বঙ্গ বন্ধুর সোনার তরী ও আওয়ামীলীগ
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ১৯ আগস্ট, ২০১৫, ১১:২৯:৪৯ সকাল
দেশের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আন্তরিকতা ছিলনা সেটা প্রমাণ করা বড় মুশকিল! তবে তিনি যখন কাউকে দায়িত্ব দিতেন, সে ব্যক্তি সাথে সাথেই রাক্ষসে পরিণত হয়ে যেতেন। রাজনীতির শেষ সময়ে তিনি দিশাহারা হয়ে পড়েন। দলীয় রাক্ষস, আত্মীয়, অনাত্মীয় সবাই যখন ঠগে পরিণত হল, তখন জ্ঞান-বুদ্ধি হারিয়ে পরামর্শ নিলেন জগতের সেরা প্রবঞ্চক কমরেড মনি সিংয়ের কাছে, তিনি সমাজ তন্ত্রের স্টাইলে বাকশাল করার বুদ্ধি দিলেন। আজীবন গনতন্ত্রের জন্য লড়াই করা বঙ্গবন্ধু গতকল্যও মনি সিং তার দুষমন ছিল।
উপায় না পেয়ে তিনি বাকশাল কায়েম করলেন! বাকশাল কায়েমের দরকার পড়েছিল, তার দলের কর্মী নিয়ন্ত্রণের জন্যই! কেননা ততদিনে বঙ্গবন্ধুর আর কোন দুষমন কোমর সোজা করে দাঁড়ানোর সুযোগ ছিলনা। আওয়ামী জাহান্নামের তাপ থেকে বাচতে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী, ঘোষণা দিয়ে ঘৃণা ভরে দেশ ত্যাগ করলেন। ওদিকে সুযোগ সুবিধা বঞ্চিত আওয়ামী নেতারাই তলে তলে ক্ষিপ্ত হলেন, তেতে উঠতে রইলেন, স্বার্থের লোভ হজম করা বড় কঠিন, তারাই কঠোর সিদ্ধান্ত নিলেন................!
তাঁর মৃত্যুর পর যাদের জানাযা নামাজের লাইনে দাঁড়ানোর কথা ছিল, তাঁরা মন্ত্রিত্ব পাবার লাইনে আওয়ামী নেতা খন্দকার মুশতাকের বাড়ীর সামনে লাইনে দাড়িয়ে পড়ল। দলীয় কেউ কেউ নতুন এম্বাসেডর হয়ে বিদেশের পথে বিমানে উড়ল অথচ তখনও বঙ্গ বন্ধুর জানাযা শেষ হয়নি। একদল অতি লোভী, অর্থের অপুষ্টিতে ভোগা দলীয় চেলা চামুণ্ডাদের হাতেই বঙ্গবন্ধু ক্ষমতার স্বাদ দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাদের নেতা হিসেবেই চিনেছিলেন, তাদের চরিত্রের হিসেব কষেন নি। তাইতো তাঁর নির্মম মৃত্যু সংবাদ শুনে লন্ডনে অবস্থিত তারই সংসদের স্পীকার মুখ ফসকে বলে ফেলেছিলেন, ‘একজন ফেরাউনের মৃত্যু হয়েছে’!
......... জ্বি বলছিলাম কি, তার কন্যাও এখন সেই গুহায় ঢুকে অন্ধকারে হাত পাকড়াচ্ছে। একই বুদ্ধি অনুসরণ করা শুরু করেছে তারই কন্যা। বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের মাঝে ৮০ শতাংশ ইমানদারের উপর আস্তা রেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারলেন না! তিনি তার পিতার দুষমন মনি সিংয়ের সাগরেদ দেরই পরামর্শ গ্রহণ করতে থাকলেন। এটাতেই তিনি সমাধান খোজ করতে থাকলেন। ভিতরে ভিতরে দল সংগঠিত হবার দুরের কথা এক বিশাল আয়তনের লোভী, হঠকারী, চৌর্য বৃত্তির নেতাতে ভরে গিয়েছে আওয়ামীলীগ। সুতরাং বাকশাল ছাড়া বঙ্গবন্ধু কন্যার অন্য কোন রাস্তা খোলা দেখছেন না!
জামায়াত-শিবির নিধনে যে সব সন্ত্রাসীকে আস্কারা দিয়ে মাঠে নামিয়ে বিরোধী দলের মাঠ খালি করা হয়েছিল। তাদের গায়ের তেল-চর্বি একটু বেশীই বেড়ে গিয়েছিল। তাই সরকারকে এসব তেল চর্বির পরিমাণ কমাতে মালিশের দরকার হয়ে পড়ল! তাদেরকে লিস্ট করে ক্রস ফায়ার শুরু করেছে! ভাল কথা, তাদের সেই অর্থ উৎসের পথও বন্ধ হবেনা, দলীয় লোভাতুর নেতারাও অন্ধ হয়ে বসে থাকবে না। সেখানে নতুন গড ফাদারের জন্ম হবে। তবে সেগুলো পরিপূর্ণ দলীয় মানুষেরাই দখল করবে।
অর্থ ও স্বার্থের লোভে একদা যে সব নেতা-কর্মী বঙ্গবন্ধুকে ভুলে গিয়েছিল, দলের বিপর্যয় ডেকে এনেছিল। নেতারা সংসদে খেদোক্তি করে বলতেন, কোথায় সেই নেতা? ওই নেতা। বর্তমানের আওয়ামী নেতারাও বলা শুরু করেছে, খালেদা জিয়া শেষ! এই ধরনের কর্মী বাহিনী নিয়ে বঙ্গবন্ধুর মত পরিণতিই কপালে জুঠা ছাড়া ভিন্ন কিছু হতে পারে না।
শুকনো কাঠের তরী তথা নৌকা দিয়ে একদা যে আওয়ামীলীগ পুরো দেশের মানুষকে জাগিয়ে তুলেছিল, আজ তারা সোনার তরী বানাতে গিয়ে পুরো জাতিকে দিশাহারা করে দিয়েছে, জাতীয় ঐক্যকে ধ্বংস করেছে, সমুদ্র জয় করে দেশের ভৌগলিক মানচিত্রকে ছোট করে দিয়েছে। যাদের জন্ম হয়েছিল স্বাধীনতার স্বপ্নকে জাগরিত করতে তারা আজ পুরো তস্করের দলে পরিণত হল।
বিষয়: বিবিধ
১৬৪৪ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
(আপনার শরীরের অবস্থা এখন কেমন ?)
শরীর এখনও পরিপূর্ন ঠিক হয় নাই। হাটতে পারিনা, আপনাকে আবারো ধন্যবাদ।
আনপাকে অনেক ধন্যবাদ
নৌকা সোনার বানানো যায় টাকা হলে...! তবে বঙ্গবন্ধুর সোনার নৌকা হিসেবে মেনে নেয়া যায়না!!
অমূল্য বাণী
কাঠের নৌকা সোনা দিয়ে ভরতে গিয়ে আজ সোনার ছেলেরা প্রাইমারী থেকে ভার্সিটি, চরাঞ্চল থেকে রাজধানী সব জায়গায় জুলুমের রাজত্ব করে যাচ্ছে।
যথার্থ বলেছেন, সহমত
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
[[** দোয়া+আশা করছি যে ক্রমশঃ সেরে উঠছেন]]
পড়তে পড়তে মনে হলো অব্যক্ত মনের অনুভূতিগুলো কষ্টের মতি দিয়ে শব্দ গুচ্ছে সাজিয়ে দিয়েছেন! আমরাও শোকাহত পরিস্থিতির করুণ পরিণতিতে.......।
আল্লাহ আপনাকে সুস্থতা দান করুন!
(আপনার শরীরের অবস্থা এখন কেমন ?)
মন্তব্য করতে লগইন করুন