Rose Roseজীবনটা ক্ষনিকের তবুও মনে স্বপ্ন উঁকি মারে (৪র্থ পর্ব) Rose Rose

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ১৯ অক্টোবর, ২০১৪, ০১:৫৮:২২ দুপুর

আযাদ বোন ও বোন জামাইদের সাথে কানিজের ব্যপারে কথা বলে! কানিজের মতামত জানায়! তারা ও প্রথমে রাজি হতে চায়না কারন এটা বাস্তব জীবন নিয়ে কথা! কোন হেলাখেলা হতে পারেনা জীবনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে! কানিজও সবার সামনে তার অটল অবিচল কথা প্রকাশ করেন এবং সে যে এই কথাতে অনড় সেটাও সবাইকে বুঝিয়ে দেন! কানিজের কথায় অটলতা দেখে আর আযাদের প্রতি ভালোবাসা দেখে তারাও এক পর্যায়ে বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার ব্যপারে রাজি হন! তবে আযাদ আরেকটু সুস্থ হলেই এই বিয়ে হবে বলে কানিজের বাবার সাথে এভাবেই কথা হয়! কানিজ তার বাবা মাকে বলে আপনারা আযাদ সু্স্থ থাকলে যেভাবে বিয়ের আয়োজন করতেন সেভাবেই অনুষ্ঠানটা পরিচালনা করবেন! আমার তাকদ্বীরের উপর আমাকে ছেড়ে দিন! আল্লাহ হয়তো আমার উপর সহায় হবেন! আপনারা শুধু আমার জন্য এই বলে দোয়া করুন আমি যেন কোন অবস্থাতেই আযাদের কাছ থেকে সরে না পড়ি! যতদিন সে বেঁচে থাকবে ততদিন তার সেবায় নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারি! কানিজের মা মেয়েকে অনেক বুঝাতে চাইলেও কানিজ তা মানেনি! কানিজের মা মনে মনে খুবই রাগ! এটা কোন ছেলে খেলা নয়! জীবন আরো কঠিন! যখন বাস্তবতার মুখোমুখি হবি তখন কান্না আর দু'চোখে অন্ধকার ছাড়া কিছুই দেখবিনা! কানিজ বলে আমি সব সময়ের মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত! আর এমনটি যদি আমার বেলাতে হতো তখন আপনারা কি আসা করতেন? যদি এমনটি আমার ভাইয়ের ক্ষেত্রে হতো তখন কি করতেন? কানিজের মা চুপ করে থাকে! কানিজ বলে আপনারা শুধু প্রান ভরে দোয়া করুন আমার জন্য! প্রায় কয়েক মাস লেগে যায় আযাদের সুস্থ হতে! এরমাঝে কানিজ প্রায় প্রতিদিনই এসে আযাদের সেবায় নিজেকে ব্যস্ত রাখে! আযাদ কিছুটা সুস্থ হলে বাড়িতে নিয়ে আসে! আর তার কয়েকদিন পর আত্মীয় স্বজন সবাইকে নিয়ে কানিজ আর আযাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়! কানিজ হন আযাদের হৃদয় রানী!

পৃথিবীতে সকল মানুষের নানাবিধ ইচ্ছা আকাংখা আছে তবে সবগুলো সমান ভাবে পূর্ণ হয়না! কোন কোন ইচ্ছা অপূরনই রয়ে যায় আজীবন! আর কোন কোন ইচ্ছা সহষাই পূরন হয়ে যায়! আর কোন কোন ইচ্ছার ক্ষেত্রে দূর্লভ চেষ্টা থাকা স্বত্তেও সেটা পূরন হয়না! আর কোন কোন ইচ্ছা দূর্লভ চেষ্টার পর পূরন হয়! এটাই হয়তো মানুষের জীবনের রীতি নীতি! অথবা বাস্তবতা! কানিজ ও আযাদ দুজন আজকে নতুন জীবনে পা রেখেছে! প্রাকৃতিক ঝড়কে উপেক্ষা করে, পৃথিবীর জাগতিক চাহিদার পাশ কাটিয়ে ওরা দুজন চলতে থাকার প্রতিজ্ঞা করে আগামি থেকে আগামির পানে! হাজারো কষ্ট বুকের মাঝে লুকিয়ে! আজকের এই শুভক্ষনে কানিজ জানে আযাদ তাকে স্ত্রীর অধিকার দিতে পারবেনা তারপরও সে জাগতিক চাহিদাকে পায়ে দলে আাযাদের জীবনে আসে! আযাদ আন্তরিক ভাবে কষ্ট পেলেও কানিজের জন্য আজকে তাকে প্রফুল্ল থাকতে হবে! যে মানুষটা সারা জীবনের কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে বিয়ে করে! সেই মানুষটার মনে কোন ভাবেই কষ্ট দিতে পারবেনা আযাদ! কারন কানিজ যদি বিয়ে ভেঙে দিতো সেক্ষত্রে তার ছিল পূর্ণ অধিকার! কিন্তু কানিজ তা না করে আরো সহমর্মিতার পরিচয় দিয়েছে! তাই কানিজের একটি ছাড়া বাকি সকল ইচ্ছা পূরন আযাদের জন্য জুরুরী! "বাসর ঘর"! এই একটি ইচ্ছা মানুষকে সত্যিকার মানুষে পরিণত করে! কর্মঠ করে, পুরুষকে করে সুপুরুষ, আর নারীকে করে সতীনারী! আযাদ ও কানিজের জীবনেও বাসর রাত এসেছে কিন্তু এইখানে নেই কোন জাগতিক চাওয়া পাওয়া! শুধুই দুজন দুজনের প্রতি সহমর্মিতা দেখিয়ে চলবে যতদিন বেঁচে থাকে! কানিজ ব্যক্তি জীবনে আযাদের জন্য যে ছাড় দিয়েছে তাতে একদিক থেকে কানিজ ঠকেছে বলা চলে! আরেক দিক থেকে কানিজ সত্যিকারের মানুষের পরিচয় দিয়েছে! বাস্তবতায় ও মানুষের প্রতি মানুষের এতটাই আন্তরিক হওয়া উচিৎ কিন্তু সবাই তা হতে পারেনা! কানিজ তার সরল মনের ইচ্ছাকে পূর্ণ করতে গিয়ে একটি ভিন্ন রকম জীবন বেছে নিলো!

"বাসর রাত" কানিজ ও আযাদের জীবনের কাংখিত রাত! তবে এই রাতকে তারা ভিন্নভাবে কাটানোর চিন্তা করে! দুজন দুজনকে যেভাবেই পারে খুশি করতে ট্রাই করে! গল্প বলা, কৌতুক করে হাসানো, নানা রকমরসিকতা করা আর সারাদিন শেষে রাতের অনেক সময় পর্যন্ত ছাদে উঠে আকাশের তারা গনণা করা! একজন একজনকে খুশি রাখার জন্য আপ্রান চেষ্টা করে যায়! কানিজ চায়না কোন কারনে আযাদের মনে কষ্ট যাক তেমনী আযাদও চায়না কোন সামান্য কারনেও কানিজের মনে কষ্ট যাক! তাই দুজনেই দুজনের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখে! দুজনের প্রতি দুজনের সহানুভিতার হাত খুবই প্রসস্থ! কানিজ আযাদকে বলে আপনার সকল পছন্দ অপছন্দ ইচ্ছা অনিচ্ছা ভালোলাগা মন্দলাগা সব আমাকে জানাবেন! আযাদ বলে আজকেও আপনি বলে দুরে রাখবে? তুমি বলতে পারো কেন? কানিজ বলে সময় লাগবে তুমি শব্দটার ব্যবহার করতে! আযাদও অনুরুপ বলে! কানিজ বলে অন্য কারো কথা শুনে কখনো মনের মাঝে সন্দহকে প্রশ্রয় দিবেননা! কারন সন্দহ জীবনের সকল সুখকে সর্য গ্রহণের মত নিঃশ্বেস করে ফেলে! আমরা কখনোই কোন ব্যপারে সন্দহকে প্রাধান্য দিবোনা! আমরা আমাদের পৃথিবী আমাদের মনের মত করে সাজাবো! যেন সেখানে কখনো সন্দহ দাঁনা বাঁধতে না পারে! আপনি আমাকে সকল কাজে সহযোগীতা করবেন! আর আমাকে ও পাবেন আপনার জন্য সহযোগী! আযাদ সব শুনে বলে ইনশা-আল্লাহ তোমার ইচ্ছামতই হবে সবকিছু! এবার আযাদও বলে কানিজ তুমি কখনো কোন কারন মন খারাপ করনা! যতটা সম্ভব স্বাভাবিক থাকবে!

মনের মাঝে কষ্টকে প্রবেশ করতে দিবেনা! একটা কষ্ট মনের মাঝে প্রবেশের চেষ্টা করলে আরেকটা ইচ্ছা পূরন করে তুমি সেটাকে বাঁধা দিবে! আমার দূর্বলতা কোথায় সেটা তুমি জানো এছাড়া বাকি সবকিছুতে তোমার ইচ্ছাকে মূল্যায়ন করো! আমার থেকে সব ধরনের অবকাশ তোমার জন্য! কানিজ বলে ইনশা-আল্লাহ! এভাবেই চলতে থাকে কানিজ আর আযাদের জীবন ভেলা! এখানে কখনো কষ্ট আসার অবকাশ পায়না কারন কেউই কাউকে কষ্ট দিতে চায়না! কানিজ সর্বাঙ্গীন ভাবে চেষ্টা করে আযাদের সেবা করে! কখনো তার মনে আযাদের প্রতি অবহেলা বা রাগ আসেনা! কানিজ সবসময় হাসি খুশি থাকতেও চেষ্টা করে! কানিজ খেয়াল রাখে কি করলে আযাদ মানুষিক প্রশান্তিতে থাকবে প্রথমদিন থেকে শুরু করে সব সময় সেই কাজটিই করতে চেষ্টা করে! আযাদকে রেখে একদিনের জন্যেও কানিজ মায়ের বাড়িতে যায়না কারন আযাদের কষ্ট হবে ভেবে! যদিও কখনো যায় সকালে গিয়ে বিকেলে চলে আসে! আযাদ জানতে চাইলে বলে তোমার কষ্ট হবেনা একাকি থাকতে? আযাদ চুপসে যায়! আযাদের কানিজ বাসায় না থাকলে কষ্টই লাগে! তারপরও মানুষ তো একখানে থাকতে থাকতে একঘেঁয়েমী লাগে তাই মাঝে বলে বাহিরে থেকে ঘুরে আসতে! অথবা বাবার বাড়ি থেকে! কানিজ খুব কমই যায় তার বাবার বাড়িতে! কানিজের ব্যবহারে আযাদ নিজেকে খুবই ভাগ্যবান মনে করে! খুবই আনন্দ আর সুখেই কেটে যাচ্ছে আযাদ কানিজের সংসার!

চলছে........................চলবে!

বিষয়: সাহিত্য

১২২২ বার পঠিত, ১২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

275972
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:১২
আফরা লিখেছেন : আযাদ ও কানিজের সংসার সুখেই ভরে থাকুক এই কামনা রইল ।
১৯ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৪১
220077
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : কল্যান কামনার জন্য আপনাকে যাযাকুমুল্লাহ
275978
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০২:৪৫
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৯ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৪২
220078
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালোলাগা অনুভুতি রেখে যাবার জন্য যাযাকুমুল্লাহ!
275992
১৯ অক্টোবর ২০১৪ দুপুর ০৩:১৯
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : আযাদ ও কানিজের সংসার সুখেই ভরে থাকুক এই কামনা রইল । Loser Loser

৩য় প্যারাতে এসে কেমন জানি লাগলো। আমার ভয় হচ্ছে, আযাদ আবার এমন কিছু করে বসবে কি না, যেটা কানিজের এত ত্যাগ কে তুচ্ছ করে কানিজের মন কে ভেঙ্গে চুরমার করে দিবে?

হায় আল্লাহ্ এমনটি যেন না হয়।
১৯ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৪৩
220079
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ঝড়ের কথা বলা যায়না কখন কোন দিক থেকে আসে! সু্ন্দর অনুভুতি রেখা যাবার জন্য আপনার শুকরিয়া!
276019
১৯ অক্টোবর ২০১৪ বিকাল ০৫:০৪
মামুন লিখেছেন : দুর্দান্ত লিখনি মন ছুঁয়ে গেলো। অনুপমেয় অনুভূতিতে বিলীন হলাম।
কানিজের জন্য রইলো শুভকামনা তার সাহসিকতার আড়ালে এক প্রেমময় অনুভূতির জন্য Thumbs Up
ওদের দুজনের একটি সুন্দর পরিসমাপ্তি-ই কামনা করছি।
সামনের পর্বগুলি আরো প্রগাঢ় ভালবাসার অনুভূতিতে আমাদেরকে মুগ্ধ করবে সেই আশাই করছি।
অনেক ভালো লাগলো এই পর্বটিও।
জাজাকাল্লাহু খাইর। Thumbs Up Rose Rose Rose Good Luck Good Luck Good Luck
১৯ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৪৪
220080
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : যাযাকুমুল্লাহ পড়ে মন্তব্য করার জন্য!
276066
১৯ অক্টোবর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৬
সন্ধাতারা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
১৯ অক্টোবর ২০১৪ রাত ০৯:৪৫
220081
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : ভালো লাগা রেখে যাবার জন্য যাযাকুমুল্লাহ!
287410
২৪ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৫:৪৭
নাছির আলী লিখেছেন : সত্যিই আপনার ভাষা শৈলী দেখে আমি মুগ্ব্দ।সংসার জীবনে দুজনের মাঝে সন্দেহের দানা বাধলে সেই সংসারে সুখ আসা করা যায় না ।কানিজ এবং আযাদের সংসার তার ব্যত্রিম।আপনার মার্জিত নম্র সাবলীল ভাষায় লিখা টা পড়ে অনেক অনেক ভালো লাগলো। সুন্দর ও সুসাস্থ্য কামনায় ।যাযাকাল্লাহ
১২ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:৩৬
237233
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আপনার মন্তব্য বরাবরই আমাকে উৎসাহ দেয়। আপনার সর্বাধিক কল্যান কামনা করি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File