ফেলানি,ময়না,বিশ্বজিৎ এক ও অভিন্ন। জেগে উঠো তরুন সমাজ প্রতিবাদ প্রতিরোধের এখনই সময়।
লিখেছেন লিখেছেন এম এ আলীম ০৩ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৯:৫১:৫৪ সকাল
ময়না একটি পাখির নাম । একটি মিষ্টি পাখি। মানুষকে আনন্দ দেয়াই যার কাজ। আমি আজ সে ময়নার কথা বলছিনা আমার ময়না আজকে মানসিক ভারসাম্যহীন।সে এখন থেকে আমাদের শুধু কাঁদাবে।যেমন করে ফেলানি আমাদের কাঁদিয়ে চলে গেছে না ফেরার দেশে।ময়না বেঁচে থেকেও মরে গেছে।
[img]
ফেলানী কাঁটাতারে ঝুলে আমাদের দেখিয়ে গেছে আমরা কতটা অরক্ষিত।ফেলানীরা জীবন দিয়ে মাঝে মাঝে আমাদের বিবেককে জাগ্রত করে যায় আর আমরা ও জেগে উঠি একসময় আবার সবাই ঘুমিয়ে যাই।
বিশ্বজিৎ মরে প্রমাণ করে দিয়ে গেল আমরা কতটা নির্মম।বিশ্বজিৎ তোমারই দোষ, কেন তুমি পেন্ট খুলে দেখিয়ে দিলেনা তোমার ধর্ম পরিচয়।যেমনটি দেখত ৭১ এ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী।স্বাধীনতার এত বছর পর কারা ক্ষমতায়, যারা মুখে শুধু ফেনা তুলে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বলে।অথচ তাদের কাছে বিশ্বজিৎরাও নিরাপদ নয়।
আমরা মালালার জন্য অশ্রু ঝরাতে পারি, আমানতের প্রতি সমবেদনা জানাতে পারি অথচ নিজের বোনকে ধর্ষকের হাতে তুলে দেই।প্রতিদিনই মিডিয়া জগতে অনেক বুদ্ধিজীবির আগমন ঘটে।টকশোতে কথার ফুলঝুরি ছোটে অথচ ময়না বা ফেলানির জন্য কয়েকটি মিনিট ব্যয় করতে তাদের কষ্ট হয়।
ময়না তুমি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে বেঁচেই গেছ নইলে তোমাকে দেখতে হত ডাক্তারের অবহেলা, প্রশাসনের অবহেলা আর যদি সুস্থ থাকতে তাহলে আইনজীবিদের কথার ধর্ষনের স্বীকার হতে বারবার।তুমি থাক তোমার জগৎ নিয়ে।নইলে তোমাকে প্রমাণ করতে হত তুমি ধর্ষিতা।
বিশ্বজিৎ তুমি চলে গেছ বেঁছে গেছ নইলে প্রমাণ দিতে হতো তোমার গায়ে কোথায় কতটা কোপ লেগেছে।
ফেলানি তুমি বেঁচে থেকে কি করতে তোমাকে নিয়ে রাষ্ট্র মোটেই চিন্তিত নয়।সে রাষ্ট্রের বোঝা হয়ে বেঁচে থাকার চাইতে মরে যাওয়াই শ্রেয়।
ময়না,ফেলানি, বিশ্বজিৎ আমি তোমাদের এক কাপুরুষ ভাই। মরার সাহস হয়না মরতে চেয়েও মরতে পারিনা।চোখের সামনে ধর্ষিত বোন আর ধর্ষকদের দাম্ভিকতা দেখেও প্রতিবাদ করতে পারিনা।
কাঁটাতারে বোনের গুলিবিদ্ধ দেহ আর বাঁচানোর আর্ত চিৎকার শুনেও জীবন বাজি রেখে বাঁচাতে ছুটে যেতে পারিনি।
রক্তাক্ত আহত ভাইকে চোখের সামনে মরতে দেখেও বাঁচানোর কোন চেষ্টা করিনি।কারন তারা ছিল ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের সৈনিক। তোমাকে বাঁচাতে গিয়ে শেষে রাজাকার বলে আমার উপর হামলে পড়ত যদি।
ফেলানি,ময়না,বিশ্বজিতের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে।এদের খুনী আমরাই। আমরাই আমাদের বোনদের ধর্ষকের হাতে তুলে দিচ্ছি।আমরা আজ পরযন্ত কোন একটি ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করতে পারিনি।যতদিন ময়নার মতো বোনরা ধর্ষিত হবে ততদিন পুরো জাতিকে এই অন্যায়ের দায়ভার বইতে হবে।
তরুন বিবেক জেগে উঠো। কে হিন্দু কে মুসলমান সেটা বড় বিষয় নয়। আমরা বাংলাদেশি সবাই সবার আপন।যারা সমাজে শত্রুতার বীজ বপন করে হানাহানির রাজ কায়েম করে ফায়দা লুটতে চায় তাদের প্রতিরোধ করতে হবে।
আগামী ৭ই জানুয়ারী ফেলানী দিবসে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদে মুখর হতে হবে।শুধু ফেলানি নয় বিশ্বজিৎ ও ময়নার জন্য ও আমাদের প্রতিবাদী হতে হবে।সারা দেশের তরুন সমাজ দলমত নির্বিশেষে সবাইকে আহবান জানাচ্ছি ব্যনার ফেস্টুন নিয়ে এই সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাই।তোমার পাশের ঘুমন্ত তরুনটিকে জাগিয়ে তোল প্রতিবাদ প্রতিরোধের এখনই সময়।
বিষয়: বিবিধ
২১৫০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন