জীবনটা ক্ষনিকের তবুও মনে স্বপ্ন উঁকি মারে (১ম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ১৪ অক্টোবর, ২০১৪, ০৫:৪১:৩৬ বিকাল
আযাদ চৌধুরী! বংশ চৌধুরী হওয়ায় চৌধুরী উপাধি পেয়েছেন! বেশ কয়েক বছর বিদেশ থেকে অনেক টাকা ইনকাম করে দেশে ফিরেছেন! আর বাবার সহায় সম্পদও আছে অনেক! তিন ভাই ও দুই বোনেরা মধ্যে আযাদ চৌধুরী সবার বড়! বোনদের বিয়ে হয়ে গেছে অনেক আগেই! দেশে আসলে আযাদের মা বলল; বাবারে অনেক তো বিদেশ করলি এবার বিয়ে কর! আর বিদেশ একেবারে বাদ দে! কারন আমার বা তোর বাবার কখন কি হয়! আমরা তোর বউকে দেখে যেতে চাই! আযাদ মাথা নিচু করে বলেন আম্মাজান দেখেন আপনারা যা ভালো বুঝেন তাই হবে! আযাদের মা বাবা মেয়ে খোজার জন্য ঘটক লাগালেন! ঘটক কয়েকটি মেয়ের ছবি দিলো দেখতে! তাদের থেকে একজনকে আযাদের ভালো লাগে ও দেখতে যাওয়ার ইচ্ছা পোষন করে! ঘটক সব ব্যবস্থা করে দেয়! দিনক্ষন ঠিক করে একদিন আযাদ ও তার দুইবোন যান কনে দেখতে!
কনের নাম কানিজ ফাতেমা! সবাই আদর করে ফাতেমা বলেই ডাকে! কনে দেখে আযাদের খুব পছন্দ হয়! সে কনে কে তিনহাজার টাকার একটি খাম দিয়ে আসে! আর জানতে চায় তাকে কনের ভালো লেগেছে কিনা! কনে শুধু একটু মুচকি হাসি দেয়! আর কিছুই বলেনা! বাসায় এসে মা বাবাকে তার অভিমত জানায় বাবা মাও কনে দেখতে যাওয়ার ইচ্চা পোষন করে! সময় ব্যয় না করে দুইদিন পরই তারা উভয়ে কনে দেখতে যায় ও কনের বাবাকে বলে আপনারা খোজ নেন আমাদের তারপর একটি সিদ্ধান্তে আসা যাবে! মেয়ের বাবা বলে ঢাকা শহরে আপনারা মর্যাদা সম্পন্ন ব্যাক্তিত্ব, এক নামে সবাই আপনাদেরকে চিনে আপনাদের আর কি খোজ খবর নিবো? তারপর ও ছেলের মায়ের অনুরোধে একদিন কনে পক্ষ থেকে লোক আসে আযাদদের বাসায়! ওদের বাসা দেখে ও আশপাশ থেকে খবর নিয়ে তারা এখানে সম্পর্ক করতে রাজি হয়! একটি নির্দিষ্ট দিন ঠিক হলো আংটি পরানোর জন্য! আর সেদিনই বিয়ের তারিখ দেয়া হলো! হাতে বিয়ের আর একমাস বাকি!
একমাসে বিয়ের সব আয়োজন করতে হবে! এক এক করে বিয়ের আয়োজন চলছে! ঘরের টুকিটাকি কাজ থেকে ধরে অনেক কাজ চলছে বিয়ে উপলক্ষে! কানিজ ফাতেমার কি রঙ পছন্দ তা জেনে নেয় আগেই! এরপর শুরু করে করে কনের জন্য কেনাকাটা! শাড়ি, জুতা, কসমেটিক থেকে শুরু করে বাকি সব কেনাকাটা করতে থাকে! সব কেনাকাটা শেষ বাকি আছে জুতা আর ভ্যানিটিব্যাগ! হাতে আছে আর মাত্র তিনদিন! এরমাঝে একদিনে বরের জন্যেও কনের বাকি কেনাকাটা করতে হবে! পরের দিন সকালেই আযাদ বাসা থেকে বের হয়ে যায় মার্কেটের উদ্দেশ্যে দুই বোন জামাইকে নিয়ে নিজের ও কনের বাকি কেনাকাটা শেষ করতে! বোনাইদের পছন্দে নিজের শেরোয়ানী কেনে! বরের শেরোয়ানী কেনা হলে বোন জামাইরা চলে যায়! আর আযাদ কনের জন্য বাকি কেনা কাটা শেষ করতে থেকে যান! একটু পর আযাদের ভাই মেজুজন খোকন আসে মরট সাইকেল নিয়ে! আযাদের সাথে দেখা হতেই আযাদ বলে তুই এই মার্কেট নিয়ে সি এন জি নিয়ে বাসায় যা! আমি বাকি কেনাকাটা শেষ করে আসছি!
খোকন ভাড়া করা গাড়িতে চলে যায় বাসায়! আর আযাদ কেনাকাটা শেষ করে বাসায় ফেরার উদ্যোগ নেন! মনে খুবই প্রফুল্লতা নিয়ে মটর সাইকেল চালাতে থাকেন! জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান একটি স্বপ্ন আর মাত্র দুইদিন পরই বাস্তব হতে যাচ্ছে! আহঃ এর আগে কখনো জীবনকে নিয়ে এতটা ভাবেনি! এতটা স্বপ্নে বিভোর হয়নি! এখন মনে হচ্ছে আসলেই আরো আগে বিয়ে করা উচিৎ ছিলো! কিন্তু কেন যে তা হলনা? দুর যা; আমি এসব কি ভাবছি? এত সুন্দর ক্ষনে আমার মনে কিসের উদয় হলো? এখন তো যাকিছু সুন্দর তাই ভাবা উচিৎ! আরমাত্র দুইদিন পর নতুন জীবনের সূচনা হবে! কত সুন্দর সুন্দর চিন্তা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এলো মেলো হয়ে যাচ্ছে সব ভাবনা! কোন ভাল ভাবনাতেও আযাদ আজকে নিজেকে স্থীর রাখতে পারছেনা! তার মনটা আজকে যেন আকাশে উড়ে চলা পাখির মত বাঁধনহারা হয়ে গেছে! দ্রুত ছুটে চলা মটর সাইকেলে বসে এসব ভাবতে ভাবতে কখন যেন বেখেয়াল হয়ে পড়ে আযাদ! আর মূহুর্ত্বের মধ্যে সব উলোট-পালট হয়ে যায়! সে শুধু বুঝতে পারে তার মটর সাইকেলের পিছন থেকে কেউ খুব জোরে ধাক্কা দিয়েছে আর সে মাটিতে পড়ে গেছে! আর কিছু মনে নেই আযাদের.......................!
চলবে......
বিষয়: সাহিত্য
১৪৮৭ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সুন্দর লিখেছেন। এই পর্বটি ভালো লেগেছে।
পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
আপনার লিখার স্টাইলটি অনেক ভালো লাগে। মনে হয় পড়ছি না, ভিডিও দেখছি।
আরো ভালো লিখুন, আল্লাহপাক তৌফিক দান করুন-আমীন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আপু আপনাদের সাথে দুষ্টামী না করলে আমার ভালই লাগে না তাই ........।
গল্প চলুক লেখিকার ইচ্ছা মত ।
আহ জীবনে এমন দিনটি কবে আসবে? প্রতীক্ষার প্রহর যেন আর শেষ হয় না।
পরের পর্ব তাড়াতাড়ি লিখুন
পরের পর্বের.........থাকলাম!
অনেক খুঁজেও নতুন কিছু পেলুম না
আমিন!
সুন্দর লেখার জন্য ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন