Rose Rose ''উত্তম স্বামী যারা'' Rose Rose

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ০৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০২:৩৪:১৭ দুপুর

মানুষ হিসেবে সবাই ভাল আবার ভালর মাঝেও আছে কয়েকজন ভিন্ন মতের। কেউ বেশি ভাল আবার কেউ ভালর চেয়ে কিছু কম ভাল। আমি সেদিকে যাচ্ছি না। ভাল মনের মানুষই মানুষের প্রশংসা গল্প প্রকাশ করেন বা করতে পারেন। বর্তমানে এমন মানুষ পাওয়া দূর্লভ। বর্তমানে তো এমন অবস্থা মানুষের গুণাবলী নিয়ে ভাল আলোচনা তো দুরে থাক, নিজের আত্মীয় স্বজনদের সমালোচনাতেই মানুষ ব্যস্ত। খুব কমসংখ্যক লোকই পাওয়া যাবে যারা অন্যের গুণের আলোচনা সমালোচনা করে। যেভাবে জ্ঞানী মহিলাদ্বয় তাদের স্বামীর প্রশংসা করেন।

একজন জ্ঞানী মহিলা যেভাবে স্বামীর প্রশংসা করেন তাতে অবাক না হয়ে থাকা যায়না। উনি উনার স্বামীর ব্যপারে এভাবে বলেন যে, মানুষ হিসেবে নবী-রাসূল (আলাইহিমুস-সালাম) গণকে বাদ দিয়ে সাধারন সবার চেয়ে উত্তম আমার চোখে, আমার নজরে, আমার প্রানপ্রিয় স্বামী। যাকে জীবনের পরম বন্ধু ভাবা যায়। বন্ধু ভেবে, যাকে সব কষ্টের কথা বলা যায়। যার কাছ থেকে শান্তনার বাণী পাওয়া যায়। যার কাছ থেকে আল্লাহ ও তাঁর নবী (আঃ) গণের আদর্শ পাওয়া যায়।

তাঁর আল্লাহ ভীরু মুখ পানে তাকালে মনে আল্লাহর প্রতি ভক্তি আসে এমন ব্যক্তিকে কে উত্তম না বলে পারে? আমি খেয়াল করেছি আমার স্বামী আমার এই সময়ের জন্য একজন উত্তম বন্ধু ও প্রেয়সী। যাকে আমি পাইনি! মহান মহীয়ান অনুগ্রহ করে আমাকে দান করেছেন। পিতামাতা ও আত্মীয় স্বজনদের মতে পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হই আমরা দুজন। বিয়ের কথা যখন ফাইনাল তখন, স্বামী আমার ভুলে নাই মহান আল্লাহকে।

স্বামী মহান প্রতিপালককে এতটাই ভয় করে যে, আমাকে বলে তুমি কি অনেক মোহরানা চাও? যা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূল (সঃ) অপছন্দ করেন? আমার আত্মীয় স্বজনগণ যদিও প্রথম ধাপে মোহরানা বেশি দেয়ার কথা বলেছে কিন্তু মহিলাও এত আবাল বা জ্ঞানহীন নয়, তিনি বলেন, আমি বলেছি না! আমার বেশি মোহরানা চাইনা যে মোহরানার উপর আমার আল্লাহ খুশি নয় এবং আমার হাবীব (সঃ) ও খুশি নয়। আমি ততটুকুই চাই যার উপর আমার আল্লাহ ও তাঁর হাবীব (সঃ) খুশি আর আমিও তাঁর উপর খুশি। হয়ে গেল বিয়ে ফাতেমী মোহরানার মাধ্যমে।

যে বিয়েতে কোন গান-বাজনা হয়নি, হয়নি আলোক সজ্জা বা আধুনিক ভিডিও অথবা খুব বাড়াবাড়ি করা খ্রীষ্টানদের মত কোন আয়োজন। দ্বীনদ্বার মহিলা বলেছেন এতে আমার মন অখুশি নয়, বরং আমি এবং আমার স্বামী সবার দোয়া নিয়ে অনেক অনেক সুখি। বিয়েতে সবার সম্মতি আছে এটাতেই আমরা খুশি। অনেক আলোকসজ্জা না হলে, গান-বাজনা না হলে, ভিডিও না হলে, হাজার হাজার বরযাত্রী না খাওয়ালেও সবার সম্মতিক্রমে অনুষ্ঠানটা ভাল ভাবেই সম্পাদন হয়।

আর সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টা ছেলেদেরকে যৌতুক না দিলে, বর্তমান দিনে বিয়ে যেন পূর্ণই হয়না বাকি থেকে যায়। আসলে বিয়েতে খুব খরচ করলেই বিবাহিত জীবন খুব সুখের হয়না। দেখা যায় সল্পমোহরানার দিয়ে সংগঠিত বিয়ের দম্পতিগণই বেশি সুখে থাকে। আজকের সমাজের দিকে তাকালে দেখা যায় প্রায় ৮৫% যুবক/যুবতীগণ পছন্দ করে বিয়ে করে। এরপর কিছুদিন না যেতেই দেখা যায় সংসারে হানাহানি, মারামারি, পরিশেষে বিচ্ছেদ। আর বাকি ১৫% এর মধ্যে ১০% এর বিয়ে হয় এভাবে যে, তারা নিজেরা পছন্দ করে পরে বাবা মাকে জানায় এরপর তারা সবরকমের ফার্নিচার দিয়ে লোক জানিয়ে উঠিয়ে দেয়। আর বাকি ৫% যুবক/যুবতীর বিয়ে হয় বাবা মায়ের সম্মতিক্রমে।

বর্তমানে অবলোকন হয় বেশিরভাগই বিয়েতে জোরমিল মহব্বত কম, কারন কেউ শশুরের সম্পদের দিকে তাকিয়ে থাকে আর বউয়ের উপর নানা রকম অত্যাচার করতে থাকে যদিও তাদের বিয়ে হয়েছে দুজনের সম্মতিতে কিন্তু পরবর্তীতে দেখা যায় শশুরের টাকা ছাড়া উপায় নেই, কোন বড়কাজ করবে যেমন একটা ব্যবসা দিয়ে বসবে তখনই প্রয়োজন পড়ে শশুরের টাকার। এটা কখনোই উচিৎ নয়। এদিকে গেলে তর্ক বিতর্কের ঝামেলাই বেশি হবার সম্ভবনা আছে তাই এদিকে যাচ্ছি না আপাতত, বির্তক এড়াতেই অন্য কথায় আসি,

সবাই পারেনা সবার গুণকীর্তন করতে কারন সবার মনমানষিকতাও এতটা প্রসস্থ নয়। যারা পারেন তারা আসলে মনে হয় খুব বড় মনের মানুষ। এবং আমার এই এআত্মীয়া স্বামীর খুব খেদমত করেন যা আজকাল তেমন একটা দেখা যায়না। আমার এই আত্মীয়া স্বামীর কথাকে এতটাই মূল্যায়ন করে যে, স্বামী যদি তাঁর নিজের কোন আত্মীয়কে আসতে নিশেধ করে বা তাকে যেতে নিশেধ করে তবে সে তা মানে এবং এই মানার জন্য তাকে তার স্বামীও খুব মূল্যায়ন করে স্বামীর কাছ থেকে মূল্য পাওয়া আসলেই ভাগ্যতন্ত্রীক ব্যপার।

আমরা আমাদের সকলের স্বামীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ ও হইনা আর স্বামী বেচারার কাছ থেকে মূল্যায়ন ও পাইনা, আমি যদি কাউকে মূল্য দেই তবে সেও আমাকে মূল্য দেবে এই কথাটি হল আমার আত্মীয়ার। আসলেই তাই কারো কাছ থেকে মূল্যায়ন পেতে হলে আগে তাকে মূল্যায়ন করতে হবে তবেই মূল্যায়ন পাওয়া যাবে। কারো ভালবাসা পেতে হলে আগে তাকে ভালবাসতে হবে। প্রতিবেশিদের থেকে আন্তরিকতা পেতে হলে আগে তাদেরকে আন্তরিকতা দেখাতে হবে আর এসবকিছুই করতে হবে একমাত্র আল্লাহর রেজামন্দির জন্য নয়তো দুনিয়ার ভাল দুনিয়াতেই থেকে যাবে আর আখেরাত হবে শূন্য। আমরা কেউই হয়তো তা চাইনা।

ইতিতে বলবো আমরা সবাই সবার নিয়্যতকে ছহীহ ও সুন্দর করে নেই তাতে দুনিয়াতেও সুখ পাওয়া যাবে আর আখেরাতে তো পাওয়া যাবে অনন্তকালের সুখ। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে মনের দিক দিয়ে প্রসস্থ মন দান করুন যেন সবাই সবার প্রশংসা করতে পারি সবাই আর পৃথিবী থেকে বৈষম্যতা দুর হয়। মহান আল্লাহ আমাদেরকে সুন্দর জীবন, সুন্দর চিন্তা, সুন্দর ভাবে মানুষের সাথে চলার তৌফিক দান করুন আর আমার সকল জ্ঞানী বোনদেরকে হায়াতে তয়্যিবা দান করুন সাথে আমাদেরকেও আ’ম ভাবে কবুল করে নিন। আমিন আমিন আমিন ছুম্মা আমিন।

বিষয়: বিবিধ

১৯০৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File