একজন আবু জারীর ও একটি কর্দমাক্ত সাক্ষাৎকার! যে কথা রাখতে পারিনি!

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ৩০ আগস্ট, ২০১৪, ০৪:২৬:৪৭ বিকাল



যখন তাঁর সাথে কোলাকুলি করছিলাম, তখন একজনের শার্টের কাদা অন্যজনের পোষাকে লেপটে যাচ্ছিল। কাদা মাখামাখি অবস্থায় মোলাকাত করতে পেরে দু'জনেই আনন্দিত হলাম। আবু জারীর সাহেব নিজেকে কাদা থেকে বাঁচাতে পারলেও আমি নিজের কাদায় সঁপেছিলাম আগেই। সাক্ষাত প্রস্তুতির পূবেই নিজেই মাথার চুলে লেগে থাকা কাদা চিরুনি দিয়ে আঁচড়িয়ে, পুরো মাথায় একাকার করে, চুলের একটি ডিজাইন বানিয়েছিলাম। সাদা টি শার্ট টি কাদার ছোপ ছোপ রংয়ে হলুদ হয়েছে আগেই। ম্যাডাম বললেন কেমন লাগছে তোমাকে? দাড়ি, চোখের ভ্রু, হাতের চামড়া কাদার কল্যাণে রেড ইন্ডিয়ানদের মত হয়েছে! ভাবলাম তিনি তো আমাকে জীবনে এই প্রথম দেখছেন, হয়ত মনে করবেন, আমার বেশ ভুষা বুঝি এমনিই হবে! এই সংক্ষিপ্ত বিদঘুটে পরিস্থিতিতে আমার ছেলেটিও কর্দমাক্ত শরীরে গাড়ি থেকে নেমে এসে আবু জারীরকে বললেন আঙ্কেল, আসছালামু আলাইকুম।

তাঁর সাথে পরিচয় হয়েছিল অন-লাইনে লেখালেখির যুদ্ধে! আমি তাঁকে ভাল করে চিনলেও তিনি আমাকে চিনতেন না। কেননা আমি লিখতাম ছপ্দনামে, যে নামে এখন আর লিখিনা। তিনিও ছপ্দনামে লিখতেন তবে এখনও সেই নাম অব্যাহত থাকায় তাঁকে পাকড়াও করাটা আমার জন্য সহজ হয়ে যায়।

২০০৪ সালে চার দলীয় জোট সরকারের পতনের পর, আমার দেশ পত্রিকা পড়তে গিয়ে দেখতাম; কিছু পাঠক এমন মন্তব্য করত, তাতে বি-এন-পিকে তুলোধোনা করা হত। আমি অসহায় ভাবে তাকিয়ে দেখতাম, এসব প্রশ্নের যুক্তি সঙ্গত বহু উত্তর আছে। তবে বিএনপির কাউকে এসবের উত্তর দিতে দেখতাম না! বিএনপি বলে যে, একটি বড় দল আছে, ব্লগিং জগতে তাদের অনুপস্থিতি দেখে, দলীয় দুরবস্থার কথা আন্দাজ করতে পারতাম। এসব দেখে চিন্তা করলাম বিএনপির হয়ে না হয় আমিই কিছু উত্তর দিয়ে দেই। সেই থেকে শুরু। বিএনপি বিরোধী সেই সব পাঠক আমাকে দলীয় কোন নেতা মনে করে কলম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ত। সেই সময়ে ঝড়ের মত, তথ্যের গতি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন, আবু জারীর! তিনিও বিএনপির হয়ে লিখতে থাকলেন, তবে বুদ্ধিমান মানুষ বুঝতে পারতেন তিনি ইসলামী ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত। তখন হাতে গোনা কয়েকটি পত্রিকায় অন-লাইন সুবিধা ছিল, মন্তব্য করা যেত আরো সীমিত আকারে। সেই থেকে আবু জারীর নামটির সাথে পরিচয়।

লেখার মাধ্যমে পরিচয় হলেও, সেখানে ই-মেইল ঠিকানা দেওয়াটা বিপদজনক ছিল। কেননা ঐ সব পাঠক নিজেরা আমাদের তথ্যের সাথে কুলিয়ে উঠতে না পেরে গালাগালি শুরু করতে থাকলেন। তিন জন পাঠক কিভাবে আমার ই-মেইল পেয়ে যায়, এখনও কদাচিত ই-মেইল করে গালাগালি করে। ভয়ঙ্কর কদাকার গালাগালি। শিক্ষিত মানুষ কলমের ভাষায় এত কদাকার গালাগালি করতে পারে তা না দেখলে বুঝা দায়। চিন্তাশীল জ্ঞানীরা বলেছে, 'যখন তথ্য ও যুক্তি শেষ হয়ে যায়, তখন গালাগালির আশ্রয় নেওয়া হয়'। এখানেও তাই দেখলাম। এবার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের কাছে তারা অনুরোধ, আবদার, ধমকি অবশেষে হুমকি পর্যন্ত দিলেন, আন-লাইনে মন্তব্য করার সুযোগ যাতে বন্ধ করে দেয়া হয়! আশ্চর্য হতাম, যুক্তি খণ্ডাতে না পেরে হুমকি! তাও আবার লিখায় মন্তব্য করার যাতে সুযোগ দেওয়া না হয়, এই ধরনের আবদারে মাধ্যমে! তাছাড়া এসব আবদার তারাই করছিল যারা ভিন্ন নামে গালাগালির সয়লাব করছিলেন।

এই সব হুমকিতে মাহমুদুর রহমান নরম হবার মানুষ ছিলেন না। ফলে তারা মন্তব্যের ঘরে মাহমুদুর রহমান ও তার চৌদ্দ গোষ্ঠীকে গালাগাল শুরু করল। গালাগালির লাইন ও কম নয়। কখনও পাঁচ শত লাইন পর্যন্ত ছড়িয়ে যেত! ফলে ভদ্র লোকদের সেখানে অবস্থান করা কঠিন হল। এসব ঠেকাতে মাহমুদুর রহমান লগইন প্রথা ও পাসওয়ার্ড সিস্টেম চালু করলেন! এটা একটা লম্বা পদ্ধতি। সেই পদ্ধতিতেও তিনি গালাগালি সাহিত্য রোধ করতে পারেন নি। একই দশা আমাদের সময় পত্রিকাতেও ছিল। গালাগালিতে সয়লাব হত। পত্রিকা কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে মন্তব্য করার জন্য সীমিত সংখ্যক শব্দ নির্দিষ্ট করলেন। সৌভাগ্যক্রমে বাংলাদেশেও সীমিত শব্দের গালিও ছিল, সেগুলোর চর্চা সেখানে চলতে থাকল। ফলে তারা মনিটরিং করে মন্তব্য প্রকাশ শুরু করল। আমার দেশ পত্রিকায় এসব পন্থায় সুযোগ নিতে না পেরে, ঠোট বন্ধ করতে সরকার শরীরের জোড় খাটাতে সিদ্ধান্ত নিল এবং অবশেষে পত্রিকাটি বন্ধই করে দিল।

ঢেঁকি নাকি স্বর্গে গেলেও বাড়া বাঁধে, মানে চাউল গুড়ো করবেই। লিখার যায়গার সংকোচন হওয়াতে হাত উসখুস করত। কোথায় লিখব? স্থানের সন্ধান করতে থাকি। সিনিয়র ব্লগার লোকমান সাহেব সামহয়ার ইন ব্লগের ঠিকানা দিলেন, তখন তিনি সেই ব্লগ কাপিয়ে তুলছেন। নিজের নাম এন্ট্রি করার পরও কোন প্রতি উত্তর নাই। তখনই সোনার বাংলাদেশ ম্যাগাজিনের খবর পাই। এতে আমার লেখার তৃষ্ণা কিছুটা হলেও লাঘব হল। ম্যাগাজিনে আমার পঞ্চাশটি প্রবন্ধ লেখার পর সোনার বাংলাদেশ ব্লগের জন্ম হয়। সেই ম্যাগাজিনেই একদিন আবু জারীর তাঁর সেই পূর্বের নাম দিয়েই কমেন্ট করে বসে। আমি খুবই আনন্দিত হই। বুঝতে পারছি তিনিও আমার মত লিখার জায়গার সন্ধানে ব্যস্ত ছিলেন, তাই কিভাবে যেন ঘুড়ির মত ডিগবাজি খেয়ে একই জায়গায় আছড়ে পড়েছে। আমরা দুজনই ব্লগ ও ম্যাগাজিনে সচল থাকলাম। তখনও তাঁকে আমার পরিচয় বলা হয়নি। তিনি খুব গুণী ও উচ্চশিক্ষিত মানুষ! তাই গুরুত্বপূর্ণ সকল লিখাতেই তিনি সচল থাকলেন। এই ম্যাগাজিনে নতুন করে, সৌদি আরবের লোকমান বি নূর হাশেম, আবুধাবীর লোকমান, জেদ্দার নূর আয়েশা্ সিদ্দিকা ও ফিলিপাইনের ইবনে হাশেমের মত যোগ্য লেখকদের পাই। ম্যাগাজিনে বিরাশিটি প্রবন্ধ ও ব্লগে শতাধিক লিখা প্রকাশিত হবার পর, শাহবাগ থেকে আবদার তোলা হল, সোনার বাংলাদেশ বন্ধ করতে হবে! তখনই চিনতে পারলাম আসলে পত্রিকা ম্যাগাজিনে যারা গালাগালি করত তারা কারা? কেননা তখনও সরকারী উচ্চ পর্যায়ে এটা নিয়ে ভাবাভাবি শুরু হয়নি।

সোনার বাংলাদেশের কি দোষ, কতটুকুই বা তার ক্ষমতা! কোনটাই সরকার বিবেচনায় আনেন নি। তারা ক্ষমতা ব্যবহার করে শক্তিবলে তা বন্ধ করে দিলেন! এমনকি তার সম্পাদকে পর্যন্ত গুমের মত করে গ্রেফতার করলেন! অনেক ব্লগার হয়ত জানেন না, কি দোষ ছিল সেই ম্যাগাজিন ও ব্লগের? আসল ঘটনা ছিল এই ব্লগে ও ম্যাগাজিনেও তারা তথ্যের মোকাবেলায় পর্যদূস্ত হয়েছিল। এই ব্লগেও গালাগালির সুযোগ থাকলে তারা তাই করত কিন্তু মডারেশনের কারণে তা হয়ে উঠেনি। তথ্যাঘাতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা একপ্রকার হতাশ হয়েই সরকারের কাছে আবদার করতে বাধ্য হয়েছিল, যাতে সোনার বাংলাদেশ বন্ধ করে দেয়।

বিডি-টুডে ব্লগটিও বারবার বন্ধ হয়েছে। ইসলামী টিভি, দিগন্ত টিভি ও চ্যানেল ওয়ান বন্ধ হয়েছে; পত্রিকা বন্ধ হয়েছে! ইউটিউব বন্ধ করা হল, ফেসবুক নিয়ন্ত্রণ করা হল! তারপরও তথ্য প্রবাহ কে তারা ভয় করতে থাকল, শেষ মেষ তথ্য অধিকার আইন করেই সেটা সমাধানের রাস্তা খুঁজল।

যাক, লিখছিলাম আবু জরির কে নিয়ে। ইতিমধ্যে ব্লগে বার্তা পাঠানো সুবিধার কল্যাণে, অনেক নামকরা ব্লগারের ই-মেইল, ফোন নম্বর ও ঠিকানা সংগ্রহ করতে পারি এবং আবু জারীরের সাথে কথা বলতে সক্ষম হই। বহু দিনের আশা ছিল, মজার মানুষটার সাথে একত্রে বসে কিছুক্ষণ খোশ গল্প করতে পারলে মন্দ হত না। যেই ভাবা সেই কাজ। ফোন করে জানিয়ে দিলাম রোজার আগেই সস্ত্রীক নিজেরা গাড়ি চালিয়ে ওমরা করতে আসব। দাম্মাম, রিয়াদ, মক্কা, মদিনা ও জেদ্দায় যে সব ব্লগার থাকেন তাদের সাথে চলার পথে যোগাযোগ করে আসব। কম বেশী সবার ফোন নম্বর যোগাড় করা হল।

আমরা দুই বন্ধু সস্ত্রীক ও তিন সন্তান নিয়ে সুন্দর সকালে ওমরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। এভাবে আগেও গিয়েছি। এই ভাবে এই পথে ওমরায় যাওয়ার কষ্ট, বাংলাদেশ ও ইউরোপ থেকে ওমরায় যাবার চেয়েও বহুগুনে বেশী কঠিন। বসতে বসতে পা দুটো ফুলে যায়, মক্কায় গিয়ে হাটা হাটি কষ্টকর হয়ে যায়। নাওয়া, খাওয়া, নিদ্রা, বিশ্রামের ব্যাপক ঘাটতি হয়। আমাদের ইচ্ছা ছিল, কোন পূর্ব ঘোষণা না দিয়েই ওমরার যাত্রা শুরু কবর কিন্তু শেষ মুহূর্তে আরো দুইটি পরিবার আমাদের সাথে যোগ হয়ে পড়ল। দুই হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিলেই মক্কা। দীর্ঘ পথে একাকী গাড়ি চালিয়ে যাওয়াটা একটু বেশী মাত্রায় ঝুঁকি থাকে। দামী গাড়ী ও মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে একাকী এই রাস্তায় কোন চোর, ডাকাত, সন্ত্রাসীর ভয় নেই। ভয় হল শারীরিক ত্রুটি কিংবা গাড়ীর যান্ত্রিক সমস্যা নিয়ে। অধিকন্তু চালকের চোখে যদি কয়েক সেকেন্ডর জন্য তন্দ্রা আসে, তাহলে মুহূর্তেই সকলের মৃত্যু শতভাগ নিশ্চিত।

আমাদের গৃহীনিরাও ভাল গাড়ি চালক; সে হিসেবে এক গাড়ীতে সর্বমোট চার জন গাড়ীর ড্রাইভার বর্তমান। ল্যাক্সাস নতুন মডেলের বিরাট গাড়ীটিও দারুণ। একশত আশি মাইল স্পীড উঠলেও ভেতর থেকে কাঁপুনি বুঝা যায় না। আবুধাবি শহর থেকে সৌদি-আমিরাত বর্ডার এর দূরত্ব চারশত কিলোমিটার। ভিসা সংক্রান্ত বিষয়াদি শেষ করতে এখানে যথেষ্ট সময় লাগে। সীমান্তেই বুঝতে পারলাম ওপারের আবহাওয়া সন্তোষজনক নয়। পুরো আবহাওয়া বালুময়। বর্ডারের একটি মসজিদে নামাজ পড়ে বের হয়ে দেখি, ম্যাডাম খুব চিন্তিত! ধুলোবালিতে তাঁর বাতিক আছে, বাতাসের সাথে বালি ঢুকে মসজিদের অবস্থা বেসামাল, সেখানে নামাজে সিজদা দিতে গিয়ে বালির সংস্পর্শে আসে আর সাথে সাথেই এলার্জি শুরু হয়।

বর্ডার থেকে রিয়াদের দূরত্ব এক সড়ক ধরে গেলে ৮০০ কিলোমিটার, অন্য পথে গেলে ৫০০ কিলোমিটার। আমরা ৫০০ কিলোমিটারের রাস্তাটি বাছাই করেছি! এই রাস্তায় হোটেল, রেস্তোরা কিংবা সরাইখানা তেমন একটা নাই। তাই যাত্রীরা এই রাস্তায় যায় না। বেশীর ভাগই ট্রাক ও লরি চলে। রাস্তাটি বাছাইয়ের কারণ হল, এই রাস্তা দিয়ে রিয়াদে ঢুকার মুখে আবু জারীরের সাথে দেখা হবে। ফোনে কথাটি আবু জারীর ও লোকমান বিন নূর হাশেম ভাইকে যথারীতি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যাতে করে তাঁরা দুজন হাতে বেশ লম্বা সময় পায়। আবহাওয়া ও রাস্তার দূরত্ব অনুযায়ী ধারনা করলাম সন্ধ্যার বহু পূর্বেই বিয়াদে পৌঁছে যাব।

১৫০ কিলোমিটার যাবার পর দেখা গেল বাম পাশের আকাশ জুড়ে ধূলি ঝড় ধেয়ে আসছে। ওদিকে ম্যাডামের এলার্জি ট্যাবলেট খাওয়ার পরও কোন ভাল ফল পাওয়া যাচ্ছিল না। তার উপর নতুন করে ধূলি ঝড় ধেয়ে আসছে দেখে চিন্তিত হলাম। ডানে-বামে, সামনে-পিছনে ১৫০ কিলোমিটারের মাঝে কোন বসতি নাই। বিরান মরুভূমি ছাড়া আর কিছুই নজরে আসেনা। মরুভূমির দেশে দীর্ঘ বছর থাকার অভিজ্ঞতা থাকলেও, আজকের আবহাওয়ার চরিত্রটা কিছুটা ভীতিকর বলে মনে হল। মুসাফির হিসেবে জোহর ও আছরের নামাজ এক সাথে পড়া হয়েছিল কিন্তু বেলা তিনটার দিকেই মরুভূমি জুড়ে যেন সন্ধ্যার অন্ধকার ধেয়ে আসছে। ঘটনাচক্রে এই এলাকার আকাশ পরিষ্কার ও আবহাওয়া ধূলি-মুক্ত হওয়ায়, দূর দিগন্তের আকাশ পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে। মেঘের নিচ থেকে ভূমি পর্যন্ত লালাভ বালির এক রাজ্য এবং উপরে বিশাল মহাকাশ জুড়ে কালো মেঘের মোটা চাদর। এই বিশাল মেঘের আকাশ যেদিকে ছুটে চলছে আমাদের গন্তব্যও কিন্তু সেদিকে!

কয়েক কিলোমিটার পরেই রাস্তায় পুলিশের সতর্কতা ব্যারিকেড নজরে আসল। ক্ষণস্থায়ী ব্যারিকেড বসানো হয়েছে এবং পুলিশ সকল গাড়িকে থামার নির্দেশ দিচ্ছে। পুলিশ আমাদের গন্তব্য জানার পর জানাল, নিজ দায়িত্বে সর্বোচ্চ সতর্কতার সহিত যেন পথ চলি। আবহাওয়া মোটেও সন্তোষজনক নয়। ততক্ষণে মেঘ ও কালো মেঘের রাজ্য আমাদের সামনের বিশাল অঞ্চল ঘিরে ফেলেছে। সামনে, ডানে এবং বামের পুরো আকাশ তখন ঘেরাও। আমরা সে অঞ্চল থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছি এবং মেঘের ঘেরাও রত সে অঞ্চলে ঢুকতে যাচ্ছি। এখনও আমাদের আকাশ পরিষ্কার তবে গুমোট বাধা! কোন বাতাস নাই, কোন স্পন্দন নাই, সুমসাম স্থবিরতা বিরাজ করছে! প্রতিটি গাড়ি ডবল ইনডিকেটর জ্বালিয়ে পথ চলছে, কেউ জানছে না কি হতে পারে।

তখনই শুরু হল দিগন্ত-জোড়া বজ্রপাত! মনে হয় বজ্রপাতের শুরু একশত কিলোমিটার বামে আর তা গিয়ে শেষ হচ্ছে দুইশত কিলোমিটার ডানের আকাশে। এক একটির আওয়াজ ভয়ঙ্কর থেকে ভয়াল প্রকৃতির। নীল, লাল, কাল, কমলা রঙ্গয়ের বিশাল আকাশ জুড়ে অদ্ভুত সব বজ্রপাত মিনিটে মিনিটে আছড়ে পড়ছে মাটিতে। পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি এসব বজ্রপাত সামনের অঞ্চলে আঘাত হানছে কিন্তু মনে হচ্ছে বিকট শব্দ গুলো যেন আমাদের কানের উপর ফাটছে। কোনটার আওয়াজ এতই প্রকট যে, চলন্ত গাড়ি পর্যন্ত থরথর করে কাঁপতে থাকে। আমাদের দেশেও বজ্রপাত হতে দেখেছি, তবে আমাদের দেশে আরব দেশের মরুভূমির মত বিশাল খোলা জায়গা পাওয়া যায় না। তাই এই ধরনের অনুভূতি ও উপলব্ধি আমার জন্য নতুন মাত্র যোগ করল।

পিছনের গাড়ি থেকে ফোন করে জানাল, এই বিকট আওয়াজে একজনের প্রচণ্ড মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে, আরের জনের বমি ভাবের উদ্রেক হয়েছে। খানিক পরেই আমরা বাতাসে উড়ন্ত বালির রাজ্যে ঢুকে পড়লাম। দশ হাত দূরের গাড়িটি দেখা যাচ্ছেনা, এই পরিস্থিতিতে ভয়ানক বিপদ অবধারিত। সকলেই গাড়ির গতি কমিয়ে গাড়িকে সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রণে চালাচ্ছে। আরো সামনে এগুতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির ফোটার মুখোমুখি হলাম! এগুলো তো বৃষ্টির ফোটা নয়, যেন বালির গোল্লা বৃষ্টি! আকাশ থেকে পানির ফোটা পড়ার সময়, সেই ফোটা আকাশে আশে পাশে যত বালি পেয়েছে সেগুলো সমেত, প্রায় ৫০ গ্রাম বালি নিয়ে ধপাস করে মাটিতে আছড়ে পড়ছে। এই ধরনের একটি ভেজা বালির ফোটার পতনে গাড়ির সামনের পুরো আয়নাটি তছ-নচ হয়ে যাচ্ছিল। পিছনের গাড়ির একজন নিজেদের মালামাল নিয়েছিল গাড়ির খোলা হ্যাঙ্গারে। তিনি পলিথিন দিয় সেগুলো ঢাকতে গিয়ে পুরো শরীর লাল-হলুদাভ করে ফেললেন। আমি সাহায্যের জন্য দৌড়ে গেলে, একটি বড় আকৃতির ফোঁটা একেবারে মাথার তালু বরাবর পতন! সেই ফোটায় যত বালি ছিল, সবই মাথার খোলা চুলে লুকিয়ে গেল! আরেকটি পিছনে কাঁধের উপর টি শার্টের কলারের উপর আছড়ে পড়ে পুরো পিটের উপর একাকার। বাকি তিনটি পোশাক বরাবর! বৃষ্টির পাঁচটি ফোটাতেই আমি কাবু হয়ে গেলাম! পুরো শরীরে মাথায় ভেজা বালির আস্তরণ। এভাবে যারাই গাড়ি থেকে বের হল, তারা আপাত মৃদু ও প্রচুর বালি কুন্ডলীর গোলাকার আঘাতে হেস্ত নেস্ত হয়ে গেল। কাউকে আর চেনা যাচ্ছিল না। ওদিকে প্রতিটি গাড়িতেই, এলার্জির প্রকোপ দেখা দিল। ভেতরে এক ধরনের অস্বস্তিকর ভ্যাপসা গরম দেখা দিল।

এবার শুরু হল, শিলা বৃষ্টি! ততোধিক হুলুস্থুল করে গাড়িতে চড়ে বসলাম। ভাগ্যিস পথে দেরী হওয়াতে, শিলা বৃষ্টির এই বৃত্তেও ঢুকেছিলাম দেরী করে, পনের মিনিট আগে এই এলাকাতে বড় বড় শিল পড়েছিল। আশে পাশের গাড়ির দশা দেখে অনুমান করা যায়, আধা ঘণ্টা আগে এখানে কি ঘটেছিল। আবু জারীর সাহেবের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিলাম। গাড়ীর গতি বরাবর কম হবার কারণে রিয়াদে পৌছার সময়ও পিছিয়ে যাচ্ছিল। তাঁকে অনুরোধ করলাম, এই যাত্রায় না হয়, দেখা নাই হল, পরবর্তী বারে দেখব। তিনি নিশ্চয়তা দিলেন রিয়াদের আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হলেও, আমাদের জায়গার মত খারাপ নয়। সুতরাং সকল প্রকার প্রয়োজনীয় সহযোগিতা তিনি দিতে পারবেন। ইতিমধ্যে নামকরা ব্লগার লোকমান বিন নূর হাশেমও আমাদের সাথে যোগাযোগ করেছেন। তিনিও জানালেন আমাদের সাথে তারও দেখা হবে।

আমরা চারটি পরিবার তিনটি গাড়িতে করে দীর্ঘপথের ভ্রমণে আছি। যাত্রাপথের এই ধরনের বিদঘুটে পরিস্থিতির কারণে, সকলেই কম বেশী অসুবিধার মাঝে আছি। এক জনের ভয়ঙ্কর মাথা ব্যথা শুরু হয়েছে আর তিনি নিজেই গাড়ী ড্রাইভ করছেন। আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম রিয়াদের কোন একটি হোটেলে গিয়ে উঠবো। আমাদের সকলেরই কম বেশী পরিচিত আপন জন রিয়াদে থাকলেও, খবরটি কাউকে জানানো হয়নি। দুই জন সম্মানিত ব্লগারকে জানানো হয়েছে, যারা আমাদের হোটেল সহ যাবতীয় সবকিছুর সন্ধান দিতে পারবে। সাথে কিছুক্ষণ সময় কাটানো যাবে।

আল খারজ্ নামক শহরে পৌছতেই সন্ধ্যা নেমে আসল। তার আগেই ছিল এশিয়ার বিখ্যাত গবাদি পশুর খামার 'আল মারাই'। পুরো মধ্য প্রাচ্যের বাজারে এই খামারের আধিপত্য রয়েছে। খামারের মাঝ খান দিয়ে ১২০ মাইল গতিতে গাড়ি চালালে আধা ঘণ্টায়ও পাড়ি দেওয়া সম্ভব হয়না। আমার ইচ্ছা ছিল ব্লগে দেবার জন্য এই খামার থেকে তথ্য ও ছবি সংগ্রহ করব। যাবতীয় কিছু প্রস্তুত ছিল কিন্তু বিরূপ আবহাওয়া আমাকে দমিয়ে ফেলল। আকাশের অবস্থা খুবই ভয়ানক, রাস্তায় পুলিশ আমাদের আবারো সতর্ক করল, সতর্কতার সহিত যাত্রা পথ পাড়ি দিতে।

রিয়াদের দূরত্ব তখনও দেড়শত কিলোমিটার। মেঘের থমথমে অবস্থার সুযোগ নিয়ে, মাগরিব ও এশার নামাজ পড়া হল এবং একই সুযোগে গাড়ির পেট্রল ট্যাংক গুলো পরিপূর্ণ করা হল। মহিলা যাত্রীদের গাড়ীতে বসিয়ে খুঁজতে বের হলাম একটু চায়ের ব্যবস্থা করা যায় কিনা! তখনই রাজ্যের অন্ধকার গভীর হয়ে, হঠাৎ করে প্রচণ্ড ঝড়ো বৃষ্টি শুরু হল। অন্ধকারে বুঝতে পারলাম না, কেন জানি কাপড় শরীরের সাথে লেপটে যাচ্ছিল। বৃষ্টি বাদলের দেশের মানুষ আমরা তাই বৃষ্টিতে ভেজার অভিজ্ঞতা কম বেশী সবার আছে। তবুও আজকের এই বৃষ্টিটায় কেমন জানি অনুভূতি, যা ইতিপূর্বে কোনদিন অনুভব করিনি। তখনও গাড়ি পেট্রোল স্টেশনে, দৌড়ে গাড়ির সিটে যখন বসলাম, আমাকে দেখে সবার সেকি হাঁসি। যেন হিন্দুদের হোলি খেলায় আক্রান্ত মানুষের মত। বুঝতেই পারলাম না, এত কাদা কে আমাকে এভাবে মেরে দিল!

গাড়ির সবাই হাসাহাসিতে মত্ত, ইতিমধ্যে পেট্রোল স্টেশন থেকে গাড়ি রাস্তায় বের হল। আর তখনই সবার হাসাহাসি ভয়ে রূপ নিল। এটা তো বৃষ্টি নয়, যেন অবিরাম কাদা বর্ষন। আমি বহু সাহিত্য পড়েছি কোথাও এভাবে কাদা বৃষ্টির কথা শুনিনি। গাড়ির ওয়াইফর গুলো ড্রাইভারের সামনের কাঁচ থেকে বৃষ্টির পানি সরানোর জন্য লাগানো থাকে। সেই ওয়াইফর গুলো আজ কাদা সরানোতে ব্যস্ত। গাড়ী থামানো যাচ্ছেনা, পিছনেও যাওয়া যাবেনা। থামলেই পিছনের ধাবমান গাড়ী মেরে দিবে। তাছাড়া রাস্তার পাশে কি আছে তা অনুধাবন করাও যাচ্ছেনা। প্রথমত রাতের শুরু, দ্বিতীয়ত কালো মেঘের আবরণে আকাশ আরো কালে, কাদার আস্তরণে গাড়ীর হেড লাই আচ্ছাদিত। তারপরও দেখতে পাচ্ছি রাস্তার পাশে গাড়ী দাঁড়াতে চেষ্টা করছে এবং চোখের সামনে দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে। আমিরাতের একজন ব্যবসায়ী যে ব্রান্ডের গাড়ি চালায়, সৌদি আরবের অনেক বড় চাকুরীজীবী, ব্যবসায়ীরা সেটা কিনতে পারেনা। আমাদের তিনটি গাড়িতে কুয়াসার জন্য লাগানো বাতি গুলো গাড়ির ফ্রেমের একটু ভিতরে লাগানো থাকায়,সেগুলো এখনও কাদায় আচ্ছাদিত হয়নি। সেগুলোর উপর ভরসা করে বিপদ সংকুল রাস্তা পারি দিতে হচ্ছে।

আবু জারীরের সাথে ফোনে আলাপ হল, রাস্তার এই দুরবস্থার কথা তাঁকে যথারীতি জানানো হচ্ছিল। তাকে জানালাম, এই দুর্যোগ পূর্ণ আবহাওয়াতে, তাঁকে পথিমধ্যে কষ্ট দিতে আমার অ-স্বস্থি ও শরম লাগছে। যাত্রীদের জন্য টয়লেট, হাত-মুখ ধোওয়া, ফ্রেশ বাতাসে একটু দাঁড়ানো, ঔষধ খাওয়ার জন্য একটু বিশ্রামের দরকার। এতগুলো যাত্রী নিয়ে এই দুর্যোগে আপনার মেহমান হতে লজ্জা লাগছে। তিনি জানালেন ইতিমধ্যে বৃষ্টি শুর হয়েছে, অব্যাহত ভারী বর্ষনে অনেক রাস্তা ডুবে গেছে। যোগাযোগ ব্যবস্থায় গোলযোগ চলছে। সুতরাং আমরা যদি এই মুহূর্তে কোথাও হারিয়ে যাই, সঠিক রাস্তা সন্ধান করা কষ্টকর হবে। তিনি আরো জানালেন, আমরা যে রাস্তা দিয়ে রিয়াদে ঢুকছি, সেই রাস্তায় তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। ফলে তিনিই আমাদের একটি ভাল গন্তব্যে পৌছিয়ে দিবেন। আমার শরীর ও পোশাকের দুরবস্থার কথা তাঁকে না জানিয়ে বললাম, ঠিক আছে যেভাবেই হোক আপনাদের সাথে দেখা করবই। আমাদের যাত্রা পথের এই অবস্থায় তাঁর মেহমান না হতে, আমার শত সমস্যা ও অনুনয়ের পরও তার আন্তরিকতা জিতে থাকল। ফোনালাপের প্রতিটি বাক্যেই তাঁর ও লোকমান ভাইয়ের আন্তরিকতার কোন ঘাটতি দেখছিলাম না। তিনি আগেই নিশ্চিত করেছেন যে, আমারদের জন্য নাস্তা-পানি, খাদ্য সহ যাবতীয় ব্যবস্থা করা আছে; অধিকন্তু আজকের দিনের শুরুতে আবু জারীর সাহেব আমাদের যাত্রায় কতজন মানুষ ও তাদের বয়স ইত্যাদি বুদ্ধিমত্তার সহিত জেনে নিয়েছিলেন।

আবু জারীরের সাথে ফোনে যোগাযোগ করে রিয়াদের এক জায়গায় দাঁড়ালাম, আবু জারীর আমাদের থামার জায়গাটি চিনেছেন এবং আমাদের সেখানে থেমে থাকতে বললেন। তিনি আসছেন এবং আমাদের সবাইকে লোকমান ভাই রিয়াদের যে শপিং মলে অবস্থান করছেন সেখানে নিয়ে যাবেন। রিয়াদের রাস্তায় কাদা বৃষ্টির ধকল কিছুটা কম! তাতে কি! রাস্তা তো কাদায় কর্দমাক্ত! গাড়ির টায়ারের ঘর্ষণে সেই কাদা অন্য গাড়িকে ছিটিয়ে আরো কর্দমাক্ত করছিল। সেসব গাড়ির কাদাক্রমনের মাঝেই আমি আবু জারীরের গাড়ির জন্য দাড়িয়ে আছি। আবারো বৃষ্টি শুরু হল, রিয়াদের বৃষ্টিতে কাদার পরিমাণ কম বলে মনে হল! জারীর ভাই বললেন, তাঁর গাড়ির ওয়াইফর কাজ করছে না। আরো বহু গাড়ীর ওয়াইফর কাজ করছেনা রাস্তার পাশে দাড়িয়েই তা দেখছিলাম। এই কাদা বৃষ্টিতে ওয়াইফর ছাড়া গাড়ি চালানো ভয়ের। সতর্কতার সহিত আস্তে করে চালাতে হল ফলে তিনি আমাদের নিকট পৌছতে প্রয়োজনীয় সময়ের তিনগুণ বেশী সময় নিলেন। যাত্রীদের একজন বলছিল তার অবস্থা খুবই খারাপ, তিনি এখনই হুঁশ হারাবেন। আমার কথা নাই বললাম, কেউ স্বস্থিতে নাই।

অতঃপর আবু জারীর আসলেন! তিনিও জবুথুবু হয়ে গাড়ী থেকে নামলেন! আমরা দুজন কাদা মাখা বৃষ্টিতে একে অপরকে জড়িয়ে ধরলাম! বৃষ্টি নিজের গতি বাড়িয়ে আমাদের আলিঙ্গন বন্ধ করতে ধমক দিলেন, এই ফাঁকে আমার ছেলেটিও নেমে এসে আবু জারীরকে জড়িয়ে ধরলেন। আমার স্ত্রী-পুত্রের কাছে আবু জারীর লেখক হিসেবে আগে থেকেই পরিচিত ছিলেন। তিনি বললেন, তাঁর গাড়ীকে যেন অনুসরণ কর সামনের পথ চলি।

আমাদের তিনটি গাড়ি তাকে অনুসরণ করতে থাকল। কাদার অত্যাচারে কারো গাড়ির নম্বর প্লেট পরিষ্কার চেনা যাচ্ছিল না, গাড়ীর রং বুঝাও কষ্টকর হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল রাস্তার সকল গাড়ী বুঝি একই ধরনের! এত কষ্টের মাঝেও আমরা আবু জারীরের গাড়ি অনুসরণ করে ছুটছিলাম। গাড়ির গতি নাই, তবে গাড়ীর ভিতরে স্বস্থি আছে কেননা একটু পরেই আমরা একটু ফ্রেশ বাতাস ও হাত মুখ ধুবার সুযোগ পাব। সময়ে সময়ে আবু জারীর জিজ্ঞাসা করে জানতে রইলেন, আমরা ঠিক মত অনুসরণ করছি কি না? আমাদের গাড়ীর কুয়াশার লাইট ও গ্লাস ওয়াইফর সহ গাড়ীর যাবতীয় কাজ করে লম্বা ভ্রমণের উপযোগী করে বের হবার কারণে এসব যথেষ্ট কাজ দিচ্ছিল। আমরা ততক্ষণে শহরের ভিতরে ঢুকে পড়েছি, এক পর্যায়ে তিনি আমাদের থামতে বললেন। আমরা থামলাম এবং যখন সামনে থামানো গাড়ি তল্লাশি করলাম তখন সেই গাড়ীতে আবু জারীর সাহেবকে না পেয়ে এক স্থানীয় আরবিকে উপস্থিত পেলাম!

আবু জারীরকে ফোন করে আমাদের অবস্থানের কথা জানালাম। তিনি আশ্চর্য হয়ে বললেন আমরা তাঁকে যথাযথ অনুসরণ করতে পারি নাই বরং তাঁকে পিছনে ফেলে আমরা প্রায় দশ কিলোমিটার সামনে চলে গিয়েছি! সেখান থেকে ইউ টার্ন নিয়ে পুনরায় আগের জায়গায় আসতে গেলে আরো বহু কিলোমিটার সামনে যেতে হবে! মহিলাদের ধৈর্য ও সহ্য শক্তি কম। তারা আবারো হা হুতাশ শুরু করল। আমি সবার প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হতে থাকলাম। তাদের বুঝালাম এই জায়গা তো সবার জন্যই নতুন, তাছাড়া আমি তো আপনাদের ভালর জন্যই চেষ্টা করছি। আমি কি করব বুঝতে পারছিলাম না, রাত গভীরতর হচ্ছিল এবং রিয়াদের মত ব্যস্ত শহরে কবরের মত সুমসাম নীরবতা নেমে আসতে রইল। উপস্থিত একজন থেকে একটি হোটেলের ঠিকানা চেয়ে নিয়ে সেদিকে গাড়ী ছুটালাম। হোটেলের কাছাকাছি গিয়ে দেখলাম, হোটেলের চারিদিকে পানির বন্যা চলছে। রাস্তার পানি গাড়ীর ইঞ্জিনে ঢুকে বহু গাড়ী বন্ধ হয়ে রাস্তায় জ্যাম সৃষ্টি করেছে।

মহিলাদের রাস্তা পার করাতে নৌকার প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশের শহর গুলো প্লাবিত হতে দেখেছি। তবে এই ধরনের পরিস্থিতি আরব দেশে প্রথম দেখলাম। সামনে-পিছনে যাবার উপায় নেই। ডানে-বামের গলিতে ঢুকে আরো কষ্টকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে সাহস হলনা। উপায় না দেখে আমাদের একজন রিয়াদের ব্যবসায়ী জানে আলমকে খবর দিলেন; যাতে করে তিনি আমাদের একটি হোটেলে পৌঁছে দেন। হোটেলের নাম শুনে তিনি আমাদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে যান। বললেন তিনি না আসা পর্যন্ত, কোন অবস্থাতেই যেন আমরা স্থান পরিবর্তন না করি। তিনিও বিভিন্ন রাস্তায় পানি ও জান জটের মোকাবেলা করে শহরের অলি গলি ঘুরে দীর্ঘক্ষণ পরে আমাদের নিকট হাজির হলেন। তখন বৃষ্টি একেবারেই থেকে গেছে। আমরা একটি হোটেলের আশায় তাঁর পিছু নিলাম। তিনি অনেক রাস্তা ঘুরিয়ে, একটি ভবনের সামনে আমাদের নিয়ে হাজির হলেন। সেখানেও তিনদিকে পানি, তিনি হোটেলের কথা বলে ভবনের দুই তলায় আমাদের সবাইকে নিয়ে তুললেন এবং বললেন এটা তার বাসা। ইতিমধ্যে তাঁর স্ত্রী আমাদের সবার জন্য সব বন্দোবস্ত করে ফেলেছেন। ততক্ষণে তার দুই আত্মীয় হোটেল থেকে গরম গরম খাবার নিয়ে দরজায় হাজির হলেন। তাঁর বিরাট ফ্লাট, এতজন মানুষ সেখানে অবস্থান করাটা কষ্টকর হয়নি।

আমরা পড়েছিলাম মুসিবতে, যাদের সাহায্যের আশায় পুরো দিন ব্যস্ত সময় কাটালাম, তাদের পরিপূর্ণ আন্তরিকতা থাকা স্বত্বেও কারো সাহায্য সহযোগিতা নিতে পারিনি। আর এমন এক ব্যক্তির সাহায্য নিলাম, যার আচরণ জোঁকের মত বলে, তাঁকে এড়িয়ে রিয়াদ পাড়ি দিতে চেয়েছিল, তারই আপন খালাত ভাই, আমাদের গাড়ী বহরের এক জন। ওমরা থেকে ফেরত হবার কালেও তিনি আমাদেরকে রিয়াদে আটক করেছিলেন, এই বলে যে, যাবার সময় তিনি যথাযথ মেহমান দারী করতে পারেন নাই।

ওমরায় অবস্থান কালে সর্বদা আবু জারীর, লোকমান ভাই সহ সবার সাথে ফোনে যোগাযোগ রেখেছিলাম। আবু জারীর ভাই ফোনে বলেছিলেন, বিব্রতকর এই ঘটনাটি যাতে কাউকে না বলি। আমিও এতদিন কাউকে বলি নাই। পরে চিন্তা করলাম, এটাতে বলা না বলার কি আছে। এই ঘটনাটি কারো ইচ্ছায় সংঘটিত হয়নি। তিন মাস ধরে মন ও ইচ্ছার অদম্য আগ্রহকে পূঁজি করে যে যাত্রা শুরু করা হয়েছিল। যাদের সাথে এক সাথে বসে একটু চা পানের ইচ্ছাকে জাগরুখ রাখা হয়েছিল। দু পক্ষের আন্তরিকতা, ইচ্ছা, সময় ব্যয়, খাদ্য প্রস্তুত সহ সকল কিছু প্রস্তুত থাকার পরও, শত ইচ্ছা ও প্রচেষ্টায় তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। আর রিজিক জুটেছিল এমন এক ব্যক্তির ঘরে, যাকে আমাদের ভ্রমণ সম্পর্কে না জানানোর ইচ্ছা সবারই ছিল। তবে আল্লাহর ইচ্ছা ছিল ভিন্ন তাই আমাদের কোন ইচ্ছাই বাস্তবায়ন হয়নি। যেহেতু কথা গুলো গোপন রাখতে পারিনি এবং সবার কাছে প্রকাশ করে দিয়েছি, সেজন্য বলতে বাধ্যই হলাম, আবু জরির সাহেব আমি দুঃখিত এবং আপনার আন্তরিকতায় কোন ঘাটতি ছিলনা।

বিষয়: বিবিধ

২১৪৮ বার পঠিত, ৪৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

259670
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১৭
আবু আশফাক লিখেছেন : দীর্ঘ সময় নিয়ে পড়লাম! মরু সাইমুমের দেশে মরু জাহাজ উট ছাড়াও যে মরু পারি দেয়ার আদি ও অকৃত্রিম স্বাদ আস্বাদন সম্ভব, সেটা জেনে ভালো লাগলো।
আবু জারীর ভাইয়ের শ্রম, আন্তরিকতার সাথে সাথে আপনাদের জন্য রান্না করা বা জোগার করা খাদ্যও যে আপনার অনুসরণ ভুলের কারণে সুবিচার পায়নি তার জন্য আমি আবু জারির ভাইয়ের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি!!
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:২৩
203457
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যের জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
259671
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১৭
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : আপনার লেখাটা পড়ে খুব ভালো লেগেছে।
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:২৪
203459
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অান্তরিক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
259672
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:১৮
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : একটি বড় আকৃতির ফোঁটা একেবারে মাথার তালু বরাবর পতন! সেই ফোটায় যত বালি ছিল, সবই মাথার খোলা চুলে লুকিয়ে গেল! আরেকটি পিছনে কাঁধের উপর টি শার্টের কলারের উপর আছড়ে পড়ে পুরো পিটের উপর একাকার। বাকি তিনটি পোশাক বরাবর!
দারুণ বর্ণনা! সব মিলিয়ে অসাধারণ হইছে! ২০১২ সালে আমিও ওমরাহ পালনের উদ্দেশ্য সৌদিয়াতে গমনকালে কিছু মজাদার অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলাম। কিন্তু ফেরার পথে জিদ্দা বিমানবন্দরে একটি তিক্ত অভিজ্ঞার শিকার হয়েছি যা সৌদিয়াতে অবস্থানরত কতক নিম্নরুচির বাংলাদেশী মানুষের আচারণে সহজ সরল মানুষদেরকে সাজানো নাটকে বিভ্রান্ত করে হাতের অর্থ খোয়াতে দেখেছি।
যাই হোক আপনার আজকের পোস্টটিও বরাবরে মত দারুণ হয়েছে, অত্যন্ত চমৎকার! এক নিমিশেই পড়ে ফেলেছি। যদিও বা পথিমধ্যে বিভিন্ন ধরনের গ্যাঞ্জামের শিকার হয়েছেন তার পরেও বলবো আপনার অসাধারণ রম্য স্টাইলে বর্ণনার মাঝে যেন নিজেও আপনাদের সফর সঙ্গী ছিলাম।
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:২৬
203462
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আমাদের মানুষদের শিষ্টাচার সুন্দর নয়, বলতে গেলে অনকাংশেই নিন্দনীয়। আমাদের ছোটকালে এসব দেখিনি, ইদানিং বেশী দেখা যায়। আমার মনে হয় সমাজিকতার বন্ধন ক্ষনভঙ্গুর, মুরুব্বীরা দায়িত্বপালনে অনাগ্রহ, শিক্ষার মাঝে ধর্মীয় শিক্ষার অনুপস্থিত সর্বোপরি রাজনীতিতে খুবই খারাপ মানুষদের পদাচারণার কারনে জাতির এই পরিনতি হয়েছে। অাপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
259676
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৪
আহমদ মুসা লিখেছেন : আপনার এই সফরটি কোন সালের ঘটনা এটি? গেল রমজানে আবু জারীর ভাই তার শাশুর ইন্তেকালের বিষয়ে একটি ব্লগ পোস্ট করেছিলেন। সেই ব্লগটি পড়ে ধারণা করেছিলাম তিনি তখন দেশে অবস্থান করছিলেন।
আপনার লেখাটি এক নিমিষেই পড়েছি খুব আগ্রসহকারে। পড়ে খুব ভাল লাগলো। আশা করছি যাত্রা পথের বিভিন্ন নাটকীয় কাহিনীর পাশাপাশি ওমরাহ সংক্রান্ত বিষয়েও ভবিষ্যতে কোন পোস্টে আলোচনা করবেন। আমি ওমরাহ করার সময় সৌদিয়াতে অবস্থানরত বিশেষ করে মক্কায় অবস্থানকালে বাংলাদেশী ক্লিনারদের অবস্থা এবং তাদের আচরণের কারণে গোটা পৃথিবীর মানুষের কাছে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি কি পরিমান প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে তা নিয়ে দেশের নীতি নির্ধারকরা মোটেও চিন্তিত নন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে সৌদিয়াতে মুসলমানরা যায় ওমরাহ এবং হজ্ব করার জন্য। মদিনাতেও যায় রাসুলে আকরাম (সা) এর রওজা মোবারক জেয়ারতের উদ্দেশ্য। কিন্তু ওখানে বাংলাদেশী নিম্ন আয়ের কিছু ক্লিনার/সেবক নিয়োগ দিয়ে তাদেরকে দুনিয়ার মানুষের কাছে ভিক্ষুক হিসেবে জাহির করার পাশাপাশি দেশের যে কত দুর্নাম হচ্ছে সে খবর নেই। এখানে একটি বিষয় বিস্তারিত বলা দরকার। তা হলো অতি সামন্য ২০০-৩০০ সৌদি রিয়ালের মায়নাতে যেসব শ্রমিক ক্লিনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছে তাদের পক্ষে বিদেশী হজ্ব গমনেচ্ছুদের কাছে ভিক্ষা করা অত্যন্ত স্বাভাবিক। বিষয়টার ব্যাখ্যা অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে আলাদা ব্লগ পোস্ট করলেই মনে হয় ভাল হবে।
যাই হোক আপনার লেখাটি পড়ে অত্যন্ত ভাল লেগেছে।
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫০
203469
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : এটি পাঁচ মাস আগের অর্থাৎ এপ্রিল ২০১৪ সালের প্রথম সপ্তাহের ঘটনা। হজ্জ নিয়ে চার পর্বের একটি রচনা সোনার বাংলাদেশ ম্যাগাজিনে দিয়েছিলাম। এই পথে আমার বিচিত্র ধরনের ঘটনা রয়েছে। লিখতে যেয়েও লিখিনি পাছে যদি কেউ বলে বসে, হজ্জ ও ওমরার প্রচার করছি।

আমি হজ্জ করেছি, আমার নিকটাত্মীয় অনেকেই জানেনা। কেননা হজ্জটা তো আমার জন্যই করা হয়েছিল প্রচারের জন্য নয়। ইনশায়াল্লাহ সামনে কুরবানীর পর, স্ব-পরিবারে আবারো যাবার আগ্রহ আছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৩০ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১০
203480
আবু নাইম লিখেছেন : আপনার হজ্জের অভিজ্ঞতা লিখে শেয়ার করলে অনেকেই আগ্রহী হবেন হজ্জ করার জন্য. আবার আপনার হ্জ্জ সংক্রান্ত টুকি টাকি খেকে অনেকেই অনেক কিছু জানতে পরবেন. বাজারে হজ্জ সংক্রান্ত অনেক বই পাওয়া সেগুলোও পড়া যায় কিন্ত বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন একজনের লেখা থেকে পড়লে সেটা মনে থাকে এবং ভ্রমন কাহিনীর মত অন্তরে গেথে থাকে. তা কেন আপনি তৃষ্ঞার্তদের বঞ্চিত করবেন.
৩০ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৫
203484
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ইনশায়াল্লাহ এই হজ্জের মাসেই সেই পুরানা সংখ্যাটি প্রকাশ করব। তবে সেটাও রম্য স্টাইলে লিখিত। অনেক ধন্যবাদ।
259685
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫২
আবু নাইম লিখেছেন : ভালো লাগলো
৩০ আগস্ট ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৯
203472
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
259696
৩০ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩২
বাজলবী লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
৩০ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৩
203486
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
259698
৩০ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০২
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : সুবহানাল্লা! আপনাদের সাহসের তারিফ করতে হয়।গাড়িতে এতবড় লং জানিংএর কথা শুনলেই আমার ঘা শিউরে ওটে।
আবুজারির ভাই মনে হয় আমার মত লাজুক,
তাই লিখতে মানা করেছেন।আর যদি আপনি না লিখতেন তা হলে আমরা অসাধারণ বর্ণনার ওমরা সফর পোস্টটি পড়তে পারতাম না।
যা হয়েছে সব আল্লাহর ইচ্ছাতেই হয়েছে এতে আপনাদের কারোই হাত নেই।
পোস্টর প্রথম দিকে আপনি লিখেছেন "২০০৪ সালে চার দলীয় জোট সরকারের পতনের....." মনে হয় ছয়সালে জোট সরকার ক্ষমতা ছেড়েছিল।

আবুজারির, লোকমানভাই, সফর সংগি সবার জন্য আন্তরিক দোয়া করছি আল্লাহর দরবারে।
যাজাকাল্লাহ খায়ের




৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:১২
203724
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার আন্তরিক মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আপনার নোটটি সঠিক, ২০০৪ সাল না হয়ে তা হবে ২০০৬ সাল, আমি সেটা ঠিক করে দিব। ভাল থাকুন।
259721
৩০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:২৬
শেখের পোলা লিখেছেন : পড়লাম, শিহরণ, ভয়, আনন্দ, দুঃশ্চিন্তা ভাললাগা একাকার হয়ে গেল৷ সুবহানাল্লাহ৷
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:১২
203725
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আল্লাহ আপনাকে রহম করুন, ভাল থাকুন।
259742
৩০ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৯:২৪
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : এক টানেইু পড়ে নিলাম। এমন মরু সাইমুমের শিকার আমরাও হয়েছিলাম সপরিবারে। ধুলো ঝড়ের মধ্যে পথ হারিয়ে ফেলা, আমার স্ত্রীর ভয় সব মিলিয়ে এক ভয়ঙ্কর সময় পার করতে হয়েছিল সেদিন।
তখন অবশ্য ব্লগ চালু হয়নি এবং ফলে কোন ব্লগার বন্ধুর সাথে সাক্ষাতের সুযোগও হয়নি।
৩০ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:০৬
203534
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : কিন্তু অভিজ্ঞতাটা তো এখন লিখতে পারেন!
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:১৩
203726
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ, রিদওয়ান কবির লিখেছেন, আপনার সে অভিজ্ঞতা যাতে সবাই জানতে পারে। আমারও সেটাই বলার ইচ্ছা। ভাল থাকুন।
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৬
204124
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : হ্যাঁ আঙ্কেল, আমিও চাই..... প্লীজ .... অভিজ্ঞতাটা আমাদের সাথে এখানে লিখে শেয়ার করুন...... Waiting Waiting না লিখলে, কেন্দে দেবো Crying Crying Crying Crying
১০
259759
৩০ আগস্ট ২০১৪ রাত ১০:১০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : এক্ই সঙ্গে ইতিহাস এবং ভ্রমন কাহিনি!!
এই কাদা বৃষ্টির কথা কিন্তু আর কোথাও পরিনি। জাপানের এক বড় ভাই নাকি আগ্নেয়গিরির ছাই মিশান বৃষ্টি দেখেছিলেন বলে বলেছিলেন একবার।এই অভিজ্ঞতা মনে হয় বেশি মানুষের হয়নি।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর এই অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।পরবর্তি পর্ব বেশি দেরি হবেনা আশাকরি।
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:২১
203727
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : এই ধরনের বিদঘুটে অভিজ্ঞতার কথা আমি কোথাও পড়িনি। মূলত মরু ঝড় সাইমুম শুননো মৌসুমে হয় আর বৃষ্টি হয় শীতকালে। এই যাত্রায় এক অঞ্চলে সাইমুম হচ্ছিল, সে অঞ্চলটি শতভাগ মরুভূমি। আর আল খারজ জায়গাটি গাছপালা সমেত সবুজ অঞ্চল আর সেখানেই বৃষ্টিপাত চলিছল। এই পর্যায়ে মরু ঝড় সাইমুমের গতি বালি সহ আল খারজ অঞ্চলের দিকে চলছিল। আল খারজ এলাকায় আগে থেকেই বৃষ্টির আবহাওয়া বিরাজ করছিল। ফলে উপর থেকে যখন বৃষ্টির ফোটা পড়তে থাকল তা নিচে ঘূনায়মান বালি রাশি ভেদ করে পড়তে রইল, ফলে শূন্যে উড়ন্ত বালি রাশি কাদায় পরিনত হয়ে মাটিতে আছড়ে পড়তে রইল। আমার বিচারে সেদিন এটাই ঘটেছিল। আমরা দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে এসব দেখেছি, যারা শহরে অবস্থান করছিল তারা সেসব বুঝতে পারেনি। অনেক ধন্যবাদ।
১১
259783
৩০ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:০৩
এনাম বিন আব্দুল হাই লিখেছেন : এত ভালো লাগলো যে শেষ করার পর আফসোস লাগছে যদি লিখাটা আরও বড় হতো! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:২৩
203729
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনি অবশ্যই একজন ভাল মানের পাঠক, মন দিয়ে পড়েন আর হৃদয় দিয়ে উপলব্দি করেন। যার কারনে লম্বা লিখাও সংক্ষিপ্ত মনে হয়েছে। লিখাটিকে ছোট করতে গিয়ে অনেক কাট সাট করে এই মাত্রায় এনে হাজির করেছি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১২
259866
৩১ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৩:১৫
সাদিয়া মুকিম লিখেছেন : রুদ্ধশ্বাসে পড়লাম লিখাটি! মরুময় অচেনা এলাকায় অনেক কষ্টের সফর করেছেন! শুভকামনা রইলো আপনাদের সবার জন্য! Good Luck
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:২৪
203731
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার জন্যও আন্তরিক শুভ কামনা রইল, ভাল থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।
১৩
259896
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৬:২৫
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : সবটুকু লিখাই পড়ে নিলাম, আপনার মাধ্যমে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই।
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:২৪
203732
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
১৪
259948
৩১ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:৪৭
মোস্তাফিজুর রহমান লিখেছেন : টিপু ভাই প্রথমে ভাবলাম এটা আপনার গল্প বা স্বপ্ন দেখা কিন্তু শেষ পর্যন্ত পড়ে ভুল ভাঙ্গল। যদি জানতাম আপনার সাথে সাক্ষাত করার চেষ্টা করতাম। আমিতো দাম্মামে থাকি! যাক আবু জারির আর লোকমান ভাই মা'শা আল্লাহ আমার জ্ঞানে দুজনই খুব ভাল মানুষ।
ইনশা আল্লাহ একদিন না একদিন আপনার সাথে দেখা হবে। সেই অপেক্ষায়..... ভাল থাকুন ভাই।
৩১ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:১৩
203745
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার কথা জানতাম, তবে ব্লগার হিসেবে আবু জারীর আর লোকমান ভাইকে চিনি বহু দিন ধরে, আর আমার যাবার রাস্তাটি ছিল তাঁদের পাশেই, তাই দেখা করার আগ্রহটা আমারই প্রবল ছিল। তাঁরা দুজন প্রস্তুতি নিয়ে সেই বিকাল থেকেই অপেক্ষায় ছিলেন। যাক, দেখা হলনা, যা বলার ছিলনা তা আবার লিখাও হল। অনেক ধন্যবাদ।
১৫
259963
৩১ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:২০
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : আবু জারীর ভাই এবার দেশে এসেছিলেন। ফোনে কথাও হয়েছিল। দেখা হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ব্যস্ততার জন্য উনি আর আসতে পারেন নি। শুভকামনা আপনাদের সকলের জন্য।

অফটপিকঃ আপনার আগের প্রোপিকটা ভাল ছিল।
৩১ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:০৫
203761
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, অনেক দিন পরে আপনার দেখা পেলাম। আপনি ভাল থাকুন এবং সুস্থ থাকুন।
১৬
259966
৩১ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:২৯
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : বিএনপি কে নিয়ে আসলে আমি খুব হতাশ। এরা না বুঝে রাজনীতি, না বুঝে মিডিয়ার ষড়যন্ত্র না বুঝে ইসলাম।

২০০৮ এর নির্বাচনে বিএনপি'র অনেক ঘোর সমর্থককে দেখেছি মিডিয়ার অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে মঈন ফখরুদ্দীনকে সমর্থন করতে, অনেকে নৌকায়ও ভোট দিয়েছে। নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিকুল পরিবেশে মানুষকে সত্যিটা বুঝানোর চেষ্টা করেছি। তখন ঢাবিতে এমবিএ করছিলাম। একদিন প্রফেসর আব্দুল হাকিম স্যার এর ক্লাসে ওপেন টপিকস হিসেবে আমি আলোচনা করেছিলাম ‍“1/11 Government, anti corruption movement and the reality”. আমি একাই তিনজনের সময় নিয়েছি। সময়াভাবে সংক্ষিপ্ত ভাবেই বলেছিলাম। বক্তব্যের পর স্যার খুব প্রশংসা করলেন, তবে হাততালি পড়েছিল সামান্যই। কিন্তু মিডিয়ার অপপ্রচারে বিভ্রান্ত অনেক ছাত্র/ছাত্রীই ছিল আমার প্রতি মারমুখী। আমি সত্যিটা উচ্চারণ করেছিলাম সাহস নিয়ে, মঈন ফখরুদ্দীনের ষড়যন্ত্র নিয়ে আভাস দিয়েছিলাম।

ঘরে ঘরে গিয়ে বিএনপির পক্ষে ভোট প্রার্থনা করেছি। যে প্রশ্নগুলির যুক্তিসঙ্গত জবাব বিএনপির দেওয়ার কথা ছিল সেগুলিতে বিএনপি ছিল একদম চুপ। সেলুকাস!
৩১ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:১৮
203771
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : এ ব্যাপারে আমি মন্তব্য করলে আরো বেখাপ্পা হয়ে যাবে। তারা তাদের দ্বারা সংঘটিত ভাল কাজের উদাহরণ ও তেমন ভাবে দিতে পারেনা, যেমন ভাবে আওয়ামীলীগ যা কোনদিন করেই নাই, সেটা করেছে বলে দাবী করতে পারে।

একটি উদাহরণ অন্তত পেশ করা যায়: বিএনপির সরকারের বিরুদ্ধে কথা ছিল, তারা দশ টাকার চাউল ষোল টাকায় খাইয়েছে, কথা হল এখন কত টাকায় খাওয়া হয়, সে কথা বলার মানুষ নাই।

১৯৭৫ সালে এক সের মরিচের দাম ১৮০ টাকা হল, এক সের নূনের দাম ৩০ টাকা হল। এক বছর পরে ১৯৭৬ সালে এক সের চিনি ও এক সের সেমাই ১১ টাকায় পাওয়া গেল! এটা কিসের কারনে ঘটেছিল?

জিয়া স্বল্প সময়ে এত জিনিষ বাহির থেকে আমদানী করে নাই। কিছু মজুদদারী কে তিনি ফায়ারে দিয়েছিলেন, সেটাতে কাজ হয়েছিল। পরে ফায়ার খাওয়া ব্যক্তিরাই চিল্লাতে লাগল, জিয়া মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেছেন।

সঠিক কথা হল বঙ্গবন্ধু ও জিয়া দু'জনেই মুক্তিযোদ্ধা হত্যা করেছিল। বঙ্গুবন্ধু হত্যা করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পারেনি কিন্তু জিয়া হত্যা করেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনতে পেরেছেন। তার মানে নিহত তারা কোন মুক্তিযোদ্ধা ছিলনা, তারা সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ভাঙ্গিয়ে টাউট-বাটপারি করে মানুষের রক্ত চোষায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। যাদের মৃত্যুর কারণে দেশে শান্তি এসেছিল।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
১৭
260405
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৯
আবু জারীর লিখেছেন : নাহ শেষ পর্যন্ত শ্রদ্ধেয় ব্লগার টিপু ভাই গোপন কথাটা আর গোপন রাখতে পারলেন না। আমি জানতাম তারমত গুনি লেখকের পক্ষে এমন মিস্টেরিয়াস ঘটনাটা গোপন রাখা সম্ভব হবেনা। তার পরেও যে এত দিন গোপন রাখতে পেরেছেন সে জন্য ধন্যবাদ।
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৩
204123
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor টিপু ভাইয়া বুঝি আপনার গাড়ি অনুস্বরন না করে ”পিকুলিয়ার মানুষ” সিরিজের চিতার ভুতকে অনুস্বরণ করছিল এতক্ষণ Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor না হয়, আপনার দশ কিলোমিটার সামনে চলে গেলো কেমনে? Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Crying Crying Crying Crying Crying
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৮
204143
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। এই দেখুন এখানেও আপনি দেরীতে পৌছলেন।
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১১
204145
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : হারিকেন ভাই,
লিখাতে বলেছিলাম তাঁর গাড়ির ওয়াইফর কাজ করছিল না, আমাদের গাড়ীতে ভাল ফগ তথা কুয়াশার লাইট ছিল। তাই আমাদের গাড়ী বেশী সুযোগ পেয়েছিল আবু জারীর ভাইয়ের গাড়ীর চেয়ে। আবারো ধন্যবাদ ভাল থাকুন।
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৯
204150
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : ওয়াইফর টয়াইপর বুঝি না..... হাসার সুযোগ পেলে হাত ছাড়া করি না..... Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
০৭ মে ২০১৬ রাত ০৩:২৮
305607
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, ভাইয়া, টিপু ভাইয়া প্রকাশ করেছেন বলেই আমাদের ও জানার সুযোগ হয়েছে।
১৮
260413
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৫
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : কি বলিবো আমি? প্রথম দিন আপনার লেখাটা দেখেই ওপেন করে দেখি..... মাশা আল্লাহ্ এটাতো ব্লগ পোস্ট নই..... রীতিমতো একটা পুস্তিকা। তাই ভয়পেয়ে সাথে সাথেই ক্লোজ করে দিই পেইজটি। পরে আবার লোভ সামলাতে পারছিলাম না, টিপু ভাইয়া ওখানে কি লিখেছে, কি লিখেছে ভাবতে ভাবতে আবার আসলাম এখনে......

খুবই সুন্দর - ভালো লাগলো অনেক Good Luck Good Luck যাজাকাল্লাহু খাইর Rose Good Luck Good Luck Rose
০১ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৯
204144
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ, ছোট করার জন্য যথা সম্ভব চেষ্টা করেছি, পারি নাই। বিস্তারিত লিখলে অবশ্যই পুস্তিকা হত।
১৯
262552
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৭:৪০
ইবনে হাসেম লিখেছেন : লজ্জিত ভাই, এত দেরী করে হাজির হবার জন্য। আসলে ঘটনা হলো, আপনার ভাজতির অনার্স শেষ বছর, ল্যাপিটা তাই দিনের বেশীর ভাগ সময় তার নিয়ন্ত্রণেই থাক। ওদিকে রাত সাড়ে দশটার পর আমারো ঘুমের রাজ্যে পাড়ি জমানোটা প্রায় নিশ্চিত হয়ে গেছে, এতদিনে।
যাক,দিগন্তজোড়া মরু ঝড়ের কাহিনী,কাহিনীর গতিপ্রকৃতিতে ক্ষণে ক্ষণে যোগ-বিয়োগের ঘনঘটা, সুপ্রিয় ব্লগার আবু জারির ভাই আর লোকমান ভাইয়ের ব্যর্থ অভিযান,দুর্যোগময় সময়ের মাঝে আপনাদের ওমরা পালনের বিরল অভিজ্ঞতার মূখবন্ধ, ইত্যাদির রস গিলতে গিলতে কখন যে গল্পের শেষ লাইনে এসে পড়েছি টেরই পাইনি। আর হ্যাঁ, ইঙ্গিতে যা বলেছেন, সেটার দাবী করছি, মানে এই ওমরার অভিজ্ঞতার উপর একটি বই লিখার মাস্টারপ্ল্যান করে ফেলুন, ইনশাআল্লাহ সফল হবেন, সাথে ভাতিজা এবং ভাবীর অভিজ্ঞতা কিছু শেয়ার করলে বইটি বেশ হৃষ্টপুষ্ট হবে ইনশাআল্লাহ্। মূল ওমরা কাহিনী তো বাকী আছেই। সুতরাং শুভকাজে নেমে পড়ুন। সাথে আমাদের প্রার্থনাকে ছায়ার মতো পাবেন।
০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৩৫
206363
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ধন্যবাদ, দেরীতে হলেও ভুলে যাননি। বুঝা যাচ্ছে সময় পেলে হারানো দাওয়াতের তালিকাটা দেখে নেন। অনেকে পারে না, আমি মোটেও পারি না। জানি এ জাতীয় রসালো লেখার গুরুত্ব কম। তবে আপনিও জানেন যারা লিখে থাকেন, তারা একথা মনে রাখেন না যে, লেখাটি কেউ আদৌ পড়বে কিনা। তাই এই ঘটনাটি লিখে ফেলেছি। আপনাকে আবারো ধন্যবাদ এবং ভাল থাকুন।
২০
368244
০৭ মে ২০১৬ রাত ০৩:৩২
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম, ভাইয়া আপনার সুন্দর সাবলীল বর্ণনায় আপনাদের বিচিত্র অভিজ্ঞতাময় ভ্রমণ কাহিনীটি পড়ে অনেক অজানা বিষয় জানতে ও অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারলাম।
মহান আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির রিজিকের ব্যবস্থা যেভাবে করেন, তার একটুও ব্যতিক্রম হয়না, এটাই প্রমাণিত হলো। ধন্যবাদ আপনাকে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File