মুক্তমনা ব্লগারের পরিচিতি
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ০২ মার্চ, ২০১৫, ০১:৪৮:২১ দুপুর
কেউ নাস্তিক হতে পারেন সেটা তার ব্যক্তিগত অভিমত, সেটা নিয়ে কারো আগ্রহ থাকতে পারেনা। তবে নিজেদের মুক্তমনা দাবী করে অন্যের ধর্মবিশ্বাসকে গালাগালি, কাটাকাটি, ঠাট্টা মস্করা করে উপহাস করা টিপ্পনী মারা কোন মুক্তমনা মানুষের কাজ হতে পারেনা। এসব কাজকে যদি মুক্তমনা বলা হবে তাহলে বাঁদরামী কাকে বলা যাবে?
অভিজিত নাস্তিক তাতে কারো কোন সমস্যা নাই, তাই বলে তারা শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মকে আক্রমন করে কেন? তাদের তো হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান সবাইকে আক্রমনের লক্ষ্য বানানো উচিত। কিন্তু সেটা তারা করেনা কেননা তারা বাহিরে মুক্তমনা পরিচিতি নিলেও ভিতরে হিংসুক, জিঘাংসা সৃষ্টিকারী, উত্তেজক ও উৎকট মনোবৃত্তির অপ্রকৃতস্থ যুবক। তারা নিজেরাই নিজেদের শত্রু সৃষ্টি করে, পরিশেষে সেটাকে সুবিধাবাদিরা সুযোগ মত ব্যবহার করে।
যারা অভিজিতকে হত্যা করেছে, তারা অভিজিতের আমেরিকা থেকে ঢাকায় আগমন ও ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় গমন এ ব্যাপারে বিস্তারিত ধারনা ছিল। অভিজিতের পরিবারের প্রাত্যহিক রুটিন সম্পর্কে তারা সম্যক অবগত ছিল। যার কারণে কাজটি সুচারু রূপে করতে সক্ষম হয়েছে? অভিজিতের মুক্তমনা ব্লগ বন্ধ কেন? তার সর্তীর্থরা ঠিকই জানে যে, অভিজিত গোপনে যে কর্ম করেছে, সাধারন মানুষ জানতে পারলে মৃত ও অসহায় অভিজিতের জন্য মর্মবেদনা টুকুও জুঠবে না।
অভিজিতের এই কাজকে তারই পরিচিত সতির্থরা ঠিক মত কাজে লাগিয়েছে। ব্লগে তো আমরাও দীর্ঘ বছর ধরে লিখে চলেছি। লিখার কারনে অনেকের সাথে দ্বিমত হয়েছে তাই বলে কারো সাথে শত্রুতা সৃষ্টি হবার মত কাজ তো করিনি, তাহলে ব্লগার হিসেবে শুধুমাত্র অভিজিত আক্রান্ত হবে কেন? অভিজিতের হত্যাকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাই।
বেশীদিন আগের কথা নয় বাংলাদের মন্ত্রী ইনুর সতির্থ বামপন্থিরা নিজেরা নিজেদের কত মানুষকে এভাবে হত্যা করেছে।
- ইনুর সাথীরা তার সতির্থ বাম নেতা কাজি আরেফ কে প্রকাশ্য দিবালোকে হত্যা করিয়েছে, জনসভায় বক্তৃতা দেবার জন্য মঞ্চের মধ্যে বসে থাকা ব্যক্তিকে তাদের শত শত অনুসারীর চোখের সামনে তাদের নেতাকে হত্যা করেছে! আক্রান্ত ব্যক্তি ও হত্যাকারী সবাই একই দলের একই মতের একই সামিয়ানার মানুষ ছিলেন। সমস্যা ছিল এক বনে দুই বাঘ থাকবে না, তাই এক দলেও দুই বাঘ গ্রহনযোগ্য নয়। কাজি আরেফ বেঁচে থাকলে হয়ত এতদিন ইনু সাহেরব বেঁচে থাকতে পারতেন না।
- মেনন সাহেবের কলিজার অর্ধেক অংশই নাই। ১৯৯৩ সালে তারই সতির্থরা তার বুকে গুলি করে ঝাঁঝড়া করেছিল। সমস্যা একই, ইস্যু সৃষ্টি ও শ্রেণী শত্রু দমানোর নামে, নিজেরা নিজেদের মানুষ ও নেতা হত্যা করে। খালেদা জিয়ার প্রথম সরকার রাষ্ট্রিয় খরছে মেনকে বিদেশে পাঠিয়ে কলিজা মেরামত করে এনেছিলেন কেননা মেনন সাহেবের বোন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এবং সবচাইতে কাছের পরামর্শ দাতা ছিলেন।
বামপন্থী তথা নাস্তিকদের রাজনীতির ধরনটাই এমন। তারা বক্তৃব্য বিবৃতি দিয়ে নিজেরা ধর্ম ও জনগনের শত্রু বনবে, তারপর নিজেদের মানুষের হাতে নিজেরা খুন হয়ে দলের অভ্যন্তরে প্রতিদন্ধির সংখ্যা কমবে আর আর দোষ দেবে ধর্ম ও জনগনের! কেননা তিনি এতদিন ধর্ম ও জনগনকেই বাঁশ দিচ্ছিলেন সুতরাং শত্রু সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা তো সেখান থেকেই হবে!
স্বাধীনতার অন্যতম পুরাধা তাজউদ্দীনের মত ব্যক্তিও ১৯৭৩ সালে মুজিব বাহীনির ভয় অন্তরে লুকিয়ে ঘুমাতে যেতেন। তিনি বলতেন এরা আমার নিজের লোক কিন্তু এরাই আমাকে মেরে জাসদের নামে চালিয়ে দিবে। যেভাবে অভিজিতের কপালেও জুটেছে সে ধরনের মন্দ ভাগ্য। ভাগ্য বিড়ম্বিত দলীয় মানুষদের হত্যাকান্ডের নিত্য প্রতিবাদ করতে হবে বলেই, এইছ ইমরানেরা শার্টের গায়ে আগে থেকেই কালো ব্যাজ লাগিয়ে হ্যাঙ্গারে শার্ট লটকে রাখেন! সাধারণ মানুষের কাছে এটা আশ্চর্য ঘটনা হলেও তাদের নিজেদের মানুষের কাছে এটা মামুলী ঘটনা মাত্র।
উদাহরনের জন্য উদাহরন লেখা:
এক ঠ্যাং ভাঙ্গা ষ্ট্যালিন কমিউনিষ্ট পার্টির অন্য নেতা তথা লেলিন, ট্রটস্কিদের মত দেশের সর্বত্র ঘুরে বেড়াতে পারতেন না শারীরিক সমস্যার কারণে। এই উসিলায় সে যুদ্ধে না গিয়ে সর্বদা কেন্দ্রেই থেকেছে। কেন্দ্রে থেকে ক্ষমতার লোভে সে চরম চক্রান্তকারী ব্যক্তিকে পরিনত হন। লেলিনের মৃত্যুর পর ক্ষমতা দখলের রাজনীতিতে তার চক্রান্ত থেকে বাঁচতে কমুনিষ্ট পার্টির সকল উচ্চ পর্যায়ের নেতারা রাশিয়া থেকে পালিয়ে যান। যারা দেশে ছিল তাদের সবাইকে বর্বর নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করেছে ষ্টালিন! অথছ কিছুদিন আগেও তারা ছিল সবাই সহযোদ্ধা। প্রধান প্রতিদন্ধি ট্রটস্কি পালিয়ে যান লেটিন আমেরিকায়, স্টালিন সেখানে গোয়েন্দা পাঠিয়ে পালিয়ে থাকা ট্রটস্কিকে নির্মম কায়দায় হত্যা করে। শত্রুকে হত্যা করতে তারা যত কঠোর নিজেদের মানুষ হত্যায় তারা আরো বেশী বর্বর ও নির্মম।
আর এসব মানুষ নিজেদের দাবী করে মুক্তমনা...
বিষয়: বিবিধ
১৪৪১ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার সঙ্গে সম্পূর্ণ একমত। কথা হলো যে, "To kill is a sin, but Killing at the right time is called politics."
অভিজিত এর হত্যাকে পুঁজি করে নিজেদের সু্বিধা আদায় করা চেষ্টায় তৎপর তারই তথাকথিত সমর্থক রা।
কারণ পুলিশ সরকার বিরোধীদের পান থেকে চুন খসলেই ধরে নিয়ে যায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন