যে ভাবীর কারণে আমি হলাম বালক পীর! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-৯ (রোমাঞ্চকর কাহিনী)

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ১৫ এপ্রিল, ২০১৪, ০২:১১:১০ দুপুর



আমি এখনও চিন্তা করি, কিভাবে কি হয়ে গেল! এক ভাবীর কারণেই আমি বিরাট অঞ্চল জুড়ে পরিচিত হয়ে গেলাম। নানা জনের নানা মন্তব্য শুনতে শুনতে কখনও হতাশ হয়ে পড়তাম কখনও গর্বে বুকটা ভরে উঠত। যাক হাজার মানুষের মুখে তো আর হাত ঢুকিয়ে, চাপ দিয়ে কথা বন্ধ করা যায় না। রবী ঠাকুরের জুতো আবিষ্কার কবিতা থেকেই আমার পিতা বুদ্ধি জ্ঞান পেয়েছিলেন যে, জুতো পড়লেই যেভাবে ধুলো মুক্ত থাকা যায়, আর দেশের ধুলো দূর করা লাগেনা। সেভাবে আমাকে লুকিয়ে ফেললেই সকল সমস্যা ঢেকে ফেলা যাবে, মানুষ নিয়ন্ত্রণের দরকার নাই। সে ঘটনায় আসি।

আমার ছোটকালেই ভাবীটিকে আমাদের বাড়ীতে আনা হয়। সম্পর্কে আমার জেঠাত ভাইয়ের গিন্নী হয়। তিনি আমাকে খুবই আদর যত্ন করতেন। আমার পিতা মাতার খ্যাতির জন্য তিনি আমাদের পরিবারের সাথে লেগেই থাকতেন। আমার মা ওই ভাবিটির জন্য খুবই আন্তরিক ছিলেন। পুরো বাড়ীর মুরুব্বীরা সেই ভাবীটিকে নিয়ে অহংবোধ করত। এত কিছুর পরেও সেই ভাবীটির একটি অযোগ্যতা কিংবা দুর্বলতা ছিল। যার কারণে তিনি খুবই মর্মাহত ও ব্যথিত থাকতেন। সেটা ছিল দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টার পরেও তিনি নিঃসন্তান ছিলেন। মানুষের শত পরামর্শের কোনটাই তিনি না করে রাখেন নি। একটি সন্তানের আশায় বৈধভাবে যত প্রকার চিকিৎসা সহযোগিতা নেবার তা তিনি সবই করেছেন। ডাক্তার, কবিরাজ, ওঝা, বৈদ্য সবাই ব্যর্থ। এভাবে বার বছর পার হবার পর তার স্বামী বেচারার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেল। ওদিকে আমার জেঠাইমায়ের অধস্তন বংশ দরকার, তিনি ছেলেকে চাপ দিতে রইলেন হয়ত এই বউ ছাড় নতুবা নতুন বউ আন। স্বামী বেচারা এই বউয়ের সেবা, যত্ন, আচার, ব্যবহার, গ্রহণযোগ্যতায় এতই মজে ছিলেন যে, তার বংশে সন্তান না আসলেও তার কোন সমস্যা ছিলনা, এতেই সে রাজি ছিল। নিঃসন্তানের দোহাই দিয়ে কোনভাবেই এই বউ হারাতে রাজি ছিলেন না। বউয়ের দৃঢ়তা ছিল কোন একদিন আল্লাহ তাকে সন্তান দিবেন। শাশুড়ি এসব নীতি বাক্য শুনে বার বছর পার করে তের বছরে পা দিয়েছেন, আর ধৈর্য ধরতে রাজি নয়। তাই তিনি মাঝে মধ্যে বউকে খোঁটা দিতে থাকলেন, যাতে বউ খোঁচা খেয়ে নিজেই বাপের বাড়ী চলে যায় নতুবা গায়ে পড়ে একজন সতীনকে ঘরে তুলেন।

এই ভাবিটি একদিন আমাকে বললেন, ‘ছোট ভাই তুমি শুনে থাকবে, আমার সন্তান নাই বলে আমাকে স্বামীর বাড়ী ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে। তোমাদের বাড়ির এই তের তম বছরটি আমার জীবনের শেষ বছর। তুমি যদি আমাকে একটু উপকার কর তাহলে হয়ত আমি মুক্তি পাব’!

আমার হাতে ভাবীর মুক্তি নিহিত! শুনেই আশ্চর্য হলাম।

বলুন কি করতে হবে, আমার দ্বারা আপনার উপকার হলে অবশ্যই আমি তা করব।

তিনি বললেন (তাঁর মুখে শুনুন), ‘আমি স্বপ্নে দেখেছি, তুমি যদি আমাকে একটু পানি পড়া দাও এবং একটি তাবিজ লিখে দাও তাহলে, আমার সন্তান হবে’!

আপনি এই স্বপ্ন করে দেখেছেন?

প্রথমবার দেখেছি, দুই মাস আগে। তখন এই ব্যাপারটি আমি আমার শাশুড়ি তথা তোমার মাকে জানিয়েছি। তিনি এসব নিয়ে তোমার সাথে কথা বলতে রাজি হয়নি। গতকাল রাত্রে আমি পুনরায় সেই স্বপ্নটি দেখেছি। এতে আমার বিশ্বাস তোমার দ্বারা আমার একটি বড় উপকার হয়ে যেতেই পারে। তাছাড়া আমি তোমার মাকে বুঝিয়ে বলেছি, তুমি যদি পানি পড়া ও তাবিজ লিখে দাও তাহলে অন্তত আমার কারণে তোমাকে বকাবকি করবেনা।

সন্তান কিভাবে হয়, কেন সন্তান হয় না, কেনই বা কিছু নারীরা বন্ধ্যা হয়, এসব কোন কিছুই তখনও আমার মাথায় ঢুকে নাই। এমন পরিবেশে, বড় যত্নের সাথে বড় হয়েছি যেখানে বাজে কথা শুনার সুযোগ কম ছিল। তাছাড়া পুরো বাড়ীতে ভাইদের মাঝে আমার চেয়ে ছোট কেউ ছিলনা। জেঠাত ভাইদের আট ভাবী, মামাত ফুফাতো মিলালে তের ভাবী, আমি হলাম সর্ব কনিষ্ঠ! আমি সবার দ্বারা শাসিত হতাম, ঘরের একমাত্র বেয়াড়া চাকরানী ব্যতীত কাউকে আমি শাসন করার সুযোগ পেতাম না। দুজনের গণ্ডগোল লাগলে, সেই চাকরানীর কথাকেই আম্মা সর্বাধিক গুরুত্ব দিতেন! এই ভাবীকে বিয়ের দিন যখন আমাদের বাড়ীতে আনার সময়, তার সাথে আমাকেও পাল্কিতে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। শিশু হবার কারণে পালকি বাহকদের আপত্তি তেমন একটা গাহ্য হয়নি।

যাক, ভাবীকে প্রশ্ন করলাম আমি আপনার জন্য কোন মতে একটি তাবিজ লিখে দিতে পারলেও, তাবিজের কিতাব আর তাবিজ লিখার লাল কালি কোথায় পাব?

তিনি বললেন, সে সব ব্যবস্থা হবে। আমি যেহেতু তাবিজ লিখার জন্য সাগ্রহে রাজী হয়েছি, তাহলে তাবিজের মাল মসল্লা কোন ব্যাপার নয়। ইতিমধ্যে আমি মায়ের কাছে ভাবীর আবদার সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছি, তিনি এই উপকার টুকু আমাকে দিয়ে করে দেবার জন্য রাজি হলেন। তবে কঠোর ভাবে নিষেধ করলেন এই কথা যাতে কাউকে না বলি এমন নি বাবাকেও না। অগত্যা বাবাকে যদি বলার দরকার পড়ে তিনি নিজেই বলবেন।

ভাবী তার পালিত বড় খাসিটি চড়ামূল্যে বাজারে বিক্রি করে দিলেন। এমনিতেই তাঁর হাতে হাঁস, মুরগী, গরু, ছাগল ভালই উৎপাদিত হত। খাসি বিক্রির পুরো তিনশত টাকা তিনি আমার হাতে গুঁজিয়ে দিয়ে বললেন: চট্টগ্রাম শহরের আন্দরকিল্লায় তাবিজের বই পাওয়া যায়। যতটুকু সম্ভব তাবিজের সকল বই সংগ্রহ করতে হবে। তার পর বকশীর হাট ধরে ‘আছদ গঞ্জে’ যেতে হবে। আছদ গঞ্জে 'পীতাম্বর শাহের' দোকান আছে। সেখান থেকে ইরানী মেশকের দানা, আসামের লাল চন্দনের গুড়া, ত্রিপুরার কুমকুম, কাশ্মীরের জাফরান, উড়িষ্যার ‘ভূর্জপত্র’ ও তাবিজ লিখার উপযোগী কলম কিনতে হবে। সব কিছুই সেই দোকানে পাওয়া যায়। এর পরেও টাকা বেচে থাকবে, সেসব তুমি রেখে দিবে।

সময় করে শহরে যাওয়া হল এবং আন্দরকিল্লার সকল তাবিজের কেতাব ও পীতাম্বর শাহের দোকানের মালামাল বাবদ একশত বিশ টাকা খরচ হল। অতিরিক্ত হিসেবে সংগ্রহ করলাম 'ঐন্দ্রজালিক যাদু বা সুলেমানী তেলেসমাতি' নামক বইটি!

উল্লেখ্য ভাবিটি সন্তানের আশায় বার বছর ধরে হেন কোন বৈদ্য কবিরাজ বাকী রাখেনি যার শরণাপন্ন হয়নি। এসব বৈদ্য কবিরাজ থেকেই তিনি পীতাম্বর শাহের দোকান ও তাবিজ লিখার সরঞ্জামের বর্ণনা সম্পর্কে জানতে পারেন আর এসব মুখস্থ রেখেছিলেন। তাছাড়া বৈদ্যরা তাবিজের দাম বাড়ানোর জন্য এভাবে রোগীদের কাছে বিভিন্ন দেশের নাম করে দুর্লভ বস্তুর কথা বলে। ভাবীর এক আত্মীয় রাস্তার ধারে বসে বই বিক্রি করতেন, তার নিকট থেকে বই প্রাপ্তির ঠিকানা উদ্ধার করে নেন। তাই সে শহর না চিনলেও নিজের গরজে এসব তিনি মনে রেখেছিলেন এবং আমাকে মুখস্থ পথ দেখিয়েছেন।

আগের পর্ব: জ্বিন তাড়ানোর প্রশিক্ষণ রপ্ত! এক পিকুলিয়ার মানুষ, পর্ব-৮ (রোমাঞ্চকর কাহিনী) পড়তে চাইলে এই লিঙ্কে ক্লিক করুন।

প্রথম পর্ব: এক পিকুলিয়ার মানুষ! (রোমাঞ্চকার কাহিনী- ভূমিকা পর্ব)

বিষয়: বিবিধ

৩২৮০ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

208183
১৫ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০২:৩৮
১৫ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:১৪
156832
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
208193
১৫ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:১৫
নেহায়েৎ লিখেছেন : এতো দেখি বিশাল কবিরাজী আর শিরকী ব্যাপার স্যাপার ভাই। সোলেমানী কিতাব দিয়ে তাবিজ দিলেন? পরে কি ভাবীর সন্তান হয়েছিল?
১৫ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ০৩:৫৫
156871
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : সে সময় আমরা কবরে গিয়ে সেজদা করাটাকে এবাদত মনে করতাম। তাবিজের কথা বলার জন্যই তো এই রচনায় হাত দিলাম। সাথে থাকুন আমার হাত চলছে। ধন্যবাদ।
208281
১৫ এপ্রিল ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৩
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : এই অন্ধবিশ্বাসের হাত ধরেই সরলমানুষগুলো শিরকের পথে হাঁটে...আল্লাহ আমাদের হেফাজত করুন...আমীন।
১৫ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪০
156968
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : শিরকের পথে আসার জন্য কাউকে জোড় করতে হয়না, ডাকলেই মানুষ অন্ধের মত অনুসরণ করে। ধন্যবাদ।
208363
১৫ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৩৩
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : পিতাম্বর শাহ এর দোকানে এখনও যাওয়া হয় বিভিন্ন মশলার জন্য। কিন্তু সেখানে যে এতসব কিছু পাওয়া যায় তা জানতাম না।
পির হিসেবে একবার প্রতিষ্ঠিত হতে পারলে কিন্তু আর এত কষ্ট করে অন্য দেশে থাকতে হতোনা।
১৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪০
157363
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : পীতাম্বর শাহের দোকান টি এই কাজের জন্যই প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। তারা বাংলাদেশে চন্দন কাঠ সহ যাবতীয় ভেষজ ঔষধী পণ্য আমদানীর প্রধান প্রতিষ্ঠান। বদনামী আছে তাদের এসব পন্যের অধিকাংশই আসে বিনা শুল্কে।

হিং, যৈত্রিক, দেবদারু, জায়ফল সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ বিরল প্রজাতির মশলা তাদের কাছে পাওয়া যায়।

আমি প্রবাস থেকে দেশে গিয়ে দেখেছিলাম, তাদের দোকানে এখন সাধারণ মশল্লাও বিক্রি হচ্ছে। ধন্যবাদ।
208371
১৫ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৩
কেলিফোরনিয়া লিখেছেন : ধন্যবাদ ভালো লাগলো
১৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪১
157364
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
208454
১৫ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:০১
মাটিরলাঠি লিখেছেন : দিলেনতো আবার মাঝপথে আটকিয়ে। আছি আপনার সাথে।
১৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪১
157365
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : ধাক্কা খেতে খেতেই চলতে হবে, ব্যাপার খানা এমনই। ধন্যবাদ।
208630
১৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:২১
রেহনুমা বিনত আনিস লিখেছেন : উপস্থিত!
১৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৪২
157366
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অভিনন্দন।
208714
১৬ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:১১
মদীনার আলো লিখেছেন : সে সময় আমরা কবরে গিয়ে সেজদা করাটাকে এবাদত মনে করতাম।وَلِلَّهِ يَسْجُدُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الْأَرْضِ مِن دَابَّةٍ وَالْمَلَائِكَةُ وَهُمْ لَا يَسْتَكْبِرُونَ [١٦:٤٩]
আল্লাহকে সেজদা করে যা কিছু নভোমন্ডলে আছে এবং যা কিছু ভুমন্ডলে আছে এবং ফেরেশতাগণ; তারা অহংকার করে না।
১৬ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:২৭
157412
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : মানুষ এখন অনেক কিছু বুঝতে শিখেছে, জানতে শিখেছে তাই অনেক পরিবর্তন এসেছে, সেজন্য ইসলামের বিরোধীতাও বেড়েছে। শিরিক পূর্ন ইসলামী সমাজে ইসলামের বিরোধীতা তেমন একটা হয়না, কেননা শয়তান সেই সমাজ নিয়ে দুঃচিন্তা গ্রস্থ থাকেনা। ধন্যবাদ।
209199
১৭ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:০৪
দ্য স্লেভ লিখেছেন : পড়তে মজা লাগছে....
২৭ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:২৯
162142
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
১০
209294
১৮ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০১:১২
কেলিফোরনিয়া লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৭ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:২৯
162143
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
১১
213799
২৭ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৯:২৭
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : টান টান উত্তেজনা নিয়ে পড়তে পড়তে এ পর্যন্ত আসলাম। শিরোনামে পর্ব উল্ল্যেখ্ করার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ। Rose Rose Good Luck Good Luck Rose Rose
২৭ এপ্রিল ২০১৪ দুপুর ১২:৩১
162145
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার জন্যও ধন্যবাদ, আপনি সমস্যা উল্লেখ করার পর দেখলাম আসলেই এটি একটি সমস্যা তাই পদ্ধতি বদলিয়ে দলিাম। আবারো ধন্যবাদ।
১২
265649
১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:২০
আফরা লিখেছেন : আমার দাদাও মানুষকে ছেলে হওয়ার তাবিজ দিত ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File