ছাত্রীসংস্থার নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি এবং নারী নির্যাতন বন্ধের দাবীতে জাতিসংঘ মহাসচিব বরাবর স্মারকলিপি
লিখেছেন লিখেছেন সাদিয়া ০৭ জানুয়ারি, ২০১৩, ০৫:৩৬:৩৮ বিকাল
বাংলাদেশে আওয়ামী বাকশালী সরকারের অধীনে ধর্মনিষ্ঠ পর্দানশীন নারীরাও যে নিরাপদ নয় তা ন্যাক্কারজনকভাবে প্রকট হয়েছে একজন বয়োজ্যেষ্ঠ নারী ও সন্তানসম্ভবা তরুণীসহ ইসলামী ছাত্রীসংস্থার ২০ জন নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করে তাদের উপর অকথ্য নির্যাতন চালানোর মধ্য দিয়ে। জালেম সরকারের পুলিশ শুধু তাদের পর্দার খেলাপই করেননি, রিমান্ডে নিয়ে তাদের উপর শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছে। আমরা অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ইসলামপ্রিয় মহিলা ও উচ্চতর শিক্ষায় নিয়োজিত ছাত্রীদের মুক্তি দাবী করছি।
কয়েকদিন আগে ঢাকায় ইসলামী ছাত্রীসংস্থার কার্যালয়ে হানা দিয়ে ছাত্রীদের গ্রেফতার ও তাদের উপর নির্যাতন করার প্রতিবাদে গত ২৪ ডিসেম্বর সোমবার সকালে ম্যানহাটানে জাতিসংঘ সদর দফতরের সামনে বাংলাদেশী আমেরিকান ওমেনস এসোসিয়েশন আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত দাবী জানান। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ার জন্য নিউইয়র্কের সকাল থেকেই বিভিন্ন স্থান থেকে মহিলারা জাতিসংঘের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা ১১ টার মধ্যে ৩ শতাধিক মহিলা সেখানে সমবেত হন। বিক্ষোভে নতুন প্রজন্মের বাংলাদেশী আমেরিকান তরুণীদের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষ্যণীয়।
ছাত্রীসংস্থার নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি এবং নারী নির্যাতন বন্ধের দাবীতে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুনের বরাবেরে একটি স্মারকলিপি পেশ করা হয়। স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন বাংলাদেশী আমেরিকান ওমেন্স এসোসিয়েশনের নেত্রী শাহানা মাসুমের নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ। পরে তারা নিউইয়র্কে কাংলাদেশ কনস্যুলেটে গিয়ে ছাত্রীদের মুক্তি ও তাদের উপর পরিচালিত নিপীড়নের প্রতিকার দাবী করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বরাবরে লিখা অপর একটি স্মারকলিপি কনসাল জেনারেল মনিরুল ইসলামের কাছে হস্তান্তর করেন। স্মারকলিপি হস্তান্তরের আগে ইসরাত রুহীর পরিচালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন রাশেদা আলী, শাহানা মাসুম, মাহের নেগার, সাদিয়া রেজা, সুমাইয়া তাবাস্সুম, সাদিয়া রোমানা, ফারজানা আহমেদ, সালমা আফ্রো, তাসনিয়া হেনা, তাহুরা মালিহা গুল, নাসরিন সুলতানা কলি, ফিরোজা আখতার, মারিয়াম তানজিলা ও শারমিন হক প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতা, চারজন পূর্ণ মন্ত্রী এবং প্রায় ৫০ জন সংসদ সদস্য নারী হওয়া সত্বেও সে দেশে এভাবে মা বোনদের নির্যাতন করা সহ্য করা যায় না। সরকারের আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী পর্দানশীন নারীদের গ্রেফতার করে শুধু তাদেরকেই অপমান করেনি, ইসলামের অবমাননা করেছে। তারা অবিলম্বে গ্রেফতারকৃত ইসলামপ্রিয় ছাত্রীদের মুক্তি দাবী করে বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ইতোপূর্বে বিনা কারণে এতোসংখ্যক ইসলামপ্রিয় নারীকে গ্রেফতার করে তাদের উপর নির্যাতন চালায়নি। ইতিহাস এই নিপীড়কদের কখনো ক্ষমা করবে না। তারা এই ন্যাক্কারজনক গ্রেফতার ও নিপীড়নের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দেয়ার দাবী জানিয়ে আরো বলেন, গ্রেফতারকৃতরা প্রত্যেকে উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত। তরা যাতে অবিলম্বে তাদের শিক্ষা কাজে ব্যাপৃত হতে পারে আমরা সেজন্য তাদের মুক্ত করতে বাংলাদেশ সরকারের উপর প্রভাব খাটাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানাচ্ছি। তারা বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহতান জানান যাতে তারা জালেম সরকারের বিদায় নিশ্চিত করার জন্য আন্দোলন বেগবান করেন। তা না হলে বাংলাদেশে কেউ নিরাপদে থাকবে না এবং নারীরাই হবে সরকারী বাহিনী ও ক্ষমতাসীন দলের ক্যাডারদের নির্মম শিকার। আমাদের প্রিয় জন্মভূমিকে আমরা নিপীড়কদের অভয়ারণ্যে পরিণত করতে দিতে পারি না।
বক্তারা আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী নারীদের ইজ্জত রক্ষা নয় বরং সম্ভ্রমহানী করার জন্য কাজ করছেন। নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসার জন্য সবাইকে আহবান জানিয়ে তারা বলেন, পুরুষ পুলিশ ২০ জন নারীকে গ্রেফতার করেছে, রিমান্ডের নামে পুলিশ চুল টেনে ধরে ফোরে ফেলে দিয়েছে। একজন ৫ মাসের অন্তসত্ত্বা নারীকে ৮ তলায় উঠানামা করানো হয়েছে। এসব চিত্র মানবাধিকার লংঘনের এক ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত। উল্লেখ্য, গত ১৭ ডিসেম্বর ঢাকার মগবাজার থেকে ছাত্রী সংস্থার ২১ জন মহিলা কর্মীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। রিমান্ডের নামে ছাত্রী সংস্থার কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশী আমেরিকান ওমেন্স এসোসিয়েশন।
বিষয়: রাজনীতি
১৭১৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন