পিকনিক ট্যূর! চৈতন্য শাহের আস্তানায় (চেতনা ঠান্ডাকারী পিকনিকের ঘটনা দুই পর্বে সমাপ্য)

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৬:৩৭:১১ সন্ধ্যা



বাবারে বাবা, হেঁইও!

ওরে বাবা, হেঁইও!

আরো জোড়ে, হেঁইও!

মার ঠেলা, হেঁইও!

ওরে বাবা থাম! হেঁইও!

সবাইকে থামতে বলছি, হেঁইও!

গর্দভেরা সবাই থাম, তোমরা শুধু ঠেলতেই শিখলে একবার ঠেলা শুরু করলে আর থামতে পার না?

পিকনিক দলের প্রবীণ সদস্যের এমন বিশ্রী মন্তব্যে, হুশ ফিরে পেয়ে, পাহাড়ের ঢালু রাস্তা মাঝেই গাড়ীতে জ্যাক লাগিয়ে সবাই থামল, অমনি বুঝতে পারল ব্যাপার খানা।

কি দুর্গন্ধরে বাবা! এত বিশ্রী গন্ধ আসছে কোত্থেকে? শরীরটা আঠা আঠা লাগছে কেন? আচ্ছা তোমার গায়েও কি গরম আঠার মত অনুভব হচ্ছে? একে অপরকে প্রশ্ন করতে লাগল। বিদঘুটে দুর্গন্ধে চারিদিক একাকার আর এই অদ্ভুত দুর্গন্ধ কোথা থেকে আসছে এই প্রশ্ন পিকনিক দলের প্রবীণ সদস্যের প্রতি। তিনি ইশারায় উপরে গাছের দিকে ইঙ্গিত করলেন। যেই মাত্র সবাই উপরে তাকাতে গেল, মুর্হতে ঝর্ণার আকারে গরম পানি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল!

হঠাৎ সিদ্ধান্তে সবাই লাফ দিয়ে নিরাপদ দূরত্বে সরে এসে চিৎকার করে বলল, সর্বনাশ! গরম পানি তো এরাই ছিটাচ্ছে। সবাই জলদি ভাগ! এদের ছিটানো গরম পানি, চোখে-মুখে পড়লে বিপদ অনিবার্য, নির্ঘাত বমি করতে করতে কাহিল হয়ে পড়তে হবে।

একজন বলে উঠল, দুঃচিন্তার দরকার নাই, আমাদের শরীরের গরম আঠা তাদের মূত্রের কারণেই হয়েছে। এখন ভালোয় ভালো তাদের উত্তেজিত না করে, ভদ্রলোকের মত সরে যাবার চিন্তা কর।

ফটিকছড়ি, বাংলাদেশের বৃহত্তম উপজেলার মধ্যে অন্যতম। এটি আয়তনের দিক থেকে মেহেরপুর ও ফেনী জেলার চাইতেও বড়। দৈর্ঘ্য-প্রস্থে বিশাল আয়তন নিয়ে এ উপজেলা বাংলাদেশের মানচিত্রের একটি বিরাট জায়গা জুড়ে বসে আছে। এ উপজেলার ঠিক বুকের উপর দিয়ে বয়ে গেছে ভারত থেকে প্রবাহিত নদী ‘হালদা’। হালদা নদী বাংলাদেশের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। হালদার মোহনায় বিভিন্ন মাছ ডিম পারে, সে ডিমের পোনা বিরাট এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রাম বন্দরে হালদার অবদান অনেক, হালদার দুই পাশে রয়েছে বিশাল আয়তনের পর্বতরাজি। পূর্ব পার্শ্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের দিগন্ত বিস্তৃত পর্বতমালা। পশ্চিমে রয়েছে আরেকটি পর্বত শ্রেণী, যেটি চট্টগ্রাম শহর থেকে শুরু করে সোজা উত্তরে ফেনী খালের পার্শ্ব দিয়ে ভারতে ঢুকে পড়েছে। ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেল লাইন এই পর্বতশ্রেণীর কোল ঘেঁষেই চলে গেছে ঢাকায়। তার ঠিক অপর পারেই ফটিকছড়ির অবস্থান। এপার থেকে মনে হয় পূর্বপাড়ে শুধু পাহাড় আর পাহাড়। অথচ সেখানে রয়েছে বিশাল এক সমতল ভূমি, প্রায় সকল প্রকারের খাদ্য-সবজি উৎপন্ন হয় এখানে। এই দুই পাহাড় শ্রেণীর নির্গত সুস্বাদু ও মিষ্টি পানি বিভিন্ন ছড়া ও খালের মাধ্যমে হালদা নদীতে গিয়ে পড়েছে। হালদার পানির বিরাট একটি উৎস ফটিকছড়ির এই পর্বতশ্রেণী। তাছাড়াও বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হালদার বয়ে আনা পলি, এখানকার মাটিকে রাখে উর্বর, এলাকাকে করেছে সমৃদ্ধ।

ফটিকছড়ি শব্দের অর্থ ‘স্বচ্ছ পানির ঝর্ণা’। ফটিকছড়ি নামক একটি স্বচ্ছ পানির ছড়া বা খাল প্রবাহিত হয়ে হালদা নদীর সাথে মিশে গেছে। যার উৎপত্তি স্থল, গভীর অরণ্যের পর্বতমালার সর্বোচ্চ পাহাড়ের শীর্ষদেশে। শীতকালে ফটিকছড়ি খাল খুবই শান্ত, মাঘ মাসের কনকনে শীতেও ফটিকছড়ি খালের পানি উষ্ণ, তবে বর্ষাকালে এটি ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করে। তীব্র গতিসম্পন্ন স্রোতের তোড়ে ভেসে আসে বিভিন্ন আকৃতির পাথরের টুকরা ও গাছের বড় বড় ডাল। এগুলোর আঘাতে মৃত্যু তো বটেই, কখনও লাশও পাওয়া যায়না। এটি হালদার একটি মোহনা হলেও, হালদা নদীতে যত মানুষ মরেছে, ফটিকছড়ি খালে মরেছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশী!

এই ফটিকছড়ি খালের উৎপত্তি যে পাহাড়ের চূড়ায়, সে পাহাড়ের কোল ঘেঁষে তৈরি হয়েছে একটি মেঠো পথ। দুর্গম পাহাড়ের বিপদসংকুল এই মেঠো পথটি ফটিকছড়ি ও মিরেশ্বরাইয়ের মানুষের মধ্যে তৈরি করেছে সেতু-বন্ধন। মানুষের পক্ষে এই পথ তৈরি সম্ভব নয়, এটি আল্লাহর এক অপূর্ব কারিগরি। মানুষ তা শুধু আবিষ্কার করেছে মাত্র। কেননা এই পথ দিয়ে মিরেশ্বরাই থেকে সোজা পূর্বদিকে গহীন অরণ্য প্রায় ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ, তা পাড়ি দিলেই ফটিকছড়ির নারায়ণ হাটের অবস্থান। নারায়ণ হাটের অবস্থান আরো ভৌগলিক, সোজা উত্তরে গেলে রামগড়-ফেনী, দক্ষিণে গেলে চট্টগ্রাম শহর, পশ্চিমে মিরশ্বরাই, সোজা পূর্বে আবারো গভীর বনভূমি, তবে সেখানেও তৈরি হয়েছে রাস্তা; এটা পার হলেই মান রাজার বাড়ী, মানিকছড়ি, খাগড়াছড়ি, ভারত ইত্যাদি। ফটিকছড়িতে প্রচুর চা বাগান রয়েছে, দেশের বৃহত্তম রাবার বাগানের একটি এখানে অবস্থিত। এছাড়া রয়েছে প্রচুর বনজ সম্পদ, খনিজ সম্পদ, পাথর, গ্যাস ও তেল।

এখানেই রয়েছে বাংলাদেশের সেরা সুফি দরবেশদের অন্যতম দুজন আউলিয়া যথাক্রমে আহমেদ উল্লাহ (রহঃ) ও গোলামুর রহমান মাইজভাণ্ডারী (রহঃ), যারা ভক্তদের কাছে বাবা ভাণ্ডারী হিসেবে পরিচিত। কথিত আছে ঈসা খাঁ মোগল সম্রাটদের তাড়া খেয়ে এই মাইজ ভাণ্ডারে ঘাঁটি গেড়েছিলেন। তারও বহুপরে এখানে বাবা ভাণ্ডারীরা আসেন। ঈসা খাঁর সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন অফিসারের নামানুসারে এই অঞ্চলের বহু জায়গার নাম হয়েছে। ইব্রাহীম পুর, ঈসা পুর, মুসা পুর, আজিম পুর সহ, আরো অসংখ্য পুর। ফটিকছড়ির জনপদের নাম গুলো এভাবে ‘পুর’ দিয়ে ভরপুর। ঈশা খাঁর সাথে আসা বিভিন্ন জায়গার মানুষ এখানে বসবাস শুরু করে। সে হিসেবে মাইজভান্ডারের পাশের গ্রামের নাম পাঠান পাড়া, যারা ছিল আফগানী। ‘মালদার’ পাড়া যারা ভারতের মালদহ থেকে এসেছিল। প্রচলিত এই ব্যাখ্যার সাথে অনেকে অন্য ব্যাখ্যাও দিয়ে থাকেন।

এলাকার কিছু কলেজ ছাত্র ও সমমনা বন্ধু মিলে পিকনিক ট্যুরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্থান নির্ধারণ করা হল ‘চৈতন্য শাহের আস্তানায়’। দুর্গম গিরি-খন্দক পাড়ি দিয়ে যেতে হয় এই আস্তানায়। কিছু দিন আগেও সেখানে পিকনিক করতে যাওয়াতো দূরের কথা, হাতে একটি থলে নিয়ে হেঁটে যাওয়াটাও কঠিন ছিল। পাহাড়ের একটি সরু পথ বেয়ে উপরের দিকে যেতে হয়, বিপরীত দিক থেকে আসা একজন মানুষকে পথ দিতে হলে একজনকে রাস্তা থেকে সড়ে দাঁড়াতে হবেই। পা পিছলে কেউ যদি পাহাড় থেকে নীচে পড়ে, তাহলে মৃত্যু অবধারিত, তার লাশ উদ্ধার করাও সম্ভব হবেনা। নীচের দিকে তাকালে দেখা যায়, অনেক বড় বড় গাছের মাথা। কিছু গাছের মাথায় বিভিন্ন প্রাণীর হাড়-গোড় আটকে আছে।

২৫ বছর আগে লিখক নিজেও দেখেছেন, এক মৃত কাঠুরিয়ার হাড়, লুঙ্গি সমেত গাছের মগডালে ঝুলে আছে। এ পথের লতা-পাতা গায়ে লাগাও বিপদজনক, খানিকটা অপেক্ষা করলেই লতা-পাতা থেকে কিলবিল করা জোঁক লিকলিকিয়ে কাঁধে, কানে, পিটে ভর করে। তাছাড়া আছে লক্ষ লক্ষ আঠালীর জটলা যা গরু, মহিষ, শুকুরের গায়ে থাকে। তিলের চাইতেও আকারে অতি ক্ষুদ্র একটি মাত্র আঠালীর চুম্বনে ভয়ানক ব্যথা ও বিষের জ্বালায়, একজন পালোয়ানকেও কাবু করে দেবে।

আরো আছে দানবাকৃতির বিচ্ছু-কেন্নো, যার পাঁচ-ছটিকে পাল্লায় তূললে এক কেজির উপরে হবে, দেখতে বড়-সড় চিংড়ী মাছের সমান! যার এক কামড়ে একটি গরু নিপাত যাবে, এই বিচ্ছুগুলো ইঁদুর ধরে খায়। হনুমান আর বানরের উৎপীড়নের সম্ভাবনা তো আছেই। দল বাঁধা উল্লুক, ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে কোরাস ধরে এক সাথে মানুষের মাথায় প্রস্রাব করে দেবার ঘটনাতো নিত্য নৈমত্যিক ব্যাপার! আছে ভালুক, সজারু, কেঁদো বাঘ, দল বদ্ধ শৃগাল, জোট বদ্ধ হিংস্র প্রকৃতির রাম কুকুর এবং অসংখ্য শুকর। কদাচিৎ জোঁক, আঠালীর উপদ্রব থেকে বাঁচতে এ রাস্তার পথিকেরা গায়ে কেরোসিন মেখে চলাচল করে। লেখকও এই পদ্ধতি অনুসরণ করে সে এলাকায় কয়েকবার ভ্রমণ ও শিকারে গেছেন।

চৈতন্য শাহের আস্তানায় আগে মানুষ হেঁটে আসত, ইতিপূর্বে কেউ পিকনিক করতে এখানে আসেনি, আসা সম্ভবও ছিলনা। ভূ-পৃষ্ট থেকে হাজার হাজার ফুট উচ্চতায় এর অবস্থান, যেখানে দাঁড়ালে ৬০ কিলোমিটার দূরের চট্টগ্রাম শহরকে আবছা আবছা দেখা যায়। বঙ্গোপসাগরের বুকে অবস্থিত অনেক দূরের সন্দ্বীপ, হাতিয়া স্পষ্ট নজরে আসে। ভূপৃষ্ঠ থেকে এত উপরে অবস্থান হলেও, এখানে খুবই সুমিষ্ট পানির একটি নহর আছে। সে পানির নহর জলপ্রপাতের মত আওয়াজ করে নীচের অজানা গহ্বরে আছড়ে পড়ছে। পাহাড় বেয়ে উঠা ক্লান্ত, পরিশ্রান্ত ও ক্ষুধার্ত পথিকের দল এখানে একটু জিরিয়ে নেয় এবং নিজেদের আনিত খানা খেয়ে ক্ষুধা নিবারণ করেন।

দুই কূলের মানুষের কাছে এই জায়গাটি খুবই মূল্যবান কেননা যাতায়াতের দূরত্বের ঠিক মাঝখানে এই জায়গার অবস্থান। সাথে পানি আনার দরকার পড়েনা, গোসল করা, পান করা, নামাজ পড়া সবই এই পানি দিয়ে সম্ভব। এক বৃদ্ধ প্রতিদিন সকালে চিনি, চা-পাতা, মুড়ি ও বিস্কুট নিয়ে ৮ কিলোমিটার দুর্গম পাহাড়ি পথ পাড়ি দিয়ে এখানে আসেন। স্থলভাগের দামে তিনি সব বিক্রি করে সন্ধ্যায় আবার ফিরে যান। বহু বছর তিনি এ পথের একজন নীরব প্রহরী! কিছু মানুষের আজব খাসিয়তের দ্বারা এভাবে মানবজাতি ক্ষেত্র বিশেষে উপকৃত হয়ে থাকে। এই জায়গা টির নাম ‘চৈতন্য শাহের আস্তানা’, নামখানা তিনিই দিয়েছেন। কেউ বলেন চেতনা শাহ, কেউবা বলেন চৈতন্য শাহ। সর্বোপরি এটাই হল সে ঐতিহাসিক ফটিকছড়ি খালের উৎপত্তিস্থল এবং ফটিকছড়ি নামটি এই পাহাড়ি ঝর্ণার বদান্যতায় সৃষ্টি।

সম্ভবত ১৯৯৪ সালের দিকে সরকার এ পথটিকে কেটে গাড়ী যাওয়ার মত রাস্তা বানিয়েছে, জিপ মীরশ্বরাই থেতে ফটিকছড়ির নারায়ণ হাট পর্যন্ত যেতে পারে। নতুন এডভেঞ্চার হিসেবে তরুণেরা এখানেই পিকনিক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেই ভাবা সেই কাজ। গাড়ী ঠিক হল, মাইকের ব্যবস্থা হল, ক্যামরা থাকল, তরি-তরকারী, চাউল, ডাল, ছাগল, মুরগী সবই হল। পানি ও লাকড়ি নেবার দরকার নাই, তা সেখানে পাওয়া যায়। সংক্ষিপ্ত ভাবে সবই সুন্দরভাবে হয়ে গেল।

পিকনিকে নতুনত্ব আনতে, পথিমধ্যে পাইন্যা ডোবায় তথা চলার পথে মাছে ভরপুর এক জলাধারে বরশী ফেলা হল। পাইন্যা ডোবায় বরশী ফেলা মাত্রই ‘চেং’ মাছ দিয়ে উদ্বোধন হল! স্থানীয় ভাষায় ‘চেং’ মাছ দেখতে ঠিক টাকি মাছের মত, সবাই এ মাছ খায়না, আকারে টাকি মাছের চেয়ে বড় হয়, তবে ফ্রাইয়ের জন্য খুবই উপযুক্ত। পরপর চারটি বরশী ফেলা হল, কিছুক্ষণের মধ্যেই চারটি বরশীতেই টান পড়ল। প্রথম বরশীর মাছ অসম্ভব শক্তিশালী মনে হল, জোড়ে টানা টানির পর বরশীই সুতাই ছিঁড়ে গেল! দ্বিতীয় বরশীর একই দশা, তিনজনের টানাটানিতে অবশেষে ইয়া বড় এক ‘বাইন’ মাছ তুলল। এত বড় বাইন মাছ ইতিপূর্বে কেউ দেখেনি! হঠাৎ মাছটি উল্টো সাপের মত কামড়াতে আসল! একজনের পেন্টের কাপড় কামড়িয়ে ধরল। ভুল ভাঙ্গল সবার, আসলে এটা মাছ নয়! দানবাকৃতির কুঁইচ্ছা (স্থানীয় নাম) ইংরেজিতে ‘ঈল’! বৃহদাকায় কিছু কুইচ্ছায় ইলেকট্রিক শর্ক তৈরী করে, কাউকে আহত করতে পারে, এটাতে ছিলনা, ভাগ্যিস বাঁচা গেল। বাকী দুটি বরশীতে মাছের কপালে ছাই মেরে, দুটি কচ্ছপ পাওয়া গেল। সবাই গোস্বায় সেগুলোকে পিটিয়ে হত্যা করল, কয়েকজন নিজেদের বল পরীক্ষাপূর্বক মৃত প্রাণীগুলোকে পাহাড়ের পাদদেশে কতদূরে নিক্ষেপ করা যায়, প্রচেষ্টায় মত্ত হল! যাত্রাটা মোটামুটি ভাগ্য বিড়ম্বিত বিদঘুটে পরিবেশে শুরু হল! কেউ কেউ দুষ্টামি করে বলল, যাত্রা গণনায় ভাল ঠেকছে না, আনন্দ মাটি হবার লক্ষণ।

আগামী পর্বে সমাপ্য................

বিষয়: বিবিধ

১৮৭৪ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

339060
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০১
শেখের পোলা লিখেছেন : ভালই জমে উঠেছে৷ সুন্দর বর্ণনা৷ কয়েকদিন আগেই পাহাড়ি রাস্তা কেমন ভয়ঙ্কর হতে পারে তা ব্রিটিশ কলম্বিয়া (কানাডা)গিয়ে দেখে এলাম৷ধন্যবাদ৷
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:০২
280401
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : প্রথম মন্তব্যকারী হিসেবে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
339071
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : প্রথম ঘটনাটির পিছনে কাদের অবদান সেটা তো লিখলেন না!!
কুইচ্চা তথা ঈল এর মাংস নাকি এখন রফতানি হচ্ছে।
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫১
280417
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আসলে মূল্যায়ন লিখতে যাইনি। আমি যদি মূল্যায়নের কথা লিখতে যাই, তাহলে অন্য পাঠকেরা আগ্রহ হারিয়ে বসবে। সে জন্য ঘটনাটি লম্বা করিনি। আমি লিখার পর চিন্তা করছিলাম পিকনিক নিয়ে লিখতে গিয়ে এলাকার কথা বেশী বেড়ে গেল কিনা। কিন্তু না লিখলেও ঘটনাটি সুন্দর হচ্ছিল না। যাক অন্যসময় সে বিষয়ে লিখা যাবে। অনেক ধন্যবাদ।
339072
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
দ্য স্লেভ লিখেছেন : আপনার লেখায় যাদু থাকে। বড় লেখা হলেও শেষ না করে পারা যায় না। দারুন লাগলHappy
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৭:৫১
280418
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার সুন্দর অভিব্যক্তির জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
339088
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:১৬
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ইলেকট্রিক উৎপাদক ঈল কি বাংলাদেশে আছে?
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২৮
280491
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আছে, তবে এগুলো বড় আকৃতির। থাইল্যান্ডে প্রচুর পরিমান পাওয়া যায়।
339093
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৮:৫২
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

পাঁচ-ছয়টায় কেজি???
ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠছে!!

অপেক্ষা করি- যদি খাওয়া মিলে Eat
(যদিও সম্ভাবনা খুবই কম দেখছি)
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:২৯
280492
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : চোখে না দেখলে বিশ্বাস করতে কষ্ট হবে কত বড় আকৃতির হতে পারে এক একটি বিচ্ছু। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এবং সাথে থাকুন্
339095
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৯:২০
মু নূরনবী লিখেছেন : হাহাহা....

গরমা পানিতে গোসল..শীতকালে গেলে তো গোসলটাই সেরে ফেলতে পারতেন!

০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৩১
280493
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : শরীরে ঘামের কারণে গরম পানির ঘটনা প্রথমে বুঝা যায়নি, পরে বুঝতে পেরেছে। আমিও ঘটনাটি বিস্তারিত জেনেছিলাম। অনেক ধন্যবাদ।
339099
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১০:০১
আবু জান্নাত লিখেছেন : সীতাকুন্ড পাহাড়ে উঠেছিলাম, পথে ৩বার জিরিয়ে নিয়েছি, মাঝপথে একটি চায়ের দোকান আছে, একটি বিস্কুট ৩টাকা যা সমতলে ১টাকা। একটি RC নিলাম ২৫টাকা, যা সমতলে তখন ১৫টাকা ছিল। সেখান থেকে চট্টগ্রাম শহর সন্দ্বীপ ও হাতিয়া ক্লীয়ার দেখা যায়।
হাটহাজারী কৃষিফার্ম এর পশ্চিমের পহাড়ে উঠেছিলাম, অনেক জোকের দেখা পেয়েছি।
হেয়াকো থেকে নাজির হাট রোডে অনেকবার আসা যাওয়া হয়েছে। চা বাগান ও দেখেছি। অনেক কাঠাল এনেছিলাম।
ভালই লাগলো, সুন্দর পোষ্টটির জন্য শুকরিয়া।
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৩২
280494
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সেই পাহাড় শ্রেনীর কথাই বলছি। তখন সেই পাহাড় পথে কোন রাস্তা ছিলনা। বতর্মানে একটি রাস্তা করা হয়েছে বলে শুনেছি। অনেক ধন্যবাদ।
339113
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১০:৫৪
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : ভালো লাগলো
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৩৩
280495
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
339114
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:০০
আবু জান্নাত লিখেছেন : লিখাটি পড়ার সময় বার বার আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকাচ্ছিল, না জানি কোথাও জোকের আক্রমন হচ্ছে।
মশারির কারামত জানা গেল না, জানতে আগ্রহী।
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ১১:৩৫
280496
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : এই কাহিনী পড়ে হয়ত ছোটকালের কোন চুলকানির ঘটনা মনে পড়েছে, তাই এমনটি হয়েছে। মশারীর সাথে এই কাহিনীর কোন সম্পকর্ নাই, মাছির জ্বালায় অতিষ্ট চৈতন্য শাহকে দেখেছি, দিনের বেলায় মশারীর ভিতরে বসে খানা খেতে। হঠাঁ মাথায় আসল সেই ঘটনা তাই তার সম্মান রক্ষাথর্ে এই ছবি খানা দিয়ে দিলাম্
১০
339134
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৭:২৮
নাবিক লিখেছেন : যে ভাবে বর্ণনা দিলেন, মনে হলো সব যেন চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। লেখাটা দারুণ সুখপাঠ্য হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ।
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ১০:৪১
280548
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
১১
339185
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০৩:৫৪
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : হালদার মোহনায় ইলিশ মাছ ডিম পারে, সে ডিমের পোনা বঙ্গোপসাগরে ছড়িয়ে পড়ে।
এতোদিন শুনে এসেছি হালদায় মা’ রুই, কাতল, কালিগইন্যা, মাহল ইত্যাদি দেশীয় জাতের মিটা পানির মাছগুলোর ডিম ছাড়ার একটি প্রাকৃতিক জায়গা। কিন্তু ইলিশ মাছও যে সেখানে ডিম ছাড়তে যায় তা জানতাম না। আপনার লেখা থেকে সে বিষয়টাও জানা গেল।
কুইচ্যার মতো দেখতে আরেকটি জলজ প্রাণীর নাম শুনেছি এবং দেখেছিও, যাকে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় ছেলস মাছ নামে অবহিত করা হয়। দেখতে খুবই লম্বা কুইচ্যা এবং ছেলস মাছের মধ্যে পার্থক্য বুঝা যায় শুধুমাত্র উক্ত প্রাণীটির মাথার আকৃতিতে। কিছু দিন আগে কোন এক ফেইসবুক ইউজারের আপলোড করা লম্বা একটি ট্রেতে রাখা অবস্থায় একটি ছেলস মাছের ছবি দেখেছিলাম সম্ভবত যমুনা অথবা পদ্মা নদীতে মাছ ধরার জেলেদের জালে আটকা পড়েছিল সেটি। এই মাছটির প্রকৃত নাম অথবা বৈজ্ঞানিক নাম কি আমার জানা নেই।
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৪:৩০
280589
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনি সম্ভবত মদুনাঘাটের কথা বলছেন, সেখানে মিঠা পানির মাছ ডিম পাড়ে। ইলিশ মিঠা পানিতে ডিম পারে কিন্তু বসবাস করে লোনা পানিতে। ইলিশ মাংসাষী মাছ নয় বলে পলি মাটির প্রতি তার আকর্ষন বেশী। সংগত কারণে পদ্মায় প্রচুর পলি মাটি পাওয়া যেত। পদ্মা নদীতে উজানে ফারাক্কা বাঁধ দেবার ফলে উল্টো পদ্মা নদীতে নোনা জল ঢুকে পড়ে। এতে মিঠা পানি ও মিঠা পলির অভাব দেখা দেয়।

ফলে ইলিশ পলি ও মিঠা পানির জন্য কর্ণফুলি ও বঙ্গোপসাগরের সঙ্গম স্থলে ধেয়ে আসে। সেখানে ডিম পারে তবে সেটা সংখ্যায় উল্লেখ যোগ্য নয়। ইলিশ মাছের ডিমের মৌসুমে বহু দূর থেকে তাজা ই্লিশ এদিকে ছুটে আসে। আসা-যাওয়াতে অনেক মাছ ধরা পড়ে। সে জন্য তখন মাছ ধরা নিষেধ থাকে।

যাক, ইলিশের জন্য পদ্মাই সেরা পরবর্তী কিছুটা উপকৃত হলে সেটা কর্নফূলির মোহনা। উল্লেখ্য কর্ণফূলি ও হালদা চট্টগ্রামের মদুনাঘাট এলাকায় মিলিত হয়েছে।

কুইচ্ছার মাথার আকৃতি সাপের মত উপর থেকে চ্যাপ্টা। বাইন মাছ, ছুরি মাছের মাথা একই ধরনের। তবে ছেলস মাছটি নামের মাধ্যমে আমি চিনতে পারি নাই। তবে মাথার আকৃতিই হল এসব মাছকে আলাদা করার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। ধন্যবাদ।
১২
339437
০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:২০
মাহবুবা সুলতানা লায়লা লিখেছেন : আস-সালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু! ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
280782
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File