কুড়িয়ে পাওয়া
লিখেছেন লিখেছেন মেরাজ ১৯ মার্চ, ২০১৪, ০৩:৪৩:৫৯ দুপুর
একটি পাত্রে একটি ব্যাঙ নিয়ে তাতে পানি দিয়ে গরম করতে শুরু করুন । দেখবেন পানির তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে ব্যাঙটি তার শরীরের তাপমাত্রার সামঞ্জস্য করতে শুরু করবে । যতই তাপমাত্রা বাড়বে ততোই পানির তাপমাত্রার সাথে নিজের শরীরের তাপমাত্রার সামঞ্জস্য করতে থাকবে সে । ঠিক যখন পানি ফোটার তাপমাত্রায় পৌঁছবে তখন আর সে ওই তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে নিতে পারবে না ।
ওই তাপমাত্রায় সে লাফ দিয়ে পাত্রের বাইরে আসার জন্য চেষ্টা করবে । কিন্তু সে তা আর পারবে না, কারণ সে তার সকল শক্তি পানির তাপমাত্রার সাথে মানিয়ে নিতে ব্যয় করে ফেলেছে । এর খুব অল্প সময়ের মধ্যে ব্যাঙটি মারা যাবে । ব্যাঙটি কেন মারা গেল ? অনেকেই উত্তর দিবেন পানির উচ্চ তাপমাত্রার জন্য । কিন্তু আসলে ব্যাঙটি মারা গিয়েছে এই কারণে যে, কখন লাফ দিয়ে বের হতে হবে সঠিক সময়ে এই সিদ্ধান্ত সে নিতে পারে নি ।
চাতুর্যপূণ, বিভ্রান্তিকর ও প্রচন্ড শক্তিশালী শয়তান আমাদের অবস্তা এই ব্যাঙের মতো করে ফেলে । মানুষ এবং ব্যাঙের রয়েছে অসাধারণ মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা । একজন মানুষ সকল পাপানুকুল পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে পারে । একটা শিশুর সেন্স আসার পর থেকেই শয়তান তাকে ধোঁকা দিতে শুরু করে । তাকে ইবাদত থেকে গাফিল করার চেষ্টা করে । আল্লাহ্ মানুষকে শয়তানের সাথে মোকাবেলা করার শক্তি দিয়েছেন । সেই শক্তি সে শয়তানকে প্রতিহত করার কাজে ব্যয় না করে তার সাথে মানিয়ে নিতে ব্যয় করে এবং চিন্তা করে আর কয়েকদিন পর ভালো হব, নামাজ পড়ব, মেয়েদের সঙ্গ ছেড়ে দেব ।
এভাবে ধীরে ধীরে শয়তানের প্ররোচনা বাড়তে থাকে, মানুষও সেই পরিস্থিতিতে মানিয়ে নিতে চায় । এভাবে ধীরে ধীরে শয়তানকে প্রতিহত করার সকল শক্তি সে শয়তানের সাথে আপোষ করার কাজে ব্যয় করে ফেলে । ফলশ্রুতিতে তার সকল চারিত্রিক গুণ এবং মানবিকতা নষ্ট হয়ে যায় এবং আর ইসলামের পথে আসা সম্ভব হয় না । হালালকে হারাম এবং হারামকে হালাল মনে করতে শুরু করে ।
প্রথম ক্ষেত্রে ব্যাঙের জন্য সবচেয়ে করুন এবং মর্মান্তিক পরিণতি হল তার মৃত্যু কারন সে একটু সচেতন হলেই সেটা ঠেকাতে পারত । আর দ্বিতীয় ক্ষেত্রে একজন মানুষের জন্য সবচেয়ে করুন পরিণতি হল তার ঈমান আমলের ধ্বংস । তাই একটা ক্ষুদ্র অন্যায় থেকে নিজেদেরকে বিরত রাখার সামর্থ্য থাকলে সেটার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা আবশ্যক । কেননা শয়তান মৃত্যু অপেক্ষাও ভয়ংকর প্রতিপক্ষ।
‘শয়তান তো এটাই চায়, মদ ও জুয়া দ্বারা তোমাদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও হিংসা সৃষ্টি করে এবং আল্লাহ্র স্মরণ ও নামাজ থেকে তোমাদেরকে দূরে সরিয়ে রাখে । সুতরাং এখনও কি তোমরা ফিরে আসবে ?’(মায়িদাহ ৫:৯১)
নেট থেকে কুড়িয়ে পাওয়া
বিষয়: বিবিধ
৯৪০ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন