয় দেখে বিয়ে করা হয়। তার সম্পদ দেখে, বংশ মর্যাদা দেখে, রুপ-সৌন্দর্য দেখে এবং তার দ্বীনদারী দেখে। তবে তোমরা দ্বীনদারী মেয়ে লাভ করার চেষ্টা কর, তোমাদের কল্যান হবে।”(বুখারী, মুসলিম)

আমরা বুঝে নিলাম স্বামী বেচারা অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং বিচক্ষন, তাই তিনি দেখে শুনে দ্বীনদারী মেয়েকেই স্ত্রী হিসাবে গ্রহন করলেন। এখন আপনার সংসারে নববধুর ভূমিকা এবং দায়-দায়িত্ব কি হবে তা স্বামীর উপরেই নির্ভর করবে। নববধু মেয়েটি তার প্রিয় মা-বাবা,ভাই-বোন,আত্মীয়-স্বজন,বন্ধু-বান্ধবী,পাড়া প্রতিবেশী সমস্ত পরিচিত জনদের ছেড়ে,সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে এসেছে। এখানে সবাই নতুন। আর এই নতুন মানুষদের মাঝে স্বামীর সংসার করতে তার কিছুটা বেমানান লাগবে বৈকি। এই বেমানানকে মানাতে স্বামীর সহযোগীতাই স্ত্রীর জন্যে যথেষ্ট!

এর বিপরীত স্ত্রীর কাছ থেকে সাংসারিক কাজকর্মে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন মা খালা বা চাচীর মত পারদর্শিতা আশা করা বোকামি। নববধুকে নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে নেবার সুযোগ দিতে হবে। সাংসারিক সব কাজ শেখার প্রয়োজনীয় সময় দিতে হবে। প্রথমে তাকে বুঝতে হবে স্বামী নামক ব্যক্তিকে এবং তাকে এসবে পূর্ণ সুযোগ দিতে হবে। স্বামীকে বুঝতে হবে স্ত্রীর মন-মানষিকতা,মেজাজ এরপর স্ত্রীর উপর কি কি দায়িত্ব আছে তা বুঝিয়ে দিতে হবে। যে কোন মানুষের উপরই জোর করে কোন বোঝা চাপিয়ে দেয়া ঠিক নয় এতে করে চাওয়ার বিপরীত হয় সবকিছু। আর একজন নতুন মানুষকে প্রথমে বুঝতে হবে, সুযোগ দিতে হবে, স্বামীসহ স্বামী পরিবারের সবার উচিৎ হবে নতুন মেয়েটিকে প্রথমে আপন করে নেয়া। এরপর তার কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করার নয়তো তীরে এসেই তরী ডোবার মতই অবস্থা হবে। আর এইসকল ক্ষেত্রে স্বামীকেই বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।

সূরা বাক্বারার ২২৮ নম্বর আয়াতে আছেঃ-"পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েচে পুরুষদের উপর নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে।"আল্লাহ হচ্ছেন মহাপরাক্রমশালী, বিজ্ঞ। তাই নারীদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করেছেন। তাই বলে নারীরা একেবারেই অবহেলার পাত্রী হবে তা তো নয়। তার পছন্দ-অপছন্দ, ভালো-মন্দ, চাওয়া-পাওয়ার মূল্যায়ন তো করতেই হবে। নারী,সেও তো একজন মানুষ,মানবিক অধিকার গুলো অবশ্যই তার কাম্য। আর বিজ্ঞ স্বামী হিসাবে আপনার ভূমিকা ও দায়-দায়িত্ব কি হবে,তা স্বামীকে অবশ্যই বুঝতে হবে।

সংসারকে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করার সমস্ত দায়-দায়িত্ব যদি নববধুর উপর চাপিয়ে দেয়া হয়, তবে তা কি ইনসাফ হয়? বিজ্ঞ স্বামী, সকালে ঘুম থেকে উঠে হাত-মুখ ধুয়ে বা গোসল করে,নাস্তা শেষে চলে গেলেন অফিসে বা আপন কর্মক্ষেত্রে। ফিরে এলেন রাত বারোটা,একটায়। নববধুকে পরিবার থেকে সহযোগীতার পরিবর্তে খোঁচা মারা কথা শুনতে হলো সারাদিন অনেক পরিবারে ঘটে যেমনঃ বাপের বাড়ি থেকে কাজ শিখে আসেনি? কিভাবে চলতে হবে, কিভাবে বলতে হবে মা শিখিয়ে দেয়নি? ইত্যাদি তখন সে সারাদিন ঘরে একা একা কি করবেন? ধার্মীক নববধু হলে হয়তো নতুন সংসারের টুকটাক কাজ কর্ম সেরে বসে বসে নামাজ পড়লেন। আর দোয়া-দুরুদ পড়ে পড়ে কান্নাকাটি করলেন।

এভাবে কয়দিন চলবে? নিঃসঙ্গ,একাকী থাকতে থাকতে একদিন নববধু হয়ে যাবেন মানষিকভাবে ভারসাম্যহীন,পাগল,তখন স্বামীর সংসারকে সুন্দর আর সুষমামন্ডিত করবে কে? স্বামী পরিবার থেকে আসা কটূবাক্য স্ত্রীকে সবকিছু আপন করে নেয়ার পরিবর্তে দুরে সরিয়ে দেয়।বিজ্ঞ স্বামী স্ত্রীর মন খারাপ আর কান্নাকাটি দেখে ভাবলেন, থাক কিছুদিন অফিসে যাব না বা কিছুদিন ছুটি কাটাই। এই ভেবে দুই-তিন মাস একাধারে বাসায় বসে রইলেন। এতে আপনার চাকরীটা যাই যাই করবে, বা চলেই যাবে। আর ব্যবসায়ী হলে কোন কথাই নেই ব্যবসার লাল বাতি জ্বলবে সহসাই। এসব না করে একজন বিজ্ঞ স্বামীর উচিৎ হবে স্ত্রীকে সংসারের সবার মন-মানষিকতা, কার কি পছন্দ,কার কেমন স্বভাব তা জানিয়ে দেয়া এবং পরিবারের সবাইকে এ বিষয়ে বুঝানো যে,সে নতুন তাকে সব ধরণের সহযোগীতার হাতকে বাড়িয়ে দিতে বলা। স্বামীর উদরতা ও পরিবার থেকে সহযোগীতা একজন নববধূকে সংসারি হতে খুবই সাহায্য করে এবং মনে উৎসাহ যোগায় সংসারকে সুন্দর ও পরিপাটি করে সাজাতে। আর উভয় পক্ষের সহযোগীতাই একটি পরিবারকে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে রাখে সব সময়।

স্বামীকে হতে হবে দৈহিক ও মানষিকভাবে সুস্থ্য এবং স্বাভাবিক। কাজও করবেন,স্ত্রীকেও সময় দিবেন। ছুটির দিন গুলোতে ঘরে বিশেষ কোন কাজ না থাকলে বেড়িয়ে পরতে পারেন মনোরম সুন্দর আকর্ষনীয় কোন স্থানে কিংবা যেতে পারেন কোন বন্ধু-বান্ধবের বাসায়। এতে মনও প্রফুল্ল হবে,সামাজিকতাও রক্ষা পাবে। আর আপনার স্ত্রীর চোখে আপনি হবেন অল রাউন্ডার। কোন বিষয়েই অযথা অজুহাত দেখাবেন না যে,সময় নেই,ব্যস্ততা আছে,কারণ যে রাঁধতে জানে, সে চুলও বাঁধতে জানে। যে পারে সবই পারে,আর যে পারে না সে কিছুই পারে না। যদি বাস্তবিকই আপনার ব্যস্ততা থাকে তবে স্ত্রীকে বুঝিয়ে বলুন আপনার ব্যস্ততার গুরুত্ব তবে সে নিজ থেকেই আপনার কাজে সহযোগীতা করবে।

সূরা আন নিসার প্রথম আয়াতে আছেঃ-“হে মানব সমাজ! তোমরা তোমাদের পালনকর্তাকে ভয় কর। যিনি তোমাদেরকে এক ব্যক্তি থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তার থেকে তার সঙ্গীনীকে সৃষ্টি করেছেন। আর বিস্তার করেছেন তাদের দু’জন থেকে অগনিত পুরুষ ও নারী।”আল্লাহ প্রথমে হযরত আদম (আঃ) কে সৃষ্টি করলেন,তারপর সৃষ্টি করেন বিবি হাওয়া (আঃ) কে। তাই নবী করীম (সাঃ) এরশাদ করেন “নারীকে বাঁকা হাঁড় হতে তৈরী করা হয়েছে যদি সোজা কর ভেঙ্গে যাবে। এজন্য ভালোবাসার আচরণ কর,তাহলে জীবন নির্বাহ হবে।”

(ইবনে হিরান)

সূরা রুম-এর ২১ নম্বর আয়াতে আছেঃ-“আল্লাহ তা’আলার একটি বড় নিদর্শন হল, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন। যেন তোমরা তাদের কাছে গিয়ে আরাম বোধ কর। অধিকন্তু, তিনি উভয়ের মাঝে সৃষ্টি করেছেন ভালবাসা ও সহমর্মিতা।”স্ত্রী এবং স্বামী উভয়েরই কখনও কারো মনে কষ্ট দেয়া উচিৎ নয়। এ সম্পর্কে একটি হাদীস উল্লেখ করা যায়। সাহাবী হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত,রাসূল (সাঃ) এরশাদ করেন,“যখন কোন মহিলা তার স্বামীকে কষ্ট দেয়,তখন আল্লাহ তা’লার পক্ষ থেকে স্বামীদের স্ত্রীরুপে নির্ধারিত বেহেশতের ডাগরচোখা রমনীগণ দুনিয়ার স্ত্রীদেরকে লক্ষ করে বলতে থাকে,তুমি একে কষ্ট দিও না,কারণ এতো তোমাদের কাছে কয়েকদিনের মেহমান মাত্র এবং খুব শীঘ্রই সে তোমাদের ছেড়ে আমাদের কাছে চলে আসবে।”

নবী করীম (সাঃ) ছিলেন পৃথিবীর সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ স্বামী। সর্বশ্রেষ্ঠ পিতা ও সর্ব শ্রেষ্ঠ শিক্ষক। তিনি তাঁর স্ত্রীদের সাথে অত্যন্ত ভালো ও নম্র ব্যবহার করতেন। এ সম্পর্কে রাসূলে করীম (সাঃ) বলেছেন,“তোমাদের মধ্যে সর্বাধিক ভালো মানুষ তারাই যারা তাদের স্ত্রীদের সাথে ভাল ব্যবহার করে। আর আমি তোমাদের মধ্যে আমার স্ত্রীদের সাথে সবচেয়ে ভালো আচরণকারী।”

সূরা বাক্বারার ১৮৭ নম্বর আয়াতে আছেঃ-“তারা তোমাদের জন্য পোশাক এবং তোমরাও তাদের জন্য পোশাক।”অর্থাৎ স্ত্রীরা স্বামীদের ভুষণ এবং স্বামীরাও স্ত্রীদের ভূষণ। একে অন্যের পরিপূরক। প্রবাদ বাক্যে আছে‘মিলে মিশে করি কাজ,হারি-জিতি নাহি লাজ’। সংসারের যে কোন কর্মকান্ডে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকেই দু’জনার মতামতের মূল্য দিতে হবে। নারীদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে, তাই শ্রেষ্ঠ স্বামী যদি জোর পূর্বক তার মতামত বা সিদ্ধান্তকে অসহায় স্ত্রীর উপর চাপিয়ে দেন,তবে স্ত্রী বেচারী তো ধীরে ধীরে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়বে,তাই নয় কি? একজন অসুস্থ স্ত্রী কি তখন গড়তে পারবেন মনের মতো সুন্দর ভালোবাসার সংসার? তাই স্ত্রীকে সুস্থ রাখারদায়-দায়িত্ব বিজ্ঞ স্বামীরই।

রাসূলে আকরাম (সাঃ) এরশাদ করেনঃ-“স্ত্রীর উপর হঠাৎ অসন্তুষ্ট হয়ো না,যদি তার একটি স্বভাব অপছন্দ হয়,তবে অন্যটি পছন্দনীয় হবে।”(মুসলিম)

রাসূলে করীম (সাঃ) আরো এরশাদ করেনঃ-“নেককার স্ত্রী-যে স্ত্রী ঈমানের সাহায্যকারী, সে একজন মুসলমানের জন্য পরম সম্পদ।”স্ত্রী যদি নেককার হয়,তবে সে অবশ্যই বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন হবে। সেক্ষেত্রে স্ত্রীর কোন আচরণ,ব্যবহার বা কাজ যদি স্বামীর পছন্দ না হয়,তবে বিজ্ঞ স্বামী রাগারাগি না করে স্ত্রীকে বুঝিয়ে বললেই পারেন,ভালো ব্যবহার আর আদরে তো বনের পশুও পোষ মেনে যায়। আর স্ত্রীতো রক্ত মাংসের গড়া মানুষ।

রাসূলে আকরাম (সাঃ) এরশাদ করেনঃ-"কোন মু'মিন ব্যক্তির জন্য পরহেজগারীর পর নেককার স্ত্রী অপেক্ষা উত্তম কোন সম্পদ নেই। নেক ও পূন্যবতী স্ত্রীর লক্ষন গুলো হলোঃ- (১) যখন তাকে কোন নির্দেশ দেয়া হয়,তা সে পালন করে।

(২) স্বামী যখন তার মুখের দিকে তাকায়, তখন সে স্বামীকে আনন্দ দান করে।

(৩) যদি তাকে কোন শপথ দেয়া হয়, তবে সে তা পূরণ করে।

(৪) স্বামী যদি কখনও বিদেশে চলে যায়, তবে স্বামীর অনুপস্থিতে সে নিজের সতীত্ব ও স্বামীর ধন-সম্পদ রক্ষা করে।" (ইবনে মাজা)

সারল্যতা নারীর সৌন্দর্য, নারীরা হবে- সহজ, সরল এটাই স্বাভাবিক। আর নারীর এই সারল্যতা স্বভাবকে সু-সজ্জিত করতে সহায়তা করতে হবে স্বামীকেই অযথা এবং অকারণে স্ত্রীদের সন্দেহ করা উচিৎ নয়। সঠিক জিনিস না জেনে শুধু মাত্র সন্দেহ বা অনুমানের উপর ভিত্তি করে স্ত্রীর সাথে খারাপ আচরণ করা অমানবিক। এ সম্পর্কে সূরা নূর-এর ২৩ নম্বর আয়াতে আছেঃ-“যারা সতী-সাধধী,সরলমনা ও বিশ্বাসী নারীদের প্রতি অপবাদ আরোপ করে,তারা দুনিয়া ও আখেরাতে অভিশপ্ত। এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি।”

অনেক স্বামী আছেন যারা স্ত্রীকে মেরে ধরে নিজের কতৃত্ব জাহির করতে চায়। অবলা অসহায় স্ত্রীকে মেরে এরা অনুতপ্ত তো হয়ইনা বরঞ্চ ভাবে, এটা তাদের ক্ষমতা ও বাহাদুরীর বহিঃপ্রকাশ এবং স্ত্রীর উপর স্বামীত্ব ফলানো। অকারণে বা সামান্য কারণে স্ত্রীর গায়ে হাত তোলা জঘন্য অপরাধ। আবার অনেক স্বামী আছেন যারা হাতে না মারলেও কথায় মারে যেটা কিনা হাতে মারার চেয়েও বেশী হয়। আবার অনেকে এমন আছেন যে,স্ত্রীর বলা যে কোন কথাই বাহিরের লোকদের কাছে বলে বেড়ায় তিনি ভাবেন না এতে করে তার স্ত্রীর মান-সম্মানের কতটা হানি ঘটবে। আর এই স্বভাবগুলো স্বামীর অত্যন্ত নীচু স্বভাবের পরিচয় বহন করে। কথায় আছে;‘দরবারে জিততে না পারলে ঘরে এসে বউ কিলায়’। স্ত্রীর সাথে এমনটি করবেন না।

হযরত আয়েশা (রাঃ) বলেনঃ-“প্রিয় নবী (সাঃ) সারা জীবনে কখনই কোন স্ত্রীর গায়ে হাত তোলেননি। এবং যখনই তিনি ঘরে প্রবেশ করতেন, তাঁর মুখশ্রী থাকতো ইষৎ হাস্যভায় স্নিগ্ধময়।”

সূরা নিসার ৩৪ নং আয়াতে আছেঃ-“পুরুষরা নারীদের উপর কৃতৃত্বশীল এজন্য যে,আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। এবং এজন্য যে,তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সেমতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগত এবং আল্লাহ যা হেফাযত যোগ্য করে দিয়েছেন লোকচক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে।”

একজন সৎ ও আদর্শবান স্ত্রীকে অবশ্যই তার স্বামীর সব কথা মেনে চলতে হবে। অবশ্য তা যদি ইসলাম বিরোধী না হয়। কারণ আল্লাহ এবং রাসূলের আদেশ নিষেধ পালন,নারী-পুরুষ, স্বামী-স্ত্রী,নির্বিশেষে সকলেরই প্রথম এবং প্রধান কর্তব্য। স্ত্রীর কাছে স্বামীর মূল্য অনেক অনেক বেশী। তবে আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের সম্মান ও মূল্যের চেয়ে বেশী নয়। নারীর হেফাযত যোগ্য সম্পদ তার সতীত্ব। নারীর জন্য এর চেয়ে মূল্যবান সম্পদ আর নেই। আজন্ম সাধনা আর সংগ্রাম করে হলেও এ সম্পদ নারীকে রক্ষা করতেই হবে।বর্তমানে অত্যাধুনিক যুগে, অনেক স্বামী আছেন যারা ঘরে দশ থেকে বিশ বৎসরের কাজের মেয়ে রাখেন এবং স্ত্রীর সম্মুখে বা অগোচরে এদের দ্বারা হাত-পা টেপাতে ও শরীর ম্যাসেজ করাতে ভীষন উৎসাহ বোধ করেন। স্ত্রী বাঁধা দিতে এলে স্ত্রীর উপর চলে অকথ্য গালিগালাজ ক্ষেত্র বিশেষে মারধর।“লোক সমাজের দৃষ্টিতে যা ঘৃণিত, তাই পাপ।”এসব স্বামী পাপ-পূর্ণের তফাৎ বোঝেন না। কিংবা বুঝেও না বোঝার ভান করেন। যে বুঝে না তাকে বোঝানো যায়। কিন্তু যে বুঝেও না বোঝার ভান করে তাকে বোঝানো কঠিন।

বনী ইসরাঈলের ৩২ নম্বর আয়াতে আছেঃ-“তোমরা ব্যভিচারের কাছেও যেয়োনা। নিশ্চই এটা অশ্লীল কাজ এবং অসৎ পন্থা।”

সূরা আনআম এর ১৫১ নম্বর আয়াতে আছেঃ-“লজ্জাহীনতার যত পন্থা আছে তার নিকটেও যেয়ো না। তা প্রকাশ্যেই হউক আর গোপনেই হউক।”স্বামী-স্ত্রী তথা নারী-পুরুষ সকলকেই ব্যক্তিগত,পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে সম্মান ও শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে এবং দৈহিক-মানবিক প্রশান্তির লক্ষ্যে সকল প্রকার ব্যভিচার ও লজ্জাহীনতার কাজ থেকে দূরে থাকতে হবে। ব্যভিচার,অশ্লীল কাজ,অসৎ পন্থা আর লজ্জাহীনতার কাজ যত গোপনেই করা হোক না কেন,কেউ না দেখুক স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তো দেখছেনই। তাই আল্লাহকে ভয় করতে হবে।আল্লাহ আল আদলু- ন্যায় বিচারক,আল হালিমু- মহা ধৈর্যশীল।

আল্লাহ এই পৃথিবী নামক পরীক্ষা ক্ষেত্রে আমাদের সব কিছুই অত্যন্ত ধৈর্যের সাথে লক্ষ্য করে যাচ্ছেন। দুনিয়াতেও কেউ কেউ অশান্তি নামক সাময়িক শাস্তিতে পতিত হচ্ছেন। আর আখেরাতে আছে চরম শাস্তি। এখনও সময় আছে খাসভাবে তওবা করে নিজেকে সংশোধন করে নেয়ার। আল্লাহ আল গাফফারু- মহা ক্ষমাশীল, ন্যায় বিচারক। তাই ন্যায়-অন্যায় ভালো-মন্দ সবকিছুর ন্যায়সম্মত ও সর্বাপেক্ষা সঠিক বিচার কেয়ামত ও হাশরের মাঠে একদিন হবেই হবে। সেই শাস্তিকে ভয় করে আমাদের আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিৎ

বিষয়: বিবিধ

১৬৮১ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

310074
২০ মার্চ ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৪৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : আগে ফাষ্টু হই, মন্তব্য পরে আসছে.......
২০ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:০৮
251095
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : তামশা শুরু করছেন!!!!! চাইলে আমিই ফার্স্ট হইতাম কিন্তু সুযোগ দিয়েছি বলে এতো খুশি হবার কোন কারণ দেখি না!!!!
২০ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:৩৩
251104
আবু জান্নাত লিখেছেন : আপনি কিন্তু দিন দিন..... Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
২১ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:১৫
251283
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : প্রথম মন্তব্যকারি হিসেবে আপনাকে যাযাকুমুল্লাহ ও সাথে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা!
২১ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৪:১৯
251284
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : প্রথম মন্তব্যকারি হিসেবে আপনাদের দুজনকেই যাযাকুমুল্লাহ ও সাথে লাল গোলাপ শুভেচ্ছা!
310077
২০ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:১৭
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : আপনার লিখার লাইনগুলো কি কম্পোজ করার পর ঠিক করে দেন নি? লাইন খুব বাজে দেখাচ্ছে। এডিট করে নিন। লাইন অনেক ফাঁকা ফাঁকা হওয়ার কারণে লিখাটি খুব দীর্ঘ দেখাচ্ছে অথচ তা খুব দীর্ঘ নয়।

আর নারীদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব

রয়েছে।"

নারীদের উপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব এটা যেমন সত্য, আবার অন্য দিক থেকে অর্থাৎ মর্যাদায় নারীও পুরুষের সমান। কিভাবে? আসুন জেনে নেই, আল্লাহর রাসূল বলছেন, যা হজরত আয়শা (রা) থেকে বর্ণিত।হজরত আয়শা রাসূল কে প্রশ্ন করেন, "নারীর উপর সর্বাধিক কার? তিনি বলেনঃ তার স্বামীর। তারপর আমি জিজ্ঞেস করি, পুরুষের উপর সর্বাধিক অধিকার কার? তিনি উত্তর দেন তার মায়ের।

আল্লাহ নারী পুরুষের কি চমৎকার সমতা বিধান করেছেন। যে মর্যাদা পুরুষ কে দিয়েছেন অর্থাৎ স্ত্রীর উপর স্বামীর সর্বাধিক অধিকার, আবার স্ত্রীকে যে মর্যাদা দিয়েছেন অর্থাৎ সন্তানের উপর সর্বাধিক মায়ের, তার বাবার নয়!!!!

অতীব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি অবতারণার জন্য অশেষ ধন্যবাদ।
২১ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৫:০২
251289
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভাইয়া গতকাল থেকে কয়েকবার এডিট করে ঠিক করে দিয়েছি কিন্তু কেন যেন ঠিক হচ্ছিলো না। আজকে আবারও এডিট করে ঠিক করেছি দেখুন তো এখন ঠিক হয়েছে কিনা।
লেখাটি খুব ধৈর্য সহকারে পড়ে মন্তব্য দেবার জন্য আপনাকে যাযাকুমুল্লাহ খাইরান!
২১ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৫:৫২
251293
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : জী ঠিক হয়েছে এবং এখন খুব সুন্দরও দেখাচ্ছে। আমার পরামর্শ গুরুত্বসহকারে নেয়ার জন্য শোকরিয়া।
310083
২০ মার্চ ২০১৫ রাত ০৮:৩৭
দ্য স্লেভ লিখেছেন : সূরা বাক্বারার ২২৮ নম্বর আয়াতে আছেঃ-

"পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের উপর অধিকার রয়েছে,

তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও অধিকার রয়েচে পুরুষদের উপর

নিয়ম অনুযায়ী। আর নারীদের উপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব

রয়েছে।"

এই বিষয়টা হল এরকম: যেমন ১০ জন শ্রমিক রয়েছে তাদের মজুরী সমান,কিন্তু কাজের শৃঙ্খলার জন্যে একজনকে লিডার বা নেতা মনোনিত করা হল। তিনি নিজে কাজ করবেন এবং একইসাথে অন্যদেরকেও দিক নির্দেশনা দিয়ে কাজ পরিচালনা করবেন।

সংসারে দুজন লিডার থাকা অশান্তির কারন হতে পারে বিধায় আল্লাহ এমনটা বলেছেন। স্বামীকে নেতৃত্ব দিতে বলেছেন স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করতে বলেছেন। তার সাথে সুআচরণ করতে বলেছেন। লিডার এবং বস এক নয়।

আর ইসলামে কতৃত্ব একতরফা নয়,এটি শর্তযুক্ত। অর্থাৎ স্বামী যতক্ষন কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী কাজ করবেন বা পরিচালনা করবেন,ততক্ষন স্ত্রী তা মানবে,অনুরূপভাবে স্ত্রীর আদেশ,উপদেশ,নছিয়ৎও স্বামী মানবে। তারা একে অপরের পরিপূরক। স্বামী ভুল কাজ করলে স্ত্রী শুধরে দিবে বা প্রতিবাদী হবে। এটাই ইসলামের স্যেন্দর্য। আর তারা উভয়েই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জীবন যাপন করবে। এখানে কেউ কাওকে ছোট করবে না। সর্বদা সুন্নাহর দিকে খেয়াল রাখবে

আপনি অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন
২১ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৫:০৫
251290
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : হাঁ ভাইয়া ঠিকই বলেছেন! স্বামী স্ত্রী এই দু'য়ের মাঝেই আল্লাহর বিধান কায়েমের দায়িত্ব! যার যার দায়িত্ব যদি সে পালন করে তবে কোন অশান্তি থাকবেনা। আর অমান্য করলেই অশান্তি বিরাজ করবে এটাই স্বাভাবিক!
শুকরিয়া অতীব সুন্দর মন্তব্যের জন্য!
310088
২০ মার্চ ২০১৫ রাত ০৯:১৯
আকবার১ লিখেছেন : আপু, খুব সুন্দর হয়ছে। দ্য স্লেভ ভাই এর
ব্যাখা যুক্তি সংগত। অত্যন্ত বিস্তারিতভাবে সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। আল্লাহ যেন দুজনের
হাতকে গতিশীল রাখেন।
২১ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৫:০৬
251291
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আপনার মন্তব্য পড়ে উৎসাহ পেলাম! আপনার দোয়ার সাথে আমিন! সাথে আপনার কল্যাণ কামনা করি!
310109
২০ মার্চ ২০১৫ রাত ১০:৪৩
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন :
সংসারকে সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ করার সমস্ত দায়-দায়িত্ব যদি নববধুর উপর চাপিয়ে দেয়া হয়, তবে তা কি ইনসাফ হয়?)))))

নববধূকে সর্বপ্রথম স্বামীর সংসারের পরিববেশ সম্পর্কে ধারণা দিতে হবে, স্বামীকে অবশ্যই বুঝতে হবে, নববধূটি কতটুকু দায়িত্ব পালন করতে সক্ষম! নববধূর মন মানসিকতা ও ইচ্ছার গুরুত্ব অনেক বেশী। ধন্যবাদ। প্রিয় তালিকায় রাখলাম লেখাটি।
২১ মার্চ ২০১৫ বিকাল ০৫:০৭
251292
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : খুবই উৎসাহিত হলাম আমার লেখাটিকে প্রিয়তে রেখেছেন বলে!
310134
২০ মার্চ ২০১৫ রাত ১১:৪৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে এখনকান বেশিরভাগ নারি-পুরুষ ই স্বামি বা স্ত্রিকে মনে করে একক অধিকার। আর বিশেষ করে নারিরা স্বামির পরিবার কে গ্রহন করতে চাননা।
310167
২১ মার্চ ২০১৫ রাত ০১:৩১
আব্দুল গাফফার লিখেছেন : সুন্দর লেখা , অনেক ধন্যবাদ
310177
২১ মার্চ ২০১৫ রাত ০১:৫৯
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ,
একটা গাছ থেকে ফল পেতে হলে অবশ্যই গাছের গোড়ায় সার পানি ঢালতে হয়, একটি গাভি থেকে দুধ পেতেও ঘাঁস চুনা ভুষি ইত্যাদি খেতে দিয়ে হয়, এর সঙ্গে দীর্ঘ একটি সময়ও অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু আমাদের সমাজে বেশির ভাগ পরিবারই বিয়ের পর চায় নয়া বৌ সবার মন রক্ষা করে চলবে। সংসারের সব কাজ তাকেই করতে হবে। কোন ভূল করা যাবে না। একটু ব্যাতিক্রম হলেই শুরু হয় তুলোধুনা, বাপের বাড়ি থেকে আদব কায়দা কাজকর্ম শিখে আস নাই? তুমি কোন চৌধুরী সাহেবের মেয়ে যে দিনে ঘুমাবে? ইত্যাদি ইত্যাদি। এ সমস্ত আচরণগুলো সম্পূর্ণ জুলুম ছাড়া আর কিছু নয়। মেয়েটি নতুন পরিবেশে আসলো, বাবা মা ভাই বোনকে ত্যাগ করে আসলো, সারা জিবনের জন্য পরকে আপন করার জন্য আসলো। আব আসতে না আসকেই শুরু হয়ে যায় মানসিক নির্যাতন। এটা মোটেও উচিৎ নয়। প্রথমে মেয়েটিকে আপন করে নিন, কার কি পছন্দ জানতে দিন, নিজের মেয়ের মত তাকে স্নেহ করুন, তবে দেখবেন সে আপনাদেরকে ঠিকই মা বাবার মতই সেবা যত্ন করতে আরম্ভ করবে। আল্লাহ তায়ালা সবাইকে বুঝ দান করুক। পোষ্টটির জন্য আপুকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
310196
২১ মার্চ ২০১৫ রাত ০৪:১৭
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ! সুন্দর লিখাটা পড়ে খুব ভালোআ লগলো! শুকরিয় আপু! Good Luck Rose Rose Rose Praying Praying Praying Angel Angel Angel
১০
314512
১২ এপ্রিল ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২০
সাদামেঘ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয়া আপুজ্বি। চমৎকার লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File