ফুল চোর
লিখেছেন লিখেছেন মেরাজ ২৪ নভেম্বর, ২০১৪, ০১:১৫:১৬ রাত
সেদিন সম্ভব আব্বু রোজা রেখেছিলেন, মাগরিব নামাজের পর পরই তিনি দুধ ভাত খাচ্ছিলেন খেজুর দিয়ে। আধা কাচা খেজুর আব্বুর অনেক প্রিয়।
সন্ধ্যায় আমরা ভাইয়ারা যে যার মতো পড়ছি। আমি তখন ক্লাস নাইন - টেনে পড়ি। কোন কথা নাই বার্তা নাই হঠাৎ আব্বু এসে এক থাপ্পড় লাগালেন নাকে মুখে চোখ শুদ্ধ; চোখে তারা দেখা হয়ে গেল। কিছু একটি বুঝার আগেই আরো কয়েকটা থাপ্পড় খেয়ে বেকুব বনে গেলাম। তারপর তিনি ডাইনিং রুমে চলে গেলেন অতপর প্লেটের ঝনঝন শব্দ… … …
একটু পর আম্মুকে জিজ্ঞাসা করলাম আমাকে এতো নির্দয়ের মতো মারলো কেন; বাসা থেকে বের করে দিলেই হয় এইরকম করে মারতে হয় নাকি?!?
আম্মু বললেন তোর বাবা যখন খেতে বসলেন তখন পাশের বাড়ির হিন্দু মেয়েরা এসে বিচার দিয়ে গেছে তুই নাকি নামাজ থেকে ফিরার পথে সেই বাড়ির নতুন চারা গাছের ফুল নিয়ে এসেছিস, কাল পূজাতে দিবে বলে তারা মান্নত করে রেখেছিল। সেই জন্য তুকে মেরেছে- তারপর আম্মুর লেকচার আমাকে আর কত জ্বালাবি কেবল তোর জন্য তোর বাবার কাছে ছোট হয়ে থাকতে হয় আরো কত কি।
বেসিনে গিয়ে মুখ ধুয়ে সোজা সে হিন্দু বাড়িতে গিয়ে সেই চারা গাছটাকে এক টানে উঠিয়ে শিকড় গুলো উপরের দিকে রেখে কিছু ডালপালা মাটি চাপা দিয়ে আসি।
ব্যাস সকালে হৈ হোল্লা শুরু- আর হিন্দু বাড়ির মেয়েদের কত অনুনয়(!) বিনয়ী ভঙ্গিমায় মেরাজ তোমার কোন ফুলটা লাগবে একবার শুধু বলে দিও আমরা বাসায় দিয়ে আসবো।
তারপর থেকে ফুলের আর অভাব হয়নি… … …
বিষয়: বিবিধ
১১৩৪ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ফেরেস্তা সুরতের সেই শৈশব-কৈশোরের ভয়ংকার শয়তানীপনা দিন গুলো নস্টালজিক অনুভূতি বিলীন করে এখনো!
ফেলে আসা সোনালী ক্ষণকে একটু হলেও সামনে আনায় অনেক ধন্যবাদ ও শুভ কামনা!
অনেক অনেক ভাল লাগা ছড়িয়ে গেলাম উপস্হাপনার জন্যে!!
কৈশোরের দস্যিপনায় মৃদু শাসন আর কী.....!!!
বেগতিক দেখলে ভু দৌঁড় আর কাহাফ বেচারা কাদোঁ কাদোঁ চেহারা নিয়ে ফিরে আসতো
চেহারায় আনাড়ীঁ ভাব বলে আপনার এমন ধারণ! ভূ দৌঁড় দেয়ার লোক নই আমি!!
তবে আমি ছোট কালে খুব ভালো মানুষ ছিলাম যেমনটা এখনো আছি তবে মাঝে মধ্যে অন্যের গাছের আম আর লিচু নিজের মনে করে না বলে ছিড়ে খেতাম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন