Rose Rose ভাল বন্ধু হয়ে!! ( ধারাবাহিক গল্প ৩)Rose Rose

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫, ০১:৩০:০৩ দুপুর

পরশদের বাসার উপর দিয়েই যাচ্ছিলো রোকেয়া! অন্য একজনের বাসায় আড্ডা দেয়ার জন্য! তখনই জানতে পারে এবাসায় চুরি হয়েছে! আশেপাশের মহিলারা বলাবলি করছে মেয়েটা এমনি বাসায় থাকেনা ছুটিতে বাসায় আসছে কালকে আর রাতেই তার কাপড়ের ব্যাগ চুরি গেছে! শুনে রোকেয়া মনে মনে ভাবল মেয়েটার নাম অনেক শুনেছি কিন্তু কখনো দেখিনি আজকে দেখা করে যাই! পরশদের ঘরে গেল রোকেয়া! পরশ খুব লজ্জা পাচ্ছিল বড়দের কাপড় পরে আছে বলে! রোকেয়া ঘরে ঢুকেই বলছে পরশ নাম শুনতে শুনতে চুল পেকে যাচ্ছে কিন্তু এখনো দেখলাম না! চাচি ও চাচি তোমার পরশ কই? আইতে কওনা সামনে! পরশ এসেই সালাম দেয় আস-সালামু আলাইকুম! রোকেয়া বলে আমাকে সালাম দেয়ার দরকার নেই আমি এখনো বুড়ো হইনি! পরশ বলে সালাম তো ছোট বড় সবাই সবাইকে দিতে পারে ছোট আর বুড়ো নেই! বসেন; পরশ চুপি চুপি ওর মাকে বলে মা! উনাকে কি বলে ডাকবো? মা বলে দেয় ওর স্বামী তো আমাকে চাচি ডাকে তুই ওকে ভাবি বলে ডাক! পরশ ভাবি বলেই ডাকে কথা বলে নানা রকম বিষয়ে! রোকেয়ার পরশের কথাগুলো খুব ভাললাগে! পরশ তুমি এসো আমাদের বাসায় এই তো তোমাদের পাশেই বাসা! তখন মা বলেছিল ও তো পর্দা করে তাই সমস্যা হতে পারে! ভাবি বলল না কোনই সমস্যা হবেনা আপনার ছেলে তো দিনে বাসায় থাকেনা রাতে আসে সেও অনেক রাতে! পরশ বলল আচ্ছা দেখি! ভাবি তো নাছোড়বান্দি জবান নিয়েই গেছে পরশও কথা দিল যাবো ইনশা-আল্লাহ! রোকেয়া বাসায় এসে ভাবলো পরশ কতকিছু জানে অথচ আমি কিছুই জানিনা! পরশের সবকথা গুলো রোকেয়ার কানে বাজতে থাকে পরদিন রোকেয়া আবারও আসল পরশদের ঘরে এসে ডেকে নিয়ে গেল পরশকে তাদের ঘরে! ( পরশ পাশাপাশি বাসা হওয়ার পরও বোরখা পরিধান করে গেল ভাবীর বাসায়) অনেক কথা হল ইসলাম বিষয়ে! পরশের কথা শুনে রোকেয়া খুব মুগ্ধ হতে লাগলো! আর ভাবতে লাগলো আমি ওতো কত কিছু জানিনা আমার ও তো জানা দরকার! কিন্তু এই বয়ষে কিভাবে জানবো? পরশকে বলে তুমি তো অনেক কিছু জানো আমার তো সেই বয়ষ নেই আমর জানার কোনই সুযোগ নেই! পরশ বলে কে বলেছে সুযোগ নেই? মরন পর্যন্ত আপনি শিখতে পারেন কে আপনাকে নিষেধ করেছে? রোকেয়া বলে লজ্জা করে যে কিভাবে শিখবো?

পরশ বলে ভাবি পড়া শুনার মাঝে কোন লজ্জা নেই, লজ্জা হলো যার যার প্রতিপালকের কাছে গুনাহ নিয়ে যাওয়াতে, লজ্জা হলো চুরি করাতে, লজ্জা হলো বেপর্দা ভাবে চলা ফেরাতে, লজ্জা হলো অপরের সম্পদ লুট করাতে, লজ্জা হলো অপরের গীবত করাতে, লজ্জা হলো স্বামীর নাফরমানি করাতে, লজ্জা হলো মুসলমান হয় অমুসলিমের মত চলাতে! পরশ পরশরে! তুই কতকিছু জানিস আমাকে শেখাবি? বলেই ভাবি পরশকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো! পরশ ও কেঁদে ফেললো! পরশ বলল আপনি যদি লজ্জা ভুলে শিখতে পারেন আমিও আপনাকে শেখাতে পারবো! কয়েকদিনেই পরশ আর রোকেয়া ভাবির সাথে খুব গভীর সম্পর্ক হলো! রোকেয়ার ইসলাম সম্পর্কে জানার আগ্রহ সম্পর্কটাকে আরো বেশি মজবুত করেছে! এদিকে পরশ সুন্নতী পোষাকের কারনে মুরুব্বীদের ইতে'কাফে যে খেদমতে যাবার কথা সেখানেও যেতে পারছেনা। কারন ঈদের আগে কেউ জামা কাপড় বানানোর অর্ডার নেয়না! ঈদের পরে ছাড়া বানানো সম্ভব নয় এটা জেনে রোকেয়া ভাবি পরশকে নিজের জন্য ঈদে পরার পোষাকের থেকে একটা পোষাক দিলো এবং বলল তোর কাপড় বানানো পর্যন্ত রাখ! এরপর দেখা যাবে কি করা যায় পরশ তো নেবেনা এই পোষাক কারন তা ভাবির ঈদের দিন পরার পোষাকের একটা! তবুও ভাবি জোর করেই দিলো পরশকে!

পরশ একরকম বাধ্য হয়েই নিলো! এভাবে ওদের মাঝে সম্পর্কটা আরো গভীর হল! কে বলে বড় ছোট বন্ধুত্ব হয়না? পরশ মাত্র আলেমে পড়ছে আর ভাবি আট নয় বছর ধরে সংসার করছেন! তাতে কি? মনের সাথে মন মেলা যাকে বলে! এভাবে পরশ রোকেয়া ভাবিকে সৎ পথ কি তা শেখাল, শেখাল পর্দা কি? কেন পর্দা করতে হয়? সালাম দিলে কি হয়? এভাবে তারা পরশের ছুটির সময়টাতে অনেক আগালো! ভাবি তো এখন পরশকে মাথার মনি ভাবে! ভাবি শিখল গুনাহ কি? গুনাহের শাস্তি কি? রোকেয়া ভাবি যেন নতুন জীবন পেল! পেল হেদায়াতের আলো যা রোকেয়া ভাবির ঘরে নয় অন্তরে জ্বলে ওঠে! এক সময় পরশ ছাড়া কিছুই বুঝেনা এমন কি কিছু খেলেও পরশকে নিয়ে খাবে! এভাবে পরশের ছোঁয়ায় ভাবি যেন নিজেকে বদলে নিলো! অল্প দিনেই ভাবি পর্দা করতে শুরু করল! এখন তার স্বামী কথা কাটাকাটি করলে সে চুপ করে থাকে কিছু বলেনা! তার সংসার হয়ে উঠলো জান্নাতের টুকরোর মত! তার স্বামীও এখন অনেক খুশি! সংসারে এখন আর আগের মত ঝগড়া হয়না! পরশ থেকে শিখেছে একজন রাগলে অপরজনকে শান্ত থাকতে হয় এতে করে ঝগড়া থেকে বেঁচে থাকা যায়! ভাইয়া রেগে কিছু বললে আপনি চুপচাপ শুনবেন অথবা এমন ভাবে থাকবেন যেন কিছুই শুনতে পাচ্ছেন না! তখন একদিন, দুইদিন, এভাবে কয়েকদিন পর দেখবেন ভাইয়া ও আপনাকে মন্দ বলা থেকে বিরত থাকবে আমার বিশ্বাস! পরশের কথা গুলো বাস্তব হতে লাগলো ভাবির সংসারে! পরশের পরশে যেন ভাবির জীবনটাতে ভালোলাগার রঙে রঙিন হতে লাগলো। যা রোকেয়া পরশের সাথে দেখা হওয়ার আগে বুঝতেই পারেনি। এখন উপলদ্ধি করছে পলে পলে। আগেতো রাগ করলে দুজনেই কথা বলা বন্ধ করে দিতো কিন্তু এখন ভাইয়ার রাগ আর আগের মত স্থায়ী হয়না! আর ভাবি রাগলেও ভাইয়া এখন চুপ করে থাকে যে কারনে ঝগড়া ও হয়না খুব সুখে কাটতে লাগলো রোকেয়া ভাবির সংসার!

বিষয়: বিবিধ

১৫৯৫ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

303790
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:৩৩
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : আপু, দৌড়ের উপর আছি । তাই দখল দিয়ে পালালাম ।
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:০৫
245750
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভাইয়া এত দৌড়ের উপর কেন? দেখে শুনে পথ চলুন। নয়তো হোচট খাবেন যে।
303791
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০১:৩৪
লজিকাল ভাইছা লিখেছেন : আপু, এটাও কি ধারাবাহিক !!
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:০৭
245751
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আগের পর্বগুলো পড়েন নি? হাঁ ভাইয়া এটা ধারাবাহিক লেখা। আগের পর্ব না পড়লে পড়ে নেবেন। তবে বুঝতে সুবিধা হবে।
303797
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০২:১১
মামুন লিখেছেন : ভাল লাগা রেখে গেলাম। Rose Rose Rose
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:০৭
245752
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ফুলেল শুভেচ্ছায় ভালোলাগা রেখে উৎসাহ দেয়ার জন্য আপনার শুকরিয়া।
303804
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ দুপুর ০৩:১৭
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ বিকাল ০৪:০৮
245753
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালোলাগা রেখে উৎসাহ দেয়ার জন্য আপনার শুকরিয়া।
303875
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ১২:২১
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : পরশের পরশে রোকেয়ারা ভালবাসায় ভাললাগায় আর সুন্দর গুছানো জীবনযাপনে পরিপূর্ণ হয়ে উঠুক এই কামনা।

প্যারাগুলো এতো বড় করে না লিখে একটা প্যারাকেই দুই তিনটা ভাগে ভাগ করে লিখার পরামর্শ রইল।

উপস্থাপনা যথার্থ হয়েছে।
১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ রাত ০৩:৫২
245793
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : সুন্দর পরামর্শের জন্য আপনার শুকরিয়া জানাচ্ছি। ইনশা-আল্লাহ আগামি পর্বে ছোট ছোটোকারে প্যারা দেয়ার চেষ্টা করবো।
314528
১২ এপ্রিল ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:২৭
সাদামেঘ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু শ্রদ্ধেয়া আপুজ্বি। চমৎকার লিখাটির জন্য জাজাকাল্লাহু খাইর।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File