পাহাড়ি তান্ত্রিক ও সমতলের যাদুকরের দেখা! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-২০ (রোমাঞ্চকর কাহিনী)

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ১০ জুন, ২০১৪, ০৪:২১:৪৫ বিকাল



আরেক বৃদ্ধকে একটি যাদু দেখাতে বলার সাথে সাথেই, হাতের মধ্যে অনেকগুলো ছোট বলের জন্ম দিল। আবার নিমিষেই সেই সব বল হাওয়ায় মিলিয়ে দিল! আবার রং বেরঙ্গের বল বের করল! একটি বল হাতে নিয়ে মুরগীর ঠোট বানাল, আরেকটিকে মার্বেল পাথরে পরিণত করল। এভাবে খালি হাতে কোন স্টেজ ব্যতীত, তিনি অনর্গল যাদু দেখাতে থাকলেন। আমি দেখে ‘থ’ হয়ে গেলাম। আমার বাকী জীবনেও এই ধরনের চৌকশ মানুষ শহুরে জীবনের কোথাও দেখিনি! মূলত: পৃথিবীতে বহু ধরনের যাদু আছে, কিছু ষ্টেজে দেখায়, কিছু রাসায়নিক উপাদানের মাধ্যমে ঘটায়, আর আছে কিছু হাতের যাদু; যাকে ইংরেজিতে Sleight of Hand বলে। মূলত এই যাদুগুলোই হয় বেশী চিত্তাকর্ষক এবং মানুষগুলো হয় চৌকশ প্রকৃতির। কোন প্রস্তুতি ছাড়াই খোলামেলা পরিবেশে এসব যাদু প্রদর্শন করতে পারে। আমি পাহাড়ি গ্রামের কয়েকজন নারীকে দেখেছি কিভাবে উপস্থিত সিদ্ধান্তে যাদু দেখায়! অবিশ্বাস্য উপস্থিত দক্ষতা! যা না দেখলে বিশ্বাস করা যাবেনা যে, গহীন অরণ্যের মাঝেও বিদ্যালয়ের বিদ্যা ব্যতীত মানুষ এগুলো আয়ত্ত করেছে! আমি ব্যক্তি জীবনে অনেক ধরনের যাদু দেখেছি, তবে Sleight of Hand এর যাদুকে মনোমুগ্ধ কর ভাবে পেয়েছি।

বহুদিন ধরে ভাবতাম, এটা কি করে সম্ভব হয়! গোলাকার হয়ে দাঁড়ানো প্রচুর মানুষের চোখের সামনে জলজ্যান্ত এমন ভেল্কিবাজি করা কিভাবে সম্ভব! ১৯৯২ সালে ইপিজেট এ চাকুরী কালীন সময়ে ঘটনাচক্রে একদা ‘জাদুকর আলাদেন’ এর সান্নিধ্য পেয়েছিলাম। ইপিজেট এ তাঁর এক আত্মীয়ের চাকুরীর জন্য, তিনি আমার নিকট সুপারিশ করতে এসেছিলেন। যাদুকর আলাদেন বাংলাদেশের সেরা যাদুকর, জুয়েল আইচ ও বিটিভিতে প্রদর্শন করা যাদুকর লুৎফল কবিরের ওস্তাদ ছিলেন। বয়োবৃদ্ধ যাদুকর আলাদেন, নিজের পরিচয় আমাকে এভাবেই দিয়েছিলেন। তিনি অঙ্কনেও চতুর ছিলেন। আমার কৌতূহল ও পীড়াপীড়িতে তিনি উপস্থিত কিছু যাদু দেখালেন। একটি যাদু ছিল এমন, বটতলী রেলওয়ে স্টেশনে, রাস্তায় নামার সাথে সাথে ভিখারিরা তার কাছে ভিক্ষার জন্য হাত পাতল। তিনি নিজের হাতকে ঝাড়া দিলেন অমনি তার হাতে পয়সা চলে আসল। অতঃপর গাছ থেকে লিচু ছিঁড়ে নেবার মত করে, শূন্য আকাশ থেকে দশ পয়সার কয়েন ছিঁড়ে ভিখারিকে দান করলেন। আরেক জন্য ভিখারি আসল তাকেও একই ভাবে দিল। এভাবে পর পর ভিখারি আসতে রইল, তিনি প্রত্যেক ভিখারিকে আকাশ থেকে ছিঁড়ে, দশ পয়সা করে দান করতে লাগলেন। বেয়াড়া এক ভিক্ষুক এসে বলল, বাবা আমার দশ পয়সার দরকার নাই, আপনি আমাকে আকাশ থেকে টাকা যোগাড় করার বিদ্যাটা শিখাইয়া দেন। ‘কসম করে কইলাম, জীবনের তরে ভিক্ষা ছাইড়া দিমু”! তিনি হাসলেন এবং থামলেন! তখনকার সময়ে দশ পয়সার ভিক্ষা গ্রহণ করা হত। এই অদ্ভুত কাণ্ড আমাকে হতবাক করল!

পরে তিনি আমাকে কিছু Sleight of Hand শেখালেন। বাজারে প্রচার না করার শর্তে আরো বহু টেকনিক দেখালেন। আমার হাতের পাঞ্জা প্রশস্ত না হওয়াতে অনেক গুলো Sleight of Hand সফল হল না! যার হাতের তালু যত প্রসস্ত ও গভীর তার দক্ষতা তত বেশী হয়। যাদুকর আলাদেন তার হাতে দশটি, দশ পয়সার কয়েন অনায়াসে লুকিয়ে রাখতে পারতেন। হাতকে ঝাড়া মারলে সেখান থেকে মাত্র একটি পয়সা ছুটে আসত। এটা কঠিন অনুশীলনের কারণে সম্ভব হয়েছে। ইচ্ছা করলেই কেউ Sleight of Hand এর সেরা যাদুকর হতে পারেনা। যাদের কাছে প্রশস্ত হাতের পাতলা তালু আছে ও লম্বা আঙ্গুল বিদ্যমান, সেরা যাদুকর হবার জন্য তারা বৈশিষ্ট্য গত ভাবেই কিছু সরঞ্জাম পেয়ে থাকেন। সেজন্য কিছু যাদুকর নিজেদের আঙ্গুল ও হাতের জন্য ‘বীমা’ করে রাখে। যাক, যাদুকর আলাদেনের উৎসাহে কিছু যাদু প্র্যাকটিস করলাম। তিনি সন্তোষ প্রকাশ করে বললেন, আমি যেন ভারতের চন্দন নগরে যাদু সম্মেলনে যোগ দিতে নিজেকে তালিকা ভুক্তি করি। তিনিই সব ব্যবস্থা করে দিবেন!

একদা ছুটিতে বাড়ী গেলে পর, মনের খুশীতে যাদু দেখাতে গিয়ে বাবার নজরে পড়ে যাই। তিনি ভয়ানক রাগান্বিত হলেন এবং একাকী অনেক কাঁদলেন! অবেশেষে বাবা বললেন, তুমি জান না আমার হৃদয়ে কত ব্যথা! তোমাকে ফিরাতে হেন প্রচেষ্টা বাকি রাখিনি যা আমি করিনি। তুমি রাজ্যের সমুদয় পথ পাড়ি দিয়ে, আবারো সেই বৃত্তে হাজির হয়েছ! যেদিন তোমার সন্তান হবে সেদিন তুমি পিতার হৃদয়ের অব্যক্ত ব্যথা উপলব্ধি করবে। সেদিন সে ব্যথার পরিমাণ বুঝানোর জন্য দুনিয়ার কাউকে সমব্যথী পাবে না। তিনি বললেন, এটা এমন একটি বিপদ জনক বিষয়, যেটা করতে গেলে, দর্শকেরা পোশাকের সাথে সাথে আচরণ বিশ্বাস বদলিয়ে ফেলে, মানুষ পথভ্রষ্ট হয়। তিনি আরো বললেন দেখ, কোন যাদুকরের মাথায় যদি লম্বা টুপি থাকে, গায়ে যদি কোট থাকে মানুষ হয়ত তাকে যাদুকর মনে করবে। তবে কোন যাদুকরের মাথায় যদি পাগড়ি থাকে, গায়ে সাদা পাঞ্জাবী থাকে, এক হাতে তসবিহ থাকে, মুখে সফেদ দাড়ি থাকে এবং সেই ব্যক্তি যদি যাদু দেখায়; সাধারণ মানুষ সেটাকে ওলীর কেরামতি মনে করে নিজেদের ইমান বরবাদ করবে! গ্রামের সাধারণ মানুষ কেরামত আর যাদুর পার্থক্য ধরকে পারেনা। তাছাড়া এসব সাধারণ মানুষ আল্লাহ এবং রাসুলের (সাঃ) উপরে নিজের চোখের দেখা কেরামতকে প্রাধান্য দেয়। কেরামতের কথা বলেই মানুষ, কবর পূজা, ব্যক্তি পূজা ঘটিয়ে থাকে। সুতরাং আমি আমার বৃদ্ধ বয়সে আশা করি তুমি এসব চিরদিনের জন্য ছেড়ে দিবে।

বললাম বাবা, এটাকে আমি পেশা হিসেবে নিচ্ছি না, শুধু মাত্র জানার জন্যই শিখলাম। তিনি আমার এই যুক্তিতেও কঠোরতার সাথে আপত্তি জানালেন এবং বললেন, মানুষ স্বভাবত খ্যাতির প্রতি লালায়িত হয়। আবার উপস্থিত খ্যাতির প্রতি অতিমাত্রায় আগ্রহী হয়। গান গাওয়া, বাদ্য বাজানো, যাদু দেখানো এগুলো উপস্থিত খ্যাতিমান হবার মত একটি বিষয়। মানুষ কোন সভা-সমিতিতে এই বিষয়গুলোকে বেশী মূল্যায়ন করে। উপস্থিত প্রশংসা ও প্রচুর হাততালি পায়। এই ধরনের পরিবেশে গেলে, যাদুকর, বাদক কিংবা গায়ক নিজেকে মেলে ধরার অপূর্ব সুযোগ হারাতে চায় না। আর এভাবে অনিচ্ছা স্বত্বেও একদিন তিনি এই পেশার ভিতরে প্রবেশ করে যায়। সুতরাং এই বিষয়ে আগ্রহও দেখানো যাবেনা। ভাবলাম পরের মাসে বিদেশ চলে যাচ্ছি, বাবাকে বিষয়টি চিরতরে নিশ্চিত করি। যাদুর সব উপাদান বাবার সামনে নিয়ে আসলাম এবং ঘটনাস্থলেই কিছু পানিতে বাকি গুলো চুলোর আগুনে ঢুকালাম! বাবার কাছে ওয়াদা করলাম বাকি জীবনে কোন দিন এই বিষয়ের ধারে পাছেও যাবো না। একদা প্রবাসের ছুটিতে বাড়ীতে গেলাম, পুরানো বই গুলো গোছাতে গিয়ে গিন্নী একটি বান্ডিল আবিষ্কার করলেন। তিনি বললেন দেখতো এটা কি? খুলে দেখলাম জাদুকর আলাদেনের হাতের লিখা একটি সার্টিফিকেট! যেটাতে তিনি আমাকে যাদুকর হিসেবে সম্বোধন করেছেন! এই খ্যাতি নিয়ে হাসলাম, এই উপাধী পেয়ে মোটেও পুলকিত হইনি কেননা ততদিনে আমি আরো প্রাজ্ঞ হয়েছি, বুঝতে শিখেছি এগুলো আসলেই চরম ভ্রান্ত কাজ। যদিও এর সাথে কিছু আনন্দ উপভোগ করা যায়। বাবার কঠোর শাসনের সেই হতাশ চেহারাটি আমার মনের আয়নায় ভেসে উঠল। ভাবলাম বাবা যদি তখন কঠোর না হতেন হয়ত কত আগেই, কোন অজানা অন্ধকার কূপে তলিয়ে যেতাম তার হিসেবই কষতে পারতাম না। মূলত এটা ছিল আমার প্রতি আল্লাহর এক অনুপম দয়া ও রহমত।

এক ত্রিপুরা বন্ধুর দাদীর আতিথেয়তার কথা আজো ভুলিলি। তিনি লম্বা আকৃতির এক প্রকার শামুক রান্না করেছিলেন। চট্টগ্রামের প্রতিটি মিঠা পানির পাহাড়ি নদীর স্রোতে এসব শামুক দেখা যায়। শামুক রান্নায় কি মসল্লা ব্যবহার করেছিলেন সেটা জানার বিষয় ছিলনা। দেখার বিষয় ছিল, যখন রান্না করা শামুক গুলো নারকেলের খোলের তৈরি চামচ দিয়ে পাতিল থেকে তুলে আনছিল, আওয়াজ শুনে মনে হচ্ছিল, ছোট ছোট পাথর টুকরা পাতিলের তলায় নড়াচড়া করা হচ্ছে! বরতনে যখন ঢালা হচ্ছিল, মনে হল ভাঙ্গা বোতলের বড় কাঁচের টুকরা ঢালা হচ্ছে! শামুকের চিকন প্রান্তে ছুরি দিয়ে আঘাত করে সামান্য ভেঙ্গে ছিদ্র করা হয়। অতঃপর অপর প্রান্তে মুখ লাগিয়ে, ঠোট দিয়ে সর্বোচ্চ গতিতে চোষণ করা হয়। এক প্রকার শব্দ তৈরি করে, শামুকের সমুদয় অন্ত্র, পাকস্থলী মুহূর্তে খাদকের মুখ গহ্বরে ঢুকে পড়ে। আজো যখনি গরু-খাসীর নলায় মুখ লাগিয়ে মগজ খেতে যাই, সেই শব্দটি শুনা মাত্রই পাহাড়ি বন্ধুদের শামুক খাওয়ার শব্দের কথা মনে পড় যায়। কিসমিসের মত চিড়ে চ্যাপ্টা হওয়া বন্ধুর দাদীর গালের চামড়ায় সেদিন যে পরিতৃপ্তির আভাষ দেখেছিলাম! পাঁচতারা হোটেলে, পাঁচ টাকার সিঙ্গারা, একশত টাকা দিয়ে খেয়েও সে ধরনের পরিতৃপ্তির ঢেকুর কেউ তুলতে পারে কিনা সন্দেহ! ছাত্রজীবনে শামুকের মগজ খাওয়ার শব্দ কিংবা ঘটনাটি মনে পড়লে খানা খেতে সমস্যায় পড়তাম। জীবন ও রুটি রুজির তাগিদে অনেক কিছু দেখেছি, অনেক শুনেছি। তবে পৃথিবীর দামী শফিং মল গুলোতে যখন দেখি, আমাদের দেশের পাতি হাঁসের প্রিয় খাদ্য, মার্বেল আকৃতির শামুক গুলোর দাম ইলিশ মাছের চেয়েও বেশী! তখন হাসি আর ভাবি, আল্লাহ কার খাদ্য কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন! যার সন্নিকটে এসব আছে তার কাছে এসব মূল্যহীন, যার হাতের নাগালে এসব নাই, তার কাছে এটা কত মূল্যবান!

একদা ইহুদীদের প্রতিষ্ঠান দুনিয়া বিখ্যাত শফিং মল কেরি-ফোরের এক ম্যানেজার কে বলেছিলাম। তোমরা বৃহৎ শফিং মলে যে মানের শামুক বিক্রি করে মানুষকে খাওয়াচ্ছ, তার চেয়ে সুন্দর ও স্বাস্থ্যবান শামুক আমাদের দেশের হাঁস-পাখি খেয়ে থাকে। আমাদের দেশ থেকে কি এসব শামুক আমদানি করা যায় না? ভদ্রলোক ধন্যবাদ সহযোগে জানালেন, ‘তোমাদের শামুক কোথায় জন্মেছে কিংবা হাইজিনিক সমস্যা গ্রস্ত কিনা, সেটা কে নিশ্চিত করবে? আগে ব্রিটিশের ফুড অর্গানাইজেশন থেকে তোমাদের পণ্যের সার্টিফিকেট জোগাড় কর, তারপর নেমে পড়। আমরা তোমার প্রোডাক্ট না নিলেও, ব্রিটিশ সার্টিফিকেটের কল্যাণে আশা করা যায়, তোমার বাজার পেতে সমস্যা হবেনা’! জ্ঞানের নাকি তিনটি স্তর আছে, প্রথম স্তর অর্জন কারীরা নিজেকে অনেক জ্ঞানী ভেবে গর্ব অহংকারে ভেঙ্গে পড়ে। ডাক্তার, ব্যরীষ্টার, সচিব, শিক্ষকেরা নাকি এই পর্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। জ্ঞানের দ্বিতীয় স্তর অর্জন করলে মানুষ নাকি বিনয়ী হয়। তখন সে সমুদয় মানুষ, প্রাণী, পতঙ্গ, গাছ পালা সহ সৃষ্টির সকল কিছুর উপর দয়াবান হয়ে উঠে ও দানশীল হয়। ফলে অজ্ঞানীরা তাকে বেকুব ও বুদ্ধিহীন মনে করে। জ্ঞানের তৃতীয় স্তরে পৌছলে নাকি মানুষ বুঝতে শিখে আসলে সে কিছুই শিখতে পারেনি। সে ভাবতে থাকে, দুনিয়া এবং নিজের সম্পর্কে তার কিছুই জানা হলনা। তিনি তখন সর্বত্র আল্লাহর দেখা পান। তখন তিনি শিল্পীর একটি জটিল সৃষ্টি কর্মের প্রশংসার স্থলে, পুকুরের পানিতে পচা কাঁঠাল পাতার জাল সদৃশ রেখাচিত্রের জটিল সহযোজন দেখেই আল্লাহর জটিলতর সৃষ্টি নৈপুণ্যের প্রশংসা করে! আজ নতুন করে, শামুক বিক্রি করার জন্য যে পদ্ধতির কথা জানলাম। তা শুনে আমি নিজেকেই উপলব্ধি করতে পারলাম না, আসলে আমি জ্ঞানের কোন স্তরে অবস্থান করছি!

আগের পর্ব: গহিন জঙ্গলে খাটাশের মহত্ব আবিষ্কার! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-১৯

প্রথম পর্ব: এক পিকুলিয়ার মানুষ! (রোমাঞ্চকার কাহিনী- ভূমিকা পর্ব)

বিষয়: বিবিধ

২১১১ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

233301
১০ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:৪০
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : যাদু আর কারামত নিয়ে আপনার বাবার শতভাগ পারফেক্ট দৃষ্টিভঙ্গিকে স্যালুট জানাই।
১০ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৮
179941
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
233302
১০ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:৪২
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : খুবই ভাল লাগলো আপনার কাহিনী, পাহাড়ী বুড়ির শামুক আপনি খেয়েছিলেন ?
১০ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:৫৯
179942
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : শামুক খাওয়ার আওয়াজ শুনে, গরু-ছাগলের মগজ খাওয়া ছেড়েছিলাম! আপনি প্রশ্ন করলেন শামুক খেয়েছি কিনা? অনেক ধন্যবাদ।
১০ জুন ২০১৪ রাত ১০:৫৭
180094
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor Rolling on the Floor
233338
১০ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:২৬
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এপ্লাইড ফিজিক্স এন্ড ইলেক্ট্রনিক্স বিভাগের এক শিক্ষকের সাথে আমার বেশ কিছুদিন এক সাথে চাকরী করার সুযোগ হয়েছিল। বর্তমানে তিনি মালয়েশিয়াতে পিএইচডি গবেষণারত। তিনি একবার ছাত্রদের মাঝে একটি অরিয়েন্টেশন প্রোগ্রামে বেশ কিছু মনোমুগ্ধকর জাদু দেখাচ্ছিলেন। যাদু পরিবেশন শেষে ইঞ্জিনিয়াংয়ের ছাত্রদেরকে যেসব ইভেন্টের উপর যাদু পরিবেশ করলেন তার অন্তর্নিহিত রহস্য এবং বর্ণনা বলে দিলেন সবার উদ্দেশ্য। তিনি সেদিন বেশ কয়েকটি মনোমুগ্ধকার যাদুর সাথে তরুতাজা ডিম ভাজা খাওয়ার যাদুও দেখিয়েছিলেন। সম্ভবত আপনার দেয়া বর্ণনানুযায়ী Sleight of Hand অন্তর্ভুক্ত কৌশল হবে।
ছাত্রদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেল। কেউ কেউ অতি উৎসাহী হয়ে নিজেরাই স্যারের দেয়া প্রেশক্রিপ্শন অনুযায়ী যাদু প্রেক্টিস করতে লাগলেন। অরিয়েন্টশন প্রোগ্রামের বেশকিছুদিন পর কয়েকজন ছাত্রবন্ধু মিলে স্যারের শিখানো ডিমভাজা যাদুবিদ্যা প্রেক্টিস করতে গিয়েই দারুণ এক বেরসিক কান্ডের জন্ম দিলেন। বাজার থেকে এক হালি ডিম ক্রয় করে নিজেরা প্রেক্টিস করতে গিয়ে দু’টো ডিম নিজেদের অসতর্কতার কারণে ভেঙ্গে গেল। সাথে সাথে গোড়া ক্লাশরুমটাই ভেসপা দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়লো চথুর্দিকে। আসল ঘটনা হলো যে চারটি ডিম ক্রয় করেছিল তন্মধ্যে দু’টো ডিমই পঁচা ছিল। অবশেষে যাদুবিদ্যা শিখার কৌশলটি দুর্গন্ধের মধ্যে যবনিকাপাত হলো।
১০ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৫
179980
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : বিজ্ঞানের যাদু গুলোতে ও স্লাইড অব হেন্ড কার্যকরী। উপস্থাপনা করতে গেলে সেটার আশ্রয় নিতেই হয়। ছাত্ররা অতি খুশীতে পঁচা ডিম নিয়ে হাজির হয়েছিল, এটাই ছিল যাদুর মোহ। তারা চিন্তাও করেনি যে, ডিম গুলো ভাল করে দেখে নেওয়া দরকার।

তবে শিশুরা কিন্তু স্লাইড অব হেন্ড ধরে ফেলায় পারদর্শী হয়। কারন দুনিয়ার ফাকিবাজি, ভেল্কীবাজির সাথে তারা তখনও পরিচিত হয়না। সেজন্য যা দেখে কৌতুহলে দেখেনা, শিখার জন্য দেখে থাকে। ফলে হাতের কৌশল তারা ধরে বসতে পারে। সেজন্য বাচ্চাদের সামনে যাদু দেখাতে গেলে অনেক অনেক বেশী সতর্ক থাকতে হয়।
233340
১০ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:২৬
ছিঁচকে চোর লিখেছেন : লেখাগুলো মন্দ লাগে না ভালই লাগে। পুরাটা পড়ার সময় না হলেও বুঝতে কষ্ট হয় না যে ভিতরে কি আছে।
কথায় আছে "ও তার নয়নেতে যায় গো চেনা, সে দুই-এক জনা"
১০ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০০
179982
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আমি কোন কিছু ভাসা ভাসা পড়িনা। যা পড়ি তার গভীরে গিয়ে পড়ি। শরৎচন্দ্র ও সৈয়দ মুজতবা আলীর সাহিত্যে ঘটনার চেয়ে ভাষার প্রয়োগ টা বেশী দৃশ্যনীয়।

উদাহরণ হিসেবে, কবি নজরুলের 'নারী' ও রবী ঠাকুরের 'দুই বিঘে জমি'র পুরোটা না পড়লে কবিতা পড়াই বৃথা হবে। এসব কবিতা থেকে অনেকগুলো উপকথার জন্ম হয়েছে, সেই উপকথা গুলো সেরা হয়েছে ভাষার প্রয়োগের কারণে। এগুলো অনেক উন্নত ভাষাশৈলী দ্বারা সৃজিত।

দুনিয়ার সকল মানুষ এক প্রকার নয়। চলমান ও গতিশীল পাঠকের মধ্যে আপনার মত পাঠকের সংখ্যাই বেশী। অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন।
233358
১০ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০২
আবু জারীর লিখেছেন : আপনি জ্ঞানের তিন স্তরেরই ৪৫ডিগ্রী এয়াঙ্গেলে পিছিয়ে আছেন ফেলে কোনটাতেই পূর্ণতা লাভ করতে পারেননি, একমাত্র বেল্কনিতে লাগানো ভাবির হাতের করল্লা ভাজি খাওয়া ছাড়া।

আমিও কিছু উপস্থিত যাদু শিখেছিলাম। কয়েকটা স্টেজ যাদু সম্পর্কেও ধারণা নিয়ে ছিলাম।

আল্লাম আমাদের এসকল ঈমান বিধ্বংসী ফালতু কাজ থেকে হেফাজত করুন।
আমীন।
ধন্যবাদ।
১০ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩১
180001
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : দোয়া করলেন নাকি বদদোয়া দিলেন কিছুই বুঝলাম না। তবে আপনার সাথে আর আমার সাথে যে, অন্তত কিঞ্চিত মিল আছে সেটাই বা কম কিসের। অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
233385
১০ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩২
এনামুল হক মানিক লিখেছেন : যাদুবিদ্যা শেখা ও প্রয়োগকরা শরীয়তে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ আছে। যাক আল্লাহ আপনাকে রহম করেছেন। ধন্যবাদ
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৪০
180708
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও আল্লাহ রহম করুন। আমীন।
233393
১০ জুন ২০১৪ রাত ০৮:০৩
শিশির ভেজা ভোর লিখেছেন : যথারীতি পড়ে ভালো লাগলো। Fantastic Fantastic
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৪০
180709
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
233439
১০ জুন ২০১৪ রাত ১০:৫৮
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : অন্নেক ভালো লাগলো Good Luck Good Luck যাজাকাল্লাহু খাইর। Rose Rose Good Luck Good Luck Rose Rose
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৪১
180710
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আল্লাহ আপনাকে রহম করুন। অনেক ধন্যবাদ।
233538
১১ জুন ২০১৪ রাত ০৪:১০
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : লেখাটা শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। খুবই ভালো লেগেছে।
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৪১
180711
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
১০
233613
১১ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আপনার কাছ থেকে জানা কিছু কেমিক্যাল ম্যাজিক এর ফর্মুলা আমার কাছে এখনও আছে!!!
১২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৪২
180713
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : দীর্ঘ বছর এভাবে সংরক্ষণের জন্য ধন্যবাদ। বুঝাই যাচ্ছে যথেষ্ট আন্তরিক ছিলেন। আল্লাহ আপনার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল ও কল্যাণ দান করুন। আমিন।
১১
237543
২২ জুন ২০১৪ দুপুর ০৩:৩৬
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : ভালো লাগলো
২২ জুন ২০১৪ বিকাল ০৪:০১
184110
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অসংখ্য ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
১২
264887
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৩২
নেহায়েৎ লিখেছেন : যেদিন তোমার সন্তান হবে সেদিন তুমি পিতার হৃদয়ের অব্যক্ত ব্যথা উপলব্ধি করবে। সেদিন সে ব্যথার পরিমাণ বুঝানোর জন্য দুনিয়ার কাউকে সমব্যথী পাবে না। তিনি বললেন, এটা এমন একটি বিপদ জনক বিষয়, যেটা করতে গেলে, দর্শকেরা পোশাকের সাথে সাথে আচরণ বিশ্বাস বদলিয়ে ফেলে, মানুষ পথভ্রষ্ট হয়। তিনি আরো বললেন দেখ, কোন যাদুকরের মাথায় যদি লম্বা টুপি থাকে, গায়ে যদি কোট থাকে মানুষ হয়ত তাকে যাদুকর মনে করবে। তবে কোন যাদুকরের মাথায় যদি পাগড়ি থাকে, গায়ে সাদা পাঞ্জাবী থাকে, এক হাতে তসবিহ থাকে, মুখে সফেদ দাড়ি থাকে এবং সেই ব্যক্তি যদি যাদু দেখায়; সাধারণ মানুষ সেটাকে ওলীর কেরামতি মনে করে নিজেদের ইমান বরবাদ করবে! গ্রামের সাধারণ মানুষ কেরামত আর যাদুর পার্থক্য ধরকে পারেনা। তাছাড়া এসব সাধারণ মানুষ আল্লাহ এবং রাসুলের (সাঃ) উপরে নিজের চোখের দেখা কেরামতকে প্রাধান্য দেয়। কেরামতের কথা বলেই মানুষ, কবর পূজা, ব্যক্তি পূজা ঘটিয়ে থাকে। সুতরাং আমি আমার বৃদ্ধ বয়সে আশা করি তুমি এসব চিরদিনের জন্য ছেড়ে দিবে।

(অত্যন্ত দামী কথা এটা। তেমন বেশি ব্লগে আসা হয় না আসলেও লেখা বা পড়া হয় না খুব একটা। আজ আপনার লেখাগুলো বের করে পড়ছি।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ দুপুর ১২:৪৬
208508
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : বহুদিন পরে হঠাৎ অভ্যূদয় হল আপনার! অনেক দিন আপনার কোন লিখা নজরে আসেনি! আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, সন্ধান করে আমার একটি পুরানা লিখা পড়লেন ও মন্তব্য করলেন।
১৩
266211
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৫১
আফরা লিখেছেন : লেখাটা শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। খুবই ভালো লেগেছে
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১১:০৪
209967
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আল্লাহ আপনাকে মেহেরবানী করুন, আপনি আসলেই একজন ধৈর্য্যশীল পাঠিকা। অনকে ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File