গণতন্ত্র কি একটা রেলগাড়ীর মতো? ইসলামী গণতন্ত্র কি সম্ভব?

লিখেছেন লিখেছেন মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক ৩০ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:৪৬:২৩ রাত

গণতন্ত্র একটা গাড়ীর মতো বাহনমাত্র, গন্তব্য নয়। এই দৃষ্টিতে সামাজিক ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহনের অন্যতম ও আপাতঃদৃষ্টিতে ‘উত্তম’ প্রক্রিয়া বিশেষের নাম গণতন্ত্র।

গণতন্ত্রের আলোচনায় এত বেশী মাত্রা (ডাইমেনশান) রয়েছে যে, ‘‘গণতন্ত্র জায়েয, না না-জায়েয’ এক কথায় প্রকাশ কর’’ - টাইপের হ্যাঁ/না উত্তর নির্ধারণ করতে চাওয়াটা নিতান্তই শ্রেণীগত বিভ্রান্তি। আপনি ‘গণতন্ত্র’ সম্পর্কে কি ধরনের ফয়সালা করবেন তা নির্ভর করছে ‘গণতন্ত্র’ বলতে আপনি কী বুঝছেন, সেটির উপর।

যারা গণতন্ত্রকে অনুসরণ বা ব্যবহার করেন, যাদেরকে বা যখন আমরা নিজেদেরকে গণতন্ত্রী হিসাবে দাবী করি তখন ‘গণতন্ত্র’ নামক টার্মটা কী অর্থ ও তাৎপর্য বহন করে? আমার মতে, (১) গণতন্ত্র বলতে প্রাকটিক্যালি কোন্ কোন্ কাজকে বুঝানো হয়, (২) গণতন্ত্রীরা আদর্শ গণতন্ত্রের কী দোহাই দেন, অর্থাৎ তাত্ত্বিকভাবে তাঁরা গণতন্ত্র সম্পর্কে কী ধারনা রাখেন বা দাবী করেন এবং (৩) গণতন্ত্র শব্দটির বুৎপত্তিগত ও ঐতিহাসিক তাৎপর্য্য কী - গণতন্ত্র সম্পর্কে এই তিন ধরনের ব্যাখ্যা-সূত্র ও ধারনা গঠন কাঠামো হতে পারে।

যারা ‘ইসলামী’, ইংরেজীতে যাদের ইসলামিস্ট বলা হয়, সহজ বাংলায় যাদের ইসলামপন্থী বলা যায়, সেই আমরা যখন কোন মতাদর্শকে ইসলামের সাথে মিলাতে যাই তখন আমরা প্রায়শঃ পন্ডিতি করে সংশ্লিষ্ট মতাদর্শ বা বিষয়টির বুৎপত্তিগত কিম্বা এর দাবীকৃত মডেলকে নিয়ে টানা-হেচড়া করি। যার লক্ষ্য হলো সেটিকে শুধুমাত্র তাত্ত্বিকভাবে শেষাবধি নাকচ করা, ইংরেজীতে যাকে ‘ডিজ-ওয়োন’ করা বলা হয়।

ইসলাম এমন একটি মতাদর্শ বা দ্বীন, অন্য কোনটির সাথে এর সাযুজ্যতা নাই। এটি অনন্য। - এই ধরনের কথা-বার্তাকে বাহ্যতঃ অত্যন্ত খাঁটী কথা হিসাবে মনে হলেও ইসলামের বিশ্ব-দৃষ্টির প্রেক্ষাপটে এটি খন্ডিত, একপেশে ও অর্ধ-সত্য। একাধারে সামগ্রিক ও প্রায়োগিক তথা হোলিস্টিক ও কন্টিনজেন্টলি ইসলামের সাথে অন্য কোন দ্বীন-ধর্ম ও মতাদর্শের সর্বাঙ্গীন মিল বা সাযুজ্য নাই, এ অর্থে ইসলাম অনন্য ও সর্বোত্তম বটে। কিন্তু মানব সমাজ ও জীবনের নানাদিকের প্রসঙ্গে অপরাপর মতাদর্শসমূহের বিভিন্ন ইতিবাচক দিকের সাথে ইসলামের সংশ্লিষ্ট দিকসমূহের দারুণ মিল ও অভিন্নতা বিদ্যমান।

যদি ইসলামের মধ্যে সব দ্বীন ধর্ম ও মতাদর্শের সর্বোত্তম দিকগুলো রয়েছে - এমন হয়, তাহলে ইসলামকে একটা স্বতন্ত্র, অনন্য ও একমাত্র মতাদর্শ হিসাবে, স্বয়ং একটা ব্র্যান্ড হিসাবে গ্রহন করতে অসুবিধা কি? সেটিই সবচেয় সহজ, নিরাপদ ও যুক্তিসংগত নয় কি?

উপরের এই যুক্তি প্রক্রিয়াটি একজন আধুনিক ইসলামিস্টের মানস গঠনের দিক থেকে দারুণভাবে চিত্তাকর্ষক, নিঃসন্দেহে। তৎসত্বেও, অন্য দৃষ্টিতে এটি হচ্ছে একধরনের পিউরিটানিক ও প্রতিক্রিয়াশীল দৃষ্টিভংগী মাত্র!? ইসলামের সাথে যখন যে মতাদর্শের যতটুকু মিল খুঁজে পাওয়া যাবে সেটি বা সেটুকুকে ইসলামী হিসাবে গ্রহন করতে হবে। এটিই হচ্ছে ইসলাম সম্পর্কে প্রান্তিকতামুক্ত ও প্রোএকটিভ দৃষ্টিভংগী। কোনকিছু ইসলাম বিরোধী হিসাবে গণ্য হতে হলে অকাট্য দলীল বা নস্ ও নাযিলের ধারাক্রম অনুযায়ী সেটি সামাজিক-মনস্তত্ত্ব উত্তীর্ণ হতে হবে। তাই, আদতেই ইসলামবিরোধী নয় এমন কোনকিছুর উপর জায়েযকরণের সিল মেরে কৃত্রিম ইসলামাইজেশান ফলানোর দরকার নাই।

আদর্শ হিসাবে গ্রহন করার কারনে হোক কিম্বা বিদ্যমান সমাজ ব্যবস্থার কারনেই হোক, মানুষের সোশ্যাল সাইকী এমন যে, সে যেসব নামে ও জীবনাচারে গড়ে উঠে, অভ্যস্ত হয়ে যায়, পরবর্তীতে সেটিকে আঁকড়ে ধরতে চায়, সেই নাম ও আচারপদ্ধতিকে যথাসম্ভব রক্ষা করতে চায়। সেজন্য যুগ, সমাজ, সংস্কৃতি, এমনকি ভূগোলও মানুষের চিন্তন-পদ্ধতির উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে।

মানুষকে তাঁর সমাজ, সভ্যতা-কাঠামো, ভাষা, সংস্কৃতি ও ভৌগলিকা হতে বিচ্ছিন্ন করে, তাঁর ব্যক্তিক ও সামাজিক মনস্তত্ত্বের বিপরীতে, তাঁর বিদ্যমান বর্তমান ও অতীতকে যথাসম্ভব অস্বীকার করে তাঁকে আরবীয় ধাঁচে ‘ইসলামিক’ হিসাবে গড়ে তোলার মানসিকতাকে আমি অবাস্তব, যথারীতি অনৈসলামিক এবং অগ্রহনযোগ্য ধর্মীয় শুদ্ধতাবাদ বা রিলিজিয়াস পিউরিটানিজম হিসাবে চিহ্নিত করেছি। দেশ-বিদেশের প্রচুর ইসলামিস্ট ব্যক্তি ও সংগঠনকে দেখি এ ধরনের প্রান্তিকতার রোগে ভূগছেন। এ নিয়ে অনেক সময়ে তাঁরা কৃত্রিম শুদ্ধতাবোধও দাবী করেন।

টেকসই আদর্শবাদ প্রতিষ্ঠার সঠিক পন্থা হলো ব্যক্তি, সমাজ ও মতাদর্শ বিশেষকে নিজ নিজ জায়গায় স্থিত রেখেই অপরিহার্য ও মৌলিক কিছু ধারনাগত ও কিছু আচরণগত বিষয়ে পরিবর্তন আনয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করা। তাই চাপিয়ে দেয়া ইসলাম প্রতিষ্ঠার ভুল ধারনা হতে আমাদেরকে মুক্ত হয়ে বীজ রোপণ ও গাছের চারা পরিচর্যার মতো করে ইসলামকে ক্রমধারায় মানুষের জীবনাচারে স্থিত (ইনকরপোরেট) করার চেষ্টা করতে হবে।

এ ধরনের ন্যাচারাল এডাপটেশান অর্থে ইসলামাইজেশানের ধারা ব্যক্তিক ও মতবাদগত উভয় পর্যায়ের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য। একদিকে গণতন্ত্রকে এর তাত্ত্বিক ও বুৎপত্তিগত অর্থে নিয়ে একে আল্লাহর সার্বভৌমত্বের সাথে সাংঘর্ষিক হিসাবে দেখানো সম্ভব। আবার এর প্র্র্যাকটিক্যাল ফর্মকে বিবেচনায় নিয়ে এটিকে ইসলামসম্মত হিসাবেও দেখানো সম্ভব। প্রোএকটিভ লোক দেখবে গ্লাসের অর্ধেকটুকু জলপূর্ণ আর রিএকটিভ মেন্টালিটির লোকজন গ্লাসটাকে অর্ধেক খালি হিসাবেই দেখবে।

এই যে আমি পানি না বলে জল বললাম এতে কিছু লোকজন মনে করবে, ঠিক আছে, কখনো কখনো পানি না বলে জলও বলা যেতে পারে। আবার সিরিয়াস ইসলামিস্ট লোকেরা পানিকে কখনো জল বলতে চাইবে না। কারন, বাংগালী হিন্দুরা পানিকে জল বলে! এসব অসহিষ্ঞু ইসলামিস্টদের মতে পানিকে ‘জল’ বলাটা আমাদের যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ইসলামের নামে আমাদের দেশে যতসব পিউরিটানিজম চলে, এটি তার ছোট্ট একটা উদাহরণ। ইসলামীকরণের নামে ‘নয়ন ভরা জলগো...’ তে কি ‘নয়ন ভরা পানি ...’ চালানো যাবে?

তাই, আদতেই ইসলামবিরোধী নয় এমন মানবিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নৈর্ব্যক্তিক বা প্রায়োগিক কোনকিছুকে অযথাই অনৈসলামী হিসাবে চিহ্নিত করে বাদ দেয়া বা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার কোশেষ করাটা নিতান্তই ধর্মীয় চরমপন্থার রোগ। তাত্ত্বিকভাবে একথা সত্যি যে, যা কিছু ইসলামবিরোধী তার সবটুকুকে বাদ দিতে না পারলে ইসলামী হওয়া সম্ভব নয়। এ পর্যায়ে আবার সেই আগের কথায় ফিরে যেতে হয়, ইসলাম আসলে কি? ধর্ম না হয়ে এটি যদি ধর্ম সংযুক্ত মতাদর্শই হয়, তাহলে সেটি কেমন? এটি কি জগতের কোন কিছুকেই গ্রহন করেনা, ধারন করে না - এ রকম অসাধারণ, অদ্ভূদ ও অনন্য? নাকি জগতের ঐতিহাসিক, বাস্তব ও সম্ভাব্য সব ভাল ও কল্যাণকে ধারন করা, আত্মস্থ করা, আপন ও নিজের করে নেয়ার মতো অ-ল ইনক্লুসিভ একটা কিছু? যদি ইসলামকে প্রোএকটিভ ও ইনক্লুসিভ অর্থে গ্রহন করা হয় তাহলে গণতন্ত্র ও এর মতো অপরাপর সামাজিক মতবাদসমূহ নিয়ে ইসলামপন্থীদের বিশেষ কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়

গণতন্ত্রকে যদি শু-রা অর্থে গ্রহন করা হয় তাহলে এর আধুনিক প্রবক্তারা একে কী অর্থে ব্যবহার করেন সেটি নিয়ে ইসলামপন্থীদের বিশেষ বিচলিত হওয়ার কিছু দেখি না। বৃক্ষ বিশেষকে অন্ধবিশ্বাসে কেউ দেবজ্ঞানে পূঁজা করে বলে প্রয়োজনে সেই বৃক্ষের চাষ করতে, ডাল কাটতে ও ফল খেতে আমার আপনার আপত্তি থাকবে কেন?

মানুষের সমাজ মনস্তত্বের বিষয়ের দিক থেকে দেখলে দেখবেন, তা কোন বিশেষ নাম হোক, আচার হোক, এমনকি খাদ্যাভাস হলেও, মানুষ কোন কিছুতে একবার অভ্যস্ত হয়ে উঠলে তা সহজে ছাড়তে চায় না। তাই ব্যক্তির সংশোধনের মতোই সমাজ ও সামাজিক বিষয়াদিকে যথাসম্ভব নিজ নিজ অবস্থাতে রেখেই পর্যায়ক্রমে সংশোধনের ব্যবস্থা করতে হবে। ইসলামে যেমন কোন পোষাক স্টাইল নাই, আছে কিছু নির্দেশণা; তেমনি সামাজিক ও রাজনৈতিক পদ্ধতি হিসাবে ইসলামে কোন বিশেষ পদ্ধতির পক্ষে এককভাবে কোন নির্দেশ দেয়া নাই। রাজতন্ত্র থেকে গণতন্ত্র - প্রচলিত সব পদ্ধতিই বৈশিষ্ট্যগুণে খিলাফাহ পদ্ধতি হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। প্রচলিত সব রাজনৈতিক পদ্ধতির পক্ষেই তাই কোরআন-হাদীস হতে রেফারেন্স বের করা সম্ভব। অনুসরণযোগ্য প্রথম চার যুগ তথা খাইরুল কুরুন- এ উপস্থাপিত মডেলগুলো তাই বহুমুখী।

দেখুন, আফ্রিকায় যে কোন ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠানেই তাঁরা নাচে। সেটি রাজনৈতিক বিক্ষোভ হোক, শবযাত্রা হোক, বিয়ে হোক আর যা-ই হোক না কেন। অতএব, আফ্রিকান মুসলমানদের জন্য বাদ্য-বাজনার বিষয়টা যতটা ইতিবাচক ও নমনীয়তা নির্ভর হবে তা ভারতীয় উপমহাদেশের বৈদিক ধর্ম তথা বাদ্যানুষ্ঠান বিরোধী ইসলামিস্টদের ক্ষেত্রে ততটা হবে না। গণতন্ত্রের ব্যাপারে একই অবস্থা।

রাজতন্ত্র, ভৌগলিক উপনিবেশবাদ ও স্বৈরতন্ত্রের পরে বর্তমান বিশ্ব-ব্যবস্থা যেহেতু গণতন্ত্র নির্ভর তাই যুগ চাহিদাকে বিবেচনা করে ইসলামী গণতন্ত্র টাইপের রাজনৈতিক ব্যবস্থাতে ইসলামের কালোত্তীর্ণতার নিরিখে কোন অসুবিধা দেখি না। গণতন্ত্রকে পূর্ণাঙ্গ আদর্শ ও মতবাদ হিসাবে মনে করা আর গাড়ীকে গন্তব্য মনে করা সমপর্যায়ের ভ্রান্তি। পাশ্চাত্য মানস এই ভুলে নিমজ্জিত। আদর্শ হিসাবে পাশ্চাত্য গণতন্ত্র এর তাত্ত্বিক ত্রুটিসমূহকে সংশোধন করতে গিয়ে যে তালগোল পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে তা যথেষ্ট কৌতুহল উদ্দীপক।

সার্বভৌমত্বের যেসব বৈশিষ্ট্য ও সংস্থা তাঁরা নির্ধারণ করেছেন তা মহান আল্লাহ ছাড়া আর কোন সত্ত্বার মধ্যে কল্পনাও করা যায় না। তাই তাঁরা বহু রকমের ‘সার্বভৌমত্বে’র কথা বলেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার যে শ্লোগান তাঁরা দ্যায় তা না আছে প্রেসিডেন্সিয়াল সিস্টেমে, না আছে পার্লামেন্টারি সিস্টেমে। সার্বজনীন ভোটাধিকারের বিষয়টি যে গুণগত দিক থেকে অযৌক্তিক, তা তাঁরা বুঝেন না - এমন নয়। এমন তালেগোলের গণতন্ত্র তাঁদের কাছে মন্দের ভাল বৈ নয়। ইসলামিস্টদের কাছে গণতন্ত্র হলো অন্যতম ও সম্পূরক রাজনৈতিক পদ্ধতি মাত্র। ইসলামে এর প্রয়োগবিধিও স্বকিয় ভাবধারার। এই স্বকিয়তা বা নিজস্বতার সুযোগ (ফ্লেক্সিবিলিটি) গণতন্ত্রের ধারনার মধ্যেই বিদ্যমান। তাই সাম্য ও গণ চেতনা অর্থে গণতন্ত্রকে গ্রহন করার মধ্যে কোন ইসলামগত অসুবিধা দেখি না।

শুনতে ভাল না লাগলেও এটি সত্যি যে, আমাদের সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে ইসলাম অন্যতম ও শ্রেষ্ঠ হওয়া সত্বেও মূলতঃই একটা ধর্ম। বেশীর বেশী এ টুকুন তাঁরা মনে করেন যে, ইসলাম ধর্মের একটা রাজনৈতিক দিক আছে যা তাত্ত্বিকভাবে স্বীকার করা ঈমানের ন্যূনতম দাবী। এজন্য শিক্ষিত ইসলামপন্থীরাও না বুঝে ইসলামের দিক থেকে ‘ধর্মভিত্তিক রাজনীতি’র কথা বলেন। ইসলাম প্রসঙ্গে ধর্ম ভিত্তিক রাজনীতির আলোচনা, পক্ষে কিম্বা বিপক্ষে উভয় তরফেই একরকমের খন্ডিত দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচায়ক বা ফলশ্রুতি।

ধর্ম আর রাজনীতি আলাদা ও এক অর্থে মিউচুয়্যালি এক্সক্লুসিভ বটে। ইসলামের বিশ্বজনীন মতাদর্শে মানব সমাজের এই অপরিহার্য দুটো দিক বা উপাদানই বিদ্যমান। একটির জন্য অন্যটি নয়। বরং এতদুভয়ই ইসলামের বৃহত্তর ভাবাদর্শগত কাঠামোর অপরিহার্য অংগ বা অংশবিশেষ (নেছেসারি কম্পোন্যান্ট) যাতে রয়েছে সংস্কৃতি ও অর্থনীতির মতো মানব সভ্যতার জন্য অপরিহার্য আরও কিছু প্রয়োজনীয় উপাদান। ধর্ম ও রাজনীতির এই বিরোধমূলক ও মৈত্রীসুলভ সম্পর্ককে সঠিকভাবে না বুঝার কারনে কোন রাজনৈতিক পদ্ধতি বিশেষ, যেমন গণতন্ত্র, - এর সাথে ইসলামের সম্পর্ক কী হবে তা নিয়ে আমরা দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগি

'সামাজিক ন্যায়' সকল রাজনৈতিকতার লক্ষ্য আর গণতন্ত্র হলো এই লক্ষ্য পূরণে অন্যতম বাস্তবায়ন পদ্ধতি বা প্রক্রিয়াবিশেষ। এই সব কিছুকে ইসলামের অ-ল ইনক্লুসিভ এপিসটেমোলজিক্যাল স্ট্রাকচারের মধ্যে গ্রহন (ইনকর্পোরেট) করে নিলে সবকিছুই ইসলামী হয়ে যায়। তখন গণতন্ত্রকে গাড়ীর মতো ব্যবহার করে এক পর্যায়ে নেমে পড়ার মতো মোকারীর প্রসঙগও আর আসে না। এই গণতন্ত্র নামক গাড়ীটি স্বসীমাবদ্ধতার কারনেই একপর্যায়ে নিজেই থেমে যেতে বাধ্য। তখন গন্তব্যে কিম্বা মাঝপথে থেমে পড়া গাড়ীতে বসে থাকার মতো বোকামী কেউ কি করবে?

বিষয়: বিবিধ

১৮৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File