বিশ্বাস ও সম্পর্ক
লিখেছেন লিখেছেন অকপটশুভ্র ১৬ জানুয়ারি, ২০১৩, ১০:৪০:৩৪ রাত
বিশ্বাসের সুতো কি এতই সূক্ষ্ম! আমারতো মনে হয় বিশ্বাস কে সুতোর সাথে তুলনা করা উচিৎ নয়। বিশ্বাসের তো তুলনা হওয়া উচিৎ কোন পাহাড়ের সাথে কিংবা সীসা ঢালা কোন প্রাচীরের সাথে, যা চাঁদের দেশ হতেও দেখা যায় স্পষ্ট, লক্ষ লক্ষ বছর অবধি থাকবে অক্ষয়। তা হলে কেন বিশ্বাস বলতেই প্রথমেই আমার মনে সুতোর চিন্তাটা এলো? সম্পর্কে মাঝে একটা বন্ধন থাকে বলে? সেটাকে বাঁধতেই কি বিশ্বাসের প্রয়োজন নয়? সেজন্যই কি সুতার প্রসঙ্গটা এসে গেলো?
হতে পারে চারিদিকে অবিশ্বাসের হুড়োহুড়ি দেখতে দেখতে আমি এতটাই মুষড়ে পড়েছি যে বিশ্বাসের অস্তিত্বকেই অবাস্তব মনে হয়। কিন্তু অবিশ্বাসকেও যদি স্পষ্ট দেখা যেতো, শত শত বছর ধরে লুকিয়ে থাকা আগ্নেয়গিরির মতো নিশ্চুপ লুকিয়ে না থেকে সরাসরি উদগীরন করতো। আমি তাহলে বিশ্বাসীদের বিশ্বাস করে সুখী হতাম। আস্থাবানদের খুঁজে খুঁজে মনের কুঠুরিতে উঠিয়ে রাখতাম। ওদের বাড়িয়ে দেয়া হাত দেখে ঝাঁপিয়ে পড়তাম কোন পাহাড় শৃঙ্গ থেকে হাত ওরা সরিয়ে নেবে না এই বিশ্বাসে।
সম্পর্কগুলো কি শুধুই মেকি হয়? সম্পর্কে বললে সবাই শুধু প্রেমিক-প্রেমিকার সম্পর্কের কথাই বুঝে, কিন্তু অগ্রজ-অনুজ, বন্ধুত্ব, প্রতিবেশী থেকে শুরু করে কতো সম্পর্কইতো আছে। সেগুলো কি বিশ্বাস ছাড়া রচিত হতে পারে? হুম আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, অনেক সম্পর্কই তৈরি হয় বিশ্বাস ছাড়া, সেগুলো মেকি থাকে আর থাকে সন্দেহ ও ঘৃণায় ভরপুর। সম্পর্কগুলো টিকিয়ে রাখলেই টেকে, যতক্ষণ না সম্পর্কের নৌকাটি চরম আদর্শের সাথে কিংবা স্বার্থের সাথে ঠোকর লাগে ততোক্ষণ সে টিকে থাকে।
চারিদিকে আমি এ অবিশ্বাসেরই সম্পর্কের হাতছানি দেখছি আজকাল। মেকী সব সম্পর্ক, কোন বিশ্বাস নেই কারো মাঝে। তাই সম্পর্কের সুতোগুলো ছিঁড়ে ছিঁড়ে যায় যখন তখন। সবচেয়ে বিরক্তিকর ও ভয়ংকর যেটা সেটা হল ওই হাসিগুলো যেগুলোর আড়ালে অবিশ্বাসের তীক্ষ্ণ ছোরা উৎ পেতে থাকে। অতি নমনীয়-কমনীয়তার আড়ালে রচে যাওয়া কূটকৌশলের স্পষ্ট ইঙ্গিত জেনেও আমি পারি না তাঁদের টুটি চেপে ধরতে। কারণ হাসির বিনিময়ে কাঁদা ছোড়ার কায়দাটা শেখা হয়নি এখনও। আমার যে রুচি ও চিন্তাধারা তার সাথে এই হীনতা কিছুতেই যায় না। তাই অক্ষত থেকেই ক্ষতির কুটকৌশলকারীদের হাসিমুখের বিনিময়ে ঘৃনাভরা দৃষ্টি নিক্ষেপ আমার দ্বারা হয় না। বারংবার ক্ষতবিক্ষত হয়েও হাসির বিনিময়ে বছরের পর বছর হাসি বিলিয়েছি আমি। কোনদিন মুখ ফুটে বলিনি যে কারণে আমার প্রতি তোমার এই ঘৃনাভরা বিদ্বেষ তা সর্বৈব মিথ্যে। কেন বলিনি? বলিনি এজন্য যে If someone has created even a little trust in you, you should at least sit face to face with him to discuss about that you have heard from third party which makes your trust destroyed. This might be the most minimum honor towards the trust he made in you. “যদি কেউ তোমার হৃদয়ে তিলপরিমান বিশ্বাসও তৈরি করে থাকে তাহলে তোমার উচিৎ নিদেন পক্ষে তার সামনা সামনি বসে তৃতীয়পক্ষ থেকে শোনা কথাগুলো নিয়ে আলোচনা করা। এটা হল সে যে বিশ্বাস তোমার মধ্যে তৈরি করেছে তার প্রতি নুন্যতম সম্মান প্রদর্শন” যারা এ কাজটুকু করার সৎ সাহস রাখে না তাদের ব্যক্তিত্ব নিতান্তই নর্দমায় নিক্ষেপ যোগ্য তুচ্ছ বস্তু। তাদের কাছে বিশ্বস্ত হওয়া বা না হওয়ায় কিচ্ছু যায় আসে না।
বিষয়: বিবিধ
১৩১০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন