জাতীয়তাবাদ ইসলাম ধর্মকে অবলম্বন করে কিন্তু তার ধ্বংসকেও নিষ্ঠুরভাবে উপভোগ করে।
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০২:২৯:০৯ দুপুর
জাতীয়তাবাদ ধর্মকে স্বীকার করে, ধর্মকে মেনেও চলে কিন্তু ব্যক্তি স্বার্থ, দলীয় স্বার্থ, গোষ্ঠী স্বার্থের প্রশ্নে ধর্মীয় অধিকারকে দ্বিতীয় স্থানে রাখে। জাতীয়তাবাদের মূল স্পিরিট হল নিজ জাতির শ্রেষ্ঠত্ব ও প্রাধান্য থাকবে সকল কিছুর উপরে। তার জাতি থেকে উত্তম, অভিজাত, মেধাবী, শক্তিশালী, শাসনে, যোগ্যতায়, নেতৃত্বে কর্তৃত্বে এবং আধিপত্যে অন্য কোন জাতি নাই। পৃথিবীর সকল জাতির উপর খবরদারী করা, অভিভাবকত্ব জাহির করা ও রক্ষণাবেক্ষণ করার যোগ্যতা একমাত্র তাদেরই আছে।
জাতীয়তাবাদ হল পাহাড়ি নদীর সেই ঝর্ণা ধারার মত, যেটি সমতলে বহু শাখা প্রশাখায় বিভক্ত হয়ে ভূমিকে বহু টুকরায় বিভক্ত করে রেখেছে। যার এক টুকরার সাথে অন্য টুকরার কোন সংশ্রব ও সংযোগ নাই। ফলে জাতীয়তাবাদী উ-শৃঙ্খলতা ও প্রেরণা একটি সবল ও শক্তিশালী রাষ্ট্রকে টুকরা করে দুর্বল ভিতের উপর দাঁড় করায়। ঘৃণা আর সঙ্কাবোধ হল জাতীয়তাবাদের আসল পুঁজি; হীনমন্যতা, একগুঁয়েমি, গর্ব ও অহংকার হল তার মূল ভিত্তি! জাতীয়তাবাদী জোশ, আবেগ-উদ্দীপনা ততক্ষন পর্যন্ত সৃষ্টি করা যায়না, যতক্ষন না জাতীর সামনে এমন কিছু হাজির করা না যায়, যাকে ঘৃণা ও ভয় করা না যায়! ঘৃণা ও ভয়কে উষ্কে দিয়ে মানুষকে ক্ষেপিয়ে তোলা হয়। জাতীয়তাবাদী চেতনায় জাতীকে উন্নয়ন করার কথা বলে উষ্কে দেওয়া হলেও, মূলত ভূ-খন্ডকে টুকরো টুকরো করে, মিলে-মিশে খাওয়া ও শাসন করার মতলব থাকে মূল উদ্দেশ্য। কোন অবস্থাতেই তা জাতিকে উন্নত মানদণ্ডে উপনীত করার লক্ষ্যে পরিচালিত হয়না! শেখ মুজিবর রহমান ও জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭১ সালে সুযোগকে এভাবেই কাজে লাগিয়েছিল।
যখন পুরো ইউরোপ খৃষ্ট ধর্মের প্রভাবে এক ছায়ায় আশ্রয় নিয়েছিল। তখন তারা সেই বলে বলীয়ান হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ধর্মীয় জেহাদ তথা ক্রুসেড চালাতে সক্ষম হয়েছিল। যখন তাদের অন্তরে ধর্মের আহবান দুর্বল হয়ে পড়ে, জাতীয়তাবাদের হীনমন্য গর্ব-অহংকার হৃদয়ে ঝেঁকে বসে; তখন তাদের মধ্যে গ্রীক জাতি, ব্রিটিশ জাতি, রুশ জাতি, আইরিশ, পর্তুগীজ, স্প্যানিশ, স্কটিশ, সার্বিয়ান এবং জার্মান জাতির নামে ব্যাপক ভেদাভেদ, হিংসা, জিঘাংসা, আধিপত্য, আক্রমণ ও অত্যাচার চেপে বসে। ফলে তারা বহু ভাগে বিভক্ত হয় এবং অতীতের চেয়ে অধিকতর দুর্বল হয়ে পড়ে। পৃথিবীতে সংঘটিত দুটি বিশ্বযুদ্ধ জাতীয়তাবাদের অহংবোধ থেকেই সৃষ্টি হয়েছিল।
জাতীয়তাবাদী মতবাদ যদি একবার কোন গোষ্ঠীর রক্তে ঢুকে পড়ে, তাহলে তার নিশ্চিত পতন অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে। ফলে বন্ধু রাষ্ট্র ঘৃণা করে এবং প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহ শত্রুতে পরিণত হয়। পুরো দুনিয়াকে নেতৃত্ব দেবার যোগ্যতা সৃষ্টির হবার পরও, হিনমন্য চিন্তার কারণে জার্মানি দুটো বিশ্বযুদ্ধ করে নেতিয়ে পড়ে। তুর্কি সাম্রাজ্য ও বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য জাতীয়তাবাদের হীনমন্যতায় বিলীন হয়েছে। আজকের ইরান ও ইসরায়েল একই মতবাদের কারণে পুরো দুনিয়ার শত্রুতে পরিণত হয়েছে। রোম আর পারস্যের চির জীবনের ধন্ধই ছিল জাতীয়তাদের মত হীনমন্য চিন্তাধারার বিশ্বাসের কারণে। জাতীয়তাবাদী চিন্তায় আচ্ছন্ন রোমানেরা যখন খৃষ্ট ধর্মের বাহক হয়ে যায়, খৃষ্ট ধর্ম তখনই তাদের পুরানা ঐতিহ্য চিরতরে হারিয়ে ফেলে!
ইসলাম ধর্ম বিভিন্ন জাতি, গোষ্ঠী, সংস্কৃতি ও কৃষ্টির মানুষকে এক কাতারে নিয়ে আসার প্রেরণা যোগায়। ইসলাম মরুভূমির অশিক্ষিত বর্বর আরবদের শিক্ষার আলোতে মানুষ করে, ইউরোপের বনে জঙ্গলে বসবাস উলঙ্গ করা মানুষদের জ্ঞানের আলো দেখিয়েছে। বন্ধু ও ভ্রাতৃত্বের এক ছায়ায় নিয়ে আসে। আফ্রিকার মরক্কো থেকে চীন, ইউরোপ থেকে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত আধা দুনিয়ার বিশাল ভু-খণ্ডে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল; সমুদয় গোত্র, গোষ্ঠী, জাতি, সম্প্রদায়, কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সীমা রেখা ভেঙ্গেই। পরবর্তীতে যখন এসব স্থানে জাতীয়তাবাদী চিন্তা ও চেতনা কাজ করা শুরু করল, তখন থেকেই নদীর ভাটি অঞ্চলের নিয়মের মত মুসলিম দুনিয়া বহু টুকরায় বিভক্ত হল।
ইসলাম ও জাতীয়তাবাদ দেখতে একটি দাড়ি পাল্লার মত! যার এক দিকে কিছু কমলে অন্য দিকে বেড়ে যায়; আবার সেটিকে কমলে অন্য এদিকে বেড়ে যায়। সে কারণে ইসলামী পুনরুজ্জীবন ঘটলে জাতীয়তাবাদ হুমকির মুখে পড়ে, ক্ষমতা হারার ভয়ে তারা ভীত হয়। জাতীয়তাবাদ ধর্মকে অস্বীকার করতে পারেনা, কেননা তারা বুঝে ধর্ম একটি সংঘটিত শক্তি, যাকে সুবিধা মত সময়ে ব্যবহার করা যায়। কখনও ধর্মীয় বিভিন্ন দল, উপদলের মাঝে সংঘাত বেধে গেলে জাতীয়তাবাদীরা নিঃশ্চুপ থাকে এবং নিষ্ঠুর ভাবে তা উপভোগ করে। কেননা ধর্মীয় দলের কেউ এক পক্ষ বেঁচে থাকলেও তাদের লাভ, আবার দুই পক্ষ নির্মূল হয়ে গেলেও তাদের কোন ক্ষতি নাই। ধর্মীয় দলের বিভক্তিই জাতীয়তাবাদীদের এক প্রকার পুঁজি। তাই কোন বহিঃশত্রু বা রাষ্ট্র কোন ধর্মীয় গোষ্ঠীকে নির্মম হাতে নির্মূল করার ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও জাতীয়তাবাদীরা মুখে কোন কথা বলেনা, চোখে কিছু দেখে না বরং ভিতরে ভিতরে এসব ধ্বংস ও উৎপীড়ন উপভোগ করে! যাতে করে, সংগঠিত শক্তি ভেঙ্গে টুকরো টুকরো হয়ে যাক। অতঃপর তাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলগুলোকে অর্থ ও ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে নিজেদের বাসনা পূরণ করা যায়। যাদের কাজের ভিত্তিই হল বিভ্রান্তি, অ-বিশ্বস্ততা লুকোচুরি আর হঠকারিতা। এসবের সবগুলোই হীনমন্যতার পরিচায়ক আর সে কারণেই বলা হয় জাতীয়তাবাদ হল হীনমন্যতার মতবাদ।
আগের পোষ্ট: ধর্ম নিরপেক্ষতাবাদ ধর্মকে স্বীকার করেই রাষ্ট্র চালায় কিন্তু ইসলামকে পঙ্গু করতে বাধ্য হয়! পড়তে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫৪ বার পঠিত, ২৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ এরকম একটি তথ্যবহুল এবং ইসলামী ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হবার মত উদ্দীপক লেখার জন্য আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
দারুণ কিছু কথা বলেছেন, যা সত্যিই বাস্তবতা। আজকের জাতীয়তাবাদ যেন আপনার লিখার প্রতিধ্বনি। ধন্যবাদ।
"জাতীয়তাবাদী চিন্তায় আচ্ছন্ন রোমানেরা যখন খৃষ্ট ধর্মের বাহক হয়ে যায়, খৃষ্ট ধর্ম তখনই তাদের পুরানা ঐতিহ্য চিরতরে হারিয়ে ফেলে!"ইরান ও ইসরায়েল একই মতবাদের কারণে পুরো দুনিয়ার শত্রুতে পরিণত হয়েছে। "
তথ্যবহুল সুলেখিত এই পয়েন্টগুলী নতুনভাবে অনুভব করতে পারলাম কিন্তু ইরানের বিষয়টা আরেকটু খোলাসা করলে বুঝতে সুবিধা হতো। ইরানতো সবসময় ইসলামকে সামনে রেখেছে যদিও তারা শিয়া কিন্তু ইহুদি-খ্রিষ্টানদের সাথে লড়াই করিতেছে ইসলামের পক্ষে। ধন্যবাদ
আন্তরিক দোয়া করি আল্লাহ আপনার কলমের জোর বাড়িয়ে দিন,জাযাকাল্লাহ খায়ের
ইরানকে আমরা মুসলিম হিসেবে জানি, তবে ইরান ভূ-খন্ডের অধিপতিদের জাত্যাভিমান অনেক বেশী। আর এই জাত্যাভিমানই তাদের সাথে আরবদের মূল সমস্যা। অনেকেই এই পয়েন্ট গুলো উপেক্ষা করে যায়। কয়েকটি তুলে আনলাম মাত্র।
১। হুরমুজ প্রাণালী! এই হরমুজ ইসলামের বড় দুষমন ছিল। ওমর (রাঃ) তাকে দুই বার গ্রেফতার করে ক্ষমা করেছিল তারপরও সে শঠতা করে এবং মুসলমানদের হাতে প্রাণ দেয়। ইরানীদের কাছে ওমরের চেয়ে হরমুজের গুরুত্ব ও সম্মান বেশী।
২। সালমান ফার্সী (রাঃ)! বহু বড় নাম করা সাহাবী। তাঁর মত আরো প্রসিদ্ধ সাহাবী ছিলেন। তবে ইরানীরা তাকে এমনভাবে ইজ্জত করে যে, বলা হয়ে তাঁর কাছেও নাকি ওহী আসত! এত সম্মানের কারণ ছিল কেননা তিনি ফার্সী ছিলেন।
৩। মহাবীর রুস্তম! ইরানে এখনও কিংবদন্তি। ওমর (রাঃ) আমলে তাকে হত্যা করেছিল সাহাবী কাকা (রাঃ) হাতে। সে অগ্নি উপাসক। কিন্তু ইরানীদের কাছে ইসলামী সিপাহসালার কাকার চাইতে রুস্তমের মর্যাদা ও গুরুত্ব অনেক বেশী!
৪। বখতে নাসের! যিনি জেরুজালেমকে গুড়িয়ে দিয়ে সকল ইহুদীদের বন্ধী করে বেবীলন তথা বাগদাদে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি ইরানী ছিলেন। এই তিনি জাজিরাতুল আরবের উপর সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তিনি পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য্যের অন্যতম শুন্য ঝুলানো বাগান বানিয়েছিলেন বন্ধী ইহুদীর দাস বানিয়ে। এই অতীত গর্ব ইরানীদের তাড়িত করে আর ইহুদীদের ক্ষিপ্ত করে।
৫। আলী (রাঃ) এর অনেক ছেলে ছিল ইরানীরা তাদেরকে ইজ্জত করেনা। এমনকি হুসাইনের (রা) ভাই হাসানকে (রা) ও না! শর্তানুসারে আলীর (রাঃ) সকল সন্তানগন সমান ইজ্জত পাবার অধিকারী ছিলেন। ফাতিমার (রাঃ) সন্তান হিসেবে হাসান (রাঃ)কে ও তেমন ইজ্জত করেনা, যেমন ইজ্জত হোসাইন (রাঃ) করে। কেননা হুসাইন (রাঃ) ঘরে একজন ইরানী স্ত্রী ছিলেন!
৬। মহারাজা দারায়ুস, গ্রীক বীর আলেক্সান্ডারের হাতে গ্রেফতার ও নিহত হয়। দারায়ুসের আছে জগৎবিখ্যাত সুনাম ও কাহিনী কিন্তু এত সুনাম সুখ্যাতি পূর্ন কাহিনী আরবদের নাই। আছে শুধু হিংসা, মারামারি, কাটাকাটির ইতিহাস। এই গর্ব-অহংকার ইরানীদের তাড়িত করে।
৭। ইসলাম বিজয়ী আদর্শ হিসেবে দুনিয়ার বুবে স্থাপিত হয়েছে, ইরানীদের বীরত্ব গাঁথা ইতিহাসকে দলিয়ে-মথিয়ে। মহাবীর সাইরাসের (খৃ। পূর্ব ৫০০) রাজত্বের আড়াই হাজার বছরের অহংকারের যবনিকাপাত হয়েছে মুসলমানদের হাতে।
এভাবে প্রচুর ইতিহাস রয়েছে যা ইরানীরা মানতে পারেনা সহ্য করতে পারেনা। তারা তাদের পুরানো মুশরিক বীরদের জন্য যত গৌরব করে মুসলিম বীর নিয়ে ততোধিক ঘৃণা করে। অথচ পুরানা আরবদের ঐতিহ্যকে ভুলন্টিত করে ইসলামও এসেছিল সেখানে। সেটা তারা খুব সহজে মানতে পেরেছিল কিন্তু ইরানীরা তা পারে না!...........
জাতিয়তাবাদ সবসময় উগ্রতা আর কুপমন্ডুকতার জন্ম দেয়। সেটা জার্মান আর্য জাতি হোক কিংবা ব্রিটন।কিংবা মিরপুরের কালশি পুড়ে যাওয়া শিশুদের লাশ। ইকবালের ভাষায়
সব দেবতার সেরা সে দেবতা,যাহারে কহিছ স্বদেশ ফের,
বসন তাহার বনেছে কাফন আবরি বদন ইসলামের।
মাতৃভুমির প্রতিমা তৈরি করে কে জান? এ তমুদ্দুন,
এরি হাতে হায়, নবির ধর্ম দেশে দেশে যে গো হতেছে খুন।
বাহু তো তোমার বলিয়ান তাতে তেীহিদ করে শক্তিদান,
স্বদেশ তোমার ইসলাম জেনো, মুসলিম তুমি মুক্তপ্রান।
(ওয়্যাতানিয়াত-জাতিয়তাবাদ)মনিরুদ্দিন ইউসুফ অনুদিত।
সুন্দর কবিতা, আগে কখনও পড়িনি। আমার লিখাটিকে সম্বৃদ্ধ করেছে আপনার এই কবিতা। অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকে এ বিষয়ে জ্ঞানী বিবেচনা করেই একটি প্রশ্ন করার লোভ সামলাতে পারছিনা, প্রশ্নটা আমি শুনেছিলাম আরো মাস ছয়েক আগে, জবাব জানি না এবং আমাকে কেউ জানাতেও পারেনি!
ইসলামে জাতীয়তাবাদ হারাম সুতরাং শুধু বাংলাদেশ বা একক কোন নির্দিষ্ট দেশে বা ভূখন্ডে ইসলামের কাজ করা বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ বা সহযোগিতা সঠিক নয় এই মত কি ঠিক? কাউকে বিব্রত বা ছোট করার উদ্দেশ্যে নয় শুধু একটু ধারনা লাভের জন্য করেছি আশাকরি বুঝবেন!
খোদাদ্রোহী মতবাদ হউক সমাজতন্ত্র, হউক জাতিয়তাবাদ যেটাই প্রতিষ্ঠিত আছে সেখানে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়া তো সর্বাগ্রে জরুরী। যদি সেখানে দ্বীনের কাজ করা না হয়, তাহলে সেই ভু-খন্ডকটি কে দ্বীনের জন্য উর্বর করবে? চুলকানী আগে গুরুত্ব পাবে নাকি মহামারি গুরুত্ব পাবে?
ইসলামের দাওয়াত দেওয়া মানে তো অবিরত লড়াই সংগ্রাম করা নয়। দাওয়াতের পরিপূর্নতা আসলেই লড়াই বাধে তার আগে নয়। যে ভূখন্ডে মুললিম জনসংখ্যা কম, সেখানে তো আর ইসলামী রাষ্ট্র হবেনা, যেমন ইউরোপের দেশগুলো। তাই সেখানে আল্লাহ সর্ম্পকে ধারনা দেওয়া, শিরিক মুক্ত জীবন যাপনের প্রতি আহবান করা, নামাজ-রোজার প্রতি আহবান তো প্রতিটি মুসলিমকে করতেই হবে।
ভারতে মুসলমানদের সংখ্যা বাংলাদেশ থেকে বেশী হবার পরও সেখানে দ্বীন প্রচারের জন্য তাবলীগ জামায়াতের মত কাজ উপযোগী হতে পারে। কেননা সেই ভু-খন্ডটি পরিপূর্ন ইসলাম প্রতিষ্ঠায় উপযোগী নয়। সে কারণেই তো আল্লাহ বলেছেন, প্রত্যেক ব্যক্তির সাধ্যের আনুকুল্যের ব্যাপারে কেয়ামতের দিন তাকে প্রশ্ন করা হবে।
তাই বলে,
বাংলাদেশর মুসলমানের সংখ্যা ভারতের চেয়ে কম কিন্তু জনগোষ্ঠির বেশীর ভাগই মুসলমান। এখানে মুসলামানেরা সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে বাধা না দিয়ে, যদি ভারতীয় তাবলিকের স্টাইলে দ্বীন প্রচার করে, তাহলে সেটা আল্লাহর কাছে কিভাবে গ্রহন যোগ্য হবে?
দেখুন বুঝার জন্য ছোট্ট কথাটি যথেষ্ট:
আবরাহার সৈন্য যখন মক্কা ঘিরে ফেলেছিল, তখন কাবার মুতাওয়াল্লী আবদুল মুত্তালিব কাবার মালীক কে বলেছিল, হে আল্লাহ আমার সাধ্য মতে তোমার ঘরকে পাহাড়া দিয়েছিলাম, আজ আবরাহার বাহিনীর মোকাবেলা করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। তাই তুমি তোমার ঘরের হেফাজত করো। আল্লাহ বুঝেছিলেন ঠিকই যে, আবদুল মুত্তালিবের সে ক্ষমতা নাই, তাই আবাবিল দিয়ে ক্বাবা হেফাজত করেছে।
আজকে ইস্রায়েল ও ভারত মিলে যদি ক্বাবাকে শতবার ও ধ্বংস করে তাহলে, তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহ সেই ব্যবস্থা নিবেন না, যেভাবে আবরাহার বিরুদ্ধে নিয়েছিলেন। কেননা কাবা রক্ষা করার জন্য যথেষ্ট সংখ্যক মুসলিম দুনিয়াতে বেঁচে আছে।
বায়তুল মাকদাস রক্ষায় আল্লাহ কি আবাবিল পাঠাচ্ছেন?? কেন পাঠাবেন, যেখানে আমি-আপনি জিবীত আছি!! যাক,
ফাইনালী এরই পরিনাম হিসেবে, আল্লাহ সমুদয় মুসলমানদের ধ্বংস করবেন, যেভাবে করেছিল ইরাকে হালাকু খানের হাতে। এটা আল্লাহর সরাসরি খোলামেলা ওয়াদা। তাই কোন ভু-খন্ডে কি শাসন চলছে সেটা বড় কথা নয়, আসল কথা হলো সেখানে শয়তানের শাসন চলছে। যা আল্লাহ পছন্দ করেন না। আবারো ধন্যবাদ।
ইদানিং ব্লগে কিছু মানুষ নিজেকে শিয়া পরিচয় দিয়ে কিছু অর্ধ সত্য আর কিছু বানোয়াট ইতিহাসের সাথে কোরআন-সুন্নাহর উদ্দেশ্যমূলকভাবে রেফারেন্স টেনে বিভ্রান্তি চড়ানোর প্রয়াস লক্ষ্য করা যায়। অবশ্য শিয়াদের এসব চাতুর্যামীপূর্ণ বিকৃত ইতিহাসের নবায়নমূলক প্রচারণার কেউ কেউ কোরআন-সুন্নাহ ও ইতিহাসের দলিল দিয়ে শিয়াদের কথার যুৎসই উত্তর দিচ্ছেন। অনেকেই এসব ইতিহাস না জানার কারণে ইরানী শিয়া সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে তোলা অভিযোগগুলোর ঐতিহাসিক পর্যালোচনার আলোকে বিবৃত করতে অক্ষম। আপনার লেখার মাধ্যমে এসব অভিযোগের অনেক প্রশ্নের উত্তর জানা সম্ভব হচ্ছে।
যদি সম্ভব হয়ে ইরানী শিয়া সম্প্রদায়ের ব্যাপারেও আমাদের নতুনভাবে কিছু জানার সুযোগ করে দিবেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন