ঝড়, ছবর অতঃপর জান্নাতের সুখ!
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২১ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৪:০১:২৮ বিকাল
"ঝড়"
নতুন সংসার এরমাঝেও নানা রকম কথা কাটাকাটি। সংসারে টুকিটাকি হয়ই এসব বলে অনেকে শান্তনা দিলেও যার সাথে সংসার সে যদি মনের অব্যক্ত কথা বুঝতে না পারে তবে আর কার কাছে সে কথা বলে শান্তনার বাণী খুজবে? অনেক পছন্দ করে এনেও পরবর্তীতে শাশুড়ীর বউকে না ভালোলাগা নতুন সংসারে যেন এক কঠিন ঝড়ের উদয় করেছে। এভাবে চলতে চলতে কোল জুড়ে আসলো পৃথিবীতে যেন সদ্য ফোটা একটি জান্নাতের ফুল। যার হাসি আনন্দে নারীর পৃথিবীটা অন্য রকম সাজে সজ্জিত হয়। কিন্তু সেটাও স্থায়ী হয়না। ঝড়ের কাজই হলো সবকিছু তছনছ করে দেয়া। কোনকিছু তছনছ না করে সে যাবেনা। এবেলাতে যদি কঠিনভাবে ছবর করা যায় হয়তো কয়েকজনে টিকে থাকে নয়তো ভাঙার ঝড়ে ভেঙে পড়ে চুপচাপ। স্বামী নামক লোকটি বলে কোনভাবেই যখন বণছে না তোমার আর মায়ের, তো সন্তানটাকে রেখে চলে যাও তোমার মোহরানা দুইলাখ আমি তোমাকে চারলাখ টাকা দিবো তুমি কোলের বেবীকে রেখে চলে যাও তাতেও যদি সংসারে একজনকে হাসাতে পারি। আর তোমার জন্য আমি আমার জান্নাত নষ্ট করতে পারবো না। ( উভয়ের অধিকার সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার কারনে এই উক্তি স্বামীর)। নারী (স্ত্রী) সে শুধু্ ছবরই করে যায়।
"ছবর"
সমুদ্রের অথৈ পানিতে ভাসতে ভাসতে আর অনেক ঝড় আর অনেক খড়কুটা পুঁড়ানোর পর সে নারী একমাত্র আল্লাহর আশ্রয়ে ঠাঁই নিয়ে শুধু তাকেই বলে যায় হৃদয়ের অব্যক্ত কথার মালা। রোনাজারি করে শুধু এক আল্লাহর কাছে। হে আল্লাহ এ সংসারের জিম্মা তুমি নাও, এসন্তানের জিম্মাও তোমার কাছেই দিলাম, আমি আর কোন পুরুষ চাইনা জীবনে, তুমি যা কল্যানকর তাই করো। আমি চুপ আমি নিরুপায়। কিন্তু তুমি তো সহায় এই অসহায়ের। মনের সকল যন্ত্রনাই যেন আল্লাহর কাছে দিয়ে দেয়। স্বস্থীর নিঃশ্বাস ছাড়ে নারী। কত কঠিন যে এজীবন। কত ভাঙার ঝড় যে আসে সে জীবনে? কে কতক্ষন ছবর করতে পারে? তারপরও ছবরের পরে হয়তো কিছু আছে ভেবে নারী ছবরকেই আঁকরে ধরে।
"সুখ"
অনেক কষ্ট আর অনেক চোখের পানির অবসানের পর, অনেক অনেক সাধনা আর অবহেলার পর, সেই ধৈর্যশীলা নারীর জীবনে আসে সুখের জোয়ার। তার হৃদয়াকাশে উদয় হয় শান্তির সূর্য মুছে দিয়ে কষ্টের রাতের আঁধার। দান করে সুখের নিবাস। ঝড় আর ছবরের পরে বহু সাধানার পর জীবনে আসে সুখের পরশ। এ পরশ সবাই পায়না। সবাই ধরেও রাখতে পারেনা। শুধু যারা ধৈর্য ধরতে পারে মুখকে বন্ধ রেখে তারাই হয়তো সেই ঝড়ের মোকাবেলায় নিজেকে ঠিক রাখতে পারে। আর পরিশেষে পায় সুখের ঠিকানা। জীবনে সুখ আসাটাও যেন একটি কঠিন বিষয়। সবার জীবনে সুখ আসেনা আর যাদের জীবনে আসে তারা ধরে রাখতে না পারলে আজীবনই দু'চোখের লোনাজল ঝরাতে হবে। তাই উভয়েরই সংসার জীবনে ধৈর্যের সাথে পরিচালনা করা উচিৎ কারন কষ্টের পরেই সুখের স্থান আর সুখের পরে দুঃখের।
"পরিশেষে"
নতুন জীবন ঝামেলা আসবেই তাই বলে ভেঙে পড়া চলবেনা। সতীনারী বলে; আমি মানুষ কেন আরেকজন মানুষের কাছে নিজের অধৈর্যতা প্রকাশ করবো? কেন হেরে যাবো জীবনের ঝড়ের মোকাবেলায়? কেন সুখকে ছিনিয়ে আনতে পারবো না? আমাকে যে পারতেই হবে সেই কাংখিত সুখকে নিজের ঘরে এনে বন্দি করতে। সেই পেরেছে যে ধৈর্য ধরেছে, ছবর করেছে, কষ্টকে দিয়েছে আল্লাহকে, সেই ছিনিয়ে আনতে পেরেছে জীবনের কাংখিত সুখকে,অনেক ঝড় মোকাবেলার পরে, অনেক রোনাজারির পরে অনেক ত্যাগের পরে। সেই নারীর সুখ আসে দু'কুল ভরে..............................। সে সুখের দায়িত্ব নেয় স্বয়ং সৃষ্টি কর্তা মহান আল্লাহ..................তার সে সুখ কেউই ছিনিয়ে নিতে পারেনা। আল্লাহ সেই সতীনারীকে তার প্রিয় ব্যক্তিদের মত গ্রহন করে নেন। হে আল্লাহ; আমাদেরকেও দাও সেই ছবর আমরাও যেন হতে পারি সতী নারী..................সুখী নারী। আর সতীনারী যেন উপভোগ করে জান্নাতের হুরের আনন্দ। মনের মাঝে উপলদ্ধি করে জান্নাতী হাওয়া। সে ঘরটি হয় পৃথিবীর বুকে জান্নাতের টুকরার মত সে ঘরে শুধু সুখ আর সুখ।
বিষয়: সাহিত্য
১৪০৮ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন