Rose Good Luck স্বপ্নই কষ্ট Good Luck Rose

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০৮:৩৬:৫৯ রাত

সে বেলায় হতাশিত দু'চোখে স্বপ্ন দেখিয়েছিলো প্রবাসী বেলাল রুবিয়াকে। প্রসস্থ করেছিলো সহযোগীতার হাতকে রুবিয়ার সহজ সরল বিশ্বাসকে হাত করে। রুবিয়া ঘুনাক্ষরেও বুঝতে পারেনি বেলালের মনের গোপনতাকে। রুবিয়া সহজ মনে সবকিছু মেনে নিলেও বেলালের গুরো গম্ভীর অন্তরের চাহাস মেনে নিতে পারেনি পৃথিবীর কেউই পারবেনা।

রুবিয়ার মাকে মোবাইলে বেলাল নানাভাবে বুঝিয়ে সহযোগীতা করে কিন্তু রুবিয়া সে টাকা নিতে রাজি হয়না। পরিশেষে মায়ের কথায় সে সহযোগীতা নিলেও সে বলেছিলো সে যদি কোন বিনিময় দাবী করে মা তখন সে কথা বললে বেলাল বলেছিলো দান করে কি কেউ প্রতিদান চায়? আমি ও চাইনা আমি প্রতিদান চাই আল্লাহর কাছে। অবশেষে রুবিয়ার কথাই ঠিক হলো।

মাত্র একটি বছর বাকি এখন পড়া-লেখাটা ছাড়তে রাজি নয় রুবিয়া সে মায়ের কাছে কান্নাকাটি করে। মাদ্রাসার শিক্ষিকাদের কাছে কান্নাকাটি করে মনের কষ্ট ব্যক্ত করে। তারা আশ্বাস দেন, তারা সাহস দেন, আল্লাহই উত্তম ব্যবস্থাকারি তিনি তোমার ব্যপারে উত্তম ফায়সালা করবেন ইনশা-আল্লাহ তুমি ভেবোনা।

সেই সুযোগটাকে হাতছাড়া করেনি বেলাল সে তখনই রুবিয়াকে মাকে খুব করে বুঝিয়ে অর্থের যোগান দেন। যখনই রুবিয়ার ফাইনাল পরীক্ষা কাছাকাছি ঠিক কয়েকদিন আগেই তার ভাবীকে দিয়ে রুবিয়াকে বিয়ে করার প্রস্তাব পাঠায় রুবিয়া এতে নারাজ হয়। সে রাজি হয়না সে বলে এটা তো কোন ভাবেই সম্ভব নয়।

রুবিয়াও পারেনি বেলালের মনের ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করতে। রুবিয়াকে বেলাল সহযোগীতা করে ইলম শিখতে তাই বলে বেলাল তাকে সহযোগীতার বিনিময়ে রুবিয়াকে জীবন সাথী করে চাইবে তা তো হয়না। তখন তো রুবিয়ার মাকে এটা সেটা বলে বুঝিয়ে নিয়েছিলো আর রুবিয়ার মা ও সহজ সরল মানুষ কোন প্যাচ-গোছ বোঝেনা তিনিও সেই প্যাচে পড়ে গেছেন রুবিয়া প্রথমে সেই সহযোগীতা নিতে না চাইলেও আজকে সে সেই ঋনে ঋনগ্রস্থ।

যখনই রুবিয়া বেলালের কথায় রাজি হলোনা তখনই বেলাল গ্রামের মেম্বর-মাতবর ডেকে শালিশ বসায় আর যা টাকা দিয়েছে তা একসাথে দাবি করে। কিন্তু রুবিয়ার বাবা তখন অপারগ টাকা দিতে তারপরও অনেক কষ্ট করে দশহাজার টাকা যোগাড় করে দেন কিন্তু গ্রামের মেম্বর-মাতবর বলে কথা তারা টাকা যে নিয়েছে রুবিয়ার বাবার কাছ থেকে সেই টাকার কথা বেলালকে নাশুনিয়ে নিজেরাই খেয়ে ফেলে।

এরপর প্রবাসী বেলাল প্রবাসে থেকেই নানা ভাবে রুবিয়াকে হুমকি-ধমকি দেয় বাসা থেকে তুলে নিয়ে বিয়ে করবে। অন্য কোথাও বিয়ে হতে দেবেনা। রুবিয়া শুধু কান্নাকাটি করে আল্লাহর কাছে। সে কেন ইলম শিখতে এমন একজনের সহযোগীতা নিয়েছে যে দান করে বিনিময় চায়? সে কেনই বা স্বপ্ন দেখলো? কেন সেই স্বপ্ন পূরন হওয়ার আগেই তার বাবাকে শালিশে সবার সামনে ছোট হতে হলো?

রুবিয়া খুব কষ্ট বুকে নিয়ে দিন-রাত শুধু আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে যায় তার একমাত্র ভরসাই এখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিন। রুবিয়া উত্তম ফায়সালা চেয়েছে আল্লাহর কাছে। তিনি কাউকেই খালি হাতে ফেরান না রুবিয়াও তার কাছ থেকে খালি হাতে ফেরেনি। মহান আল্লাহ আরেক প্রবাসীকে তার বর রুপে পাঠিয়েছেন সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই রুবিয়ার বিয়ে হয়ে যায়। রুবিয়া চলে যায় শশুরালয়ে।

উত্তম চরিত্রবান বর পায় রুবিয়া। কিন্তু এরপর ও তার মনে ভয় থাকে যদি কখনো বেলাল তার সংসার ভাঙতে আসে বা ভেঙে দেয় তখন কি করবে সে? এই ভেবে ভেবে রাতে সে ঘুমাতে পারতো না। দুঃস্বপ্ন দেখে ভয়ে আৎকে উঠতো। এসব দেখে একদিন তার বর জানতে চায় তুমি কি দিনে বেলায় এমন কিছু নিয়ে ভাবো যা তোমার রাতের ঘুমেও ভয় লাগে? আমাকে বন্ধু ভেবে সবকিছু বলতে পারো কিন্তু রুবিয়া ভয় পায় যদি কোন সমস্যা হয়?

কিন্তু তার বর অভয় দেয় তখন রুবিয়া তার বরকে বলে তার কষ্টের কথাগুলো আর অঝরে কাঁদতে থাকে আরো বলতে থাকে কেন যে আমি স্বপ্ন দেখতে গেলাম আমার স্বপ্ন দেখাই এখন কষ্টের কারন। তার বর সব কথা শুনে বলে যে আমি পরিশোধ করে দেব সেই ঋন আর তোমার উপর থেকে সব শংকার মেঘ সরিয়ে দেব ইনশা-আল্লাহ। তার বর তার জীবনে একজন নায়কের ভূমিকা নিয়ে আসে সে তাকে উদ্ধার করে জীবনের একটি দুঃস্বপ্নের কষ্ট থেকে।

রুবিয়া তার বরের এই সহমর্মী ব্যবহারে খুবই আত্ম-তৃপ্তি লাভ করে। আর বরের জন্য মহান আল্লাহর কাছে কাকুতি-মিনতি জানিয়া প্রার্থনা করে হে আল্লাহ তুমি আমাকে উত্তম বর উপহার দিয়েছ, আর তার উত্তম চরিত্র দিয়ে মুগ্ধ করেছ আমায় তাই তোমার কাছে বলি মনের কথা তুমি তাকে উভয় জাহানে দিও উত্তম মর্যাদা।

২২ইশে ফেব্রুয়ারী ২০১৫

বিষয়: বিবিধ

১২২৪ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

305810
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৯:২৫
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:২৯
247450
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালোলাগা রেখে যাবার জন্য আপনার শুকরিয়া।
305821
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:১২
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : Thinking Thinking
ঘটনাটি মনে হয় সত্যি।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৩২
247452
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : হাঁ ভাইয়া সত্যিই! বাস্তবতাই আসল গল্প আর গল্প তো কল্পনা শুধু। পড়ে মন্তব্য জানানোর জন্য আপনাকে যাযাকুমুল্লাহ।
305822
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১০:১৭
আবু জান্নাত লিখেছেন : ভালো লাগলো। জাযাকিল্লাহ খাইর
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৩৩
247453
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালোলাগা রেখে যাবার জন্য আপনার শুকরিয়া।
305832
২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১১:৪১
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : এমন হইলে তো ভালই হয় কিন্তু কয়জনে পায় সেটাই দেখার বিষয়।
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:৩৪
247454
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : পড়ে মন্তব্য জানানোর জন্য আপনাকে যাযাকুমুল্লাহ।
305861
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ সকাল ০৬:০৯
কাহাফ লিখেছেন :
নৈতিকাহীন বর্তমান সমাজে হেলালদের দৌরাত্ম কম নয় যদিও, কিন্তু অনেক মাতা-পিতাও মেয়ে দিয়ে যেন ব্যবসা খুলে বসে! বিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে স্বার্থ হাসিল করে নেয় পুরো মাত্রায়!
অবস্হা পরিবর্তন হয়ে গেলেই ভূলে যায় একেবারেই!
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:২১
247498
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : কাহাফ ভাইয়া আপনার কথা সঠিক এর বিপরীত ও হয় আমি শুধু সেটাই তুলে ধরতে চেয়েছি।
পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্য রেখে যাবার জন্য আপনার শুকরিয়া।
314522
১২ এপ্রিল ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২৪
সাদামেঘ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয়া আপুজ্বি। চমৎকার লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File