বৈরাগীর টিলার ‘ভোগ’ থেকে ভুত বিতাড়ন! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-১৮ (রোমাঞ্চকর কাহিনী)

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ০১ জুন, ২০১৪, ০৫:২৫:০৫ বিকাল



ছোট কালে বহু বৈরাগী দেখেছি। আমার ইঁচড়ে পাকা বন্ধু রুহুল আমিন কে প্রশ্ন করেছিলাম এদের বৈ-রাগী বলে কেন? সে বলেছিল ‘বই’ দেখলে এদের রাগ আসে তাই তাদেরকে বই-রাগী তথা বৈরাগী বলে। কেউ বলেন ‘বউ’য়ের উপর রাগ করে গৃহ ত্যাগী হয় বলে এদের কে বউ-রাগী বা বৈরাগী বলা হয়। বৈরাগীর জীবন আমার কাছে এডভেঞ্চারের মত লাগত। সেই জন্যই বড় হলে কি হতে চাই? বাবার এধরনের প্রশ্নে বলে বসেছিলাম, ‘বড় হলে আমি বৈরাগী হতে চাই’। তবে আমার কাহিনীর বৈরাগী টিলায়, কোনদিন কোন বৈরাগী দেখিনি! কেনই বা এটার নাম বৈরাগীর টিলা হয়েছে, তারও কোন সদুত্তর পাইনি।

বাজারের দিনে আমার স্কুলের আসা যাবার পথে, দুপুর বেলার দিকে এক ভিখারিনীকে অশ্বত্থ গাছের নিচে মাদুর পেতে বসতে দেখতাম। এই রাস্তা দিয়ে প্রচুর মানুষ চলাচল করে, তাছাড়া বাজার জমে উঠে অপরাহ্ণে। বুড়ি বাজারের পথের এই অশ্বত্থ গাছের নির্মল ছায়ায় বসে, খোলা বিলের পরিষ্কার বাতাসে জিরিয়ে নেন। মাদুর বিছিয়ে রাখেন কেউ দয়া পরবশ হয়ে কিছু দিয়েও দিতে পারেন, এই আশায়। এই ভিখারিনীর মুখ আমি চিনতাম, আমার ছোটকালে তাঁহার শরীরে সামর্থ্য ছিল। তাই তিনি বহু দূর দূরান্তে ভিক্ষা করতে যেতেন। আমাদের বাড়ী আসলে পর তিনি আমার সন্ধান করতেন, গোপনে চাউলের বস্তার কাছে গিয়ে নারিকেলের বড় খোলে ভর্তি করে চাউল দিয়ে দিতাম। দশ বাড়ীর ভিক্ষা আমার মাধ্যমে আমাদের ঘরেই উশুল হয়ে যেত। দীর্ঘদিনের অ-সাক্ষাতে আমি ভিখারিনী বুড়িকে চিনত পারিনি, আলবৎ তিনি আমাকে ঠিকই চিনেছিলেন! তিনি এটাও জেনেছিলেন যে, আমি তাবিজ, কবজ, যাদু, টোনা সহ নানাবিধ পাণ্ডিত্যের ভারে চ্যাপ্টা হয়ে আছি। স্কুলের পথে বুড়ির চর্মসার শারীরিক অবস্থা দেখে আমার মায়া লাগা বেড়ে যেত। আমিও কথা বলতাম। ছাত্র বলে তাকে ভিক্ষা দেবার মত অবস্থা তখনও আমার হয়ে উঠেনি। তাছাড়া বুড়ি আমার কাছে কোনদিন ভিক্ষা চায় নি।

শনি মঙ্গলবারে হিন্দুরা বৈরাগীর টিলায় ভোগ রেখে যেত। ভোগ রাখার স্থানটি রাস্তার পাশেই, অন্যূন পাঁচ হাত দূরত্ব হবে এবং ঠিক বট গাছের নিচেই। ভোগ যদিও দেবতার উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়, তবে এসব ভোগ দেবতারা না খেয়ে প্রাণীরা খেয়ে ফেলে। মানুষকে এসব ‘ভোগ’ অঘোষিত নিয়মে ধরতে মানা এমন কি কাছে যাওয়া নিষেধ! অন্যতায় তার চরম অমঙ্গল হয়, ভূতলে তার মারাত্মক সর্বনাশ হয়। তাই ভোগের পণ্যে যতই দামী ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিষ থাকুক না কেন, রাস্তায় চলাচল রত সাধারণ মানুষ এসব জিনিষ ভয়েও ধরে না। না জানি কোন অঘটন ঘটে যায়। ভোগ সামগ্রী ধরার মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় আইন অমান্য হয়না, বিচারের মুখোমুখি হবার সম্ভাবনা থাকেনা। যেহেতু এসব ভোগ দেবতার জন্য উৎসর্গিত, তাই অনিষ্টকারীকে শাস্তি দেওয়াটা দেবতারই দায়িত্ব। তাই কেউ ভোগ রেখে যাবার পরে সেই ভোগের পরিণতি কি হল, সেটা তার দেখার বিষয় থাকেনা। তারপরও কিছু কৃপণ দাতা কদাচিৎ ভোগ দেবার সময়, সাথে করে তাদের পালা কুকুর নিয়ে আসে, যাতে করে তাদের ভোগ নিজেদেরই কুকুর উদরপূর্তি করে খেয়ে নিতে পারে! সমস্যাও আছে, তিন দিনের মধ্যে যদি প্রদত্ত ‘ভোগ’ স্পর্শ করা না হয়, তাহলে ধরে নিতে হবে, তার ভোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে তাকে সহসা দ্বিগুণ পরিমাণ জিনিষ ভোগের জন্য নিবেদন করতে হবে। তাই ভোগের মধ্যে একটা উপাদান ডিম-দুধ থাকেই। আর এসব উপাদান খায়না এমন অ-রুচিশীল প্রাণী সেই বনে ছিল বলে অন্তত আমি বিশ্বাস করতে পারি নাই।

নিত্য-নৈমিত্তিক ভোগের ভিন্ন ভিন্ন উপাদান আসতে থাকে। পাকা কলা, পাকা পেঁপে, কাঁঠাল, আখ, আম, লিচু, পেয়ারা, বেল, ডালিম সহ নিজেদের উৎপাদিত উৎকৃষ্ট মানের যাবতীয় ফল। সিন্নি, পায়েস, মিঠাই, জিলাপি সহ নানাবিধ ঘরে বানানো নাস্তা। বিনি চাউল, চিড়া, মুড়িও কদাচিৎ পড়তে দেখেছি। তাজা দুধ-ডিম দিনের বেলায় কুকুর, বন বিড়াল খেয়ে নেয়। কাঁঠাল, আখ ইত্যাদি রাত্রি বেলায় শৃগাল, বাগডাশ ও খাটাশের পেটে যায়। বাসি কলা, আম, লিচু পরবর্তী দিনের সকালে ছাগলে খায়। কাউয়া, শালিক, ঘুঘু, ভাত ময়না, টিয়া ফলের টুকরা গুলো নিয়ে যায়। শুকনো ফলের ভগ্নাংশে ভাগ বসানো জন্য ইঁদুর-ছুঁচো তো আছেই। অবশেষে বুঝতে পারলাম, দেবতাদের কৃপায়, এসব প্রাণী-পাখীদের ফল হজম করা উদরস্থ মলের বিচি যত যায়গায় ছিটিয়েছে, সেখানেই মনুষ্য উৎপাদিত নানাবিধ ফল গাছের বিস্তার হয়েছে! নিজেদের উৎপাদিত উৎকৃষ্ট জিনিষ গুলো এভাবে দিনের পর দিন কুকুর, শৃগাল, ছাগলের পেটে যাচ্ছে দেখে আমি অবাক হতাম। আর ভাবতাম সেই বুড়িটি সামান্য খাবারের আশায় রাস্তার পাশে এভাবে বসে থাকে! আর অন্য দিকে অদৃশ্য দেবতার মন পাবার জন্য নিজেদের সন্তানদের না খাইয়েও এভাবে গাছতলায় ভোগ রেখে যাওয়া হয়!

চরম সুদখোর স্থানীয় ধনী লোকের আদরের সন্তানের ঘটা করে বিয়ে হল। ঝাঁক ঝমকের সহিত তিন দিন তিন রাত নিরামিষ ভোজন চলল। অনেক ঢাক-ডোল পিটিয়ে, ব্রাহ্মণ-সাধু সহযোগে নববধূকে বৈরাগীর টিলায় নেওয়া হল। নববধূ যাতে ভাগ্যবতী হয় সেজন্য সেখানে দেবতার মনোরঞ্জনের জন্য উৎকৃষ্ট মানের বিভিন্ন প্রকার ভোগ সামগ্রী রাখা হবে! অতঃপর ছাগল বলীর মাধ্যমে আমিষ খাওয়া হবে এবং বিয়ের অনুষ্ঠানাদি সমাপন হবে। আমি যখন বৈরাগীর টিলায় পৌঁছি, তখন এলাকাটির চারিদিকে নানাধরনের ভোগ সামগ্রীতে পূর্ণ। কলা পাতার উপর রক্ষিত ফল-ফুল-মিঠাইয়ের ছড়াছড়ি। মনস্কামনা পূরনার্থে দেবতার পদ তলে এমন অনেক ধরনের ফলের সমাহার দেখলাম যা ইতিপূর্বে আমি নিজেও দেখেনি! পাশের একটি ঝুড়িতে সিঁদুরের রং অঙ্কিত ‘তিন ডজন তিনটি’ হাঁসের ডিম বহাল তবিয়তে পড়ে ছিল। যেই ভাবা সেই কাজ! ঝুড়িটি হাতে নিলাম, কিছু কাঁচা পাতা দিয়ে তা ঢেকে নিলাম এবং স্কুল পানে রওয়ানা হলাম। ভাবছিলাম, আজকে যদি বুড়িকে না পাই, তাহলে বিরাট সমস্যা হবে।

ভাগ্য ভাল বুড়িকে যথা স্থলে পাওয়া গেল। ঝুড়ির হাতে ডিমের ঝুড়িটি ধরিয়ে বললাম, এখানে এক কম দুই কুড়ি ডিম আছে। এসব বাজারে নিয়ে বিক্রি কর, তাহলে ভিক্ষার চেয়েও তোমার আয় ভাল হবে। এছাড়াও আমি তোমাকে একটি বুদ্ধি বাৎলিয়ে দিব, যা অনুসরণ করলে তোমাকে ভিক্ষা করতে হবেনা, তোমার দিন সুন্দরভাবে কেটে যাবে। বুড়ি অনেক আগ্রহ ভরে আমার নিকট থেকে ঝুড়িটি হাতে নিল। আমি যাতে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকি সেজন্য দোয়া করল। বুড়ি কৌতূহলে যখন ডিমের উপর থেকে কাঁচা পাতার আস্তরণ সরাল, দেখতে পেল প্রতিটি ডিমের গায়ে সিঁদুরের দাগ! তিনি ওরে বাবারে বলে লাফিয়ে উঠলেন! আমাকে বললেন, তোমার সাথে আমার কি দুষমনি আছে? এসব খেলে কিংবা বেচলে আমার তো মান-সম্মান নষ্ট হবে! চরম সর্বনাশ হবে! মনে মনে হাসলাম, ‘কদাচিৎ ভিক্ষুকেরাও মানসম্মান নষ্ট হবার ভয়ে থাকে’!

বুড়ির এই অপ্রত্যাশিত উল্টো আচরণে আমিই অপমান বোধ করলাম! বড় আশায় যার জন্য ভারী ডিমের ঝুড়ি এতটুকু পথ বয়ে আনলাম! আর সেই কিনা বলে এতে তার মান-সম্মান নষ্ট হবে, এমনকি এসবে তিনি হাত দিতেও রাজি নয়! আমার এক হাতে বই, অন্য হাতে ডিমের ঝুড়ি। ভাবছি যেভাবেই হোক বুড়িকে এটা ধরিয়ে দিতেই হবে। তাই তাকে বললাম, ডিম থেকে সিঁদুরের রং ধুয়ে আপনি খেতে পারবেন, কোন সমস্যা হবেনা। আমি আপনাকে এমন এক তাবিজ দেব, যে তাবিজের ভয়ে কেউ আপনার অনিষ্ট করতে পারবেনা। জীবনে এই প্রথম গায়ে পড়ে কাউকে তাবিজ দেবার ঘোষণা দিলাম! বুড়ি একটু উল্লসিত হয়ে বলল, ডিমের ঝুড়ি সে সাথে রাখবে কিন্তু খাবে না। কেননা, ভোগ সামগ্রী থেকে কিছু একটা আমাকে আগে খেয়েই প্রমাণ করতে হবে যে, এসব খেলে কোন সমস্যা হয় না।

পরবর্তী বারে ভোগের সামগ্রী থেকে কলা, পেঁপে, পেয়ারা, লাড্ডু নিলাম এবং বুড়িকে খেয়ে দেখালাম যে, এসব অনায়াসে খাওয়া যায়। মানুষের কোন ক্ষতি হয়না। এরপর থেকেই বুড়ি তার ভিক্ষার স্থল, স্কুলের নিকট থেকে পরিবর্তন করে বৈরাগীর টিলায় স্থানান্তর করল। আরো কিছু দিন পরে, আশে পাশের জমিতে ক্ষেতে কাজ করার কামলারা বুড়ির ভোগে ভাগ বসাতে লাগল। বুড়ি তাদের সাথে ঝগড়া লাগিয়ে দিত। এই দৃশ্য ভোগ প্রদানকারীদের পূজারীদের চোখে পড়ল। সাধারণ মানুষদের এভাবে ভোগের উপর ভাগ বসাতে গিয়ে ঝগড়া-কলহ দেখে তারা ভীত বিহ্বল হল।

ভোগ সামগ্রী খাওয়া যায়, কোন সমস্যা হয়না, এই তথ্য প্রমাণে বুড়িই হল প্রধান ও প্রথম ব্যক্তি। বুড়িকে কেউ প্রশ্ন করলে তোমার সাহস তো কম নয়! বুড়ি সাথে সাথে গৌরবের সহিত ঘোষণা দেয়, আমার তাবিজের বদৌলতে সে এত বড় একটি সাহসী কাজে হাত দিয়েছে এবং ভোগ সামগ্রী প্রাণীদের মুখ থেকে লুণ্ঠন করে! ফলে স্থানীয় অনেক মানুষ জেনে গেল যে, এটা আমার প্ররোচনায় হয়েছে। আর এ ধরনের সাহসী ও মারাত্মক কাজ করার নজীর আমার অতীত জীবনে বহু আছে!

ভাগ্য সু-প্রসন্ন করতে ‘ভোগ’। সেই ভোগ নিয়ে ভাগাভাগি, ভোগের ভাগাভাগি নিয়ে ভোগান্তিতে পড়ে সেই ভিখারিনীকে ভিক্ষার স্থান হারাতে হয়েছে। একদা বুড়ির হাতে একটি ফোঁড়া উঠেছিল, বহু চিকিৎসা চলল, সেটি আর কোনদিন ভাল হয়নি। সেই ফোঁড়ার পচনের ফলে বুড়ির মৃত্যু হয়। কিছু মানুষ বলাবলি করতে রইল, ‘এটা বুড়ির ভোগ খাওয়ার ভোগান্তির ফল’। বেয়াড়া কেউ পাল্টা প্রশ্ন তুলে জিজ্ঞাসা করে, ‘যেই ব্যক্তি ভোগ খাওয়ার জন্য রাস্তা তৈরি করল, মানুষকে খেতে শিখাল, তার তো কোন ভোগান্তি হলনা’? উত্তর আসত, ‘এখনও ভোগান্তি হয়নি বলেই যে, ভবিষ্যতে হবেনা সে নিশ্চয়তা কে দিবে’? তখনও দুনিয়ার মানুষের কাছে স্বচ্ছ ধারনা ছিল না যে, ‘ডায়াবেটিস নামক একটি রোগ আছে। যেটা হলে মিষ্টান্ন ও মিষ্টি ফল খাওয়া যায়না। শরীরে কোথাও একবার ক্ষত হলে এই রোগের উপস্থিতিতে সেই ক্ষতও কোনদিন ভাল হয়না। পচন রোগেই তাকে মরতে হয়’। আসল কথা হল, মরার পূর্বে প্রতিটি ব্যক্তিকেই কোন একটি ভোগান্তির মোকাবেলা তো করতে হবেই, এটাই আল্লাহ তায়ালার একটি সুনির্দিষ্ট নিয়ম।

আগের পর্ব: নতুন পরিমণ্ডলে বালক পীর! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-১৭ (রোমাঞ্চকর কাহিনী) পড়তে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।

প্রথম পর্ব: এক পিকুলিয়ার মানুষ! (রোমাঞ্চকার কাহিনী- ভূমিকা পর্ব)

বিষয়: বিবিধ

২২৭০ বার পঠিত, ৩৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

229101
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৩৭
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৬
175788
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
229113
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৯
আওণ রাহ'বার লিখেছেন : বাহ্ আপনি মহোদয় দারুন কাজ করলেন।
যাক বুড়িরতো একটা কিছু হলো।
আপনিতো পুরা মহা পীর হয়ে গেলেন।
যাক আপনার সাহস অনেক।
একটি চরিত্র কিন্তু হয়ে যাচ্ছে টিপুর রহস্য (টিপু=টিপু ভাইয়া)
অনেক ধন্যবাদ পড়ের পর্বের অপেক্ষায়।
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৪
175797
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ। আমার পিতার রক্তচক্ষুর ভয়ে পীর হইতে পারলাম কোথায়? পীরেরা নিজের আস্তানায় থাকে আমাকে তো দেশ ছেড়েই ভাগতে হয়েছে।
229115
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৪
পুস্পিতা লিখেছেন : এখন তো মুসলমানরাও মাঝারের নামে সেই ধরনের ভোগ নিচ্ছে। তবে মাঝারের মালিকরা তা খেয়ে নিচ্ছে। খেতে তাদের ভয় নেই!
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৭
175799
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আমার পিতাও একদা মাজারের খাদেম ছিলেন, প্রথম দিকের পর্বগুলোতে সে কথা বলা হয়েছে। আমরা দেখেছি, মানুষ পাষ মোছনের আশায় আরেক পাপী মানুষকে কিভাবে ভক্তি শ্রদ্ধা করে! আপনার মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
229116
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৭
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : চোট্টবেলা শীল পাড়ার চিতাখোলার সেই কাহিনীটাকেই পূনরায় স্মরণ করিয়ে দিলেন। আমাদের গ্রামের একমাত্র হিন্দু অধ্যষ্যিুত এলাকা শীল পাড়ার কেউ মারা গেলে তাদের চিতাখোলাতেই সবদাহ করা হতো। মৃত লোকটিকে সবদাহ করার পর থেকে সিডিউল মাফিক চারদিন, ষোলদিন, আটাশ দিন, চল্লিশদিন পর পর হিন্দু ধর্মের রেওয়াজ অনুযায়ী চিতাখোলাতে মৃত ব্যক্তিকে যেখানে পোড়া হয়েছে সেখান দেবতাতুষ্টির আশায় কত জাতের খাদ্য দ্রব্য ভোগ হিসেবে দেয়া হতো। বাল্য বন্ধু নুরুল আজিমকে নিয়ে সেসব খাদ্য দ্রব্য থেকে বিশেষ করে ফলমূল জাতীয় সব কিছু আমরা দু'জনেই ভক্ষণ করতাম।
ওলা ফকির নামের (আসলে তার নাম ছিল উলা মিয়া) এক ভবঘুরে ব্যক্তির কারণে আমাদের দীর্ঘদিনের এই প্রেস্টিসটা মাঝপথে ধেমে গিয়েছিল।
০১ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৮
175803
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : হাঁসব না কাদব বুঝতে পারছিনা।
তবে হাসিটা জোড় করেই চলে আসল।
ভোগের জিনিষ তো আমি খাইনাই, বুড়ি যাতে অবলম্বন পায় সেজন্য তাকে খেতে শিখিয়েছিলাম। এখন দেখছি গেঞ্জাম খান যেখানে গেছে সেখানেই তালগোল পাকিয়েছে। ধন্যবাদ।
229144
০১ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৩
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : ধৈর্য সহকারে আজ ১৮ টি পর্বে চলে এসেছেন যা একজন লেখকের সবচেয়ে বড় চাহিদার মধ্যে একটি পাওয়া ,,ভালো লাগতেছে চালিয়ে যান সাথে আছি
০১ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৬
175830
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
229153
০১ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৩
প্রবাসী মজুমদার লিখেছেন : ওভাই, কুসংস্কারে আচ্ছন্ন সমাজের প্রচলিত ঘটনা নিয়ে লিখা সিরিজটা পড়ে খুব খুব ভাল লেগেছে। বিশেষ করে জাননাম,
"তিনি এটাও জেনেছিলেন যে, আমি তাবিজ, কবজ, যাদু, টোনা সহ নানাবিধ পাণ্ডিত্যের ভারে চ্যাপ্টা হয়ে আছি।"

তয় কি কি তাবিজ করতে পারেন জানলে ভাল হয়। ধন্যবাদ। ভাল লাগল। ব্যস্ততার কারণে আসায় হয়না। মজার সিরিজ হারাচ্ছি।
০১ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৫
175835
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আমিও দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলাম, আজ দুদিন একটু ফুসরৎ পেয়েছি। তাবিজ কবজের ঘটনাগুলো তো আগের পর্বেই উল্লেখ আছে। ভাল থাকুন দেখা হবে।
229176
০১ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৫
চাটিগাঁ থেকে বাহার লিখেছেন : পড়ে খুব ভাল লাগল । আপনার তাবিচের অনেক গুন । Applause Applause Applause
০২ জুন ২০১৪ সকাল ১০:৫৯
176089
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : তাবিজ ব্যবহার না করেই গুনগান গাইলেন! অনেক ধন্যবাদ।
229196
০১ জুন ২০১৪ রাত ০৮:৫০
শেখের পোলা লিখেছেন : নেটে আসা হয়না,আমার বাংলা টাইপ নাই,thanks.
০২ জুন ২০১৪ সকাল ১১:০০
176090
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
229228
০১ জুন ২০১৪ রাত ০৯:৫৮
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : বিবাহিত পুরুষ মাত্রই এক পর্যায়ে বৈরাগি হয়ে যায়! কেউ সাহস করে পথে নামে কেউ তা পারেনা।
ভোগের জিনিস মানুষের ভোগে লাগলে ক্ষতি আর পশুপাখির ভোগে লাগলে ক্ষতি নাই!!
তবে একদিক দিয়ে ব্যাপারটা খারাপ নয় বিশেষ করে বনের মধ্যে ফলদ গাছ সৃষ্টি পরিবেশের জন্য ব্শে উপকার করে।
চট্টগ্রামে আরেকটা প্রচলিত কথা বুনো কবুতর তথা জালালি কবুতর খেলে মৃত্যু হয়!!!
আমি অনেকবারই খেয়েছি। এখন আমার মৃত্য হবে এই বিষয়ে কোন সন্দেহ আছে কি???
০২ জুন ২০১৪ সকাল ১১:০৯
176095
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্য! জালালী কবুতর নিয়ে চট্টগ্রাম আর সিলেটেই এই প্রবাদ বেশী। শাহজালাল (রঃ) কে নাকি কেউ একজন কবুতর উপহার দিয়েছিল, সেই কবুতরের বংশধর হল এই জালালী কবুতর!

অনেকের কাছে আমার প্রশ্ন ছিল, শাহজালালের বংশের সেই কবুতর চেনার উপায় কি?

নিজেদের ঘরে কবুতর পালা হত। কোন কারণে কবুতরের সংগী ছাড়া হলে সেই কবুতর আরেকজন সংগীর আশায় আমাদের কবুতরের পালে মিশে যেত। গ্রাম বাসী বলত সেটা জালালী কবুতর। সুতরাং তাকে খাওয়া যাবেনা। আরো পরে বুঝলাম, মালীক বিহীন সমুদয় কবুতরই জালালী কবুতর। অনেক ধন্যবাদ।
০৩ জুন ২০১৪ রাত ০৮:৪২
176946
মাটিরলাঠি লিখেছেন : @টিপু ভাই, কিছু কবুতর আছে দেখবেন যাদের পায়ের নোখ পর্যন্ত পালকে ঢাকা, এগুলিকে আমাদের এদিকে জালালী কবুতর বলে।
১০
229347
০২ জুন ২০১৪ সকাল ০৯:৪৮
আহমদ মুসা লিখেছেন : বেশ মজার কাহিনী। চালিয়ে যান, সাথেই আছি।
০২ জুন ২০১৪ সকাল ১১:০৯
176096
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
১১
229377
০২ জুন ২০১৪ সকাল ১১:১০
নেহায়েৎ লিখেছেন : ভাল লাগল ভাইয়া। কিন্তু দেবতাদের উদ্দেশ্যে উৎসর্গীকৃত খাবার কি মুসলমানদের জন্য খাওয়া জায়েজ??? আমিতো জানি এটা নিষেধ।
০২ জুন ২০১৪ সকাল ১১:১৫
176097
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সব জায়গায় জায়েজ না জায়েজ খুঁজলে কি চলে? আমিতো বুড়ির ভিক্ষাবৃত্তির কষ্ট দূর করতে চেয়েছিলাম! টাটকা ফল, মুল, ডিম খাওয়াতে চেয়েছিলাম। তখন যদি শরিয়ত বুঝতাম তাহলে কি বুড়িকে তাবিজ দেবার লোভ লাগাতাম? অনেক ধন্যবাদ।
১২
229712
০২ জুন ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৮
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : লেখাটা শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। খুবই ভালো লেগেছে।
০৩ জুন ২০১৪ সকাল ১১:৪৮
176664
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
১৩
229766
০২ জুন ২০১৪ রাত ১০:০২
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : বৈরাগীর টিলার ঘটনা বেশ উপভোগ করলাম। খুব ভালো লাগলো।
০৩ জুন ২০১৪ সকাল ১১:৪৯
176665
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন এবং সাথে থাকুন।
১৪
232404
০৮ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:০০
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : পুস্পিতা লিখেছেন : এখন তো মুসলমানরাও মাঝারের নামে সেই ধরনের ভোগ নিচ্ছে। তবে মাঝারের মালিকরা তা খেয়ে নিচ্ছে। খেতে তাদের ভয় নেই!
০৮ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:১৩
179125
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : একেবারে সত্যি কথা, এখন মাজার বাদ দিয়ে দলীয় মাস্তানেরা যা করে তা আরো জঘন্য ও নির্মম। ধন্যবাদ।
১৫
232732
০৯ জুন ২০১৪ দুপুর ১২:৫৪
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আমার নানার বাড়ী ডুলাহাজারা বৈরাগীর খীল, কেন এই নামকরণ তা জানা নেই। তবে হ্যা আপনার টা আর আমার টা আলাদা। চমৎকার লিখা। অনেক ভাল লেগেছে। ধন্যবাদ।
০৯ জুন ২০১৪ দুপুর ০১:০৮
179422
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার নানার দেশের সাথে একটা মিলতো হল, সেটা হল বৈরাগী। ভাল লাগার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১৬
238526
২৪ জুন ২০১৪ রাত ১১:৩৩
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ব্যপক মজা নিয়ে পড়লাম,সত্যিই দারন লাগল
২৫ জুন ২০১৪ সকাল ১১:১৯
185119
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
১৭
266209
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৪১
আফরা লিখেছেন : অনেক মজার কাহীনি ।
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৫৫
209964
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File