@};@}; ''সময়ের কাঠগড়া'' @};@};
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০২:২৬:৪৩ রাত
''সময়ের কাঠগড়া''
চারা যখন বপন করা হয় তখন তাকে নিয়ে নানাবিধ ভয় থাকে কারন হয়তো প্রবল বাতাসে পড়ে যেতে পারে, নয়তো ছাগল বা অন্য কোন প্রানী খেয়ে ফেলতে পারে, নয়তো কোন অবুঝ শিশু উপড়ে ফেলতে পারে। তাই মালি তখন সেই ছোট চারার খুব যত্ন নেয় যেন আপন সন্তানের যত্ন নিচ্ছে। বড় হয়ে গেলে সেই ছোট চারার মত আর যত্ন নেয়না কারন সে এখন বড় হয়েছে শিকড় বাকড় ছড়িয়ে শক্তিশালি হয়েছে তাকে চাইলেই এখন বাতাসে ফেলতে পারবেনা, ছাগলে খেতে পারবেনা, বা কোন অবুঝ মনের শিশুও তা উপড়ে ফেলার সাহস পাবেনা কারন সে এখন পূর্ণ যৌবনে পদার্পণ করেছে সেই গাছকে উপর থেকে কেঁটে ফেললেও মাটির গভীরে তার শিকড় লুকায়িত আছে তা থেকে আবারও নতুন চারা গজাবে, গাছ হবে, এবং তা থেকে মানুষ আবারও উপকৃত হবে।
সত্যের যে আলো ছড়িয়ে পড়েছে পৃথিবীতে তা কোন শক্তি দিয়েই নেভানো যাবেনা। সত্যের মশালের প্রজ্জলিত আলোতে এই পৃথিবী একদিন আলোকিত হবেই ইনশাল্লাহ! আজকের অবস্থানের মানুষেরা সেই কয়েকযুগ আগের মনমানষিকতা নিয়ে চলেনা বরং তারা আরো কয়েকযুগ এগিয়ে ভেবে কাজ করে। তাই তাদের ভাবার মধ্যে যতটা সচ্ছতা আছে ততটাই ভয় আছে। কোন একযুগে মানুষ নিজের পরিধানের কাপড়ই চিনতো না সময়ের ব্যবধানে মানুষ আজকে মানুষ মারার হাতিয়াড় পকেটে করে ঘুরে এবং মারে। সময় বদলে যায়নি আমরাই সময়কে নগ্নতার পোষাক পরিধান করিয়েছি অর্ধ নেংটা করে নাচাচ্ছি মঞ্চে উঠিয়ে আর আমরাই আবার করোতালিতে মুখরিত করছি সেই মঞ্চায়নকে, বুঝতেছিনা আমারই বোনকে উলঙ্গ করে নাচানো হচ্ছে আমারই ভাইয়ের শত্রুর সামনে আর আমি তা দেখে বোনের সম্মান বাঁচাতে এগিয়ে না গিয়ে উস্কে দিচ্ছি করোতালি দিয়ে কবে হবে আমাদের জ্ঞান? কবে হবে হুশ? কবে কাঁটবে মাতলামি? কবে নিজের জীবন দিয়ে বোনের সম্মান বাঁচাতে এগিয়ে যাবো আমরা? আমাদের কি কখনোই হুশ ফিরে আসবে না?
আমার ভাইদেরকে কচুকাঁটা করছে প্রতিদিন, কখনো তাদের রক্তে বইয়ে দিচ্ছে গঙ্গার পানিতে, আবার সেই পানিতে মিডিসিন মিশিয়ে দিচ্ছে যাতে সেই গঙ্গার পানি লালবর্ণ না হয়, কখনো তাদের প্রতিবাদি রক্ত দিয়ে পিসঢালা রাস্তাকে ভিজিয়ে দিচ্ছে আর কেউ ক্ষমতার অপব্যবহারের মগ্ন, কার কাছে আবেদন নিবেদন করবে এজাতি? কে শুনবে এজাতির আর্ত্মচিৎকার? কে সহযোগি হবে আগামির? যারা অঙ্কুরেই উপড়ে ফেলতে চায় নতুন চারাকে তাদের কাছে কি কোন নির্ভরতা আছে সেই নতুন চারার? সেই বট বৃক্ষের? চারার রক্ষনাবেক্ষনের জন্য বেড়া দিলাম বেড়াই যখন চারা খেয়ে ফেলতে চায় তখন গাছের আকাংখা করা বোকামি ছাড়া আর কিছু নয়।
অনেক তো ক্ষয় ক্ষতি হলো এবার ক্ষতি পূরণের সময় এসেছে, সময় এসেছে সবাই এককাতারে দাড়াবার, এককথা ও একই প্রতিবাদে মুখরিত হোক এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত, জীবনকে সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত করে সত্যকে প্রচার করতে আমাদের আরেকবার গর্জে উঠতে হবে সবাইকে কাঁধে কাধ রাখতে হবে, আমাদের কথাকে প্রতিবাদি করতে হবে, আমাদেরকে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আরেকবার শুধু আরেকবার জীবনবাজি রাখতে হবে, সত্যই আমাদের হাতিয়াড়, সত্যই আমাদের মুক্তির পথ, সত্যই আমাদের পাথেয়, আর এই পাথেয়কে কাঁটা মুক্ত করতে হলে আমাদেরকে আর শান্ত থাকা যাবেনা আমাদেরকে হতে হবে এযুগের আবু বকর, হতে হবে এযুগের উমর, হতে হবে এযুগের উসমান, আলি, হতে হবে আমির হামযাহ, হতে হবে গত হয়ে যাওয়া সকল মর্দে মুযাহিদের মত নতুন মুযাহিদ, হাতে নিতে হবে কোষমুক্ত তলোয়ার হয় ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নিতে হবে নয়তো তলোয়ারের আঘাতে জীবন দিতে হবে।
সময়ের কাঠগড়ায় দাড়িয়ে আজকে আমাদের আরেকবার প্রতিজ্ঞা করতে হবে। সত্যকে প্রতিষ্ঠার প্রতিজ্ঞা, মিথ্যাকে নির্মুলের প্রতিজ্ঞা, জ্ঞানবান সবাইকে অজ্ঞের পাশে দাড়াতে হবে, প্রতিবাদি সবাইকে মাজলুমের পাশে দাড়াতে হবে, ধনোবানদেরকে দাড়াতে হবে দরিদ্রদের পাশে, আমাদের শেষ লক্ষার্জনের জন্য সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে এই জমিনে আরেকবার, আরেকবার ডাকতে হবে হুংকার ছেড়ে যেন সব প্রতিবাদি কন্ঠো একত্রিত হয়, তৈরি হয় মুযাহিদের অভয় কাফেলা, যারা মিথ্যার অপশক্তিকে ভয় করেনা, যারা জীবন দিতে ভয় করেনা, যারা ধ্বংসের কালো হাতকে ভেঙে দিতে সদা প্রস্তুত, আরেকবার সেই বাইয়্যাত আমরা নিতে চাই সেই কথার উপর যার উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মদিনা মনোয়ারার আকাশে সত্যের ঝান্ডা, আর সেই ঝান্ডাকে উড্ডীন রাখতে আমাদের সবাইকে আরেকবার প্রতিবাদি হতে হবে, আরেকবার সেই বৃক্ষতলে পানির বদলে রক্ত দিয়ে তাজা করতে হবে যেন আমাদের জীবনের বদলে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয় এই দাবিই বর্তমান সময়ের দাবি, বর্তমান সময়ের কাঠগড়ায় দাড়িয়ে ভাবছি আমরা কি সেই রকম হতে পারবো? পারবো কি জীবন বাজি রাখতে? পারবো কি বোন সম বাংলার সম্মানকে লম্পট ভারত থেকে মুক্ত করতে?
ভাবছি ............শুধু ভাবছি পারবো কি আমরা সবাই একত্রিত হয়ে প্রতিবাদি কন্ঠে গর্জে উঠে বাংলার আকাশে আবারো সেই মুক্তির লাল টিপ পরাতে? পারবো কি এই জমিনকে জালেম মুক্ত করতে? সময় চলে যাচ্ছে, কত ভাই হারাচ্ছি বর্তমান এইপ্রলয় স্রোতো, যে ক্ষতি সাধিত হয়েছে তা কোনদিন পূর্ণ হবার নয়, এরপরও যদি সত্যের বাহকেরা এজমিনে নিরাপদ হয়, নিরাপদ হয় আপন ভাইয়ের কাছে, নিরাপদ হয় অমুসলিমের ভেতরে, সেই স্বপ্ন পূরনে সেই চিন্তাতে বিভোর এই মন কবে আবারো মুসলমান সবাই সবখানে নিরাপদে চলতে পারবে? কবে সেইদিন গুলো আবার ফিরে আসবে? কবে আমাদের মনে হবে আমরা সবখানে সবসময় নিরাপদ যেন আপন মায়ের কোলে আছি শুয়ে? সেই দিনগুলো কি পাবো আবারো সামনে? পাবে কি আমাদের আগামিরা? পাবে কি তারপরের আগামিরা? আমি প্রার্থনা করে যাই আগামির পরের আগামি তারপরের আগামি হলেও যেন সেই মধুমাখা দিনগুলো পায় যেন পৃথিবীর সব জমিনে চলতে পারে নিরাপদে, অভয়ভাবে ঘুমাতে পারে শান্ত মনে, পৃথিবীর সব জায়গাকেই যেন মনে করে তারা আপন মায়ের কোলে যেন নিরাপদে শুয়ে আছে। আমার চোখ সেই সুন্দর দিনগুলো দেখার অপেক্ষায় প্রতিক্ষিত হয়ে আছে............ যেন সেই সুন্দর দিনগুলো অতি তাড়াতাড়ি আসে আর আমি আমরা তা দেখে যেতে পারি। সকল ক্ষমতাবান আল্লাহর কাছে সেই আত্মার আবেদন রাখলাম তিনিই যেন পূর্ণ করেন আমার আমাদের সেই কাংখিত চাওয়া। আর আমাদের সন্তানেরা যেন মুক্ত মনে গাইতে পারে প্রভুর প্রশংসা গান....
‘’সব প্রশংসা তোমার তরে!! সব প্রশংসা তোমার তরে!! আল্লাহ মেহেরবান!! তোমার নামেই দিতে চাই আমি!! তোমার নামেই দিতে চাই আমি!! এই জীবন কোরবান!! আল্লাহ মেহেরবান!! হে আল্লাহ আমাদেরকে আরেকবার সুযোগ দাও নতুন আরেক মদিনা গড়ার তরে হে প্রতিপালক আমার গ্রহন করো এই আকুল আবেদন।
২৫ শে সেপ্টেম্বর ২০১৩
বিষয়: বিবিধ
১৮৪১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন