বিপদের অবসান ও ভুতের রহস্য উন্মোচন! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-১৬ (রোমাঞ্চকর কাহিনী)
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ০৫ মে, ২০১৪, ০৫:৫৮:০৭ বিকাল
আবদুল্লাহকে ডাক দিলাম, সে দৌড়ে এসে আমাকে ধরে ফেলল, ভয়ে আতঙ্কে কাঁপছে! আমি নিশ্চিত হতে চাইলাম সে মানুষ নাকি জ্বিন-ভুত! নিশ্চিত হলাম সে আপাতত মানুষই! আমি কোন হিসেব মিলাতে পারছিলাম না, কিভাবে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গেল! জলদি কাপড় বদলিয়ে, ধুপ ধাপ ঝোপের দিকে তাকালাম! তারপর দুজনেই কান্নারত দ্বিতীয় ভুতের কাছে গেলাম! মহিলা মাটিতে বসে বসে গালাগালি করছিল! ওড়ে পোড়া কপাল, তোরা জাহান্নামে যা, তোরা মরে যা। রাত বিরাতে কত চলছি কোনদিন বিপদে পড়িনি, তোদের কারণে আজ ভুতের আগুনে পুড়ে গেলাম রে.....। ততক্ষণে বাজার মসজিদে ফজরের আজান শুরু হয়েছে। আবদুল্লাহ ততোধিক উত্তেজিত হয়ে বলে, তোমার মরা উচিত ছিল, তোমাকে কে বলেছে আমাদের পিছনে পিছনে এখানে আসতে? তুমি আসলেই ‘কুনুডি’ মহিলা।
এত বিলাপের মাঝেও বাদশার মা বলে চলছিল তোরা এখানে কেন এসেছিলি?
আমি গোস্বায় ধৈর্য হারিয়ে বললাম, ‘মাছ ধরতে এসেছিলাম’।
পোড়া কপাল! মাছ ধরতে নদীতে না গিয়ে, চিতায় কেন মরতে এলি? আমি এসব সবাইকে বলে দিব! ইত্যাদি....
জীবনের এই বেলায় এসে চিন্তায় অস্থির হয়ে যাই। বাস্তব জীবনে এসে সিরিয়াস ঝুঁকি নিতে অনেক ভয় লাগে। ঝুঁকি নেবার আগে পরিণতি কি হবে তা নিয়ে আগে ভাবতে বসে কোন কাজেই হাত বাড়ানো যায়না। কৃতিত্ব বান আমার এক বন্ধু একদা আমাকে বললেন, ‘নেতি বাচক চিন্তা করে কোন কাজে না আগানোর চেয়ে, ইতি বাচক চিন্তা করে কিছুটা এগিয়ে যাওয়া অনেক উত্তম’। এতে দক্ষতা বাড়ে, আগ্রহ বাড়ে, ইচ্ছাশক্তি মজবুত হয়, চাহিদা বাড়ার কারণে হাত দেওয়া কাজটি দুর্বল ভাবে শুরু হলেও, ইতিবাচক চিন্তার প্রভাবে সেটিই হতে পারে জীবনকে মোড় ঘুরিয়ে দেবার মুল বস্তু। বন্ধুটি বাস্তব জীবনে তা করিয়ে দেখিয়েছেন! আমি তার সাক্ষী ছিলাম! পাশাপাশি বসে জীবন শুরু করা, একজন দৃঢ় প্রত্যয়ী প্রতিভা কিভাবে শূন্য থেকে কোটিতে পৌঁছে যেতে পারে, তা আমি ভাল করে দেখেছি।
যে সিদ্ধান্তটি নিতে এখন দশ বার ভাবতে হয়, কৈশোর বয়সে সে সিদ্ধান্ত নিতে একবার ভাবলেও যথেষ্ট বলে মনে হত। দ্বিতীয়বার চিন্তা করার প্রয়োজনও মনে হতো না। সেই কৈশোর বয়সে কারো পরামর্শ ছাড়া শুধু নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে এমন সব ভয়ঙ্কর ও লোমহর্ষক কাজে পা বাড়িয়েছিলাম, আজকে আমি নিজেকে প্রশ্ন করেও তার সদুত্তর পেতে ব্যর্থ হই!
পত্রিকায় পড়েছিলাম, স্বাধীনতার অব্যবহিত কাল আগে কিংবা পরে বৃহত্তর কুমিল্লায়, গুলি ভরা বন্ধুক নিয়ে এক বন্ধু শ্মশানে ভুত দেখতে গিয়েছিল। বটগাছ থেকে ভূত যখন নামছিল, তখন বন্ধুক ধারী বন্ধু ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে গুলি করে বসে! পর পর কয়েকবার গুলি করার পরও যখন ভূত মরছিল না, তখন কোমরে লুকানো ছুরি দিয়ে ভুতের হৃৎপিণ্ড বরাবর ঢুকিয়ে দেয়। প্রচুর রক্তপাত হয়ে এক ভুত ঘটনাস্থলেই মারা যায়, আরেক ভুত মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়! মূলত এরা তিন জন ছিল বন্ধু। কৌশলে বন্দুকের কার্তুজ থেকে গুলি বের করে তাকে পাঠানো হয়েছিল শ্মশানে! শ্মশানে গমনকারী বন্ধু, অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য বন্দুকের সাথে যে একটি ছুরিও সাথে নিয়েছিল অন্য বন্ধুরা তা জানত না। ফলে যা হবার তাই হয়েছিল। একজন নিহত, একজন আহত, গুলি ছোড়া বন্ধুটি পাগল, অন্যায্য ব্যবহারে সায় দেয়ায়, বন্ধুর বাবা তথা বন্ধুকের মালিকের হয়েছিল জেল জরিমানা। আমার কাজটিও বিপদজনক কাজের অন্যতম একটি ছিল। শ্মশানের রহস্য কি ছিল আসুন দেখে নেওয়া যাক।
আবদুল্লাহ হাফাঁচ্ছিল তার স্বর যেন কেমন হল! যাক, তার মুখেই শুনুন আমার অজান্তে সে রাত্রে কি ঘটেছিল:
আমার চোখে ঘুম আসছিল না, হঠাৎ দেখলাম তুমি অতি সন্তর্পণে ঘরের বাহির হয়ে গেলে। চিন্তা করলাম হয়ত প্রস্রাব করতে বেড়িয়েছ কিন্তু অনেকক্ষণ পরও যখন তোমার ফিরে আসার দেখা মিলল না তখন আমার কৌতূহল বেড়ে গেল। এমনিতেই আজকে তোমাকে অন্যদিনের মত উৎফুল্ল দেখাচ্ছিল না, আচরণ সন্দেহ জনক ছিল! তাই চিন্তা করলাম আস্তে করে গিয়ে দেখে আসি। যখন ঘরের বাহির হই, তোমাকে বাড়ীর বাহিরে বিলের মাঝে দেখতে পাই এবং তোমার চলার গতি বাড়ীর দিকে না হয়ে বাহিরের দিকে চলছে। অগ্র পশ্চাৎ কিছু না ভেবে তোমার মতলব বুঝা কিংবা তুমি কোথায় যাচ্ছ তা গোপনে তল্লাশি করার জন্য আমিও তোমার পিছনে লেগে যাই। প্রথমে আমার উদ্দেশ্য ছিল, তোমার গোপন মিশনের উদ্দেশ্য কি তার খোজ করা, তুমি মাঝে মধ্যে কোথায় যাও তা জেনে নেওয়া। যদি কোন বিপদে পড়ে যাই, জ্বিনের ডাক্তার হিসেবে তুমি তো আছই, তখন তুমিই আমার উপকার করবে।
পথে চোখ জ্বল জ্বল করা কিছু একটার সম্মুখীন হলাম। তোমাকে থামতে দেখলাম। আমি ভয় পেলাম, হালদা নদীর এই পাড়ের শৃগালের দল খুব ভয়ঙ্কর। তারা কাউকে একা পেলে আক্রমণ করে বসে, নির্ঘাত মৃত্যু হয় তাদের হাতে। তোমাকে ডাক দিয়েছি কিন্তু ভয়ে আমার গলা থেকে শব্দ বের হচ্ছিল না। অনেক চেষ্টা করলাম কোন মতেই শব্দ বড় হলনা। দেখলাম তোমার ভয়ে তারা পালাল, আমিও ভয়মুক্ত হলাম। তুমি খুবই দ্রুত গতিতে বাকি পথ হাটতে রইলে। আমার কৌতূহল বেড়ে গেল, আমিও গোপনে তোমাকে অনুসরণ করতে রইলাম। বাঁশ বাগানের মুখে যখন পৌঁছই তখন কি মনে করে পিছনে ফিরে তাকালাম। দেখি তুমি আমার আগেও পথ চলছ আবার পিছনেও আসছ। তখন আমার ভয় চলে আসে। কিছুক্ষণ দাঁড়ালাম চিন্তা করছি কি করব। আমি চিন্তা করছি, ঘর থেকে এভাবে বের হয়ে এতটুকু পথ চলে আসা বুদ্ধির কাজ হয়নি। অতি কৌতূহলে তোমার গোপন বিষয় জানতে গিয়ে, বাড়ীর টয়লেটে তোমাকে খোজ না করে, হনহন করে বেড়িয়ে পড়াটা নির্বুদ্ধিতার কাজ হয়েছ। ওদিকে দেখলাম বাঁশ বাগানের শেষ মাথায় গিয়ে তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করছ আর মাথার উপর হাত নেড়ে আমার দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করছ! তখন বুঝলাম আমি অজান্তেই ভুতের ট্র্যাপে পড়ে গেছি, কেননা গতকালই একজনকে ঐ শ্মশানে পোড়ানো হয়েছে। তাই যখনই ভাবছি বাসায় ফিরে যাব, তখন আমার পিছনের অনুসরণ কারীর আগের অবয়ব নাই বরং আগুন হাতে এক মেছো ভূতকে আমার দিকেই আসতে দেখি!
কি করব ভেবে পাচ্ছিলাম না, তোমাকে আবারো ডাক দিতে চাইলাম পারলাম না। ইচ্ছা হচ্ছিল কান ফাটা একটি চিৎকার মারি কিন্তু আমার গলাটা কেউ যেন আটকিয়ে রাখল। ভয়ে আতঙ্কে পিছনের দিকে এক পা দিতে গেলে, সামনে চলে যায় দুই পা। এক সময় নিজের অজান্তে, অনাগ্রহের পরও আমি এই যায়গায় হাজির হয়ে যাই। পরবর্তীতে আমার কেন জানি ধারণা ছিল ব্যক্তিটি ভুত নয়, সেটি আসলে তুমিই। তোমার কোন মন্ত্র পড়ার কারণে হয়ত আমার সাথে কথা বলতে পারছিলে না। তাই অন্ধকারে তোমার কাছে সাহায্য চেয়ে বসি, বাকী ঘটনা তো তুমি জানই।
আমার অনুসন্ধানে বাকী ঘটনাগুলো ছিল এরূপ:
আমি যেহেতু যাদু মন্ত্রের বালক হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলাম তাই কম বেশী সবাই আমার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করত। আমি কি করি, কি খাই, কোথায় যাই সকল কিছুই তাদের নজর এড়াত না। বিকেল বেলায় যেদিন, শ্মশানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে যাই, সেদিন আমি কাউকে না দেখলেও, আমাকে গোপনে অনেকেই পর্যবেক্ষণ করেছে। দূরের বাড়ী থেকেও আমাকে দেখা হয়েছে। দূরের হিন্দু বাড়ী থেকে আমাকে দেখা হয়েছে, সে হিসেবে বাদশার মা আমাকে দেখে থাকবে, কেননা বাদশার মায়ের বাড়ীর পিছন থেকে এই চিতার অংশ নজরে পড়ে। যার ফলে চিতায় পোড়ানে মৃত ব্যক্তির কোন আত্মীয় সন্ধ্যা রাত্রে এসে কলসিটি সরিয়ে রেখেছিল। তারপর দিন ভাঙ্গা কলসিটি পুনরায় সেখানে পাওয়া গেছে।
আমার বের হবার কিছুক্ষণ পরে আবদুল্লাহ যখন ঘর থেকে বের হয়, বাদশার মায়ের ও চোখে ঘুম না আসার কারণে, সে এটা টের পেয়ে যায়। তার ধারনা ছিল আমরা দু’জনই ফন্দি করে কোথায় গোপন প্রেম করার জন্য বের হয়েছি নতুবা গুরুত্বপূর্ণ কোন অজানা জিনিষ চুরি করতে বেড়িয়েছি। কবর থেকে মানুষের মাথা তুলে আনার একটি রটনা তখন আমার বিরুদ্ধে আগে থেকেই চলছিল! বাদশার মা তো এই মওকার জন্যই রাত্রে এখানে থেকেছিলেন! তাই তিনিও কাউকে কিছু না বলে অতি সন্তর্পণে আমাদের পিছু নিলেন!
আমাদের পিছনে থাকায় তাকে প্রাণীদের সম্মুখীন হতে হয়নি, তাই ভয়ে কোন আওয়াজ বের হয়নি। তিনি আমাকে দেখেন নাই, তবে যখন দেখলেন আবদুল্লাহ হালদার পাড়ে অবস্থিত কারো বাড়ীতে না ঢুকে, সোজা চলছে; তখন তিনি জলদি করে পথিমধ্যে অবস্থিত তার ঘরে ঢুকে লোটা আকৃতির কেরোসিন চেরাগে আগুন লাগিয়ে বের হয়ে পড়েন! ধুরন্ধর এই বুড়ি নির্ঘাত বুঝে ফেলেছেন যে, আমাদের লক্ষ্য কারো বাড়ী নয় শ্মশানের চিতা! কেননা গতকাল বিকেলে তিনি আমাকে কোন এক মতলবে সেখানে ঘুরতে দেখেছেন!
হালদা মিঠা পানির নদী। দুদিন আগেই প্রবল বৃষ্টি হওয়ায়, কদাচিৎ পুকুর, দিঘি, খাল, বিল উপচে পড়ে বিভিন্ন স্থানের মিঠা পানির মাছ হালদায় ঢুকে পড়ে। সে রাত্রে হুতুম হালদা থেকে একটি বড় মাছ ধরেছিল। রাত্রে বিদ্যুতের নতুন আলোর প্রভাবে নিশাচর পাখিদের চলাচলেও বিঘ্ন সৃষ্টি হয়েছিল। রাতের অন্ধকারে পুটকি বনে দাঁড়ানো অবস্থায়, হুতুম দূর থেকে আমাকে গাছের কোন গোড়ালি মনে করে থাকবে! মাছ নিয়ে যখন গাছের গোড়ালি সদৃশ আমার মাথার উপর বসতে যাবে, ঠিক তখনই সে আমাকে মানুষ হিসেবে আবিষ্কার করে কিংবা আমার নড়া চড়ায় সে ভড়কে যায়! হঠাৎ নিজেই আতঙ্কিত হয়ে চিল্লিয়ে উঠে এবং জীবন্ত মাছটি আমার সামনে ফসকে যায়। মাছের দেহে যতক্ষণ প্রাণ ছিল নড়াচড়া করেছে, পরে নিষ্প্রাণ হয়ে পড়ে। এই জিনিষটি আমাকে সবচেয়ে বেশী আতঙ্কিত করেছিল, এখান থেকে কাপড় বদলিয়ে যাবার সময় নিশ্চিত হতে গিয়ে দেখি, বড় আকৃতির একটি কার্ফু মাছ সেখানে পড়ে আছে! অবশেষে এটি বাদশার মায়ের ঘরে যায়।
ঐতিহাসিক আতশ বাজিই ছিল সে রাত্রের সবচেয়ে বড় মজাদার ঘটনা! আমাদের এলাকাতে বাদুরের অত্যাচার অসহনীয় পর্যায়ে ছিল। ঠিক সন্ধ্যায় দলে দলে বাদুর খাদ্যান্বেষনে বের হত, সকাল হবার আগেই বাসায় ফিরত। সেদিনই বাজারে নতুন বিদ্যুৎ এসেছিল, বিদ্যুতের তারে বাতি লাগানো হয়েছিল এবং বিদ্যুতের তার গুলো খোলা প্রকৃতির ছিল। বাজারে খাম্বার বাতির কারণে হউক কিংবা চলার পথে তারের উপস্থিতি না দেখার কারণে হউক বাসায় ফেরত বাদুর খাম্বার তারে জড়িয়ে পড়তে লাগল! আর তখনই বিকট শব্দে হাই ভোল্টেজের স্পার্ক করে উঠল। স্পার্কের কারণে বিরাট এলাকা আলোকিত হতে দেখা গেল। বাদুরের কথা না হয় বাদ দিলাম। আমারা তিন জন মানুষও এভাবে বিদ্যুতের স্পার্ক ও সাথে সাথে শব্দ তৈরি হওয়ার সাথে পরিচিত ছিলাম না। এই ধরনের ঘটনা আমাদের জন্যও প্রথম ছিল!
বাদশার মায়ের কল্যাণে এই ঘটনা আর গোপন থাকেনি। তিনি নিজের খেয়ে আমার বদনামি করতে গিয়ে ঘরে ঘরে সংবাদ পৌঁছিয়েছেন যে, শ্মশান থেকেও আমি ঝেঁটিয়ে ভুত দূর করেছি। এমনকি শ্মশানে যেখানে মাছ পাওয়া যাবার কথা নয়, সেই মৃত শ্মশান থেকেও মেছো ভুতের মুখ মাছ কেড়ে নিয়েছি! তিনিই জলজ্যান্ত ঘটনার সাক্ষী! এর সাথে হাবিজাবি যা তার দৃষ্টিতে ভ্রম হয়েছে তার সাথে জোড়াতালি দিয়ে আমাকে এমন এক পর্যায়ে দাড় করিয়েছে যে, মুসলিম কবরস্থানের জ্বিন আর হিন্দু শ্মশানের ভুত সবাই আমাকে ওস্তাদ মানতে বাধ্য! ফলে আমার কর্মদক্ষতার কথা মুসলিম ও হিন্দু সমাজে সমানভাবে আলোচিত হয়ে উঠল! যার কারণে আমার এলাকায় অবস্থান করাটা বিপদজনক পর্যায়ে চলে গেল।
স্কুলে যাওয়া বন্ধ হল, লেখা পড়া লাটে উঠল। বাবা কঠোর ভাষায় বলে দিলেন, কোন ব্যক্তির সাথে কথা নয়, বাড়ি তো দূরের কথা ঘরের বাহিরেও যেন না যাই। এতে দুই একদিন ঝামেলা বিহীন কাটল অতঃপর মানুষেরা বাড়িতে আসা শুরু করল। সাধারণ মানুষকে চলে যেতে বললে তারা বাড়ীর বাহিরে পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সেখান থেকে চলে যেতে বললে তর্ক করে। পরিচিত আত্মীয় ও সম্মানী মানুষ যারা আমাদের বাড়ীতে এমনিতেই গ্রহণযোগ্য ছিলেন; তাদের কিভাবে উপেক্ষা করা যায়! বাবা, সবাইকে আন্তরিকতার সাথে বুঝাতেন কিন্তু তারা বুঝতে চাইত না। তাদের কথা হল আপনার সন্তানকে আল্লাহ একটি বিদ্যা দিয়েছে, এই বিদ্যা দিয়ে মানুষের উপকার করানো আপনার দায়িত্ব। আপনার সন্তান বলে, এভাবে আমাদের বাধা দিতে পারেন না। আর এই ধরনের বাধা মানতে আমরা রাজীও নই। অগত্যা বাবা গোপনে আমার স্কুল পরিবর্তন করে আমার ছোট খালাম্মার বাড়ীতে পাঠিয়ে দেন।
আগের পর্ব: অমাবস্যার কৃষ্ণ রাতে চিতায়: ভুতের মুখোমুখি! পড়তে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
পরের পর্ব: নতুন পরিমণ্ডলে বালক পীর! পড়তে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।
প্রথম পর্ব: এক পিকুলিয়ার মানুষ! (রোমাঞ্চকার কাহিনী- ভূমিকা পর্ব)
বিষয়: বিবিধ
৩১৫৩ বার পঠিত, ৬৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
প্রেসে পাঠিয়ে দিন। ভুতের গল্পের বেশ কাটতি আছে।
ধন্যবাদ।
আপনি সেই ছোট্ট বেলায় যেমন ছিলেন নাম করা ........।
বাড়ন্ত বেলায় দেখা যাচ্ছে আরো অনেক ......বড়।
বিদায় বেলা হিমুর মত করে একটি চরিত্র দাঁড় করাতে পারবেন।
প্রত্যাশার জায়গাগুলো আসলেই সংকির্ণ। তবে স্বপ্ন দেখার অধিকার আছে।
পারবেন তো। শুধু ঐটাই করা -- আমার,আপনার,আমাদের জন্য।
উপন্যসিক .............টিপু।
চেরাগ ভুতটা বাদশার মা বুঝলাম।
ধন্যবাদ
কিন্তু আমার কানে সেদিন ধুমধাম চটকানা পড়েছিলো । এখনও সেই ঘটনা মনে পড়লে মনটা আনন্দে ভরে যায়।
যদিও কিছুটা ব্যাথা এখনও লাগে। আপনার গল্পটি পড়ে সেই ঘটনাটি মনে পড়ে গেলো।
আমি নিজে কতো ভুতের ভয় দেখিয়েছি
একবার গল্পশুনেই একটা ছেলের জ্বর চলে এসেছিলো।
এই পর্বটিতে ভুতের দিকটার থেকে এই বিষয়টি মাথায় ঘুড়পাক খাচ্ছে নেতি বাচক চিন্তা করে কোন কাজে না আগানোর চেয়ে, ইতি বাচক চিন্তা করে কিছুটা এগিয়ে যাওয়া অনেক উত্তম’। এতে দক্ষতা বাড়ে, আগ্রহ বাড়ে, ইচ্ছাশক্তি মজবুত হয়, চাহিদা বাড়ার কারণে হাত দেওয়া কাজটি দুর্বল ভাবে শুরু হলেও, ইতিবাচক চিন্তার প্রভাবে সেটিই হতে পারে জীবনকে মোড় ঘুরিয়ে দেবার মুল বস্তু। বন্ধুটি বাস্তব জীবনে তা করিয়ে দেখিয়েছেন! আমি তার সাক্ষী ছিলাম! পাশাপাশি বসে জীবন শুরু করা, একজন দৃঢ় প্রত্যয়ী প্রতিভা কিভাবে শূন্য থেকে কোটিতে পৌঁছে যেতে পারে, তা আমি ভাল করে দেখেছি।
যে সিদ্ধান্তটি নিতে এখন দশ বার ভাবতে হয়, কৈশোর বয়সে সে সিদ্ধান্ত নিতে একবার ভাবলেও যথেষ্ট বলে মনে হত। দ্বিতীয়বার চিন্তা করার প্রয়োজনও মনে হতো না। সেই কৈশোর বয়সে কারো পরামর্শ ছাড়া শুধু নিজে নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে এমন সব ভয়ঙ্কর ও লোমহর্ষক কাজে পা বাড়িয়েছিলাম, আজকে আমি নিজেকে প্রশ্ন করেও তার সদুত্তর পেতে ব্যর্থ হই!
আলহামদুলিল্লাহ আজকে পরিতৃপ্ত রাতটি শেষ করে।
জনাব ঐ রাতের পড়ে আপনাদের তিনজনের কারো কি জ্বর হয়েছিলো? না হলে আশ্চর্য্য হবো(!)
আপনার সিরিজটি নিয়ে বই বের হবে আশা করি।
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ রহস্য ভেদ করার জন্য।
পড়ের পর্ব পড়ার আকাংক্ষা পেশ করছি।
চলতেই থাকুক..................................
তবে পির এর ব্যবসাটা ভালই জমতো মনে হয়। একেবারে জ্বিন ভুত দুইটাতেই স্পেশালিষ্ট।
@টিপু ভাইয়া।
উপরের কমেন্টে (১১) আরেকটি টুপির কাহীনি, (১২) মুরিদের মাজারে ওরস এই গুলো আমাদের জানা জাতীয় দাবী।
খালার বাড়ী যাবার পর আর কী কী হলো, তা জানার আগ্রহ নিয়ে বসে রইলাম ....
জাতীয়/ব্লগীয় দাবি।
উৎসাহ ব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য আনন্দিত,
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
আপনাকে ধন্যবাদ ভুতের কাহীনি সোনানোর জন্য। পরের কাহীনির অপেক্ষায়...
আবু জারীর ভাইয়ের সাথে আমি একমত। আপনি এই লেখাটিকে ছাপালে ভাল হবে বলে আমার বিশ্বাষ। সাথে যদি জ্বিন ভূতের ব্যাপারে ইসলামের প্রকৃত কথাগুলোকে দক্ষতার সাথে তুলে ধরতে পারেন তাহলেতো সোনাই সোহাগা- রোমাঞ্চকরও হলো, আবার শিক্ষণীয়ও হলো। বাম লেখকরাতো এমনটিই করে। গল্প লেখে ৫২ সম্পর্কে, কিন্তু সাথে টেনি নিয়ে আসে ৭১ এবং রাজাকারদের। আমি যদিও বুঝতে পারি না তারা ৫২'র সাথে রাজাকার পেল কোথায়। কিন্তু যাদেরকে তারা বুঝাতে চায় তারা মনে হয় ঠিকই বুঝতে পারে যে, ৭১ এর প্রেতাত্মাদের ৫২ এর সাথেও সম্পর্ক রয়েছে।
কিন্তু আপনি যদি ইসলামের আলোকে বাস্তবতাটাকে তুলে ধরেন তাহলে অবশ্যই ৫২ বলতে ৭১ টানার মতো হবে না। বরং বাস্তবধর্মী হবে।
ধন্যবাদ।
অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
মন্তব্য করতে লগইন করুন