ভারত বর্ষের একমাত্র মহীলা নবাব।নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী।
লিখেছেন লিখেছেন এম এ আলীম ৩০ জুন, ২০১৩, ০৭:৫৯:২২ সন্ধ্যা
কুমিল্লার লাকসাম পশ্চিমগাওয়ের জমিদার নওয়াব ফয়জুন্নেছা। এ মহিলা জমিদার আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার পশ্চিমগাঁওয়ের সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে ১৮৩৪ইং সালে নওয়াব ফয়জুন্নেসা জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাগুরু মৌলভী ওস্তাদ তাজউদ্দীন মিয়ার তত্ত্বাবধানে তিনি ঘরে বসে বাংলা, আরবী, ফার্সি ও সংস্কৃতি ভাষা চর্চা করেন। নওয়াব ফয়জুন্নেসার স্বামীর নাম ছিল গাজী চৌধুরী। স্বামীর বাড়ি বরুড়া উপজেলার বাউকসারে।
তার দুই কন্যা সন্তান আরশাদুন্নেছা ও বদরুন্নেছা। নওয়াব ফয়জুন্নেসা ভারতবর্ষের একমাত্র মহিলা নবাব। তার আওতায় ১৪টি মৌজা ছিল যা দক্ষিণ কুমিল্লার অন্তর্গত বিস্তৃত এলাকা নিয়ে গঠিত। ১৮৭৩ সালে কুমিল্লা
শহরের নানুয়া দিঘীর পশ্চিম পাড়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন যা কালক্রমে শৈলরাণী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। ঐ বছরেই তিনি কুমিল্লার বাদুর তলায় ফয়জুন্নেসা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় নামে পরিচিত। তার জমিদারীর আওতায় ১৪টি কাচারী সংলগ্ন এলাকায় ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পশ্চিমগাঁয়ে তার বাড়ির পাশে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে ফয়জুন্নেছা এবং বদরুনেসা স্কুল নামে পরিচিত এবং একটি হাই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ নামে পরিচিত। নওয়াব ফয়জুন্নেছা ১৮৯৪ খ্রীষ্টাব্দে হজ্জ্ব পালন করতে গিয়ে মক্কায় মিসফাল্লা মহল্লায় একটি মুসাফিরখানা ও একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেন, আবার মাদ্রাসা-ই সালাতিয়া ও ফুরকানিয়া মাদ্রাসার জন্য প্রতি মাসে তিনশত টাকা সাহায্যের ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলমান নারী শিক্ষার অগ্রদূত নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরী শুধু নারী শিক্ষার কথা ভাবেননি তাদের জন্য স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে এক দুঃসাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। কুমিল্লা শহরে মেয়েদের জন্য তিনি পৃথক দুটি প্রাথমিক বালিকা স্থাপন করেন। মানবতার সেবায় ফয়জুন্নেসা কুমিল্লায় ফয়জুন্নেসা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমানে কুমিল্লা সদর হাসপাতালের ফয়জুন্নেসা নারী ও শিশু ওয়ার্ড নামে পরিচিত। ১৮৭৬ সালে ফয়জুন্নেসা রচিত সাহিত্য গ্রন্থ ‘রুপজালাল’ প্রকাশিত হয়। এছাড়া সঙ্গীত
লহরী ও সঙ্গীতসার নামক দুইটি গীতিকাব্য রচনা করেছিলেন। জনসাধারণের উপকারার্থে ফয়জুন্নেসা প্রচুর দিঘি, পুকুর খনন করেছেন। পশ্চিম গাঁয়ে নিজ বাসস্থানের পাশে স্থাপন করেন একটি দশ গম্বুজ মসজিদ। নামাজীদের সুবিধার্থে একটি পুকুর খনন করেছিলেন। ১৯০১ সালে তার গ্রামে একটি অবৈতনিক মাদ্রাসাও প্রতিষ্ঠা করেন। পশ্চিমগাঁয়ে ডাকাতিয়া নদীর উপর দিয়ে সামনীরপুল নামের একটি লোহার পুল রয়েছে যা তার মাতা আরফান্নেসা তৈরী করেছিলেন। সেই পুলটি ফয়জুন্নেসা পুনঃনির্মাণ করেন। সকলের চিকিৎসার জন্য নির্মাণ করেন ‘লাকসাম দাতব্য চিকিৎসালয়’। এ মহীয়সী নারীর মৃত্যু হয় ১৯০৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়
-
ভারত বর্ষের একমাত্র মহীলা নবাব।নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানী।
কুমিল্লার লাকসাম পশ্চিমগাওয়ের জমিদার নওয়াব ফয়জুন্নেছা। এ মহিলা জমিদার আজীবন মানুষের কল্যাণে কাজ করে স্মরণীয় হয়ে আছেন।
কুমিল্লা জেলার লাকসাম উপজেলার পশ্চিমগাঁওয়ের সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারে ১৮৩৪ইং সালে নওয়াব ফয়জুন্নেসা জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষাগুরু মৌলভী ওস্তাদ তাজউদ্দীন মিয়ার তত্ত্বাবধানে তিনি ঘরে বসে বাংলা, আরবী, ফার্সি ও সংস্কৃতি ভাষা চর্চা করেন। নওয়াব ফয়জুন্নেসার স্বামীর নাম ছিল গাজী চৌধুরী। স্বামীর বাড়ি বরুড়া উপজেলার বাউকসারে।
তার দুই কন্যা সন্তান আরশাদুন্নেছা ও বদরুন্নেছা। নওয়াব ফয়জুন্নেসা ভারতবর্ষের একমাত্র মহিলা নবাব। তার আওতায় ১৪টি মৌজা ছিল যা দক্ষিণ কুমিল্লার অন্তর্গত বিস্তৃত এলাকা নিয়ে গঠিত। ১৮৭৩ সালে কুমিল্লা
শহরের নানুয়া দিঘীর পশ্চিম পাড়ে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন যা কালক্রমে শৈলরাণী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হচ্ছে। ঐ বছরেই তিনি কুমিল্লার বাদুর তলায় ফয়জুন্নেসা উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় নামে পরিচিত। তার জমিদারীর আওতায় ১৪টি কাচারী সংলগ্ন এলাকায় ১৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি পশ্চিমগাঁয়ে তার বাড়ির পাশে একটি স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন যা বর্তমানে ফয়জুন্নেছা এবং বদরুনেসা স্কুল নামে পরিচিত এবং একটি হাই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। যা বর্তমানে নবাব ফয়জুন্নেসা সরকারি কলেজ নামে পরিচিত। নওয়াব ফয়জুন্নেছা ১৮৯৪ খ্রীষ্টাব্দে হজ্জ্ব পালন করতে গিয়ে মক্কায় মিসফাল্লা মহল্লায় একটি মুসাফিরখানা ও একটি মাদ্রাসা স্থাপন করেন, আবার মাদ্রাসা-ই সালাতিয়া ও ফুরকানিয়া মাদ্রাসার জন্য প্রতি মাসে তিনশত টাকা সাহায্যের ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলমান নারী শিক্ষার অগ্রদূত নওয়াব ফয়জুন্নেসা চৌধুরী শুধু নারী শিক্ষার কথা ভাবেননি তাদের জন্য স্বতন্ত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপনের মাধ্যমে এক দুঃসাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। কুমিল্লা শহরে মেয়েদের জন্য তিনি পৃথক দুটি প্রাথমিক বালিকা স্থাপন করেন। মানবতার সেবায় ফয়জুন্নেসা কুমিল্লায় ফয়জুন্নেসা হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করেন, যা বর্তমানে কুমিল্লা সদর হাসপাতালের ফয়জুন্নেসা নারী ও শিশু ওয়ার্ড নামে পরিচিত। ১৮৭৬ সালে ফয়জুন্নেসা রচিত সাহিত্য গ্রন্থ ‘রুপজালাল’ প্রকাশিত হয়। এছাড়া সঙ্গীত
লহরী ও সঙ্গীতসার নামক দুইটি গীতিকাব্য রচনা করেছিলেন। জনসাধারণের উপকারার্থে ফয়জুন্নেসা প্রচুর দিঘি, পুকুর খনন করেছেন। পশ্চিম গাঁয়ে নিজ বাসস্থানের পাশে স্থাপন করেন একটি দশ গম্বুজ মসজিদ। নামাজীদের সুবিধার্থে একটি পুকুর খনন করেছিলেন। ১৯০১ সালে তার গ্রামে একটি অবৈতনিক মাদ্রাসাও প্রতিষ্ঠা করেন। পশ্চিমগাঁয়ে ডাকাতিয়া নদীর উপর দিয়ে সামনীরপুল নামের একটি লোহার পুল রয়েছে যা তার মাতা আরফান্নেসা তৈরী করেছিলেন। সেই পুলটি ফয়জুন্নেসা পুনঃনির্মাণ করেন। সকলের চিকিৎসার জন্য নির্মাণ করেন ‘লাকসাম দাতব্য চিকিৎসালয়’। ১৯০৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর। ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে মসজিদের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়
-
বিষয়: বিবিধ
৫২৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন