লাভ ইন সিঙ্গাপুর ও সিলেটের বাস্তবতা! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-২৮ (রোমাঞ্চকর কাহিনী)

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৬:৪৯:৫২ সন্ধ্যা



বাংলাদেশ এক বিপুল সম্ভাবনার দেশ। এই দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সমাহার দেখে কবি এভাবে লিখেছেন, ‘এই দেশেতে হাঁটতে গেলে, দলতে হয়রে দূর্বা-কমল’। অর্থাৎ বাংলাদেশের বুকে মানুষ রাস্তা-ঘাটে-মাঠে চলতে গেলে দুবার মত দামী ঘাস দলিয়ে মতিয়ে হাটতে হয়। ইবনে বতুতা বাংলার সম্পদ আর সৌন্দর্য দেখে লিখেছিলেন, ‘এই জনপদ সম্পদে ভরা এক দোযখ’! সিলেটের এক অভাবী কৃষক বাদশা মিয়া; কারিগরি প্রশিক্ষণ নিয়ে, হাওড় এলাকায় মাত্র পঞ্চাশটি হাঁসের বাচ্চাকে পূঁজি করে, খামার চালু করে নিজের জীবনের মোড় ঘুড়িয়ে ফেলেছিলেন! সেই খবর যে একদা বাংলাদেশের একটি সেরা খবর হবে, তা তিনি জানতেন না। গরীব বাদশা মিয়াকে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক স্বর্ণ পদক পুরষ্কার দেশ বাসীর কাছে পরিচিত করবে চিন্তা করেন নি এবং মুকুট বিহীন বাদশা উপাধি দিয়ে বিটিভিতে প্রচার করবে, সেটাও সে কস্মিনকালে ভাবেনি!

বাদশা মিয়ার আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনাটি একদা আমাকে আলোড়িত করেছিল। আমি ভেবেছিলাম বাদশা মিয়া অভাবী ও ভু-সম্পত্তি হীন একজন গরীব কৃষক। আমি অভাবী, গরীব, ভু-সম্পত্তি হীন মানুষ নই। বাদশা মিয়ার মত ব্যক্তি যদি পারে, তাহলে আমাকেও পারতে হবে। আমি দেশের জন্য তার মত দৃষ্টান্ত স্থাপন করব। যাতে বেকার জনগোষ্ঠী আমার কাজ দেখে উৎসাহিত হয় এবং আমাকে সাধুবাদ জানায়!

বাংলাদেশের মানুষ আসলেই অদ্ভুত চরিত্রের অধিকারী! পৃথিবীর বিভিন্ন জাতীর মানুষের সাথে মেলা মেশা করলে যে কেউ বুঝতে পারবে যে, আমাদের চরিত্রের কারণেই আমরা অভাবী ও গরীব। কেননা মহামান্য বাদশা মিয়ার মত সম্মান আমার কপালে জুটে নাই বরং এক তিক্ত ও বেদনা দায়ক অভিজ্ঞতা নিয়ে আমি নতুন ভাবে ‘গরু বেপারী’ হিসেবে পরিচিত হয়ে গেলাম! সে কথায় পরে আসব।

টিলাগড়! সিলেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা! এম, সি কলেজ ও সিলেট সরকারী ডেইরী ফার্ম এই এলাকাতে প্রতিষ্ঠিত। তখন টিলাগড়, শিবগঞ্জ, মিরা বাজারের আশে পাশের এলাকা গুলো দেখতে একটি গ্রামের মত ছিল। টিলাগড়ের পাহাড়ের পাদদেশে, সরকারী অনুদানে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি গড়ে উঠেছিল। সারা দেশের প্রতিটি থানা থেকে, আগ্রহী দুই জন যুবককে সরকারী খরচে এখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে এবং এলাকায় গিয়ে, এলাকার সুবিধা অনুযায়ী সরকারী কর্মকর্তার পরামর্শে বাণিজ্যিক খামার গড়ে তুলবে অথবা স্বাবলম্বী হবে। এসব আগ্রহী যুবকদের কৃষি ব্যাংক ঋণ দিতে বাধ্য থাকিবে। মূলত এটা সরকারের একটি দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার অংশ এবং যুব প্রশিক্ষণের ধারনাটিও তখনকার জন্য নতুন! ঘটনা চক্রে আমি সরকারী কার্যক্রমের প্রথম দিকেই বাছাই হয়েছিলাম। কেননা জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা আমার বাবাকে জানতেন এবং আমার জন্য পরিবেশ বদলানো দরকার হয়ে পড়েছিল। তাছাড়া স্বল্প সময়ে, যে কোন ধরনের একটি খামার প্রতিষ্ঠার জন্য পৈত্রিক ভাবে আমাদের সবকিছুই ছিল।

সিলেটের জীবনটা আমাকে বদলিয়ে দিতে থাকে। ভবিষ্যতে একটি সুন্দর স্বপ্ন বাস্তবায়নে আমি নিজের কাছে একটি সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছিলাম। বাদশা মিয়ার দ্বারা আমি যথেষ্ট প্রভাবিত হয়েছিলাম। তাই প্রশিক্ষণ কালের প্রতিটি থিউরি ও প্যাকটিক্যাল ক্লাস আমি খুব মনোযোগের সাথে পড়তাম। উল্লেখ্য তখন বাংলাদেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে খামার গড়ে উঠেনি। রাষ্ট্রীয় ভাবে ঢাকা ও সিলেট একটি করে গরু খামার এবং ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটে একটি মুরগী খামার ছিল। সিলেটে হাঁসের খামার ছিল। উন্নত জাতের গরুর বীর্য সংগ্রহ করার কেন্দ্রটি তখন সিলেটের খাদিম নগরেই ছিল। তাই বাস্তব প্রশিক্ষণের জন্য আমাকে সুদূর চট্টগ্রাম থেকে সিলেটে যেতে হয়েছিল। ঢাকাতেও এই প্রোগামের সুযোগ ছিল কিন্তু ইবনে বতুতা ও শাহ জালাল (রঃ) এর কিছু কাহিনীর কারণে সিলেট আগে থেকেই আমার নিকট কেন জানি প্রিয় হয়ে উঠেছিল।

বর্তমান সময়ের প্রশিক্ষণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানিনা, বর্তমানের প্রশিক্ষণে কি শিখানো হয় সে ধারনাও নাই। তবে আমাদের কে আন্তরিকতার সহিত, মুরগী ও হাঁস চাষ পদ্ধতির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সকল কিছুই হাতে কলমে শিখানো হয়েছে। ইনকিউবেটরে তথা ডিম ফুটানো মেশিনে মুরগীর বাচ্চা বের করা থেকে শুরু করে, খাদ্য তৈরি, খাদ্যের মান সৃষ্টি করণ, গোশতের জন্য মুরগী সৃষ্টি, ডিমের জন্য মুরগী বাছাই, চিকিৎসা, ঔষধ, ইনজেকশন ও ছোটখাটো অপারেশন শিখানো হয়। বিস্তারিত শিখানোর কারণও ছিল কেননা এসব শিক্ষার্থী যখন এলাকায় ফিরে যাবে, সেখানে কারো সহযোগিতা পাওয়া যাবেনা বরং এ সব প্রশিক্ষণার্থীই এলাকার মানুষ কে শিক্ষা দিবে। এসবের কোন বই পত্র ও ছিলনা, তাই প্রতিদিন স্যারেরা লিখতে থাকতেন আর সন্ধ্যার মধ্যেই সাইক্লোস্টাইল মেশিনে পরবর্তী পাঠ ছাপা হয়ে যেত।

আধুনিক উপায়ে গরু পালনের উপর আরো বিস্তারিত প্রশিক্ষণ আমাকে অনেক অভিজ্ঞ করেছিল। দুধের জন্য খামার তৈরি হলে সেটাকে ডেইরী ফার্ম আর গোশতের জন্য খামারকে ইংরেজিতে ক্যাটেল ফার্ম বলে। এখানে সকল বিষয় গুলোই পড়ানো হয়েছিল। কৃত্রিম উপায়ে গরুর প্রজনন ও বীর্য সংরক্ষণ। দুগ্ধবতী গাভীর পরিচর্যা এবং দুধ বাড়ানোর উপায়। গরু মোটা তাজা করন। একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিজ উদ্যোগে ভাল জাতের গরু সৃষ্টি। সর্বোপরি বাংলাদেশে দেখা যায় এমন রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত চিকিৎসা।

উল্লেখ্য বাংলাদেশে তখন রোগের মধ্যে সর্বসাকুল্যে গরুর ছয়টি, মুরগীর চারটি, ছাগলের দুটি রোগ, হাঁসের কোন রোগই ছিল না। নিয়মিত এসব রোগের টিকা দিলে প্রতিকার পাওয়া যায়। আমাদের ঘরেও দুই জন রাখাল ছেলে অনেক গুলো গরুর তত্ত্বাবধায়ক ছিল। আমাদের গরুতে হওয়া, এসব রোগ গুলোর সাথে আমি বাল্যকাল থেকেই পরিচিত ছিলাম। ফলে গরুর রোগ ব্যাধি চেনা ও যথাযথ চিকিৎসা প্রদান এবং ইনজেকশন প্রয়োগ পদ্ধতির দক্ষতায় আমি খুবই পটু ছিলাম। মাত্র পাঁচ সেকেন্ড সময়ে, খোলা-মেলা পরিবেশে দাঁড়ানো অবস্থায় গরু-মহিষের শরীরে ইনজেকশন ঢুকিয়ে দেবার দক্ষতা আমার ভালই আছে। গরু লাফ দেবার আগেই ইনজেকশন শেষ হয়ে যায়।

হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিতে, গরুর সন্ধানে গ্রামে গ্রামে ঘুরতে হত। এম, সি কলেজের পূর্ব প্রান্ত থেকে শুরু করে খাদিম নগরের দুপাশ ধরে শাহপরান (র) মাজার পর্যন্ত সবই গ্রাম ছিল। স্যারদের সাথে করে এসব গ্রামের গরু-ছাগলের চিকিৎসা প্রায় বিনা টাকায় চলত! ‘জীবে সেবা করে যে জন, সে জন সেবিছে ঈশ্বর’ কথাটি মনে রেখে পরবর্তীতে গৃহপালিত অন্য প্রাণী যেমন, ঘোড়া, কুকুর-বিড়ালের রোগ ব্যাধি সম্পর্কেও যথাযথ জ্ঞান অর্জন করেছিলাম। তবে বিড়াল, কুকুর, ঘোড়ার বিদ্যা কোনদিন কাজে আসেনি।

আমার বাবা খুবই চমৎকার প্রকৃতির ব্যতিক্রম ধর্মী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আমাকে দিয়ে সব কাজ করাতেন এমন কি, লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে নতুন কোন কাজ শিখার সুযোগ আসলে, তিনি টাকা খরচ করেই সেটা আমাকে শিখিয়ে দিতেন। সে ধরনের কিছু নান্দনিক কাজের উৎসাহ ব্যঞ্জক ঘটনা সামনের পর্বগুলোতে থাকবে। বর্তমান সময়ের ছেলেমেয়েরা কোন কাজ করতে পারেনা। কোন মেয়ে লেখাপড়ায় ভাল হলে, তাকে দিয়ে তো অনেক মা গ্লাসে পানি ভরার কাজটুকু করায় না! এতে করে তারা একটি অসাড় জীবে পরিণত হয়, বিপদের দিনে তারা নিজের উপকারও নিজে করতে পারেনা। আবুধাবিতে আমার পরিচিত ধনী ব্যক্তির সন্তান পড়ে কানাডিয়ান স্কুলে। আমার ছেলের স্কুলের চেয়ে দশগুণ বেশী ‘ফি’! ছেলেরা পুরা দিন স্কুলে থাকে! বরাবর কৌতূহল ছিল, কি পড়ায় স্কুলে? পরে খোঁজ নিয়ে দেখলাম, স্কুল কর্তৃপক্ষ একিটিভিটিসের নাম করে, বাচ্চাদের বিভিন্ন কাজ শেখায়। পারিবারিক ও ব্যবহারিক হেন কাজ বাকী থাকেনা যেগুলোর সেখানে শিখানো হয়না! রবি ঠাকুরের দুই বিঘা জমির সেই কথা মনে পড়ে যায়, ‘মনে মনে হাসি, আঁখি জলে ভাসি…….চরণ গুলো! সন্তানকে নিজের ঘরে কাজ না করাইয়া আতুর বানায় আবার বাৎসরিক বিশ লক্ষ টাকা মাইনা দিয়ে ব্যবহারিক কাজ শেখায়! উন্নত দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যা শিখানোর কি এক অদ্ভুত পদ্ধতি!

যাক, আমি বলছিলাম খামারের অভিজ্ঞতার কথা। স্বল্প সময়ে গরুকে মোটা তাজা করতে বাস্তব সম্মত কিছু কারিগরি জ্ঞান আমাকে দেওয়া হল। শুকনো খড়কে প্রক্রিয়াজাত করণের নাম হল, ইউরিয়া প্রসেস আর কাঁচা ঘাসকে প্রক্রিয়াজাত করণের নাম হল সাইলেজ প্রক্রিয়া। এগুলো আমি নিজ হাতে শ্রম দিয়ে শিখে নিয়েছিলাম। আমার প্রথম লক্ষ্য ছিল লেখাপড়ার পাশাপাশি আমাদের খামার বাড়ীতে গরু মোটা তাজা করণের একটি প্রকল্প হাতে নিব। সাথে থাকবে ছাগলের খামার। পরে আস্তে আস্তে সেরা জাতের বাছুর জোগাড় করে, দুগ্ধ খামার প্রতিষ্ঠা ও কাল জাতের ছাগল জোগাড় করে ব্ল্যাক ব্যাঙ্গল ছাগলের চাষ করব। কাল বর্ণের ছাগলের দুধ মজা, গোশত মজা, তাদের গোশতে কোন ঘ্রাণ থাকেনা, তাই সারা দুনিয়ায় এই ছাগলটির খুবই কদর! ১৯৮২ সালের দিকে চট্টগ্রাম সহ দেশের কোথাও কোন খামার গড়ে উঠেছে বলে শুনতে পাইনি!

বাংলাদেশে ‘মে এন্ড বেকার ও ফাইজার’ কোম্পানি গবাদি পশুর ঔষধ তৈরি করত। এসব ঔষধ খোলা কিংবা কম সংখ্যায় পাওয়া যেত না। কমপক্ষে একশত গরু ছাগলের ঔষধ নিতে হত। এক লিটার ওজনের ইনজেকশনের কিছু বোতলে কমপক্ষে দুই থেকে চারশত শত গরুর ঔষধ থাকত। জার্মানির এসব কোম্পানির ঔষধের ব্যবহার বিধি সবাই জানত না। ঔষধের ব্যবহার জানলেও রোগ সম্পর্কে ধারনা থাকত না। তাই ঔষধও বিক্রি হত না, সময়ের প্রয়োজনে কাজেও আসত না। এসব কোম্পানিও আমাদের জন্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছিল তাছাড়া এই বিষয়টিতে সরকারের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি ছিলনা।

এই প্রশিক্ষণটি আমাকে যথেষ্ট প্রেরণা দিয়েছিল। মনে প্রাণে ভাবতাম আমি একটি বড় খামারের মালিক হব। আমি এমন একটি কাজ শুরু করব, যা দেখে আমার সহপাঠী সকল বন্ধু বান্ধব আমাকে উৎসাহ দেবে এবং তারা নিজেরাও সে কাজটি করতে চাইবে। এই কাজটি করার জন্য, আর্থিক সাহায্য ব্যতীত সকল প্রকারের সুযোগ আমার কাছেই আছে। শুধুমাত্র আমার প্রচেষ্টাই যথেষ্ট ছিল।

চট্টগ্রাম শহর থেকে রেলে করে সিলেটে পৌছতে তের ঘণ্টা লাগত। এই লম্বা ভ্রমণে যাত্রীরা বই পড়তেন। আমিও এই সুযোগটাকে বরাবর কাজে লাগাতাম। বইয়ের অভাবে পাশে বসা এক ভদ্রলোকের সাথে থাকা পত্রিকার কোন এক পুরানা সংখ্যার ভল্যুম দেখলাম। তাঁকে অনুরোধ করে সেই যাত্রায় বইটি পড়ার অনুমতি নিলাম। সেই পত্রিকার সাহিত্য অংশে একটি বিদেশী গ্রন্থ পড়ে আমি এতটাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলাম যে, এখনও সেই প্রেরণা হারাই নি। বইটি ছিল Knut Hamsun এর Growth of the Soil বাংলায় অর্থ দাড়ায় ‘মাটির জন্ম’। এই বইটি আমাকে এতটুকু নাড়া দেয় যে, মানুষ যত বাজে মন্তব্যই করুক না কেন, কোন কাজ করতে আমি লজ্জা বোধ করতাম না। আমার জীবনের কয়েকটি সেরা বইয়ের মাঝে এটি অন্যতম। আরো পরে জানতে পারলাম, দুনিয়া সেরা সাহিত্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে, ‘মাটির জন্ম’ বইটি ১৯২০ সালেই নোবেল পুরষ্কার পায়।

দীর্ঘ দিনের প্রশিক্ষণ শেষে আমি যখন বাড়ীর উদ্দেশে রওয়ানা হই, তখন আমার বুকে নতুন দিনের সুন্দর আশা আর প্রত্যাশা দোল খাচ্ছিল। আমি স্পষ্ট বুঝতে পারলাম, যত বড় ঝড়, বাদল, বাধা আসুক না কেন, কোন ভাবেই দমিয়ে না যাওয়াই হবে সামনের জীবনের মুল ভিত্তি। আমাকে তারপরও অবিরত লড়তে হয়েছে, লড়াই করতে অভ্যস্ত হয়েছি এবং জীবনের বাঁকে বাঁকে রূঢ় বাস্তবতাকে দৃঢ়ভাবে উপলব্ধি করতে শিখেছি।

অনেক কথাই বলা হয়েছে, তবে সিলেটের প্রশিক্ষণ জীবনও ছিল অম্ল-মধুর কষ্টের ও তিক্তের।

সিলেট শহরে এক বন্ধুর বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে অনুরোধ রক্ষা করতে গিয়ে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান গেয়েছিলাম। তারা এই গান শুনে এতটাই পুলকিত হয়েছিল যে, আমার নাম ছড়িয়ে পড়েছিল, ফলে আমাকে প্রতি সপ্তাহে কোন না কোন অনুষ্ঠানে এভাবে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান গাইতে হত। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান গুলো খুবই আবেদন ময়ী এবং আকর্ষণীয় সুরে বাঁধানো। যদি কেউ অর্থ বুঝে তাহলে, এই গান পছন্দ করবেই। নজরুল সংগীত গাইতাম, জীবনের এই বাঁকে এসে গানের একটি কলিও গাইতে পারি না। তখন বিবেক বাধা দেয় এই বলে যে, এই গাওয়ায় আত্মার কি উপকার হল!

এক শুক্রবার ছুটির বিকেলে, আট বন্ধু মিলে শহরে হাঁটতে বের হয়েছি। পেটে খিদে কিন্তু একাকী কিভাবে খাই! সবাইকে খাওয়াব, ছাত্র জীবনে সেই তৌফিকও ছিলনা। ফুটপাথ দিয়ে চলার সময় দেখলাম, সামনে বিরাট জটলা। মনে হল নতুন দোকান উদ্ভোদ্বন হচ্ছে, তাই মিষ্টি সংগ্রহ করার জন্যই মানুষের জটলা বেড়েছে। জটলা এড়াতে সবাই রাস্তায় নেমে এলাম। দেখলাম মাথার উপরে নাস্তার ঢালা সমেত এক ব্যক্তি দোকান থেকে বের হয়ে রাস্তার দিকে আসছেন। মানুষের ভিড়ে তিনি রাস্তার কিনারা দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি যখন রাস্তার কিনার বরাবর আসলেন, তখন আমরা নিচ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। ব্যক্তিটি টাল সামলাতে না পেরে, পড়ে যাচ্ছিলেন। ফলে মাথার উপরে রক্ষিত ঢালার নাস্তার প্যাকেট গুলো আমার মাথা বরাবর পড়তে লাগল। পড়নে ছিল পাঞ্জাবী! শাড়ীর আঁচল ধরার মত করে, পাঞ্জাবীর সামনের অংশটি মেলে ধরলাম! টপাটপ সেখানে নাস্তার প্যাকেট পড়তে রইল! পিছনের বন্ধুরা আমার পাঞ্জাবীর পিছনের অংশও সেভাবে মেলে ধরলেন। সেখানেও প্যাকেট পড়তে রইল! একটু পরেই পিছনের বন্ধুরাই বলল, যথেষ্ট হয়েছে এখন ভাগ। জন প্রতি দুই প্যাকেট হবার পরও আরো প্যাকেট বেঁচে রইল। আচানক এভাবে অপ্রত্যাশিত নাস্তা অবতরণ হবার বিরল ঘটনা আমাকে এখনও পুলকিত করে!

লাভ ইন সিঙ্গাপুর! ছায়াছবিটি ঐ সময়ের সকল যুবকের মনে-প্রাণে দোলা দিয়ে যায়। ডিজিটাল যুগের এই সময় তো প্রায় প্রতিটি ঘরই সিনেমা হল বনে গেছে। তখন কার দিনে, সিনেমা দেখতে লজ্জা-শরম বাধা হয়ে দাঁড়াত। বন্ধুরা বলল চুরি করে দেখতে যাবে। এই ছবি সারাদেশে খুবই হিট করল! কেননা বাংলাদেশে এই ছবিটি নতুন সহযোজন, যার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরাটাই রঙ্গিন! তাছাড়া সিঙ্গাপুরের মত আধুনিক একটা দেশে এটা চিত্রায়িত হয়েছে। রঙ্গিন চিত্রে বিদেশ দেখা হবে, এই চেতনায় সবাই অধীর। আমিও নিম রাজির মত আছি, সুযোগ করতে পারলে ছবি দেখব। কেননা হোস্টেলে আমাদের খানা দেওয়া হয় সন্ধ্যা সাড়ে সাত টায়। ছবির সময় হল ছয় থকে নয়টা। আমাদেরই বন্ধু একজন বাবুর্চিকে ম্যানেজ করল। বাবুর্চি প্রতিশ্রুতি দিলেন যে, আমাদের জন্য খাদ্য রেখে দিবেন, তবে রাত দশটার আগেই খেয়ে ফেলতে হবে।

শীতের মৌসুম! টিলাগড়ের পাহাড়ের পাদদেশে এই স্থানে ভয়ানক শীত। পুরা দিনেও ঠাণ্ডা থামে না, কোন জায়গায় রাতের কুয়াসা সন্ধ্যা অবধি শুকায় না। ঘাসে বসতে গেলে জোকে ধরে। হোস্টেলের পাশে খুবই স্বচ্ছ পানির একটি পুকুর আছে, ঠাণ্ডার ভয়ে নামা যায়না। পরিষ্কার পানিতে নানাবিধ পানিজাত প্রাণীর নড়াচড়া দেখা যায়। সকাল থেকেই বিদ্যুৎ নাই, তাই পানির ট্যাংকে পানি নাই। উপায় না পেয়ে বাবুর্চি সেই পুকুরে আলু, ডাল, সবজি ধুচ্ছেন। বিকালে সিনেমা দেখতে যাবার সময় বাবুর্চিকে আবারো মনে করিয়ে দেওয়া হল, আমরা ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’ দেখতে যাচ্ছি।

হন্ত দন্ত হয়ে রাত সাড়ে ন’টায় হোস্টেলে পৌছাই এবং জলদি ক্যান্টিনে বসে যাই। প্রতিটি ব্যক্তির জন্যই আলাদা করে বাটি বানিয়ে গুছিয়ে রেখেছে বাবুর্চি। যথারিতী খাওয়া শুরু হল, ভাবছি ভাগ্যিস আজ ডিম নাই! গত মাসের প্রথম শুক্রবারে সিন্ধ ডিমে কামড় বসাতে গিয়ে, ডিমের ভিতরে সেদ্ধ হয়ে যাওয়া মুরগীর বাচ্চার নরম হাঁড় দাতে আটকা পড়েছিল। ঘেন্নায় শরীর রি রি করে উঠেছিল! সেই থেকে ডিম ছেড়েছি। আজ মাছ-সবজি আর ডাল। ডালের মাঝে পোড়া রসুনের কোয়া গুলো খুবই স্বাদ লাগে। যারা শেষে খায়, তাদের পাতে এই রসুন পোড়া বেশী পরিমাণে থাকে। আজকে পরিমাণটা আরো বেশী কিন্তু পরিবেশিত রসুনে কোন ঘ্রাণ নাই! কৌতূহলী একজন গভীর মনোনিবেশের সাথে রসুনের টুকরা গুলো পরীক্ষা করল! পরীক্ষা শেষে তিনি এতটুকু বলেই মাটিতে বসে পড়লেন, হায় হায় এগুলো তো রসুন নয়, সব চায়না জোঁক। মুহূর্তে সবাই তড়াত করে লাফিয়ে উঠল এবং সম্মিলিত ভাবে সকলেই বমি উৎসবে মেতে উঠল! তাদের একজন কোন মতে বললেন, হোস্টেলের পুকুর থেকে সবজি ধোয়ার সময় সকল জোঁক এক সাথে তরকারীতে…… ওয়ার্ক! ……ওয়ার্ক!!..........

বিষয়: বিবিধ

২২৭৯ বার পঠিত, ২৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

268318
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১২
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : প্রতিটা লাইন খুব মজা করে পাঠ করেছি! Day Dreaming পাঠককে মুগ্ধ করা এবং মনোযোগ ধরে রাখার মতোন আকর্ষনীয় লিখা- মাশা আল্লাহ!
ভাইয়া নাষ্তার প্যাকেট পড়ার ঘটনাটি আসলেই পুলকিত করার মতোন! কিন্তু বিনা পয়সায় খেলেন যে Tongue

ডিম আর রসুনের কথা পড়ে আমার পেট গোলাচ্ছে আমি যাই
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৪৯
212090
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : দোকান উদ্ভাধনের মিষ্টি তো ফি্র খেতে হয়, সেটাতে টাকা দেওয়া লাগেনা। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
268324
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:২১
শেখের পোলা লিখেছেন : ছোট বেলায় খাবারের সাথে পিঁপড়া খেয়ে ফেললে বড়রা বলতেন, সাঁতার শেখা সহজ হবে৷ জোঁক খেলে কি হবে জানিনা৷
আপনার লেখার নামকরণটা সত্যই সার্থক হয়েছে৷ আমাদের তিন বন্ধুর একটা সংস্থা ছিল। 'সার্ভিস ফর এনিমল এণ্ড বার্ডর্স' এর ব্যানারে আমা অনেক যুবককে ঐ ট্রেনিং বিনা খরচে দেয়াইছিাম, কিন্তু কেউ তখন খামার করেনি৷ সবাই চাকরীতে চলে গিয়েছিল৷ শুধু কিছু মহীলা আজও বাড়ি বাড়ি হাঁস মুরগীর ইনজেকশন দিয়ে বেড়ায়৷ ঔষধ উপজেলা ফ্রি দিত৷ এগনও দেয়কিনা জানিনা৷ পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম৷
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৫০
212091
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
268330
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩০
আফরা লিখেছেন : আমাদের এক আত্বীয় ছিল সে খুব মজা করে গল্প করতে পারতেন ।একটা অতি সাধারন কথাও তার মুখে শুনতে খুব ভাল লাগত । আপনি ঠিক সেই ধরনের একজন মানুষ । আপনার লেখুনীতে যাদু আছে যা পাঠককে পড়ায় আগ্রহী করে তুলে । অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া ।
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৫০
212093
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
268335
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৭
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : চায়না জোঁককে রসুন ভেবে খেয়ে ফেললেন শেষ পর্যন্ত!!
আমি একবার হোটেলে খেতে বসে সব্জির সাথে তেলাপোকা দেখতে পেয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দেয়ার সাথে সাথেই ভেতর থেকে বাবুর্চি এসে তেলাপোকাটি হাতে নিয়েই তিনি গালের ভিতর ডুকিয়ে দিলেন! আর আমার বিরুদ্ধেই তিনি পাল্টা অভিযোগ করলেন পেয়াজ এবং তেলাপোকার পার্থক্য করতে না পারার কারণে!
আসলে সময়টা এমন ছিল যে হোটেল কর্তৃপক্ষের মান ইজ্জত রক্ষা করা এবং বাবুর্চির চাকরী বাচানোই তখন প্রধান উদ্দেশ্য ছিল। না হয় একটা রান্নাকরা তেলাপোকা এমনভাবে খেতে পারলো কেমনে?
যা্ইহোক আপনার লেখাটি পড়ে খুবই ভাল লেগেছে। আসলে আপনার লেখা পড়া শুরু করলে শেষ না হওয়া পর্যন্ত ছেড়ে দেয়া যায় না। আপনাকে ধন্যবাদ।
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৫২
212094
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : এদের উপসি্থত বুদ্ধি অনেক বেশী। সে যে কাজটি ঘটনাস্থলে এভাবে করতে পেরেছে একজন অতি বিদ্|ধান মানুষ সেটা করতে পারত না। অনেক ধন্যবাদ।
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:০৭
212120
শেখের পোলা লিখেছেন : শুধু উপস্থিত বুদ্ধিই নয়৷ মনে হয় উনিও বিদ্যা সাগর মশাইয়ের জীবনী পড়েছেন৷ বিদ্যাসগর মশাই ছোট বেলায় বাবার সাথে কলকাতার মেসে থেকে লেখাপড়া করতেন৷ খরচ দিিতে না পারার কারণে রাঁধা বাড়া, ধোওয়া ধুয়ীর সবকাজ করতে হত৷ উনি একদিন একজনের পাতে তরকারী দিতে গিয়ে সেখানে তেলা পোকা দেখলেন আর কেউ জানার আগেই তা নিজের মুখে পুরে দিলেন৷
268356
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৮:৩৬
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৯:৫২
212095
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
268451
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৩০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : সিলেটের প্রশিক্ষন এর কথা কয়েকবার বলেছিলেন কিন্তু আপনি যে গান জানতেন তা কিন্তু কখনও বলেন নাই!!!
আমিও চাকরির সুত্রে সিলেটে প্রায় ৬ মাস ছিলাম এবং সিলেট বিভাগের প্রতিটি থানা সদর এবং বেশিরভাগ ইউনিয়ন দেথার ভাগ্য আল্লাহ দিয়েছেন। ২০০৪ সালের বিধ্বংসি পাহাড়ি ঢল আর বন্যা দেখার অভিজ্ঞতা ও হয়েছে।
ওয়েষ্টার্ন বই পরে আমারও কখনও কখনও র্যানশ বা খামার করার ইচ্ছা হতো! বাসায় অবশ্য মুরগি পালা হতো । গরুও ছিল আমার ছোট দাদার। আমরা এ্সএসসিতে কৃষিশিক্ষা পড়েছিলাম। কিছুটা কাজে এসেছিল যতদিন বিল্ডিং হয়নি। কিন্তু তখনও অনেকে সমালোচনা করত এই বিষয়টি বাধ্যতামুলক করায়! মন্তব্যটি ছিল লেখাপড়া করে কি চাষবাস করবে??
কায়িক শ্রমের প্রতি এই অনিহা আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অধঃপতন এর প্রধান কারন। আমরা চাকরি করে বসের ধমক খেয়ে নিয়মিত বেতন আর ঘুষ খেয়ে নিজেদের ভদ্রলোক মনে করি। লরা ইঙ্গলস ওয়াইল্ডার এর "লিটল হাউস অন দ্য প্রেয়ারি" সিরিজের প্রথম বই "ফার্মার বয়" এর শেষটা আমার মনে প্রচন্ড দাগ কেটেছিল। যেখানে আলমানযোর বাবা তাকে কৃষক আর শহুরে জিবনের পার্থক্য বুঝায়।
"হ্যাঁ, তবে নিজের ইচ্ছায় কাজ করবে তুমি,কারও হুকুমে নয়। এখানে তুমি স্বাধীন"।
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১১:৪১
212144
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আমার গান গাওয়া নিয়ে বহু বিব্রতকর ঘটনা আছে। এক সময় এটা নিয়ে গর্ব থাকত, এখন শরম লাগে। আমার গান গত সমস্যা নিয়ে ব্লগে কয়েকটি লিখাও ছিল।

চাষাবাদ জিনিষটা কত মূল্যবান সেটা এখনও আমরা বুঝি না। আজ সবকিছু বিদেশ থেকে আমদানি করতে হচ্ছে। মরুর দেশে চাষের জন্য সরকার যে শ্রম দিচ্ছে আমাদের দেশে সেটা কল্পনা করা যায়না। আমার সামনের পর্ব গুলোতে এ বিষয়ে অনেক কথা থাকবে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
268504
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৩:১৯
আবু সাইফ লিখেছেন :
আমার বাবা খুবই চমতকার প্রকৃতির ব্যতিক্রম ধর্মী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আমাকে দিয়ে সব কাজ করাতেন এমন কি, লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে নতুন কোন কাজ শিখার সুযোগ আসলে, তিনি টাকা খরচ করেই সেটা আমাকে শিখিয়ে দিতেন।


যেন আমার বাবাকেই দেখছি-

মানুষ যত বাজে মন্তব্যই করুক না কেন, কোন কাজ করতে আমি লজ্জা বোধ করতাম না।


খুবই গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা- বাস্তবে সুফলও সীমাহীন
[তবে জোঁকভাজা খেতে রাজী নই-
খাবারটা না বুঝে খাইনা কখনো,
আর পেটের অসুখেও ভুগিনা]



সংশোধনী
সার্কুলেষ্টাইল=সাইক্লোস্টাইল
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:০৮
212269
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার ভাল লাগা ও পছন্দের কথাগুলো উল্লেখ পূর্বক মন্তব্য অনেক ভাল লাগল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
268543
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৮:৫৯
মামুন লিখেছেন : ধন্যবাদ।
লেখাটি যদিও রাতে পড়েছি, কিন্তু মোবাইলে বাংলা লিখতে না পারায় মন্তব্য করতে পারিনি।
খুব ভালো লেগেছে বরাবরের মত।
সাভারে যে ডেইরী ফার্ম রয়েছে, সেটিও তো অনেক পুরনো। কিন্তু সিলেটে গেলেন তাই ভাবছিলাম(অবশ্য আপনার ওখানে যাবার কারণও আপনি লিখেছেন)।
হোষ্টেলের বর্ণনাগুলো চমৎকৃত করলো। পাঞ্জাবি মেলে ধরে নাস্তার প্যাকেট লাভ করা, আবার জোঁকগুলো খাবার গা রি রি করা অনুভূতি- এসবই লেখার অনুসং হয়ে লেখাটিকে আরো আকর্ষিক করেছে। আ
আমিও আফরার সাথে একমত। পাঠককে ধরে রাখার এক সহজাত গুণ আপনার ভিতরে রয়েছে।
অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
আর 'লাভ ইন সিঙ্গাপুর' সিনেমাটি আমিও হলে গিয়ে দেখেছিলাম।
জাজাকাল্লাহু খাইর। Rose Rose Rose Good Luck Good Luck Good Luck Rose Rose Rose
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:১৩
212277
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ঐ উদৃতি গুলো দেবার ইচ্ছা ছিলনা, লিখার শেষ হঠাৎ মনে পড়ে গেল, তাই আলাদা ভাবে প্যারা করে লিখলাম, নতুবা সে সব ঘটনা গুলোকে অন্যভাবে উপস্থাপন করা যেত। এধরনের বহু বিদঘুটে ঘটনায় অভিজ্ঞতার ঝুইড়ি টই টুম্বুর হয়ে আছে। আমি নিজেও কদাচিৎ ভাবি, রাজ্যের যত্তসব বিদঘুটে ঘটনায় আমি থাকি কেন? নাকি অন্যদের জীবনেও এসব ঘটে থাকে, তারা লাজ-লজ্জার কারণে সেটা প্রকাশ করেনা! অাপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
268625
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০১:৫৩
সালাম আজাদী লিখেছেন : হাহাহা, মজা পেলাম
২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ০২:১৪
212333
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার মত ব্যক্তিকে মজা লাগাতে পেরে আমিও মজা উপভোগ করলাম। অনেক ধন্যবাদ
১০
269762
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:২৬
নেহায়েৎ লিখেছেন : বর্তমান সময়ের ছেলেমেয়েরা কোন কাজ করতে পারেনা। কোন মেয়ে লেখাপড়ায় ভাল হলে, তাকে দিয়ে তো অনেক মা গ্লাসে পানি ভরার কাজটুকু করায় না! এতে করে তারা একটি অসাড় জীবে পরিণত হয়, বিপদের দিনে তারা নিজের উপকারও নিজে করতে পারেনা। (শিক্ষণীয়)।

আর এটা শেষের দিকে পড়ে মজা পেলাম। জোকের তরকারীটা আসলে কেমন লেগেছিল ভাইয়া?
২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:২৭
213769
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : তরকারী সুস্বাধু ছিল, তবে রসুনের ঘ্রাণ পাইনি। বাকীটা বমিতেই সার......অনেক ধন্যবাদ।
১১
289210
২৮ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৪৪
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : ভাইয়া আপনার লেখাগুলো যতই পড়ি,ততই যেন পড়ার মাঝে হারিয়ে যাই। আপনার প্রতিটা লেখা থেকেই কিছুনা কিছু শিখতে পারি। আপনার সংস্পর্শে থাকতে পারছি বলে মাঝে মাঝে গর্ববোধ হয়। আপনার জন্য দোয়া রইলো।
০১ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ১২:৩১
275200
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সুন্দর অভিব্যক্তির জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১২
290370
০২ ডিসেম্বর ২০১৪ রাত ১২:৩২
মাটিরলাঠি লিখেছেন :
@দিল মোহাম্মদ মামুন ভাইয়ের কমেন্টের সঙ্গে সহমত পোষণ করছি।
০১ আগস্ট ২০১৫ দুপুর ১২:৩১
275201
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File