রাসুলের ভালবাসায় আজ পীর, গাউস, কুতুব, সুফিরা কোথায়?

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:১৯:০৮ দুপুর

রাসুলের (সাঃ) প্রতি অবমাননাকর লিখা ও মন্তব্যের প্রতিবাদে আজকে হরতাল পালিত হচ্ছে। ইতিমধ্যে কয়েকজন নিহত হয়েছে, অনেকে গ্রেফতার বরণ করেছে অগণিত প্রতিবাদ কারী আহত হয়েছে! যারা রাসুলের প্রতি সম্মান দেখানোর কোন গরজ-বোধ করে না, তারা লাটি মিছিল নিয়ে রাস্তায় বেড়িয়েছে। পুলিশ বিনা উস্কানিকে অনেক জায়গার গায়ে পড়ে হরতাল আহবান কারীদের আক্রমণ করতে গিয়ে, মানুষের ইমানী সেন্টিমেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। তারপরও রাস্তায় উপস্থিত সকল মানুষের উপস্থিতি,আচরণ, চেহারা, তাদের প্রতিবাদ, প্রতিরোধ এর মাধ্যমে বুঝতে পারছি কে রাসুলকে (সাঃ) ভালবাসে কে ভালবাসার গুরুত্ব অনুধাবন করেনা। তাদের সকলের কর্মকাণ্ড পরিষ্কার!

তবে বাংলাদেশের সেই সব সুন্নিরা কোথায়? যারা ১২ ই রবিউল আউয়াল এলে, মাথায় সবুজ পাগড়ী আর হাতে তিন কোণা পতাকা নিয়ে রাস্তায় নামে। বিশাল মিছিল, র‌্যালী ও জুলুস নিয়ে রাসুলের ভালবাসায় রাস্তা গরম করে! অকাতরে গরু-মহিষ জবাই করে উদর পূর্তি করে খায়! আর দাঁতে খিলাল করে রাসুলের ভালবাসার গোশত হজমের ঢেঁকুর তুলে! এরা নিজেদের সুন্নি প্রমাণ করতে ওহাবী/মওদূদী সহ যাবতীয় বিরোধী মতাদর্শকে হত্যা করে গাজি উপাধি ধারণ করতেও পিছপা হয়না। তবে আজকের এই কঠিন দিনে সেসব মতলবি সুন্নিদের রাস্তায় দেখা তো দূরের কথা, এঁরা বাংলাদেশে বেঁচে আছে কিনা সেটাই বুঝা যাচ্ছেনা।

কেয়ামতের দিন রাসুলের সুপারিশ নিয়েই বেহেশতে যেতে হবে, বিকল্প কোন রাস্তা নাই। সেই রাসুলের প্রতি এত ঘৃণা বাক্য বর্ষিত হয়েছে! অন্তরে তিল পরিমাণ ইমান সম্পন্ন মানুষ সহ্য করতে পারবে না, পারে না। আলেমদের সাথে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে। বিলাত থেকে মানুষ ছুটে এসেছে। মাহমুদুর রহমানের মত আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত মানুষ, জীবন বাজী রেখে, একাই এক লক্ষ মুজাহিদের মত লড়ে যাচ্ছে। ঠিক সেই সময়ে মৌসুমি পীর বলে খ্যাত এসব নবী প্রেমিকদের মুখে ‘স্কচ টেপ’ কে পরিয়ে দিল বুঝা যাচ্ছেনা! হাজার-লক্ষ মুরিদ সম্পন্ন এসব পীর, সুফি, গাউস, কুতুব, ওলী, জিন্দা ওলী, বোবা-ওলী, মুজাদ্দেদে জামানেরা এখনও কবরে মশা-মাছি বিতাড়নে ব্যস্ত!

আল্লাহ বলেছেন, ইমানের তিনটি স্তর:

১. অন্তরে ঘৃণা করা

২. মুখে প্রতিবাদ করা

৩. হাতে বাধা প্রদান করা।

তবে অন্তরে ঘৃণা হল ইমানের সর্বনিম্ন স্তর। এর পরও কথা থেকে যায়, অন্তরে যে ঘৃণা করা হয়েছে তার সাক্ষী, সাবুদ, প্রমাণ আচরণে দেখিয়ে দিতে হয়।

আর সর্বোত্তম জিহাদ হল ‘অত্যাচারী শাসকের মুখের উপর ন্যায়ের কথা বলা’। এসব পীরের এই চারটি পর্যায়ের একটিতেও উপস্থিত নাই। ফলে তাদের অগণিত মুরিদেরা দ্বিধা-ধন্দের দোলাচলে আছেন। আল্লাহর রাসুল বিরোধী কর্মকাণ্ডে তারা না বাধা প্রদান করছেন! না প্রতিবাদ করছেন! না ঘৃণা করছেন! না অনুসারীদের সচেতন করছেন! না পত্র পত্রিকায় বিবৃতি দিচ্ছেন! না একটা মিছিল করছেন! না বুলন্দ আওয়াজে শাসকের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলছে! না এর কোনটাই না করে বিপক্ষে গিয়ে ভূমিকা রাখছে! ধর্মের আড়ালে এসব কার্যকলাপ কে প্রকাশ্য ভণ্ডামি না বলে উপায় কি? এরাই আবার মুরিদদের পরামর্শ দেন নবী প্রেমী হতে। উপদেশ দেন রাসুল (সাঃ) প্রেমিক হবার জন্য বছরের বিশেষ দিনে গোশত খেতে, প্রাণী উৎসর্গ করতে, হুজুরের দরবারে অর্থ মানত করতে ও সপ্তাহান্তে মসজিদে দাঁড়িয়ে সুরেলা কন্ঠে, কবিতার সুরে সালাম দিতে।

পুরো বাংলাদেশে এসব চিহ্নিত পীরদের আনাগোনা আছে তবে চট্টগ্রাম ও সিলেটে এসব নবী প্রেমীদের ছড়াছড়ি অনেক বেশী। সে সব দল ও গোষ্ঠীর কয়েকটির নাম উল্লেখ করলাম।

১. ইসলামী ছাত্র সেনা

২. খতমে গাউছিয়া

৩. আঞ্জুমানে খোদ্দামুল মুসলেমিন

৪. তরিকত ফেডারেশন

৫. মুনীরিয়া যুব তাবলীগ

৬. আঞ্জুমানে রাহমানীয়া

৭. ইসলামী ফ্রন্ট

সহ আরো অনেক দল............ সকল পীর খারাপ এমন দাবী করছি না। মূল কথা হল দাবী অনুযায়ী কাজ বা আমল দেখা যাচ্ছে না। এমন অনেক পীর আছেন যাঁরা মুরিদদের কে নিয়ে রাস্তায় নেমেছেন ও প্রতিবাদ করছেন।

আমার প্রিয়তম রাসুলের বিরুদ্ধে এসব কথা লিখার জন্য আমি প্রতিবাদ করছি। যদি দেশে থাকতাম. ঈমানী তাগিদে নিজের প্রয়োজনে, অন্য হাজারো মানুষের মত আমিও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করতাম। রাসুলের ভালবাসা ও মর্যাদা রক্ষায় আমার মত নগণ্য ব্যক্তির জীবন বারে বারে উৎসর্গ করায় গৌরব জনক মনে করতাম..............।

বিষয়: বিবিধ

২৮৪১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File