''ছাত্রী জীবনের একদিন''
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুবা সুলতানা লায়লা ১৫ এপ্রিল, ২০১৩, ১১:২০:০০ রাত
মহান মহীয়ান আল্লাহ তা’য়ালা এই পৃথিবীর সবকিছুকে সুন্দর সুসজ্জিত করেছেন আদম সন্তানের জন্য। আর আদম সন্তানকে সৃষ্টি করেছেন একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করার জন্য। আর আমরা মানুষ সুন্দর ভালবাসি কিন্তু ইবাদত ভালবাসি না। এলম্ ভালবাসি কিন্তু চর্চা করতে নয়। মানুষকে ভালবাসি কিন্তু মানুষের শাষনকে নয়। সেদিন ছিল রবিবার সেপ্টেম্বরের দুই তারিখ দুই হাজার সাত সালের একটি দিন।
প্রত্যেক দিনের মতই সেদিনও আকাশে রবি উঠেছিল, পাখিরা গান করেছিল সবুজ বৃক্ষের ডালে ডালে, সাগরের ঢেউ তরঙ্গে মিলিয়েছিল, ভোর বিহানে ফুল ফুটেছিল, রাতের আকাশে সোনালী চাঁদ আলো বিলিয়েছিল, মন মাতানো বাতাস বয়েছিল সেদিন, প্রাকৃতির সবকিছুই হয়েছে নিত্য তালিকানুযায়ী। এর ব্যতীক্রম ছিল শুধু আমার ছাত্রী জীবনের সেইদিনটি, অসহনীয় কিছু কষ্ট, কিছু হতাশা, কিছু হাসি,
আর কিছু উপদেশ বানী দিয়ে রাত্রী যাপন। আমরা কয়েকজন (ক্লাসমেট) মানে ছাত্রীবোন। সেদিন আসরের পর থেকে রাতের প্রায় বারটা পঁয়তাল্লিশ পর্যন্ত কান্না আর অনুরোধ, ক্ষমা আর নতি এই নিয়েই অতিবাহিত করেছি সেদিনের সময়গুলো। শুধুমাত্র আমাদের একজন শিক্ষিকার তরফ থেকে ক্ষমা পাবার জন্যই ছিল সেদিনের এতকিছু। এই আপু ছিল খুবই অভিমানি তিনি ছাত্রীদের থেকে কাউকে পছন্দ করতেন না,
যারা ঠিকমত পড়াশুনা না করে। তবে যারা ঠিকমত পড়ে তাদের সব ভুল নগদেই মাফ। বুঝতে কিছুটা দেরি হয়েছিল আর তাই এই কান্না ছিল ভাগ্যে। আজকের দিনের বেশির ভাগটাই কেটেছে কান্নার মাঝে। শুধুই শান্তনা এখানে তিনি সবশেষে আমাদেরকে ক্ষমা করতে পেরেছেন কারন আমরা কয়েকজন ছাত্রী আপার কাছে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছিলাম যতদিন এখানে থাকবো ততদিন ঠিকমত পড়বো এবং আপা ও মুরুব্বীগণ
যা বলে কষ্ট হলেও তাই মানবো ইনশাল্লাহ। সেদিনের পর থেকে আমরা যারা আপার কাছে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছিলাম তারা সকলে এই বিষয়টা স্বরণ করে কাটিয়েছি পরবর্তীসময়গুলো। যদিও খুবই কষ্ট হয়েছে অনেকসময়। আজকে সেদিনের কথাগুলো মনে পড়ে খারাপই লাগছে, আসলে কত মহামূল্যবান সম্পদ ‘’ছাত্রী জীবন’’ সময়ের তালে তাল মিলিয়ে আজকে সেই জীবনটা জমা পড়েছে অতীতের ফ্রেমে।
আগের মত সবই আছে ছাত্রী জীবনটা শুধু হারিয়ে গেছে জীবনের বর্তমান থেকে। আসলেই পৃথিবীর সব মানুষও যদি একত্রিত হয়ে মহান আল্লাহর কাছে আকুতি মিনতি করে মনের সব প্রার্থনা গুলোকে একত্র করে চোখের সব অশ্রু মিশিয়ে ঢালতে পারে তবে ইনশাল্লাহ সবাই ক্ষমা পেয়ে যাবে। পৃথিবী থেকে আল্লাহর রেজামন্দি নিয়ে খুব কমসংখ্যক লোকই আল্লাহর সাক্ষাৎ লাভ করতে পারে। আর আল্লাহ খুশি থাকলে তো
আলহাদুলিল্লাহ!! কোনই চিন্তা নাই যেভাবে হোক তিনি পাড় করবেন সেই পুলসিরাতের কঠিন সময়। আজকের এই বেলাতে এসে জীবনের মানে যতটুকুন বুঝেছি তাতে মনে হয়েছে পৃথিবীতে যাকিছুই থাক না কেন যদি মহান আল্লাহর ক্ষমা না থাকে সাথে তবে যে কিছুই থাকলো না অবশিষ্ট আর যদি তা সাথে থাকে তবে আজীবনের কাঙাল হয়েও যেন পূর্ণভাবে পৃথিবীতে থাকা যায় এবং আখেরাতেও পাওয়া যায় মহামূল্যবান নাজাত!
মহান আল্লাহ আমাদের দূর্বলতাকে মাফ করুন আর আমাদের সব কাজকে কবুল করে নিন এবং আখেরাতে নাজাতের উছিলা বানিয়ে দিন। আর আমাকে যারাই এলম্ শেখার কাজে সহযোগীতা করেছে ও সুযোগ করে দিয়েছে এমন কি নিজেরা সময় ব্যয় করেছে তাদের সবার জন্য আকুল আবেদন মহান আল্লাহর কাছে তিনি যেন তাদের সবাইকে আ্মভাবে মাফ করে দেন এবং উনাদের সবার সন্তানকে নেককার সন্তানরুপে তৈরি করে দেন। এবং সন্তানের উছিলায় সবাইকে জান্নাতে (দাখিল) প্রবেশ করান। আমিন! আমিন! আমিন!
বিষয়: বিবিধ
১৮৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন