এক জ্বিনের সাক্ষাৎকার! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-১২ (রোমাঞ্চকর কাহিনী)

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ২৪ এপ্রিল, ২০১৪, ০৪:৪৪:৩৮ বিকাল



জ্বিনের সাক্ষাৎকার শুনে হয়ত জ্বিনের ছবি আছে কিনা অনেকেই ভাবতে পারেন। তাই জ্বিন সম্পর্কে একটু হালকা ধারনা থাকলে ব্যাপারটি বুঝতে সুবিধা হবে। জ্বিনকে সৃষ্টি করা হয়েছে আগুনের ‘লু’ অংশ থেকে। তারা আগুনের সৃষ্টি হলেও দুনিয়া জ্বালাতে পারে এমন প্রকৃতির আগুন নয়, তবে এই আগুন মানুষের ইচ্ছা শক্তি দখল করে, তার মনকে জালিয়ে দিতে পারে। তাদের যেহেতু মাটির তৈরি জিহ্বা নাই তাই তাদের তাদের কথার আওয়াজ মানুষ শুনতে পায়না। তাদের যেহেতু মাটির তৈরি শরীর নাই, তাই চর্মচোখে তাদের দেখা যায় না কিংবা তাদের হাঁটার শব্দ মানুষ শুনে না। মানুষের ইচ্ছাশক্তি দখল করে, সেই মানুষের মুখ দিয়েই জ্বিন নিজের কথা বলে, নিজের কাজ করে নেয়। সুতরাং জ্বিনকে কথা বলতে হলে কোন মানুষের সহযোগিতা নিয়েই তাকে কথা বলতে হয়। এই সাক্ষাৎকারটিও সে এধরনের একটি।

বাড়ী থেকে রাস্তা দিয়ে যাবার পথে, আগে থেকেই আপাদমস্তক বোরকায় ঢাকা এক মহিলা আমাকে ডাক দিল। তিনি তার পরিচয় দিলেন, আমি তাকে সহজে চিনলাম। এই মহিলার ছেলে আমারই ক্লাস মেট, ফুটবল খেলার নিত্য সঙ্গী। তিনি ভণিতা না করে অনুরোধ করলেন আজকের মধ্যেই যেন তাদের বাড়ীতে যাই। তিনি আমাকে বেশীক্ষণ আটকিয়ে রাখবেন না, তাবিজও চাইবেন না, পানি পড়াও নিবেন না। আমার কাছে কোনটাই তার প্রত্যাশা নয়, তবে তার ব্যাপারটি বুঝার জন্য আমাকে অবশ্যই তাদের বাড়ীতে যেতে হবে। পূর্ব পরিচিতির সূত্র ধরে ওনাদের বাড়ীতে গেলাম, এই বাড়ীতে বন্ধুর সাথে বহুবার এসেছি, এটা নতুন কোন ব্যাপার ছিলনা।

বাড়ীতে ঢুকতেই দেখি ঘর থেকে আমার নাম ধরে কেউ সালাম দিল, আমি উত্তর দিলাম। ঘরে ঢুকার পর মহিলা বলল তুমি ভিতরের ঘরের এই জায়গায় বস। পাশের ঘর থেকে তখনই আমাকে আবার সালাম দিল। মহিলা বললেন, এটা আমার দ্বিতীয় ছেলে, (নাম নিলাম না কেননা সে ব্যক্তি এখনও বেঁচে আছে) আমি সেই ছেলেকে খুব ভাল করে চিনি। প্রশ্ন করলাম তাকে তো অনেক দিন ধরে দেখিনি। উত্তরে মহিলা বলতে রইলেন, তার সাথে এক জ্বিন বন্ধুত্ব করেছে, তাই সে বাড়ির বাহিরে যায় না। এই কথা বাহিরে কাউকে বললে, ছেলেকে ধরে জ্বিনে মারে। আমি ছাড়া তার ঘরে ঢুকতে পারেনা, অন্যরা ঢুকতে গেলেই সজোরে গায়ের উপর কিছু ছুঁড়ে মারে। বিগত দশ দিন সে কোন খানা খায়নি, বাতাস থেকে সংগ্রহ করে কিছু একটা খায়, বর্তমানে শরীর একেবারে রুগ্ন। এই জ্বিন তার বন্ধুত্ব ছাড়তে ইচ্ছুক নয়। মা তার ছেলেকে প্রশ্ন করেছিল, জ্বিন কি চায়? তাকে সে সব দেওয়া হবে। জ্বিনটি আমাদের সাথে কথা বলতে চায়না, সেই জ্বিন শর্ত দিয়েছে যদি তুমি এসে তার সাথে কথা বল, তাহলে সে তোমার সাথে কথা বলবে ও তার দাবীর কথা জানাবে।

ছেলেকে ধরে ডাক দিলাম, সে উত্তর দিল। দীর্ঘক্ষণ ধরে অনেক প্রশ্ন করলাম, সে থেমে থেমে সে সবের উত্তর দিচ্ছিল। প্রশ্ন উত্তর হুবহু না লিখে, মুল কথাগুলো একত্র করলে জ্বিনের দাবীটি এই রকম। ‘জ্বিনের নাম হানিফ, তারা এই এলাকাতে বসবাস করে দীর্ঘ বছর ধরে। এই বাড়ির পিছনে যে দীর্ঘ স্রোতহীন পানির লেকটি বয়ে গেছে, সেখানেই তাদের আবাস। এই ছেলের বাবা-দাদা জ্বিনদের যথেষ্ট ক্ষতি করেছে, সে জন্য জ্বিনের পরিবারও তাদের ক্ষতি করতে চায়। হানিফ নামের জ্বিন ছেলেটি, মানুষের এই ছেলেটিকে খুব পছন্দ করে, তাই সে তার বন্ধুত্ব ছাড়তে চায় না। সে তার কোন ক্ষতি করবে না বরং উপকার করবে, তাকে নিরাপত্তা দিবে!

এই কথায় আমি সুযোগ গ্রহণ করলাম! প্রশ্ন করলাম তুমি কোন ধরনের উপকার করবে? সে বলল, সে যখন যা জানতে চাইবে তা বলে দিবে, তার কাছে যখন যা দরকার তা এনে দিবে, তার সাথে চলাফেরা করবে, তাকে নিরাপত্তা দিবে!

তুমি যে এসব করতে পারবে সেটা আমি কিভাবে বিশ্বাস করব? প্রশ্ন করলাম। সে উত্তর দিল তাহলে আমাকে প্রশ্ন করে দেখ, আমি উপস্থিত বুদ্ধিতে, প্রশ্ন করলাম বলতো আমার বাবা এখন কি করছে? সে আবার প্রশ্ন করল, তিনি এখন কোথায়? আমি বললাম আমাদের খামার বাড়ীতে। মুহূর্তেই উত্তর দিল, তিনি এখন ছোট্ট একটি ঘরের ভিতরে চৌকিতে শুয়ে বই দেখছে! বললাম, কিভাবে বিশ্বাস করব? সে বলল পরবর্তী সকালে ভোরে তোমাদের বাগান থেকে তোমার জন্য পেয়ারা পাঠানো হবে। পেয়ারা পাঠানোর জন্য সময় কেন নিল বুঝলাম না। আমি আবার বললাম, আরেক টি প্রশ্ন, সে এবার বেঁকে বসল। বলল আমি কোন পরীক্ষা দিতে রাজি নই। তারপরও ধরলাম, সে বলল ঠিক আছে এটাই শেষ! চিন্তা করছি কি প্রশ্ন করব তাছাড়া একটাই তো শেষ সুযোগ। হঠাৎ বুদ্ধি আসল, দুইদিন পরেই আমাদের স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা। তাবিজ পানি পড়া নিয়ে যা হয়েছে তাতে পরীক্ষায় নির্ঘাত খারাপ করব। তাই তাকে বললাম, আমাদের স্কুলের আলমারিতে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র আছে, তুমি আমার ক্লাসের প্রতিটি বিষয়ের একটি করে প্রশ্ন নিয়ে আস। সে বলল, দেখে আসি। মুহূতেই উত্তর আসল, স্কুলে একটিই আলমারি আছে, তাতে অনেকগুলো কাগজ আছে, তবে বের করার কোন রাস্তা নাই। সে নিজে চাবি ঢুকাবার ছিদ্র দিয়ে ঢুকেছে এবং বেরও হয়েছে কিন্তু সেই ছিদ্র দিয়ে তো কোন কাগজ বের করতে পারবেনা! আমি বুঝতে পারলাম তাদেরও কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

জ্বিন হানিফই বলল, তুমি তার মাকে বুঝিয়ে বল, আমি কোন ক্ষতি করব না। আমার দ্বারা তার লাভ হবে উপকার হবে। তারা চাইলে আমি চিরদিন থাকব, না চাইলে তিন মাস বন্ধুত্ব করে চলে যাব, তার বয়স যখন ২৭ বছর হবে তখন আবার ফিরে আসব।

প্রশ্ন করলাম, তুমি তো সব কথা বলেই দিচ্ছ, তাহলে আমাকে ডেকেছ কেন?

উত্তর দিল, আমি এখানে আছি বলে ঘরের সবাই ভয় পায়, চিৎকার করে। আমি চিৎকার করতে মানা করি, ভয় পেতে নিষেধ করি কিন্তু তারপরও তারা তা করে থাকে। তুমি যেহেতু এসব জান, তাই তোমার নাম বলেছি, যাতে করে এদের বুঝাতে পার!

ছেলের মাকে বললাম, আপনি তো শুনছেন কি বলছে এখন আপনিই বলুন। ইতিপূর্বে জ্বিনের সাথে যখন কথাবার্তা হচ্ছিল, তখন মা বারবার বলছিল, কোন কথা নাই, আমার ছেলেকে ছেড়ে চলে যাও। তোমাদের সাথে আমাদের বন্ধুত্বের দরকার নাই। তুমি কিছু চাইলে দিয়ে দিব, তুমি অনুগ্রহ করে আজই বিদায় হও ইত্যাদি....

এই পর্যায়ে এসে মনে হল, মায়ের মতি গতিতে পরিবর্তন এসেছ! আমি ছেলের মাকে প্রশ্ন করলাম ধমক দিব কিনা? তিনি হঠাৎ বলে বসলেন ধমকের দরকার নাই, দুটো দিন চিন্তা করে দেখি, আজ আর নয়। আমি তো তাজ্জব! চিন্তা করে কুল কিনারা পেলাম না, মা হঠাৎ করে কেন উল্টা বাঁকে মোড় নিলেন। প্রশ্ন করলাম আমি কি তাহলে যেতে পারি? তিনি চলে যেতে অনুমতি দিলেন! আশ্চর্য হলাম এবং আমি বাড়ী ত্যাগ করলাম।

পরদিন প্রত্যুষে অনেক গুলো পেয়রা নিয়ে একটি ছোট ছেলে আমাদের বাড়িতে হাজির! এসব আমাদের বাগানের তাজা পেয়ারা! তখন পেয়ারার মৌসুম ছিলনা, তবে আমাদের বাগানে এমন তিনটি গাছ ছিল, যেগুলোতে সারা বছর পেয়ারা ধরত। আমি গাছের সেই পেয়ারার বর্ণ, আকার, গন্ধ সব কিছু চিনি ও জানি। তাছাড়া বাগানটি তিন মাইল দূরে, এত স্বল্প সময়ে কেউ সেখানে গিয়ে চুরি করে পুনরায় আসা সম্ভব নয়!

বহুদিন পরে বিদেশ থেকে দেশে গেলাম, একদা শহরে প্যান্টের পকেটে ডান হাত ঢুকানো অবস্থায় আমার এক পরিচিত ব্যক্তির দেখা পেলাম। তিনি বাম হাত বাড়িয়ে আমার সাথে হ্যান্ডশেক করলেন! প্রশ্ন করলাম তোমার ডান হাতে কি হল? সে হাত খানা দেখিয়ে কেঁদে উঠল, কবজির উপর থেকে হাত খানা নাই। প্রশ্ন করলাম কি ব্যাপার, সে সংক্ষিপ্ত উত্তরে বলল, আমার মুরুব্বীদের লোভের খেসারত! আপনি যে জ্বিন কে আমার বন্ধু হিসেবে রেখে এসেছিলেন, সে জ্বিনকে দিয়ে আমার মুরুব্বীরা অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করছিল। মানুষের গলার হাঁর, সোনা দানা হারিয়ে যেত, যার বেশীর ভাগ আমার ঘরে পাওয়া যেত। একদা কিছু মানুষ আমাকে একাকী নির্জন স্থানে পেয়ে যায়, সে দিন সুযোগে পেয়ে দা দিয়ে কুপিয়ে আমার হাত খানা দ্বিখণ্ডিত করে ফেলে। ভাগ্যিস তারা আমাকে জানে মারে নি! আপনি দয়া করে কোনদিন আমার কাছে আসবেন না, আর কোন প্রশ্ন করবেন না। কেননা আপনিই সেই ব্যক্তি, যে আমার সম্পর্কে এমন অনেক কিছু জানে যা অন্য দশ জন জানেনা অর্থাৎ উপরে বর্ণিত ঘটনা গুলো।

গ্রামের বাড়ীতে এসব জানতে কয়েক জনকে প্রশ্ন করেছিলাম। একেক জন একেক ধরনের বক্তব্য রাখল, কারো সাথে কারো কথা বা ঘটনার মিল নাই। পুলিশে কেস ও হয়েছিল তারও কোন হদিস নাই। তবে আমি তো বুঝতে পেরেছিলাম, তথ্য জানার সুযোগটাই হয়ত তাকে লোভাতুর করে ফেলেছিল এবং সুযোগও হাতছাড়া করতে ছাড়ে নি। পরিণামে যা হবার তাতো তার মুখেই শুনতে পেলাম!

পুনশ্চ:

অনেক পাঠক উল্লেখ করেছেন যে, তারা জ্বিনকে বিশ্বাস করেনা! আমি নিজে জ্বিন বিশ্বাস করি, কেননা কোরআনে জ্বিন জাতি সৃষ্টি সম্পর্কে পরিষ্কার বর্ণনা আছে, আর জ্বিন করি বলেই আজকের এই লম্বা রচনা। আমি প্রশ্ন কারী সে সব বন্ধুদের উত্তরের পিছনে ঘুরতে থাকলে সময় নষ্ট হবে প্রচুর। তাই অযথা প্রশ্নবাণ এড়াতে তাদের উদ্দেশ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আজকের প্রবন্ধের সাথে যোগ করতে চাই। যাতে করে তাদের উত্তর না দিয়ে এই ঘটনাটি দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করতে পারি।

চতুর্দশ শতাব্দীতে রাজা মুকুট রায়ের রাজধানী ছিল ব্রাহ্মণ নগর। যশোর থেকে বেনাপোলের পথে ১১ কিলোমিটারে সেই ঐতিহাসিক জনপদের বর্তমান নাম ‘লাউজানি’। ব্রাহ্মণ নগরের যে স্থানে রাজপ্রাসাদ ছিল, তার বর্তমান নাম গাজীর দরগাহ। ২০০৭ সালে এখানের একটি জমিতে কুয়েত জয়েন্ট রিলিফ কমিটির অর্থানুকূল্যে আমাল কুয়েত বালিকা মাদ্রাসা ও এতিমখানা স্থাপন করা হয়। ২০ কক্ষবিশিষ্ট দোতলা এই মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রথম তলায় ক্লাসরুম এবং দ্বিতীয় তলা আবাসিক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই মাদ্রাসাটি চালুর পর পরই একদল জিন দাবি করে, যে জমির ওপর এতিমখানা স্থাপন করা হয়েছে পুরুষানুক্রমে সেই জমির মালিক তারা। তাই এতিমখানাকে এখান থেকে সরিয়ে নিতে হবে। নতুবা তারা ক্ষতি করবে। এতিমখানা কর্তৃপক্ষ প্রথম দিকে জিনদের কথায় গুরুত্ব না দিলে আলামত হিসেবে একদিন এতিমখানা চত্বরে নতুন জাতের চার-পাঁচ শ’ সাপ জড়ো হয়, যা ইতঃপূর্বে কেউ কোনো দিন দেখেনি। পরে জিন পর্যায়ক্রমে ভর করে এতিমখানার বাসিন্দা ১৪ জন বালিকার ওপর। তারা হলো- মোবাশ্বেরা, লাবনী, শম্পা, মমতাজ, রহিমা, লাকি, আনোয়ারা, মিনা, যুঁথি, সাথী, রাবেয়া, পিংকি, তানজিরা ও খাদিজা। পেটব্যথা, মাথাধরা ইত্যাদি ধরনের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিতে থাকে তাদের। এক পর্যায়ে তারা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে। তারা প্রায়ই খাওয়ার পর সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলত......... অনেক লম্বা কাহিনী।

এটি জিনের কারণেই হচ্ছে বলে এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে। বিষয়টি নিশ্চিত হতে গত ১০ অক্টোবর ২০০৯ যশোরের ডিসি একজন ডাক্তার, জেলা প্রশাসনের চারজন পদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়ে তদন্ত করেন। ওই দিনও বালিকাদের আচরণে কর্মকর্তারা হতচকিয়ে যান। এরপর এতিমখানাটি সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়। বিষয়টি উচ্চতর পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও তদন্তের জন্য গতকাল মঙ্গলবার চারজন খ্যাতনামা ডাক্তার আসেন। তারা হলেন- স্কয়ার হাসপাতালের পরিচালক প্রফেসর ডা. মানোয়ার হোসেন, জাতীয় মানসিক ইন্সটিটিউটের পরিচালক প্রফেসর ডা. এম রব্বানী এবং স্কয়ার হাসপাতালের দু’জন কনসালটেন্ট ডা. সরোয়ার আলম ও ডা. তৌহিদুজ্জামান। তাদের সাথে ছিলেন ধানমন্ডি পাকোয়া মসজিদের পেশ ইমাম মাওলানা মোঃ জুলফিকার। জেলা প্রশাসনের পক্ষে ছিলেন ডেপুটি কমিশনার মোঃ মহিবুল হক, এডিসি (শিক্ষা) সেফিনা বেগম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান প্রমুখ।

উপস্থিতিদের মধ্যে একজন মনোবিজ্ঞানী এটাকে মাস হিষ্টিরিয়া বলে মন্তব্য করেছেন। এসব কন্যারা নিজের বাড়ীতে সুস্থ থাকে এতিম খানায় অদ্ভুত আচরণ করে, তাহলে মাস-হিষ্টিরিয়া প্রকোপ শুধু এতিম খানায় আসলেই হবে। তাছাড়া এসব বালিকাদের আচরণ মাস হিষ্টিরিয়া রোগীর মত নয়। রীতিমত পুরুষের মত গালাগালি, খিস্তি খেউর, বিভিন্ন জিনিষ ছুড়ে মারা ইত্যাদি আচরণ করে। এর প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে পারেনি। পরবর্তীতে কর্তৃপক্ষ এতিম খানাটি বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়, বালিকারা তাদের পিতামাতার কাছে সুস্থ জীবন কাটাচ্ছে।


এই ঘটনাটি তখনকার সময়ে প্রায় অনেক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। আমি নিজেই অনেক সরকারী কর্মকর্তার পদবি সহ নাম উল্লেখ করেছি। আরো সুবিধার্থে তখন কার দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার তারিখ সহ কিছু শিরোনাম নিচে উল্লেখ করলাম।

'যশোরে জমি নিয়ে মানুষ-জিন বিবাদ: এতিমখানা বন্ধ'

শাহাদত হোসেন কাবিল, যশোর অফিস


দৈনিক নয়া দিগন্ত : অক্টোবর ১৩, ২০০৯

'জিনের আছর পড়া ছাত্রীরা বাড়িতে ভালো আছে: যশোর অফিস'

দৈনিক নয়া দিগন্ত : অক্টোবর ১৭, ২০০৯

‘জিনে পাওয়া’ বালিকারা ডাক্তারদের বলল, তোরা কি করতে এসেছিস? যশোর অফিস'

যশোরে জিনের আছরকৃত বালিকারা একপর্যায়ে দুর্বল হয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ে।


নয়া দিগন্ত: ২৮ শে অক্টোবর ২০০৯

আগের পর্ব: জ্বীন বৈদ্য হিসেবে এলাকায় বিব্রতকর খ্যাতী অর্জন! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-১১ (রোমাঞ্চকর কাহিনী) পড়তে চাইলে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।

প্রথম পর্ব: এক পিকুলিয়ার মানুষ! (রোমাঞ্চকার কাহিনী- ভূমিকা পর্ব)

বিষয়: বিবিধ

৫৩০৭ বার পঠিত, ৩৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

212703
২৪ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:০০
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : এক শুভাকাঙ্ক্ষী এই ক্লিপটি পাঠিয়েছে, তিনি মন্তব্য করেছেন এটা নাকি জ্বিনে আক্রান্ত কিছু বালক বালিকাদের আচরণ। জ্বিনে আক্রান্তরা এমনই শারীরিক আচরণ করে, কথাটা ঠিক। তবে আমি নিশ্চিত নই কেন এরা এমন করছে! যতক্ষন না কথা বলা যায়। এই ভিডিও নিয়ে আমার কোন মন্তব্য নাই, শুধুমাত্র পোষ্ট করেছি সত্য সন্ধানী পাঠকদের জন্য।


212716
২৪ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:২৮
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৪ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৮
161003
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ধন্যবাদ।
212722
২৪ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৪৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : জ্বিনদের ব্যবহার করে অনেকেই বিভিন্ন অনৈতিক কর্ম করেন বলে শুনেছি। তবে তাদের ক্ষমতা অসিম নয়। আমার দাদি বলতেন জ্বিনরা তাদেরকেই ভয় দেখাতে পারে যারা তাদের ভয় পায় এবং শুধু তাদের উপরই ভর করতে পারে। বাংলাদেশে অনেক পিরই আছেন যারা দাবি করেন যে তাদের নিয়ন্ত্রনে অনেক জ্বিন আছে। মাওলানা আবুল কালাম আযাদ একবার টেলিভিশনে এক প্রশ্নের জবাবে মন্তব্য করেন তাদের যদি এতই ক্ষমতা থাকে তা হলে তারা দেশে ইসলামি সরকার কায়েম করছেন না কেন জ্বিনদের সাহাজ্যে। ডিসকভারি চ্যানেল থেকে প্যারানরমাল এক্টিভিটির উপর বিভিন্ন অনুষ্ঠান দেখান হয়। এরকম একটি অনুষ্ঠানে দেখেছিলাম স্প্রেকটফটোমিটার নিয়ে গবেষক রা একটি বাসায় গিয়েছেন। সেখানে কাউকে দেখা যাচ্ছিল না কিন্তু স্প্রেকটফটোমিটার এ বিশেষ ধরনের রেডিয়েশন এর উপস্থিতি ধরা পরেছিল। আমার তখন মনে হয়েছিল আগুনের তৈরি জ্বিন দের শরির থেকে বিশেষ ধরনের রেডিয়েশন বের হওয়া সম্ভব।
চট্টগ্রামের আমবাগান এলাকায় এবং লালখান বাজারের ট্যাংকির পাহাড়ের নিচে দুটি বাড়ি আছে যেখানে জ্বিনদের হাতে মানুষ মারা গেছে বলে শুনা যায়। এই বাড়িগুলি দির্ঘদিন পরিত্যক্ত ছিল। লখান বাজারের বাড়িটি বর্তমানে স্কুল।
বিখ্যাত ইঙ্গভারতিয় শিকারি কেনেথ এন্ডারসন এর লিখায় ও এই ধরনের কিছু ঘটনার কথা পরেছি। যশোরের ঘটনাটির বিশেষ কোন রিভিউ এখনও পর্যন্ত দেখিনি।
২৪ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৫০
161004
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : বিস্তারিত মন্তব্য ও ঘটনা সংযোজনের জন্য অনেক ধন্যবাদ। সাধারণ মানুষদের জ্বিন সম্পর্কিত জ্ঞান ও ধারনাকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু মানুষ প্রচুর অর্থ কড়ি কামিয়ে নেয়। কেউ কেউ পীর সেজেও কাজ করে। অতি প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোকে সাধারণ মানুষ পীরদের কেরামতির পর্যায়ে নিয়ে যায় এবং নিজেরাই প্রতারিত হয়।
212726
২৪ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৫০
মাটিরলাঠি লিখেছেন : ঠিকই বলেছেন, কিছু লোক আছেন, যারা বলেন তারা জ্বীন বিশ্বাস করেন না, বা করলেও তারা জ্বীনধরা বিশ্বাস করেন না। কিন্তু বিষয়গুলো বাস্তব ও সত্য। অবশ্যই জ্বীনদের সীমাবদ্ধতা আছে।
২৪ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৩
161010
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অতি বিজ্ঞানী মস্তিস্ক সম্পন্ন মানুষেরাই এমনটি ভাবে। অতি জ্ঞান কোন কাজের জ্ঞান নয়, একপ্রকার বিদ্বান মুর্খ তৈরি করে মাত্র। যাদের জোড় থাকে শুধু জিহ্বায়। অনেক ধন্যবাদ।
212736
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২০
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : চাচতো মামু ছিল জ্বিনের বৈদ্য। তার নাম ছিল মহিন বৈদ্য ।৮০/৯০'র দশকে বড়তলি, নতুন পাড়া,হাটাহাজারির দিকে তাহার কদর ছিল বেশি । যদিও মামাকে আমরা বিশ্বাস যোগ্য মনে করতামনা । পাড়ার কয়েকজন পাগলকে ওনি ঠিক করেছিলেন গাছা বসিয়ে । জ্বিনকে ড়াকা হত শ্রতি মধুর গানের মাধ্যমে,পিতলের কাঁসা বাজিয়ে। জ্বিন-পরিদের মধ্য হিন্দু মুসলিম ও তাকতো।
মা'রে মগনি মোরে আয়রে আয়,
ফুলের আসন সাজায় রাক্কি মা'রে তুঁয়ারলাই ।
আয়ের'লে বিবুলা কাঁপে থর থর,
ঝার জঙ্গল ভাঙ্গি আয়ের বিবুলা সুন্দর ।

ছোটকালে গাছা বসানোর রাত্রটা আমাদের জন্য বিনোদনের রাত্র হতো।
অনেক ধন্যবাদ




২৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:১৮
161484
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার এই বিষয়টি আমি আগের পর্বে লিখেছি। এটাকে বলে হাট বসানো। গাছার বিস্তারিত কাহিনী পূর্বেই অালোচনা হয়েছে। আপনার এই মন্তব্যটি যদি সেখানে থাকত তাহলে আমার লিখার যথার্থতা পাওয়া যেত। অনেক ধন্যবাদ।
২৬ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:৪৪
161601
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : জি, ঐ লেখাগুলি সব পড়ার ইচ্ছা আছে, পড়ে একসাথে মতামত জানাব ইনশাআল্লাহ ।
212741
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৭
অনেক পথ বাকি লিখেছেন : ভালো লাগলো
২৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:১৯
161485
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
212764
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৬
শেখের পোলা লিখেছেন : ওরে বাবা, আপনিতো দারুন মানুষ৷ ভয় বলতে আপনার কিছুই নাই৷ আমি জানি জ্বীন আছে, কিন্তু তাদের সাথে কথা বলা নির্ঘাৎ হার্ট ফেল৷ অবশ্য এক সময় আমিও তাদের দেখার চেষ্টা করতাম৷ শিহরণ দিয়ে গেল এ পর্ব খানি৷
২৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
161547
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : দানবের চেয়ে মানব বহুগুনে শ্রেষ্ট। তাদের কিছু ক্ষমতা থাকলেও অনকে সীমাবদ্ধতা আছে। তাদের সম্পর্কে অনেক বিস্তারিত পড়া ও জানা ছিল বলেই কাজটি সহজে করতে পেরেছিলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
212777
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১৯
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : একজন বৈদ্য টাইপের মানুষের সাথে আলাপকালে তিনি এক পর্যায়ে বলেছিলেন জ্বিনেরা ঐ সব মানুষের আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে যাদের রাশিচক্র জ্বিনদের ফেভারিট।
আমি নিজেও বেশ কয়েকবার জ্বিনের অস্থিত্ব সম্পর্কে প্রমাণ পেয়েছি। কিন্তু আমার রাশি সম্ভবত গ্যাঞ্জাইম্যা রাশি (আমি মিন তুলা রাশি না হওয়া) হওয়ার কারণে জ্বিনের আছর আমার উপর তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি।
২৪ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:০০
161084
গ্যাঞ্জাম খানের খোলা চিঠি লিখেছেন : আশির দশকের মাঝমাঝি সময়ে কথা- আমার ইমিডিয়েট বড় ভাই যিনি বর্তমানে সৌদিয়া প্রবাসী। সম্ভবত ৮৩ অথবা ৮৪ সালের রমজান মাসের কোন এক সন্ধ্যার পরবর্তী সময়ে তারাবি নামাজের একটু পূর্বের সময়কার অবস্থা হবে। আমাদের বাড়ীর প্রতিবেশী ঘরের একজন বয়স্ক ব্যক্তি যিনি দূর সম্পর্কে আমাদের নানা হয়। সারাদিন রোজা রেখে ইফতারীর সময় হয়তো একটু অতিরিক্ত লোড করেছিলেন। যার ফলে নিম্ম চাপের সৃষ্টি হয়েছিল নানার। বাড়ীর সীমানার সাথে লাগোয়া বাঁশ ঝাড়ের ভিতর গিয়েই নানা ভাই কাজটা সাড়তে বসেছিল। তার পড়নে ছিল সাদা জামা। আমার বড় ভাইয়া মাগরিবের নামাজের পর রোজাদারদের সাথে আড্ডা শেষ করে মসজিদ থেকে বাড়ীতে ফেরার পথে হঠাৎ দেখতে পেলেন দূর থেকে বাশঁ ঝাড়ের ভিতর হালকা অন্ধকারের মধ্যে মাঠি থেকে দেড় হাত শুন্যতে সাদা আল কেল্লাপড়া মনুষ্য আকৃতির কেউ নড়ছড়া করছে। সদ্য মেট্রিক পরীক্ষা দেয়া আমার বড় ভাইয়া ভয়ে নিজের অজান্তেই চিল্লাচিল্লি করে এক দৌড়ে সোজা ঘরে এসে হাফাতে হাফাতে আমাকে বলতে লাগলেন- গ্যাঞ্জাম! আমি অহন জ্বিন দেখেছি, জ্বিন!!! সম্ভবত ঐটা কোন পীর আওলিয়া হবে জ্বিনের "চন্না" ধরে বাশ ঝাড়ের ভিতর এবাদত করতেছে! দেখতে চাইলে এক্কুনেই আমার সাথে চল! এখনো আছে বাশ ঝাড়ের ভিতর! বড় ভাইয়ার সাথে দু'জনে হাত ধরাধরি করে আয়াতুল কুরসি পড়তে পড়তে দূর থেকে বাশঁ ঝাদের দিকে খেয়াল করলাম। ওমা! একি!! এতো আমরা দু'ভাইয়ের দিকেই তেড়ে আসছে! (সম্ভবত ততক্ষণে নানার পাকৃতিক কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে পুকুরের ঘাটের দিকে আসছে পশ্চাতের নাপাীঁ পরিস্কার করার জন্য) এদিকে আমরা দু'ভাই তো হৈ চৈ করতে করতে ঘরের দিকেই ভোঁ দৌড়। আমাদের চিল্লা চিল্লী এবং জ্বিন-আওলিয়া দেখার দাবী করার কারগে গোটা পাড়ার লোকজন জড়ো হয়ে বাশ ঝাড় সরেজমিনে পরিদর্শন করে কিছুই দেখতে না পেয়ে কেউ কেউ হতাশ হলেও গুজবপ্রিয় মানুষগুলো বলাবলি শুরু করে দিলেন বিভিন্ন ধরনের উদ্ভট কাহিনী। অনেক্ষণ পর গ্যাঞ্জাম শেষ হয়ে যাওয়ার পর প্রায় রাত এগারটার সময় সেই নানা সাহেব আমার মা'র কাছে এই বলে অভিযোগ দিলেন- তোমার দুই দুষ্ট পোলার কারণে আমি ভালভাবে মল ত্যাগও করতে পারলাম না। আমাদের চেচামেচির কারনে নানার কাপড়েও নাকি সামান্য গু লেগেছিল। কিন্তু তিনিই যে সেই জ্বিন-আউলিয়া বাবাজি! সে কথা গোপন রাখলেন। অনেকদিন পর একই ভাবে আমরা তাকে দ্বিতীয়বার আবিস্কার করার ফলে প্রথমবারের ঘটনাটিও স্বীকার করলেন।
২৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:২১
161486
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সুন্দর আরেকটি ঘটনা এই পর্বে তুলে ধরার জন্য অনেক ধন্যবাদ। পাঠকেরা উপকৃত হবে আপনার এই দীর্ঘ মন্তব্যের কারণে। আমিও মজা পেলাম অদ্ভুত ও হাস্যকর ঘটনায়।
212791
২৪ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩১
শাহীন সিদ্দিকী লিখেছেন : সব পর্বগুলো পড়ার জন্য সময় খুঁজছি। আপনার অভিজ্ঞতার ঝুড়ি বেশHappy
২৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:২২
161487
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক অনেক ধন্যবাদ, সময় করে পড়ুন, এই সব সত্য ও বাস্তব ঘটনা।
১০
212836
২৪ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:৩২
আহমদ মুসা লিখেছেন : আমার ব্যক্তিগত কিছু বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে জ্বিন সম্পর্কে। এখনো এক বছর পার হয়ে যায়নি। আমাদের পাড়ার মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী এক পরিবারের নতুন তৈরী বাড়ীতে নিজ চোখেই দেখলাম এক অদ্ভুত কান্ড! তাদের বাড়ীটা তৈরী করা হয়েছিল পুরাতন একটি ঝাড়জঙ্গল টাইপের পরিত্যক্ত ময়লাযুক্ত পুকুর ভরাট করে। বিভিন্ন ভয়ানক ও কাল্পনিক জনশ্রুতির কারণে আমরা শৈশবে সে এলাকাটিতে কখনো খেলতে যেতাম না। বর্তমানে জমির দাম বেড়ে যাওয়া এবং গন বসতির কারণে কোন জমি পরিত্যাক্ত হিসেবে নেই। আলোচ্য কুপুরটিকেও ভরাট করে তার উপর তিনতলা বিশিষ্ট বাড়ী করেছে। গত বছরের ঘটনা। হঠাৎ একদিন উক্ত ঘরের সমস্ত আসবাবপত্র মানুষের বাহ্যিক বল প্রয়োগ ছাড়া এক স্থান থেকে অন্য স্থানে চলে যাচ্ছে, পানি রাখার কলসির পানি ঘরের মধ্যে মানুষের সামনেই অদৃশ্য কেউ পানি ঢেলে দিচ্ছে, আলনার কাপড় চোপড়গুলো সারা ঘরেই অগোছালো করে রাখা হচ্ছে, টিনের ছাদ দেয়া পাকঘরের উপর মানুষের কেউ ঢিল চুড়ছে না অথচ ঝন ঝন আওয়াজ হতে নিজ কানে শুনলাম! উক্ত ঘড়টিতে প্রায় চার দিন ধরে এসব তান্ডবলীলা চলতে থাকলো। পাড়া প্রতিবেশীরা এসে এই আজব কান্ড দেখে অভাগ হয়ে যাচ্ছে! অবশ্য গ্রামের সাধারণ মানুষ জ্বিন ভুত প্রেত তত্বে বিশ্বাসী হওয়ার কারণে সবাই এটাকে জ্বিনের আছড় বলে বলাবলি শুরু করলেন।
পটিয়া মাদ্রাসার একজন নাম করা মুফতি সাহেব (তিনি এখনো বেচে আছেন তাই ওনার নাম বলছি না) থেকে এসব সমস্যার সমাধান জানতে চাইলে তিনি পুরো বাড়ীটি 'বন' করাতে পরামর্শ দিলেন। যে বৈদ্য ঘরটি 'বন' করালেন তাকে আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম আসল ঘটনা কি? উত্তরে তিনি বললেন এলাকটি নাকি এক সময়ে জ্বিনদের আবাস স্থল ছিল। তাদের এলাকাটিতে হঠাৎ মানুষ্য জাতি বাড়ী তৈরী করাতে এই প্রতিবাদী পতিক্রিয়া দেখিয়েছে। আরো মজার বিষয় হচ্ছে ওখানে নাকি একজন জ্বিনও ঈমানদার ছিল না। সবাই অমুসলিম ও অসৎ চরিত্রের জ্বিন ছিল।
এখানে কাকতালীয়ভাবে একটা বিষয় আমি খেয়াল করেছি পরিত্যাক্ত পুকুরটি ওয়ারিশান সূত্রে যারা ভোগ করে আসছে তাদের বংশের প্রত্যেক জেনারেশনে দু'চার জন মানুষ পাগল ছিল এবং এখনো কয়েকজন ভবঘুরে ভারসাম্যহীন আছে।
২৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:২৫
161488
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার পুরো মন্তব্যটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বস্তুত আপনার এই মন্তব্যে অনেক সত্য বের হয়ে এসেছে। এই ধরনের বহু ঘটনার আমি নিজেই সাক্ষ্যি। বাস্তবধর্মী মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১১
212947
২৫ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:৪৫
কেলিফোরনিয়া লিখেছেন :
আপনার তথ্য সমৃদ্ধ লিখা গুলো খুব ভালো লাগে।
২৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:২৫
161489
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
১২
212992
২৫ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৭:৪০
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : জ্বিনদের অস্তিত্ব অস্বীকার করার কোন কারণ নেই, আবার তাদের সাথে বন্ধুত্ব বা শত্রুতা করারও কোন প্রয়োজন নেই। তাদেরকে তাদের মত থাকতে দিয়ে আমরা আমাদের মত থাকাই এই সম্পর্কের দাবী। মূলত তারা আমাদের ভয় পায়, আমাদের লোভ এবং অনৈতিকতাই তাদের শক্তির উৎস। এটা বুঝতে পারলে আর কেউ তাদের শিকার হতনা। আপনার বর্ণিত মা'টির অনৈতিকতায় খুব দুঃখ পেলাম, এর পরিণাম বহন করতে হোল তার ছেলেটিকে।
সিরজটি শেয়ার করে বেশ কিছু জিনিস স্পষ্ট করে দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আশা করি এর মাধ্যমে আমাদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন মন জ্ঞানের আলো খুঁজে পাবে।
২৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:৩১
161490
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার সুন্দর ও বিশ্লেষণধর্মী মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। জ্বিনদের ব্যবহার করে অনৈতিক কাজ করার কারণে চট্টগ্রামে এক পীর সাহেবকে টয়লেটের মলের মধ্যে চুবিয়ে হত্যা করা হয়। আশ্চর্য ব্যাপার হল, মলের মধ্যে পীরের প্রাণ হারানোর মত করুন পরিনতি দেখার পরও অনুসারীদের মাথার চিন্তায় ভাবাবেগ তৈরি হয়নি! হাজার হাজার মানুষ সেই পীরের মাজার তাওয়াফ করে, মাথা মুন্ডন করে! আবরো ধন্যবাদ।
২৭ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৪:০৪
162013
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : আল্লাহ আমাদের হিদায়াহ দিন Praying Praying
১৩
213328
২৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৬:৩১
মদীনার আলো লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৩৭
161548
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
১৪
213454
২৬ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০১:৪১
প্রেসিডেন্ট লিখেছেন : রুদ্ধশ্বাস কাহিনী! অনেক কিছু জানলাম। পরের পর্বের অপেক্ষায়.........
২৬ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:১১
161617
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, অপেক্ষায় থাকুন।
১৫
214765
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:২১
নেহায়েৎ লিখেছেন : এই ঘটানাটা বড় মারাত্বক জটিল। দেখি সামনে আরো কি হয়!
২৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০১:৪৮
163041
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আগাতে থাকেন হয়ত রাস্তা পেয়েও যেতে পারেন, ধন্যবাদ।
১৬
218223
০৬ মে ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৫
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : অনেক কিছু জানলাম ধন্যবাদ।
০৭ মে ২০১৪ সকাল ১১:২৬
166438
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
১৭
265955
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ১২:০১
আফরা লিখেছেন : যতই পড়তেছি শুধু অবাক হচ্ছি আপনার সাহস দেখে ।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৪৯
209795
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File