আল্লামা সাঈদীর অপরাধ কোনভাবেই ক্ষমাযোগ্য নয়! কেননা.......

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ১৯ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:০৯:৩৭ দুপুর



১.

২০১৪ সালে এসে হেফাজতে ইসলাম যে সত্যটি অনুধাবন করেছে, আল্লাম সাঈদী সাহেব তা বুঝতে পেরেছিলেন ৩৫ বছর আগে! হেফাজতে ইসলাম দাবী করছে, নাস্তিক মুরতাদ দের শাস্তি চাই। অথচ ১৯৭৮ সাল থেকে আল্লামা সাঈদী সারা দেশে কমিউনিষ্টদের মিথ্যা আশ্বাস, প্রতারণা মূলক রাজনৈতিক দুর্বিসন্ধি সম্পর্কে মুসলমানদের সচেতন করেছেন। আজ যাদের বয়স ৪৫ থেকে ৬০ বছর, যারা আজকে সুশীল বলে পরিচয় দিচ্ছে তারা তখন ছিল ছাত্র এবং শীল। আসিফ নজরুল, রুবায়েত ফেরদৌস, তৃতীয় মাত্রায় জিল্লুর সহ মিডিয়া জগতে অষ্টে পৃষ্টে জড়িত বহু নাম পাওয়া ব্যক্তি তখনকার সময়ের প্রোডাক্ট। ৮০ দশক ছিল বাংলাদেশে বামপন্থিদের স্বর্ণ যুগ। দেশের বড় বড় কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের অবস্থান ছিল সুদৃঢ়। এক ধরনের মগজ বন্ধক রাখা শিক্ষিত মানুষের কাছে তখন বামপন্থিরা ছিল অতি চালাক সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত। সেজন্য আসিফ নজরুল ও নুরুল কবিরদের এখনও সেই উপমা দিতে দেখি, ‘বাম পন্থিরা ছিল সৎ ও দেশপ্রেমিক, তারাই যখন দেশের দায়িত্ব নেয় নাই, তাহলে তো দেশের চৌদ্দটা তো বাজবেই’। বামপন্থি এই ব্যক্তিগুলো কোনদিনই, ‘না ছিল সৎ, না ছিল মহৎ ব্যক্তি’, সেই কথাটি দেশের একটা সচেতন শ্রেণীর মানুষের কানে কানে পৌছিয়ে দিয়েছেন আল্লামা সাঈদী। বাম পন্থিদেরকে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় সহ প্রায় সব জায়গা থেকে তাড়িয়ে, তাদের কর্মকাণ্ড অফিসের মাঝে সীমাবদ্ধ করিয়ে দিয়েছেন আল্লামা সাঈদীর ওয়াজ মাহফিল গুলো। মহাজোট সরকারে যতজন সৎ-মহীয়ান বামপন্থী নেতা মন্ত্রিত্ব ও ক্ষমতার স্বাদ পেয়েছেন, তারা সকলেই কম বেশী লুণ্ঠন ও দখলে এতই দক্ষতা দেখিয়েছে যে, আওয়ামীলীগের মত ইস্যু-বাদী দলের নেতারা পর্যন্ত লজ্জায় চোখে-মুখে আঙ্গুল রাখতে বাধ্য হয়েছেন। ভাগ্যিস আওয়ামীলীগ যদি বামপন্থি নেতাদের মাত্র এক বছরের জন্য সুযোগ দিতেন, তাহলে বামপন্থিরা নিঃশেষ হবার জন্য এই সুযোগটিই যথেষ্ট ছিল। সুতরাং আল্লামা সাঈদী যে, বছরের পর বছর ধরে বলতেন, এই দেশে শঠতার রাজনীতির পুরোধায় হল বামপন্থিরা। তারা যা বলে তা মিথ্যা বলে, তাদের ওয়াদার উপর আস্তা রাখাই হল মৃত সম। ‘নাঙল যার জমি তার’ বলে যে চটকদার আকর্ষণীয় শ্লোগান দিয়ে কৃষকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে, তার পুরোটাই অসৎ ও গর্হিত উদ্দেশ্যে ভরপুর। মতলব বাজি ছাড়া বামপন্থিদের ভিন্ন কোন লক্ষ্য নাই। মেরুদণ্ডহীন যেই বামপন্থিরা নিজেদের জানাজা নামাজ পড়ার জন্য প্রস্তুত ছিল, আজ তারা আওয়ামীলীগের কাঁধে চড়ে ক্ষমতায়! তাদেরই বরপুত্ররা আজ বিচারকের আসনে সমাসীন! সুতরাং আল্লামা সাঈদীকে তারা যে মওকা মত পেয়েছে, সেই মওকায় যদি ঢিলেমি আসে তাহলে হাজার বছরেও সেই সুযোগ আর দ্বিতীয় বার পাওয়া যাবে না। সুতরাং এই মওকায় বামপন্থিরা ৩৫ বছরের ইজা টানতে চাইবে। সুতরাং সাঈদীকে শাস্তি পেতে হবে এটা প্রায় ধরেই নেওয়া যায়।

২.

আল্লামা সাঈদী ১৯৭৮ সাল থেকেই মাজার পূজা, কবর পূজা, পীর পূজা সহ যাবতীয় কু-সংস্কারের বিরুদ্ধে ইমানদার মুসলমানদের সচেতন করেছেন। ১০ বছর তিনি বাংলাদেশের সর্বত্র এই সমস্ত দরগাহ বাদী ধ্যান ধারনার বিরুদ্ধে মানুষকে বুঝিয়েছেন। তার যুক্তিপূর্ণ ও দলীল ভিত্তিক বুঝানোর কারণে একটা ব্যাপক সংখ্যক মানুষ জানতে শিখেছে যে, ধর্মের বাণীর আড়ালে এগুলো আসলে একপ্রকার ব্যবসা। এর ফলে ৮০ দশকের শেষ দিকে বাংলাদেশে মাজার পূজা ও পীর ব্যবসার ব্যাপক ধ্বস নামে। এতে করে এসব পীরেরা যেভাবে মুরিদ হারিয়েছেন সেভাবে তাদের কর্মকাণ্ড সাধারণ জনতার কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ও ব্যবসা লাটে উঠেছে। তদানীন্তন সময়ে প্রেসিডেন্ট এরশাদ ও তার মন্ত্রীদের নিয়ে রাষ্ট্রীয় সকল মেকানিজম ব্যবহার করে নিজে পীরের দলে যোগ দিয়ে, দরবারের আকর্ষণীয় ফটক বানিয়ে, পীরের কবর পাকা করেও পীরদের পতন প্রবণতা ধরে রাখতে পারেন নি। আওয়ামীলীগ পাকিস্তান এলার্জিতে চরম ভাবে ভোগলে ও চট্টগ্রামের মেয়র ও আওয়ামী নেতা মহীউদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে পীর বান্ধব সকল অনুসারীদের দিয়ে ইসলামী ছাত্র-সেনা নাম দিয়ে একটি অরাজনৈতিক দল গঠনে পৃষ্ঠপোষকতা দেন। এই দলকে দিয়ে পাকিস্তান থেকে তৈয়ব শাহকে হায়ার করে এনেও তাদের সেই ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার করতে পারে নি। বাংলাদেশের সকল প্রকার পীর ব্যবসার ধ্বসে যে ব্যক্তি প্রধানত দায়ী তিনি হলেন আল্লামা সাঈদী। আজ এসব পীর পন্থিরা এক জোট হয়ে মহাজোট সরকারের অংশীদার হয়েছেন। তাদের এটাই মোক্ষম সুযোগ, সাঈদীকে সরিয়ে দেবার। সাঈদী যদি আবারো বের হয়ে তার ক্ষুরধার যুক্তি ও তেজস্বী বক্তব্য শুরু করেন, তাহলে পীর বাদীরা এই আট বছরে যা গড়েছেন, তা আবার ৪০ বছর পিছনের দিকে আগাইয়া যাবে। সুতরাং সাঈদীকে শাস্তি দেবার ক্ষেত্রে সরকারের বাহুবন্ধনে আবদ্ধ এই মহলটি বরাবরই অতি উৎসাহী, সুতরাং বুঝা যায় সাঈদীর শাস্তি প্রায় নিশ্চিত।

৩.

আল্লামা সাঈদী সাহেবের ওয়াজ শুনে যারা মুসলমান হয়েছেন তাদের বেশীর ভাগই হিন্দু ধর্ম থেকে আগত। ভারত বাংলাদেশের হিন্দুদের নিয়ে একটি পলিসির অন্তরালে কাজ করে। তারা বাংলাদেশের হিন্দুদের মনে এই বলে ভীতি ঢুকাতে চায় যে, জামায়াতে ইসলামী সহ যে কোন ইসলামী দল ক্ষমতায় আসলে, হিন্দুদের জীবনকে নরক তুল্য করে তুলবে। তারা তোমাদের কন্যা ও নারীদের ধর্ষণ করবে, নির্যাতন করবে, তোমাদের সম্পদ আত্মসাৎ করবে, তোমাদের বাঁচা মরা তাদের করুণার উপর নির্ভর করবে। সুতরাং আমরা ধর্মীয় বন্ধনে তোমাদেরই আত্মীয় এবং তোমাদের বিপদ আপদ দেখার আমরাই একমাত্র বিশ্বস্ত। সুতরাং আমাদের পক্ষ থেকে তোমাদের কে যা পরামর্শ দেওয়া হয়, তোমাদের জন্য তাই কল্যাণকর।

হিন্দুদের কে আওয়ামীলীগের নেতা কর্মীরা বেশী নির্যাতন করার পরও, তারা শুধু মাত্র ভারতের আশায় আবার তাদেরকেই ভোট দিতে বাধ্য হয়। এই সমস্যার ব্যাপারটা বাংলাদেশের বেশীর ভাগ হিন্দুরাই বুঝে। তবে বেশী সংখ্যক হিন্দু নেতা অর্থ ও ক্ষমতার জন্য বিক্রি হয়ে যাবার কারণে, হিন্দু সমাজে এটার প্রতিফলন ঘটেনা! ঘটনাচক্রে, আল্লামা সাঈদী সহ জামায়াতের বেশ কিছু নেতা এমন সব জায়গা থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন, যে জনপদে হিন্দু ভোটারের সংখ্যা বেশী ছিল! ইসলামী নেতাদের প্রচুর পরিমাণে হিন্দু ভোট প্রাপ্তিতে ভারত ও আওয়ামী থিম ট্যাংক নড়ে চড়ে বসে। তারা বুঝতে পারে, এই ধারা পরবর্তী নির্বাচনেও যদি ফলপ্রসূ হয়, তাহলে বছরের পর বছর ধরে ইসলামের বিরুদ্ধে যে কুৎসা ভারত ও আওয়ামী থিম ট্যাংক করেছিল তা চরম মিথ্যা বলে প্রমাণিত হবে! এমনকি অদূর ভবিষ্যতে হিন্দুরা নিজেদের পরিপূর্ণ নিরাপত্তা প্রাপ্তিতে ইসলামী দলগুলোকে স্বাগত জানাতে পারে। ফলে জামায়াত সহ অন্যান্য ইসলামী দলের মার্কায় ভোট পরে গণেশ উল্টিয়ে যেতে পারে। এই ভয় ভারত সরকার ও আওয়ামী থিম ট্যাংকে চরম ভাবে ভাবিয়ে তুলে। ফলে আওয়ামীলীগ নিজেদের কর্মীদের মাথায় টুপি পড়িয়ে, কোথাও হিন্দু মন্দিরে আক্রমণ, কোথাও হিন্দু বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, কোথাও হিন্দু নারী নির্যাতন, কোথাও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুণ্ঠনে নেতৃত্ব দেয়! এলাকার মতাদর্শ অনুসারে এই ঘটনাগুলো কোথাও জামায়াতের মাথায়, কোথাও হেফাজতের মাথায় ঢালা হয়েছে। সাথে সাথে সে সব ঘটনা গুলোকে বস্তুনিষ্ঠ করতে, জামায়াত-শিবিরের নেতা কর্মীদের সন্ত্রাসী ও জঙ্গি রূপে চিহ্নিত করা হয়েছে। হেফাজতের নেতাদের বদমাইশ, লুইচ্ছা হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছে। কেননা কোন আদর্শ বাদী দলকে বিকলাঙ্গ করতে, তার নেতা কর্মীদের চরিত্রে কালিমা লেপন করাটা প্রথম শর্ত। খুবই রহস্যের ব্যাপার পীর পন্থিরা মুসলমান ক্ষেত্র বিশেষে উগ্র হবার পরেও সরকার তাদের কাছে এই ধরনের চারিত্রিক সমস্যা কোথাও পায়নি! সাঈদী সাহেবের বিরুদ্ধে অনেক প্রোপাগান্ডা চালিয়েও সরকার সুবিধা করতে পারে নাই বরং উল্টো তার ছেলেরা উপজেলা নির্বাচনে ব্যাপক হিন্দু ভোটার যোগাড় করে ভারত ও আওয়ামী থিম ট্যাংকের ভয়কে আরো বহুগুণে বৃদ্ধি করেছে। এই ক্ষেত্রেও সাঈদী ভারতের চিন্তা ও আওয়ামী থিংক ট্যাংকের জন্য একটি জীবন্ত মুসিবত হিসেবে চিত্রিত হয়ে আছে। সুতরাং সাঈদীর শাস্তির মাধ্যমেই এই সমস্যার সুরাহা হতে পারে।



৪.

বাংলাদেশের মাঠে, ময়দানে, ওয়াজে, বক্তৃতায়, জনসমাবেশে ও সংসদে আল্লামা সাঈদী ভারতের পক্ষপাত মূলক আচরণের প্রতিবাদ করেন। তিনি সুনির্দিষ্ট তথ্য-উপাত্ত দিয়ে ভারতের কুমতলব ও হীনমন্যতার উদাহরণ তুলে ধরে সাধারণ মানুষদের জাগিয়ে তুলেছেন। অনেক নেতা আছে যারা টক শো, ঘরোয়া কথাবার্তায় ভারতের সমালোচনা করেন, তবে তারা কখনও সংসদে এই বিষয়ে জোরালো কথা বার্তা বলে না! আল্লামা সাঈদী সে ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম, তিনে এসব প্রকাশ্যে সংসদে বলতে থাকেন। আল্লামা সাঈদীর দুটো বাহু, একটি রাজনৈতিক, অন্যটি দলীয়। তার দুটো বাহুই সরকার ও ভারতের আধিপত্যের জন্য বিপদজনক। বাংলাদেশের ইতিহাসে আল্লামা সাঈদী একমাত্র ব্যক্তি যিনি দ্যর্থহীন ভাষায় প্রতিবেশীর ঘৃণ্য আচরণের প্রতিবাদ ও সমালোচনা করেছেন। এসব সংসদের কার্যবিররণী থেকে এক্সপাঞ্জ হয়নি। সাঈদী কে দেখে এভাবে আরো বহু তরুণ নেতার অভ্যুদয় হতে পারে। এটা ভারতের জন্য সুখকর নহে হবেও না। তার মত ব্যক্তি ও আদর্শ ভবিষ্যতে ভারতের হঠকারী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে নতুন উপদ্রব যোগ হবে। ভারতীয় আধিপত্য বাদী চিন্তার বিপরীতে আল্লামা সাঈদী জনগণকে ক্ষেপীয়ে তুলতে পারেন, এই যোগ্যতা তার আছে। এটা ভারত খুব গুরুত্বের সহিত দেখে। সুতরাং একজন সাঈদীর অবর্তমানই হবে আপাতত এই সমস্যার আপাত সমাধান। সুতরাং সাঈদীকে শাস্তি পেতেই হবে।

৫.

আল্লামা সাঈদীর মামলার দুটো গুরুত্বপূর্ণ দিক রয়েছে। তার কেইসটি এমন পর্যায়ে দাঁড়িয়েছে, হয়ত বেকসুর খালাস পাবেন, নয়ত মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকবে। শেষ মুহূর্তের কোন আশ্চর্য ঘটনার মাধ্যমে, তাকে বহু বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিতও করা হতে পারে, তবে এই সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ! যদি হয়, তখন সেটা হবে নতুন দিক, নতুন হিসেব। তাই এই দিকটি বাদ দিয়ে বাকি দুটি দিক নিয়ে আলোচনা করা গেল।

ক.

যদি তিনি বেকসুর খালাস পান তাহলে জামায়াতে ইসলামীর বিরাট অর্জন হবে। কেননা এই মুহূর্তে তিনিই জামায়াতের ইসলামীর আসল নায়েবে আমীর, যার কথায় প্রাণ উজাড় করার জন্য হাজার হাজার তরুণ মুখিয়ে আছে। বাংলাভাষার ইতিহাসে, বাংলায় বক্তৃতা দিয়ে একটি জনগোষ্ঠীর শিরায় শিরায় শিহরণ সৃষ্টি করে আমৃত লড়ে যাবার প্রত্যয় সৃষ্টিকারী একটি দলকে মাঠে নামাবার যোগ্যতা শেখ মুজিবের পরে এই ক্যারিয়ার শুধুমাত্র আল্লামা সাঈদীর কাছেই রয়েছে। এই যোগ্যতার সত্যতা কেউ স্বীকার করুক আর নাই করুক, সরকারী মহল কোন বিবেচনাতেই এই ধরনের একটি রিক্স নিয়ে আল্লামা সাঈদীকে ময়দান পরীক্ষার জন্য ভুলেও নামাবেন না। দেশর রাজনীতির এই ক্রান্তিলগ্নে, সবার কাছেই প্রিয় একজন আপোষহীন অগ্নিপুরুষ দরকার। যার বিশ্বস্ত নেতৃত্বে মানুষ মাঠে নামবে, আন্দোলন করবে, নির্যাতন সইবে ও গন মানুষকে মুক্তি দিবে। এই মুহূর্তে আল্লামা সাঈদীর কাছে রয়েছে সেই যোগ্যতা। তিনি সেই ব্যক্তি যার কম-বেশী ভক্ত, অনুসারী আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সহ সকল ইস্যু-বাদী দল গুলোতে আছে। আবার মাজার ও পীর ব্যবসায়ী ব্যতীত বাংলাদেশের ইসলামী দলে কম-বেশী তাঁর গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। জনসমর্থনহীন একটি সরকারের বেকায়দা পরিবেশের উত্তপ্ত মাঠে, এই ধরনের একজন যোগ্য নেতাকে ময়দানে ছেড়ে দিয়ে জনগণের ধমনীর রক্ত পরীক্ষা করবে এমন বেকুবের দল আওয়ামীলীগ নয়! অন্যদিকে ভারত, আওয়ামী থিংক ট্যাংক, পীর-কবর পূজারী ও বামপন্থিরা যেহেতু সাঈদীর উপর চটে আছে, তাই কোনভাবেই আল্লামা সাঈদীকে মাঠে ছাড়তে হয় এমন পরিকল্পনা গ্রহণ করবে ন।

খ.

অন্যপথটি হল মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা। আপাতত এই মুহূর্তে সরকার জন্য এই রাস্তাটিই নিরাপদ ভাববে। শিবির জামায়াত অনেকটা ময়দান ছাড়া, তাদের সংগঠিত হতে সময় লাগবে। হেফাজত তো প্রায় কথাই দিয়েছে, আর গোলমাল নয় যথেষ্ট হয়েছে। বিএনপি তো এখন ইতিহাস রক্ষায় ব্যস্ত, তাছাড়া দলের নেতারা আগেই জানিয়ে দিয়েছ, জামায়াতের দায় দায়িত্ব তারা আর নিবে না। কাদের মোল্লার রায় পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সরকারের যোগ্যতা, দক্ষতা ও সাহসিকতা বেড়েছে। তাছাড়া উপজেলা নির্বাচনে জামায়াতের সংগঠিত পকেট গুলো সরকার চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চের অর্থ চুরিতে বিতর্কিত ব্যক্তিদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করে নেতৃত্বের পদটি শূন্য রেখেছে। সময় মত পরিবেশ অনুযায়ী সেখানে সেটিং করা হবে। জামায়াতের নেতাদের দৌড়ানো শুরু হয়েছে। কয়েকজনকে ধরে দলের আভ্যন্তরীণ সক্ষমতা কোন পর্যায়ের আছে সরকার তা জানার চেষ্টা করছে। সরকার ভাবছে, এই ধরনের একজন বিপদজনক ব্যক্তিকে অনুপস্থিত করে দেবার জন্য এই সময়টা অনেকটা উপযোগী। সরকারের আভ্যন্তরীণ অবস্থা নিয়ন্ত্রণে থাকা, বহির্বিশ্বের মৌন প্রতিবাদ, চীন রাশিয়ার গায়ে না মাখানোর নীতি, ভারতের আগ্রহ, ইসলামী দুনিয়ার নিষ্ক্রিয়তা, জোটের বামপন্থিদের চাপ, জামায়াতকে দুর্বল ও বিএনপিকে শুইয়ে দেবার জন্য আরেক বার রিক্স নেবার জন্য এটাই উপযুক্ত সময়। তাই সাঈদীকে শাস্তি পেতেই হবে।

৬.

উপসংহারে বলা যায়, আল্লামা সাঈদীর মৃত্যুতে আওয়ামীলীগের লাভের ঘর শূন্যই থাকবে বরং রাজনৈতিক হত্যার দায় তাদেরকে বয়ে বড়াতে হবে। বিএনপির উপর মানুষের আস্তা আরো নিম্নমুখী হবে। বিএনপি কোনদিন এই বিচারকার্য নিয়ে কথা বলেনি। দেশ ও জাতির পক্ষে সত্য-ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য যতটুক বলা দরকার ততটুকুও বলেনি। নিরব থেকে প্রশ্রয় দিয়েছে সেটার মাশুল তারা গুনছে। বামপন্থিদেরও কোন লাভ হবেনা কেননা লাভ অর্জন করার মত দক্ষতা তারা বহু পূর্বেই হারিয়েছে, তবে তারা সাঈদীর বিরুদ্ধে মধুর প্রতিশোধ নিতে পেরে আত্মতৃপ্ত থাকবে। অন্যদিকে তাদের কিছু স্থায়ী শত্রুর সৃষ্টি হবে, যাদেরকে তারা চিনবে না। জামায়াতের যা হারাবার তা ইতিমধ্যেই হারিয়ে ফেলেছে। নতুন করে কিছু হারাবার নাই কিছুটা ঝুঁকি বাড়বে মাত্র। হয়ত আরো কিছু নেতা-কর্মী আহত-নিহত হবে। এতে তাদের চলার পথের আদর্শ-উদ্দেশ্যে কোন ফারাক পড়বে না। নতুন ভাবে পরিস্থিতি অনুসারে নিজেদের গোছাতে সচেষ্ট হবে। সবচেয়ে বেশী খুশী হবে, পীর ব্যবসায়ীরা! তাদের রমরমা ব্যবসাকে সর্বনাশ করে দিতে এই সাঈদীই ছিল মুল হোতা। তার মৃত্যুতে তারা অবশ্যই খুশী হবে তাতে কোন সন্দেহ নাই। তার উপর যে সবচেয়ে বেশী খুশী হবে, সে হল শয়তান। কেননা দুনিয়াতে কোটি আবেদের জন্মেও শয়তান বিচলিত হয়না, যত বিচলিত হয় একজন দায়ী ইলাল্লাহর জন্মে। আর দীর্ঘ মেয়াদী খারাপ প্রভাব পড়বে হেফাজতের উপরে। তাদের ৯৫ বছর বয়সী অতি বৃদ্ধ নেতা আরো কিছুদিন স্বাভাবিক ভাবে দুনিয়াতে বাঁচতে চায়! সাঈদীর মত ফাঁসির রসি যদিও তাকে তাড়া করছে না, তারপরও তিনি জেলের দুর্ভোগের ভয়কে, আল্লার ভয়ের উপর স্থান দিয়েছেন। ইসলাম মানতে গেলে পরীক্ষা আসবেই, রিক্স নিতে হবে, এটাই মুমিনের আসল পরীক্ষা। তিনি না যোগ্য ব্যক্তিত্ব সৃষ্টিতে পদ ছেড়েছেন না অনুসারীদের সঠিক নির্দেশনা দিতে পেরেছেন! জীবনের শেষ সময়ে অতি বিচলিত হয়ে সরকারের কাছে নতি স্বীকার করে, তার আহবানে সাড়া দিয়ে, করুনভাবে শহীদ মুমীনের আত্মার প্রতি কাণ্ডজ্ঞান হীন ও চরম দায়িত্বহীন আচরণ করেছেন! ভবিষ্যতে এদের আহবানে আর কোন ইসলামী শক্তি আস্তা রাখবে না। ক্ষুদ্রতম প্রতিবাদ করার জন্যও মানুষ পাওয়া যাবেন। এমনকি নিজেদের রক্ষায় তারা কোন সাহায্যকারী শক্তিও পাবেনা। সর্বোপরি ইসলামের ইতিহাসে আল্লাহ বহু করুণ শিক্ষাপদ নজীর রেখেছেন দৃষ্টি সম্পন্ন মানুষের জন্য। যাদের চোখ খোলা তারা পরিষ্কার দেখতে পায়; মৃত্যুর দুয়ার থেকে আল্লাহ ইব্রাহীম (আঃ) ও মুসা (আঃ) কে বাঁচিয়েছিলেন এই জন্য যে, তাদের উছিলায় তাঁদের জাতির সন্তানেরা দুনিয়াতে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। আবার ইয়াহিয়া (আঃ) ও জাকারিয়া (আঃ) এর চরম মৃত্যুর মুহূর্তে আল্লাহ ধৈর্য ধরে অবলোকন করেছেন এই জন্য যে, তাদের মৃত্যুর উছিলায় যেন, সেই জাতিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন ও বিলীন করে দিতে পারেন। বর্তমানে আমরা এই পরিণতির দ্বারপ্রান্তে দাড়িয়ে শুধু সময়ের অপেক্ষায় বসে আছি।

বিষয়: বিবিধ

২৭৯৩ বার পঠিত, ৪২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

210018
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০১:৫৭
সুশীল লিখেছেন : ফাসিই বহাল থাকছে

Click this link
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:২৮
158530
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : মানুষদের কে বিশ্লেষন করে জানতে দেন, কেন ফাঁসি বহাল থাকছে। কেননা এই সমাজে আমাদের অনেক জনকে বেঁচে থাকতে হবে। অনেক ধন্যবাদ।
210024
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:০৯
মাজহার১৩ লিখেছেন : আপনার শেষ আশঙ্কটিই হয়তো ঘটতে পারে, বর্তমান সরকার বাংলাদেশে ইসলামের কন্ঠস্বর স্তব্ধ করার পর ইহার কিছু আলামত পরিলক্ষিত হইতেছে।
১। জয়া প্রিয়া পতিতাবৃত্তিকে পেশা হিসেবে স্বীকৃতি চায়।(পতিতা বৃত্তির স্বীকৃতির কারনে নিরবে উন্নত বিশ্বে পারিবারিক প্রথা ভেংগে গেছে, আমাদের দেশেও তালাকের সংখ্যা আশঙ্কাজনকাভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এইডস আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেছে)
২। সমকামীরা র‍্যালি করার মত সাহস দেখিয়েছে।( আদ ও সামুদ জাতি যে কারনে ধ্বংস হয়েছে)
৩। ব্লগগুলোতে নাস্তিকেরা আল্লাহ ও মুহাম্মদ (সঃ) বিরুদ্ধে লেখার স্বাধীনতা পেয়েছে।( তরুন সমাজ ইসলাম বিমুখ হয়ে পড়ছে)
৪। ভারত গুন্ডে ছবির মাধ্যমে সিকিম বানানোর নীলনকশার প্রথম ধাপ শেষ করেছে।
৫। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা "র" আইএসয়াইয়ের চর গ্রেপতার করার মত সক্ষমতা দেখিয়েছে।
৬। আজ বিজেপির সাংসদ বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ দাবী করতেছে।
এখন বোঝার চেষ্টা করুন আমরা কোন দিকে যাচ্ছি?
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৩৪
158533
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : বাংলাদেশ একটি ভয়ঙ্করতম কাল অতিক্রমন করছে। এমন ব্যক্তিদের দ্ধারা আমরা শাসিত হচ্ছি, যাদের ন্যূনতম কোন দেশপ্রেম নাই। দেশের মানুষের প্রতি কোন জবাবদিহিতা নাই, দায়বদ্ধতা নাই। দেশে তো প্রতিদিন বহু মানুষই মরছে, সে হিসেবে না হয় বন্ধি কিছু মানুষ মারা যাবে, তারপরে কি হবে? এই প্রশ্নের উত্তর কে দিবে। অনেক ধন্যবাদ।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৫২
158547
মোহাম্মদ শাব্বির হোসাইন লিখেছেন : বেশ ভালো লিখেছেন।
210030
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:১৫
আবু সাইফ লিখেছেন : সুশীল লিখেছেন : ফাসিই বহাল থাকছে -

এমনটাই হবার কথা!!

অন্যরকম কিছু চিন্তা করার হিসাব মেলে না!!


হেফাজত ও আল্লামা শফীর ব্যাপারটা আরেকটু গভীর বিশ্লেষণ করে একটা আলাদা পোস্ট হলে ভালো হতো!!

বিশেষতঃ হেফাজতের রাজনৈতিক অবস্থান, সরকারের সাথে বোঝাপড়া এবং জনসাধারণের প্রত্যাশা ও হতাশার ব্যাপারগুলো..

*********
সময়ের প্রসংগ বিবেচনায়
এ পোস্টটি স্টিকি করা হোক
**************

**
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৪২
158540
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : মূলত হেফাজতের কোন দর্শন নাই, তাই তাদের সম্পর্কে মন্তব্য করার কিছুই নাই। যিনি প্রধান তিনি বসা থেকে উঠতে পারেন না। তিনি তাঁর পরিসরে সকল আলেমদের ইমাম, তিনি হয়ত পদ ছেড়ে কাউকে স্থলাভিষিক্ত করতে পারতেন, নতুবা প্রতিবাদ করে যেতেন, নতুবা চুপ থাকতেন। তিনি বৃদ্ধ বয়সে মৃত্যুর ভয়ে যা করলেন, এটা কোন নেতার কাছে আশা করা যায়না। ৯৩ বছর বয়সে সাহাবী আম্মার ইবনে ইয়াসীর (রাঃ), আলী (রাঃ) পক্ষ লড়াই করে প্রচুর সিরিয়ান সৈন্য হত্যা করে নিজে শাহাদাত বরণ করেছেন। এটা ছিল ইসলামের সুমহান মর্যাদার প্রতিক।

ইমাম খোমনি রুশদীকে মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করে বলেছিলেন, আমি যদি বয়সে তোমাদের মত তরুণ হতাম, তাহলে তরবারী হাতে আমি নিজেই বেরিয়ে পড়তাম এই শয়তান কে হত্যা করার জন্য। এটা হল নেতৃত্বের সৌন্দর্য।

আমাদের বয়োবৃদ্ধ আলেমের এ ধরনের অদুরদর্শী কথায় আস্তা রেখে যারা ঢাকার রাজপথে অসহায় ভাবে প্রাণ দিল, তাদের জন্য তাঁর কি আহবান হতে পারে। আপনি কি বলতে পারবেন?
210033
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:২৪
গণ_অভ্যুত্থানের অগ্নিবীণা লিখেছেন : কমেন্ট করার যোগ্যতা আমার নাই! পুরাটাই পড়লাম। পোস্টটি ইস্টিকি হোক।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৪৩
158541
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : বলতে থাকুন, লিখতে থাকুন হৃদয়ের সকল অভিব্যক্তি দিয়ে। ধন্যাবাদ।
210084
১৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:২২
আহমদ মুসা লিখেছেন : সাঈদী সাহেবকে গ্রেপ্তার থেকে আপিল বিভাগে মামলা চলাকালীন সময় পর্যন্ত দীর্ঘদিন ধরে প্রতিটি কার্যক্রমে ভারতপন্থী এবং তাদের এদেশীয় গোলাম দাসীদের নাফরমানীসূলভ আচার আচারণে যথেষ্ট সন্দেহ করার কারণ রয়েছে যে, আল্লামা সাঈদীর উপর হয়তো ক্যাপিটাল আক্রোশ চরিতার্থ করবে। বাংলাদেশের কথিত যুদ্ধাপরাধ বা মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী ট্রাইবুনালের জন্ম এবং তাদের কার্যক্রমের সোজা সাপ্টা বা সাধাসিধে বিশ্লেষণ করলে প্রকৃত রহস্যে বা এর অন্তর্নিহিত মাজেজা অনুধাবন ও তাদের মুখোশ উন্মোচন হবে বলে মনে হয় না। এ ট্রাইবুনাল গঠনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনার তেমন ভূমিকা নেই। পর্দার আড়ালে ভারতই এ ট্রাইবুনাল গঠনে মূখ্য ভূমিকা রেখেছে। এখনো ট্রাইবুনালের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ভারতের হাতেই রয়েছে। শেখ হাসিনাকে এক্ষেত্রে পুতুল নাচের পূতুল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মাত্র। ১৯৪৮ সালে হায়দারাবাদের করুণ পরিণতির ইতিহাস যদি আমরা গভীরভাবে পর্যালোচনা করি তবে কিছুটা হলেও আমরা বর্তমান পরিস্থিতিরি ভয়াবহতা সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারবো। বাংলাদেশপন্থী কোন কোন বিশ্লেষক ধারণা করছেন ভারত বাংলাদেশকে পূর্ণরূপে দখল করে ভারতের অন্তুভূক্ত রাজ্যে বানাবে না। শেখ হাসিনার মত একটি অনুগত পুতুল সরকার বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয ক্ষমতার মসনদে বসিয়ে যাবতীয় ফায়দা লুটবে। তারা উদাহারণ হিসেবে বর্তমান বাংলাদেশের মেরুদন্ডহীন ফরেন পলিসি ও ভারতের প্রতি জি-হুজুর নীতিতে পশ্চাতের নরম অংশটি ভারতমুখী রাখার আত্মঘাতি অপদার্থগুলোর কাজ কারবারের দিকেই ইংগিত দিয়ে থাকেন। আর এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য যেভাবেই হোক ভারতের অনুগত অপদার্থগুলো থেকে ক্ষমতা চিনিয়ে নিতে পারলেই কেল্লফতে।
বাংলাদেশপন্থী এসব বুদ্ধিজীবিদের হায়দারাবাদের ইতিহাসের দিকে নজর দিতে অনুরোধ করবো। ভৌগলিক অবস্থানগত তুলনায় বাংলাদেশ হায়দাবাদের চেয়েও অতীত সেনসেটিভ ও ঝুকিপূর্ণ একটি অঞ্চল ভারতের ইউনিয়ন ঠিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে। হায়দারাবাদকে তিন টুকরো করে গিলে ফেলেছে ভারত। ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে হায়দারাবাদের মত করুণ পরিনতি ভোগ করতে হবে না তা নিশ্চত করে কেউ বলতে পারবে না। ১৯৯৫ সালে বঙ্গ কে ভঙ্গ করা হয়েছিল। আবার ১৯০৯ সালেই ততকালীন অপরাধী ট্রাইবুনালের হোতাদের বিরোধীতার কারণেই বঙ্গভঙ্গকে রদ করতে হয়েছিল বিটিশ লুটেরাদের। বিটিশ লুটেরাগুলো এখন নেই। কিন্তু তাদের পদলেহনকারী কুযোগ্য উত্তরসূরী চোর ডাকাত এবং গরীব দূঃখী মেহনতী বদি আদম যাদের বেশীর ভাগই ধর্মীয়ভাবে মুসলিম তাদের হকুকাত আত্মসাৎকারীদের চোখে ঘুম নেই, নিরীহ মানুষের রক্ত পিপাসু সেই সাম্প্রদায়িক জানোয়াগুলোর হিংস্র দাতগুলো সব সময় গালের বাহির করেই রাখে।
বর্তমানে বাংলাদেশের যে অবস্থা তাতে এখনো পর্যন্ত ভারতীয়রা বাংলাদেশকে পূণার্ঙ্গ দখলে নেয়ার সাহস করবে না। এখনো বাংলাদেশ সে পর্যায়ে উপনিত হয়নি। কিন্তু ভারতের থিং ট্যংরা বসে নেই। বাংলাদেশকে পূর্ণাঙ্গ কব্জায় নেওয়ার জন্য যাবতীয় কার্যক্রম তারা পুরো দমে চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের আশংকা হয় অদূর ভবিষ্যতে কোন একদিন সাত সকালে ঘুম থেকে উঠে শুনতে পাবো বাংলাদেশের মানচিত্রকে টুকরো করে কুমিল্লাকে বলা হবে ত্রিপুরার অংশ, চট্টগ্রামকে বলা হবে মিজুরামের অংশ, খুলনাকে বলা হবে কোলকাতার অংশ, রাজশাহীকে বলা হবে বিহারের অংশ, সিলেটকে বলা হবে মেগালয়ের অংশ। সম্রদ্ধ ঢাকা হবে হায়দারাবাদের মত একটি শুধুই মেগাসিটি। এ ধরনের অলিক স্বপ্ন দেখার হারামজাদাগুলোর আস্ফালন দেখে আজ কেন আল্লামা সাঈদীকে নিয়ে এভাবে ইতিহাস রচনা করতে উঠে পড়ে লেগেছে তা বুঝতে সহজ হবে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে মুসলমানদের হাতে সর্বশ্রেষ্ট নেয়ামত (কোরআন) থাকার পরেও তারা ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ না হওয়ার কারনে বৃটিশরা চলে যাওয়ার পরেও ১৯৪৭ সাল থেকে এযাবত ভারতীয় উপমহাদেশে যত নিরীহ মানুষের রক্ত ঝরেছে তাদের বেশীর ভাগই মুসলমান, যত নিরাপরাধ মানুষের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারী হয়ে উঠেছিল তাদের বেশীর ভাগই মুসলমান। যত নারীর ইজ্জত হরণ হয়েছে তাদের বেশীর ভাগই মুসলমান।
অথচ মানবতা রক্ষার জন্য, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, উপমহাদেশের আজাদীপ্রিয় মানুষের হারানো স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনার জন্য রক্ত দিয়েছে, ত্যাগ স্বীকার করেছে মুসলমানরাই। পক্ষান্তরে যারা মানুষের অধিকার আদায় ও স্বাধীনতা অর্জনের নামে ডাকাতি এবং মানবতা বিরোধী কর্মকান্ডের জন্মদাতা তারাই আজ বীরের মর্যদা চিনিয়ে নিতে তৎপর। তারাই আজ মজলুম মানুষের ভাগ্য নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে আর্ভিভুত হওয়ার খায়েশ করে!
আজ সময় এসেছে দল মত নির্বিশেষে আল্লামা সাঈদী সাহেবের উপর আরোপিত মিথ্যা এলজামের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার। মনে রাখতে হবে ব্যক্তি সাঈদী যেমন জাহেল নাফরমানদের তার্গেট তেমনি তার আদর্শ ও ফিলোসফি তার চেয়েও বড় তার্গেট এ জাতির আসল শত্রুদের।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৭
158686
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : মনে রাখতে হবে ব্যক্তি সাঈদী যেমন জাহেল নাফরমানদের তার্গেট, তেমনি তার আদর্শ ও ফিলোসফি তার চেয়েও বড় তার্গেট এ জাতির আসল শত্রুদের।

কোন সন্দেহ নেই, তাই প্রতিটি মুমীনকে সতর্ক থাকতে হবে। অনেক ধন্যবাদ।
210089
১৯ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৪:২৭
বেআক্কেল লিখেছেন :


একখান ছবি আমি দিলাম, দেইখতে বীরের মতন দেহায়।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৪
158687
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে ধন্যবাদ।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৭
158745
বিভীষিকা লিখেছেন : ভালো লাগলো
210198
১৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০৩
সিটিজি৪বিডি লিখেছেন : সেই ছোট বেলা থেকে প্যারেড মাঠে সাঈদী সাহেবের ওয়াজ শুনার জন্য গ্রাম থেকে ছুটে যেতাম। দলমত নির্বিশেষে সবাই ওয়াজ শুনতো। আপনার কথায় ঠিক..মাজারপুজারীরা অনেক খুশী হবে।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৪৯
158826
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
210258
১৯ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৯
বিভীষিকা লিখেছেন : ইমাম খোমনি রুশদীকে মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করে বলেছিলেন, আমি যদি বয়সে তোমাদের মত তরুণ হতাম, তাহলে তরবারী হাতে আমি নিজেই বেরিয়ে পড়তাম এই শয়তান কে হত্যা করার জন্য। এটা হল নেতৃত্বের সৌন্দর্য।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৪৯
158827
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ধন্যবাদ।
210287
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:৪০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : আল্লামা সাঈদি সরকার বেশি ভয় পায় তার কন্ঠের জন্য। সরকার এবং তথাকথিত বামপন্থিরা তার কন্ঠটি স্তব্ধ করার জন্য উন্মুখ।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৫১
158828
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : জ্বি আল্লাহ তাঁর কণ্ঠের মাঝে একটি জীবনি শক্তি দান করেছেন। যতদিন তিনি সক্ষম ছিলেন, ততদিন তা ব্যবহার করেছেন। অনেক ধন্যবাদ।
১০
210304
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:৩১
সালমা লিখেছেন : হিংসার আগুনে জলছে বর্তমান রাষ্ট্র প্রধানরা। আর মিথ্যার গহীণে বামদের বাহ বাহ ডানদের হাহাকার।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৫১
158830
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১১
210356
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:০৭
ইবনে হাসেম লিখেছেন : আমি আপনার যুক্তিপূর্ণ পর্যালোচনার সাথে সহমত। আল্লামা সাঈদীর জন্য মনে হয় শহীদী মৃত্যুই আল্লাহ নির্ধারিত করে রেখেছেন। তবে তাঁর এই মৃত্যুর দায় থেকে বর্তমান সরকার কিছুতে রেহাই পাবেনা। একদিন না একদিন তাদের এর ফল ভোগ করতে হবে ইনশাআল্লাহ।
১৯ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৫৩
158831
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : প্রত্যেক কাজের একটি ফল আছে, পরিনাম আছে। দুনিয়ার সামান্য খ্যাতির লোভে অপরিনামদর্শী মানুষ জানোয়ারের মত আচরণ করে। এটা তারই প্রমাণ। আদালত শাস্তি দিচ্ছে আর জনগণ বিশ্বাস করছেনা, এর চেয়ে সেরা তামাশা কি হতে পারে।
১২
210416
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১২:৫৫
অজানা পথিক লিখেছেন : ভালো বিশ্লেষন। অসাধারন
২০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪০
158939
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
১৩
210437
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০২:১৮
জুমানা লিখেছেন : চেতনার তালে পইরা সরকার গেছে পাগল হইয়া।
২০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪১
158940
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ঠিক বলছেন, অনেক ধন্যবাদ।
১৪
210444
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০২:৪০
মাটিরলাঠি লিখেছেন : আল্লাহ্‌র যা ফায়সালা হবে, তাতে আমরা সন্তুষ্ট। এদের টার্গেট সাইদী নয়, "এদের টার্গেট ও স্বপ্ন ইসলামকে এদেশ থেকে খেজুরতলায় পাঠানো।" -এটা বলতেন আমার এক চাচা। গণজাগরণ মঞ্চে ছাত্রলীগের -হামলা, ইমরানের বিদায় - সেদিনই সন্দেহ করেছিলাম, সরকারের কুমতলবটা কি? যা হোক আমরা এখন অনেক কিছুর সাথে তেঁতুল বন্ধুদেরও চিনলাম। ইয়া আল্লাহ্‌ আমাদেরকে ঈমান ও সৎ আমলের সাথে মৃত্যু দান করুন। আ-মী-ন।
২০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪৩
158941
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার দোয়া কবুল করুন, আমীন। আপনার মন্তব্যটিই হল মূল কথা, সাইদীর গদিতে যদি আমিও গিয়ে বসি; তাহলে আমাকে ফাঁসানোর জন্য বর্তমান ডিসি মোল্লা নজরুলে কু-কর্মগুলো আমার নামে তুলে দেয়া হবে।
১৫
210532
২০ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৫৪
মোঃ ওহিদুল ইসলাম লিখেছেন : এই দিনতো শেষ নয় আসিবে দিন ফিরে,
সেদিনের করেছে কি তারা ভয়, পালাবে তখন কোন নীড়ে?
২০ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:২৫
158976
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ছন্দযুক্ত সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।
১৬
210738
২০ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৪১
মোস্তাফিজুর রহমান লিখেছেন : গোলাম আযম, নিজামী আর সাঈদী'রা তাদের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সর্বোচ্চ ত্যাগের নমুনা জীবন দিয়ে প্রমান করে গেছেন শহীদ আবদুল কাদের রহ: সহ অসংখ্য ভাই বোন। এখন আমাদের দায়িত্ব... আমাদেরকেই এগিয়ে নিতে হবে এই মহান কাফেলাকে।
ধন্যবাদ টিপু ভাইকে সুন্দর বিশ্লেষণধর্মী লিখার জন্য।
২১ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৫০
159576
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আমাদের কে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হবে মর্মে আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
১৭
210759
২০ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১০
কেলিফোরনিয়া লিখেছেন : অপেক্ষায় আছি...আর একটা যুদ্ধ ছাই...তখন বুঝা জাবে...বামেরা কইজায়...
২১ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৫১
159577
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অপেক্ষায় থাকুন, অনেক ধন্যবাদ।
১৮
210826
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:১০
শেখের পোলা লিখেছেন : ফায়সালা জমীনে নয় হয় আসমানে৷ সেই আদালতের বিচারকের রায়ের অপেক্ষায় রইলাম৷ আপিল করবনা কেননা তার প্রতিই সমর্পিত হয়ে গেছি৷
বিশ্লষন বাস্তব৷ ধন্যবাদ৷
২১ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৫২
159580
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপিল হয় সুবিচার পাবার আশায়, বিবারক নিজেই বলেছেন তাঁরা সুবিচার করার জন্য এত কষ্ট করে এজলাসে বসেন নি। অনেক ধন্যবাদ।
১৯
211105
২১ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:৫৯
সুস্থ মন লিখেছেন : সুন্দর একটি লেখা যা সত্যকে অকপটে তুলে ধরেছে । আল্লাহ আপনার লেখার শক্তিকে আরও বহুগুণে বাড়িয়ে দিক ।
২১ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৫২
159581
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আল্লাহ আপনার দোয়া গ্রহণ করুন, আমীন।
২০
211190
২১ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৩৯
আবু আশফাক লিখেছেন : আপনার যুক্তি, তত্ব আর তথ্যের বিরুদ্ধে কিছুই দ্বার করাতে পারব না। কারণ এর বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। কিন্তু মন এমন এক চিজ, যে সেটা মেনে নিতে চায় না।
২১ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৫৪
159585
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : মানুষ যতদিন বাঁচে ততদিন তার মন তার নিয়ন্ত্রণে থাকেনা। মন আর প্রবৃত্তি দুটো একে অপরের বিরুদ্ধে লড়তে থাকে। আমাদের লড়াই মনের সাথে ওদের লড়াই প্রবৃত্তির সাথে।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File