E-CODES এর আবরণে মুসলমান হারাম খেতে বাধ্য হচ্ছে!

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ২৬ মার্চ, ২০১৪, ০৫:৫০:৫৭ বিকাল



ইউরোপ সহ পাশ্চাত্যের প্রায় প্রতিটি দেশের জনগণের খাদ্য তালিকায় প্রথমেই যে মাংসের নামটি উঠে আসে, তার নাম শুকর। এসব দেশে প্রচুর পরিমাণে শুকর উৎপাদন হয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে শুধুমাত্র ফ্রান্সেই আছে ৪২,০০০ (বিয়াল্লিশ হাজার) পরিমাণ শুকরের খামার। পৃথিবীর সকল প্রাণীর চেয়ে শুকরের দেহেই রয়েছে সর্বাধিক পরিমাণ চর্বি। আবার ইউরোপ আর আমেরিকার মানুষদের মাঝে রয়েছে চরম চর্বি ভীতি! সেখান কার জবাই খানা গুলো থেকে শুকরের মাংস বাজারে চলে যাবার পর প্রচুর পরিমাণ চর্বি জমা হয়ে থাকে। এসব জবাইখানা পরিচালিত হয়, খাদ্য অধিদপ্তরের অধীনে। প্রতিদিন জবাইখানা গুলোতে বিরাট পরিমাণের চর্বি স্তূপ সরাতে খাদ্য অধিদপ্তরদের কর্মকর্তাদের দুঃচিন্তা হিমসিম খেতে হয়।

১৯৪০ সালের আগেও এসব চর্বি জালিয়ে ফেলা হত। পরবর্তীতে তারা চর্বিকে কোন কাজে ব্যবহার করা যায় কিনা, এটা নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাতে থাকে। পরীক্ষায় সফলতা আসে; ফল স্বরূপ প্রাথমিক ভাবে চর্বিকে সাবান তৈরির কাজে ব্যবহার শুরু হয়। পরবর্তীতে আরো ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে, এসব চর্বিকে বিভিন্ন খাদ্য উপাদান ও প্রসাধন সামগ্রী বানাতে ব্যাপক ভাবে ব্যবহার শুরু হয়। যেসব জমাট সামগ্রী একটু গরমে নরম হলেও, সাধারণ অবস্থায় পূর্বের মত জমাট আকার ধারণ করে, সেসব বস্তুতে চর্বিকে কাজে লাগানো হয়। যেমন, টুথপেষ্ট, চকলেট ইত্যাদি। আবার যেসব বস্তু জমাট আকারেই থাকবে তবে তার ব্যবহার হবে মসৃণ; সেসব বস্তুতেও চর্বির ব্যবহার শুরু হয়, যেমন সাবান, লিপস্টিক, ফেস ক্রিম ইত্যাদি। কিছু খাবারকে আকর্ষণীয় করে প্রদর্শন করতে, উপরে সাইনিং গ্লেজ দরকার; সেসব খাবারের উপর ব্রাশ দিয়ে চর্বির উপাদান লেপ্টে দেওয়া হয়, যেমন কেক, বন, ডুনাট ইত্যাদি। সবাই জানে চর্বির স্বভাব এই ধরনেরই। আর গবেষকেরা চর্বির এই চরিত্রটিকেই কাজে লাগিয়েছে ব্যাপক হারে!

ইউরোপে শিল্প বিপ্লব পরবর্তীতে শুকরের চর্বি শুধুমাত্র সাবান উৎপাদনে ব্যবহার না হয়ে, যখন খাদ্য উপাদানেও ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি করল। তখন ইউরোপের বিভিন্ন কোম্পানি গুলো তাদের পণ্যকে আকর্ষণীয় পন্থায় বাজার জাত করতে অত্যাধুনিক ও নান্দনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ফলে চর্বি সংক্রান্ত ব্যবসায়ে জড়িত কোম্পানিগুলোও তাদের ব্যবসায়ের স্বার্থে একত্রিত হয়ে চর্বিকে রাসায়নিক উপাদানের মাধ্যমে প্যাকেট ও বাজারজাত করার প্রতি নজর দেয়। একই সময়ে ইউরোপিয়ান দেশ গুলো একত্রিত হয়ে একটি ঐক্যমত্যে পৌঁছে যে, বাজারজাত সকল খাদ্যের গায়ে, প্যাকের মাঝে কি কি খাদ্য উপাদান আছে তা অবশ্যই উল্লেখ করতে হবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুকরের চর্বির প্যাকেটের গায়ে খাদ্য উপাদান হিসেবে লিখিত হল ‘PIG FAT’ তথা শুকরের চর্বি।



এতে সমস্যা দেখা দিল মুসলিম দেশ গুলোতে। মুসলিম ভোক্তারা দেখতে পেল উৎপাদিত কোম্পানিই ঘোষণা দিচ্ছে প্যাকেটে শুকরের চর্বি উপাদান আছে! যার কারণে তারা তা কিনতে অপারগতা দেখায়। এমনকি এসব পণ্যকে মুসলিম বিশ্বে কড়াকড়ির সাথে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। পাঠকদের নিশ্চয়ই জানা আছে যে, ভারতে ১৮৫৭ সালের সিপাহী বিপ্লব রুদ্ধ করে দিতে ব্রিটিশ বাহিনী নিপীড়ন নীতি গ্রহণ করে। লক্ষাধিক মানুষ সেই সময়ে মারা যায়, যার অধিকাংশই মুসলিম। ঠিক সেই সময়ের ব্রিটিশ বাহিনীতে কর্মরত মুসলিম ও হিন্দু সৈন্যরা বিদ্রোহী নির্মূলে ব্রিটিশের আদেশে গুলি চালাতে অপারগতা প্রকাশ করে। সেই ঘটনার মূলেই ছিল এই শুকরের চর্বি। মৌলভী মোহাম্মাদ বাকের ১৮৩৭ সালে উর্দু আকবর পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং তিনি পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। শাস্তি স্বরূপ ব্রিটিশ বাহিনী ১৮৫৭ সালে তাকে কামানের মুখে (তোপের মুখে) দাঁড় করিয়ে কামানের গোলার মাধ্যমে উড়িয়ে দেন



তখনকার ব্রিটিশ শাসনামলে গুলি তৈরি হত ইংল্যান্ডে আর তা ব্যবহারের জন্য জাহাজের মাধ্যমে হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে আনতে হত ভারতে। জাহাজে পাটাতনে রৌদ্র তাপে বারুদ এবং বন্দুকের গুলি জাহাজের ডেকেই বিস্ফোরিত হবার সম্ভাবনা থাকত। তাই তাপ কমানো সহ নানা নিরাপত্তার জন্য গুলির চারিদিকে চর্বি নির্মিত একটি কভার থাকত। গুলিটি বন্দুকে ঢুকানোর আগে সৈন্যদের দাঁত দিয়ে চর্বির কভার টি ছিঁড়ে ফেলতে হত। এই ঘটনা প্রকাশ পাবার পর মুসলিম ও হিন্দু সৈন্যরা গুলি চালাতে অপারগতা প্রকাশ করে। সেটা নিয়ে সংগঠিত কোন্দল ও দাঙ্গা ঠেকাতে ব্রিটিশ সরকারকে অনেক খেসারত দিতে হয়েছিল! শুকরের চর্বি নিয়ে একই সমস্যায় ব্রিটিশ ও ইউরোপীয়রা তাদের বহু বাজার হারায়। ফলে তারা নতুন বুদ্ধি আবিষ্কারে প্রমাদ গুনে।

এর পরে ইউরোপিয়ান ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যের গায়ে ‘PIG FAT’ না লিখে, লিখতে শুরু করে ‘ANIMAL FAT’ তথা প্রাণীজ চর্বি! ১৯৭০ দশকে আবারো মুসলিম দেশগুলোতে থেকে জানতে চাওয়া হয় এসব কোন ধরনের প্রাণীর চর্বি? তখন ব্যাখ্যায় বলা হত এসব গরু কিংবা ভেড়ার চর্বি, তবে প্যাকেটের গায়ে গরু-ভেড়ার চর্বি দাবী করা হত না। তখন নতুন করে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়, যুক্তির খাতিরে যদি ধরাই হয় এসব গরু কিংবা ভেড়ার চর্বি! তারপরও মুসলমানদের এসব চর্বি-জাত দ্রব্য খাওয়া হারাম। কেননা এসব প্রাণী জবাই করার সময় আল্লাহর নামে জবাই করা হয়নি। আল্লাহর নামে জবাই না হবার কারণে হালাল পশুর মাংস ও মাংসজাত দ্রব্যও হারাম হয়ে যায়। ফলে মুসলিম বিশ্ব পুনরায় প্রাণীজ চর্বি নিষিদ্ধ করে এবং এসব চর্বি জাত সামগ্রী আমদানি নিষিদ্ধ করা হয়।

এরফলে মাল্টি-ন্যাশনাল কোম্পানি গুলো বহু বিলিয়ন ডলারের ব্যবসায়ীক লোকসানির মুখে পতিত হয়। এসব কোম্পানির ৭৫% ব্যবসা মুসলিম দেশ গুলোর উপর নির্ভরশীল। বারে বারে এভাবে তাদের ব্যবসায়ীক চাতুরী ধরা পড়ার পরে তারা সিদ্ধান্ত নেয়, এ ব্যাপারে একটি ব্যবসায়ীক কোডিং ভাষা সৃষ্টি করা হবে! ‘Departments of Food Administration’ ছাড়া এই ভাষা আর কেউ বুঝতে পারবেনা। সর্ব সাধারণ ক্রেতারা জানতে পারবেনা তার অভীষ্ট খাদ্য কি উপাদান দিয়ে তৈরি হয়েছে! এরই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৯০ এর দশকে ‘Departments of Food Administration’ নতুন একটি কোডিং ভাষা চালু করে যার নাম দেওয়া হয় E-CODES. তখন থেকে সকল প্রকার প্যাকেটে E-INGREDIENTS হিসেবে সকল বস্তুর উপাদানের নাম লিখিত হয়ে আসছে। ইউরোপ আমেরিকায় ব্যবসা করতে হলে, এই আইনকে কড়াকড়ি ভাবে সবাই মানতে বাধ্য, আজ অবধি এই আইন মেনেই সবাই ব্যবসা করছেন। আজকের বাজরে এমন হয়েছে যে, ইউরোপের মালামালে লিখা থাকে চর্বি এত শতাংশ কিন্তু কিসের চর্বি তা ব্যবসায়িক মতলবে লুকানো হচ্ছে! নিজের আইন বানিয়ে, নিজেরা এত কঠোর হবার পরও তারা তাদের উৎপাদিত কিছু সামগ্রীর গায়ে E-INGREDIENTS উল্লেখ করেনা! কৌতূহল এবং প্রশ্ন সেখানেই! সে সব জিনিষের তালিকাটি হল নিম্নরূপ:

TOOTH PASTE, SHAVING CREAM, CHEWING GUM, CHOCOLATE, SWEETS, BISCUITS, CORN FLAKES, TOFFEES, CANNED FOODS, FRUIT TINS ইত্যাদি। কেন! এমনটি করা হয়েছে তা ব্যাখ্যা ব্যতিরেকে বুদ্ধিমান ও সতর্ক ব্যক্তি পড়া মাত্রই বুঝে নেওয়া উচিত এবং তার বিপরীতে নিজের মত করে আরেকটি বিকল্প বের করা তারই দায়িত্ব। কেননা ঈমানদার ও তাকওয়া সম্পন্ন ব্যক্তি মানেই সকল বিষয়ে অতি সতর্ক একজন মানুষকে বুঝায়।

ঔষধ এবং মাল্টি-ভিটামিন তৈরি করা হয় হারাম উপাদান দিয়ে! এসব পণ্যে নির্বিচারে মুসলিম দেশ গুলোতে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলশ্রুতিতে মুসলিম সমাজের শিশুদের মাঝে বেহায়াপনা, নির্লজ্জতা, কর্কশতা, রূঢ় স্বভাব, নৈতিক সাহস, যৌন বিমিশ্রতা সহ নানাবিধ চারিত্রিক ও সামাজিক অধঃপতন নেমে আসছে। মুসলিম আর হারাম ভক্ষকদের সন্তানকে কাউকে আলাদা করে চেনাটা দায় হয়ে পড়ছে!

সুতরাং সতর্ক মুসলিম কিংবা শুকরের মাংস খায়না এমন সচেতন ব্যক্তিরা যদি একটু সচেষ্ট হন তাহলে এর থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেন। তবে তাদেরকে অবশ্যই ‘E-CODES’ নিয়ে ধারনা থাকতে হবে। সবার পক্ষে যেহেতু ‘E-CODES’ গবেষণা করা ও সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয় তাই নিচের তালিকা দেখে এসব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিন এই কোডের জিনিষগুলো খাবেন না, ব্যবহার করবেন না। তাহলে শুকরের চর্বি অথবা হালাল প্রাণীর হারাম চর্বি-জাত খাদ্য থেকে নিজে বাঁচবেন বংশকে বাঁচাতে পারবেন। কোডগুলো নিম্নরূপ:

E100, E110, E120, E140, E141, E153, E210, E213, E214, E216, E234, E252, E270, E280,

E325, E326, E327, E334, E335, E336, E337, E422, E430, E431, E432, E433, E434, E435, E436, E440, E470, E471, E472, E473, E474, E475, E476, E477, E478, E481, E482, E483, E491, E492, E493, E494, E495, E542, E570, E572, E631, E635, E904. (**)

একটি উদাহরণ: এই লিখাটি পড়ে অনেক পাঠকের মনে কৌতূহল ও বিভ্রান্তি দুটোই সৃষ্টি করবে। অনেকে তথ্য যাচাই করার জন্য সম্ভাব্য সকল উপায় অবলম্বন করবে এবং করাটাই উত্তম। কৌতূহলী ও সতর্ক পাঠক যদি প্রথম নম্বর তথা ‘E100’ কে যাচাই করতে চান, তখন ব্যাখ্যায় বলা হবে ‘Curcumin’ - Yellow-orange Colour. অথবা Turmeric তথা হলুদ। ফলে মনে হতে পারে, হলুদ কোন অর্থেই হারাম পণ্য হতে পারেনা, কেননা এটি উদ্ভিদের মূল থেকে আহরিত একটি গুরুত্বপূর্ণ মশলা! উল্লেখ্য ‘E100–E199’ নম্বর পর্যন্ত সংখ্যাগুলো ব্যবহৃত হয়েছে রংয়ের জন্য। ‘E100’ কোডটি হলুদাভ কমলার জন্যই প্রযোজ্য, আর সমস্যাটা এখানেই। রংটি যদি সরাসরি হলুদ থেকে নেওয়া হয় সমস্যা নাই আর রংটি যদি তরল ও পাউডার আকারে ল্যাবরেটরিতে বানানো হয়, তাহলে বুঝতে হবে সেটা তৈরি করতে হারাম উপাদান তথা এলকোহলের সাহায্য নেওয়া হয়েছে।

‘E100 – INGREDIENTS’ টি খাদ্য দ্রব্যের জন্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এটি বাজার জাত দ্রব্যকে সূর্যালোক সহ বিভিন্ন আলোর অনিষ্টটা থেকে দীর্ঘসময় বাঁচিয়ে রাখে। খাদ্য উপাদানের হলুদ রং দীর্ঘস্থায়ী ও আকর্ষণীয় করতে এটির ব্যবহার ব্যাপক। কাঁচা হলুদ থেকে আহরিত রস দিয়ে রং করলে ক্ষণকাল পরে দ্রব্য বিবর্ণ হয় এবং রং তলানিতে বসে যায়। বোতল ঝাঁকিয়ে ব্যবহার করতে হয় আবার আসল হলুদের রং দীর্ঘদিন স্থায়ীও হয়না। তাই দ্রব্যে হলুদ রং ধরে রাখতে হবে এবং তা দীর্ঘদিন অব্যাহত রাখতে হবে। তাই দ্রব্যের হলুদ রংয়ের সমস্যা দূর করতে রংয়ের মূল উপাদানকে অ্যালকোহলে দ্রবীভূত করে রাখতে হয়। পরে একটা নির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে এই রং বাজার জাত করা হয়। সে কারণে এটা হারাম, কেননা এটা তৈরি করতে সরাসরি হারামের সহযোগিতা নিতে হয়েছ এবং তখনও তার ভিতরে হারাম বিদ্যমান। একই পদ্ধতিতে স্প্রে আতরও তৈরি হয়, তাই সেটাও হারাম। ‘E100’ উপাদানটি রেডি-ম্যাট পানীয়, বেকারির দ্রব্য, আইসক্রিম, দই, বিস্কুট, ভুট্টার রঙ্গিন খই, মিষ্টি, কেক, নুডুলস্‌, মায়োনাইজ, আচার, সচ, জিলেটিন, বিরিয়ানি, সুপ, ফাস্টফুড সহ প্রচুর রেডিমেড খাদ্যে ব্যাপক পরিমাণে ব্যবহার হয়।

Fatty Acid (ফ্যাটি এসিড) খাদ্য ও পুষ্টির জন্য একটি বহুল ব্যবহৃত উপাদান। অনেক প্রকারে ফ্যাটি এসিড আছে, যেমন; Stearic Acid, Lauric Acid, Myristic Acid, Oleic Acid, Palmitic Acid. ফ্যাটি এসিড মূলত প্রাণীজ চর্বি ও উদ্ভিজ্জ তৈল থেকে তৈরি হতে পারে। উদ্ভিজ্জ তৈল ভোক্তারা রান্নায় কাঁচা খাওয়ার কারণে এমনিতে এটার বাজার মূল্য চড়া থাকে। তৈল দিয়ে ফ্যাটি এসিড বানানোর চাইতে, চর্বি দিয়ে বানানো সহজসাধ্য। স্বল্পমূল্য, হালকা কারিগরি প্রয়োগ ও অধিক মুনাফার কারণে ব্যবসায়ীরা চর্বি দিয়েই এই কাজটি সেরে নেয় তা বলাই বাহুল্য। পণ্যের মাঝে এসবের কোন ব্যাখ্যা থাকেনা। উৎসাহী পিতামাতারা বাজার থেকে কিনে বাচ্চাদের যে সব টিনজাত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়াচ্ছেন! তারা কি কখনও লক্ষ্য করেছেন যে, পুষ্টির তালিকার শুরুতেই লিখা আছে Fat %! কোথাও কি বলা আছে সেটা কিসের Fat? শফিং মল গুলোতে চোখ বন্ধ করে একটি পুষ্টিকর খাবারের প্যাকেট হাতে নিলেও দেখা যাবে ‘Fat’ ব্যতীত কোন খাবারই নাই! হয়ত মনে উত্তর আসবে এটার প্রয়োজন বলেই রাখা হয়েছে! আসল ব্যাপার হল, এই সামান্য ফ্যাটে খাদ্য উপাদানের কোন তারতম্য হয় না, এটা দেওয়া হয়েছে খাদ্যকে সুন্দর দেখাবে কিংবা গরম করলে হালকা ফেনা উঠবে কিংবা শুকনো খাদ্য কণা একটার সাথে অন্যটা লেগে যাবেনা। ব্যবসায়ীদের এই সামান্য সুবিধার জন্য ক্রেতাদের সাথে পরিহাস করা হয়। লাল চিনি অনেকেই খায়না, মোটা চিনি আত্মসম্মানের ভয়েও কেউ কিনে না! প্রয়োজনে Refined দাবী করা চিনি বেশী টাকা দিয়ে কিনে খায়, রোজা রাখে, ইফতারীও করে। কেউ কি ভুলেও চিন্তা করেছে যে, এই চিনিকে রিফাইন্ড করতেও যে হারাম চর্বির ঘষা লাগানো হয়েছে! ব্যবসায়ীর কাছে মুনাফাটাই বড়, যার কাছে ঈমান বড়, তার কাছে এই খবর মৃত্যু তুল্য সংবাদ হবে কোন সন্দেহ নাই। তাই বিদেশী এসব খাদ্যের উপর নির্ভর না করে, নিজ দায়িত্বে ঘরের খাদ্যে নির্ভর করাই উত্তম। বাজারের নাস্তাকে বাদ দিয়ে ঘরে মা অথবা গিন্নীর হাতের পিটা পায়েস খাওয়া শতগুন বেশী ভাল। আল্লাহ বলেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ! যদি তোমরা যথার্থই আল্লাহর বান্দাহ হও, তাহলে যে সমস্ত পাক-পবিত্র জিনিস তোমাদের দেওয়া হয়েছে, সেগুলো নিশ্চিন্তে খাও এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো’। সূরা বাকারা-১৭২



এখানে গুটিকয়েক খাদ্য উপাদানের ব্যাখ্যা করা হয়েছে, শুধুমাত্র অন্তনিহীত রহস্য বুঝার জন্য। এভাবে সকল খাদ্য উপাদানের ব্যাখা করতে হলে পাঠক অবশ্যই ত্যক্ত বিরক্ত হবে। বাজারে এমন কিছু দামী খাদ্য আছে যার লোভনীয় ঘ্রাণ নাকে আসলেই মানুষের মন মৌ মৌ করে। অথচ তিনি জানেন না, খাদ্যের সেই ঘ্রাণ তৈরি করা হয়েছে মানুষের লোম কিংবা হাঁসের পালক পোড়া ছাই থেকে! তাই আল্লাহ বলেছেন চিন্তা করতে ও নিজের বিবেক বুদ্ধিকে সজাগ ও সতর্ক রাখতে। শুধুমাত্র সুন্দর রংয়ের খাদ্য ও আকর্ষণীয় পানীয় পান করতে গিয়ে নিজের অজান্তে কত বড় সর্বনাশ ডেকে নিচ্ছি তা কেউ চিন্তা করছিনা। আলস্য, অভিলাষ, ও প্রেস্টিজ ইস্যুর কারণেই আমরা এসব দ্রব্য ব্যবহার করি। অন্যদিকে নিজের জীবন, চরিত্র, সর্বোপরি বস্তুনিষ্ঠ কর্ম সবই হুমকির মুখে পড়বে। একজন ইমানদার কঠিন ভাবে জীবন যাপন করার পরও নিজের অজান্তে ইমান খুইয়ে জাহান্নামের কিনারায় এসে পড়বে। এসব অবহেলা ও নিদ্রামগ্নতার জন্য আল্লাহ অবশ্যই পাকড়াও করবে। একজন অমুসলিম হলেও হারাম দ্রব্য গ্রহণে দুনিয়ার জীবনে অপমান আর লাঞ্ছনা তার পিছু ছাড়ে না।

(**) Dr. M. Amjad Khan, Medical Research Institute, United States

লেখক: আমিরাত প্রবাসি

বিষয়: বিবিধ

৭৭৭৩ বার পঠিত, ৪২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

198333
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৭
মামুন আব্দুল্লাহ লিখেছেন : এইজন বীফ লেম্প খুব একটা খাইনা বললেই চলে । ইউরোপে শুকরের মাংস একটি নিত্যনৈত্তিক ঘটনা । মাংস কেনার সময় একটু সর্তকতা অবলম্বন করা উচিত তাহলে এসব হারাম মাংস খাওয়া থেকে রেহাই পাওয়া যাবে ।
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৪
148287
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : বীফ লেম্প তো চোখে দেখা যায়, সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। যা দৃশ্যমান নয়, চোখে দেখা যায়না, আমি তাই নিয়ে বলছি। অনেক ধন্যবাদ।
198345
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৭
শেখের পোলা লিখেছেন : সাংঘাতিক ব্যাপার৷ ধন্যবাদ৷
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:২৯
148290
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনুধাবন করার জন্য অনেক ধন্যবাদ। অন্যকে জানান এটা দায়িত্ব ও কর্তব্য।
198354
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৪
চোথাবাজ লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৪
148295
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
198355
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৪৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : জরুরি পোষ্টটির জন্য ধন্যবাদ। আমাদের দেশে অস্ট্রেলিয়া থেকে লার্ড বা জমাট চর্বির এর বড় বড় চালান আসে সাবান সহ বিভিন্ন ইন্ড্রাষ্ট্রিতে ব্যবহারের জন্য। এর একটি বড় অংশ অসাধু ব্যবসায়িরা খাবার তেল সহ বিভিন্ন খাবার জিনিসে মিশায়। অথচ সেই লার্ড এর প্রধান উপাদান শুকরের চর্বি। এখন দেশে বিদেশি খাবার এর পরিমান ও বেড়ে গেছে। কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান অবশ্য এই ধরনের একটি কথা লিখে রাখে মোড়কে যে হালাল নয় এমন কিছু ব্যবহৃত হয়নি। কিন্তু এর কতটুক সঠিক তা বলা যায়না।
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৭
148298
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন। আমাকে ভয় ঢুকিয়ে দিলেন। আমি এই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ লিখাপড়া ও ব্যাপক অনুসন্ধান করে এই প্রবন্ধটি লিখেছি অতঃপর নিজেও ভয় পেয়ে গিয়েছি। অনেক ধন্যবাদ।
198362
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৯
প্যরাপিন লিখেছেন : খুবই গুরুত্বপূর্ণ পোষ্ট , ধন্যবাদ ভাই ।
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:১৮
148392
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।
198396
২৬ মার্চ ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৭
পুস্পিতা লিখেছেন : খুবই প্রয়োজনীয় তথ্য। অনেক ধন্যবাদ।
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:১৮
148393
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
198408
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:০৯
মোহাম্মদ লোকমান লিখেছেন : অত্যন্ত তথ্যবহুল লেখাটির জন্য অনেক ধন্যবাদ, টিপু ভাই।
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:১৯
148394
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
198424
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ০৮:২৭

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 7238

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> রায়হান রহমান লিখেছেন : তো, পঁচা বাসি ভেজল, জীবানু, ফরমালিন এসব নিয়ে আমাদের মুসলিমরা কবে ভাবিত হবে?
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:২৩
148397
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : হারাম খেলে শাস্তি হবে আখেরাতে। ভেজাল, ফরমালিন যুক্ত খাদ্যের অপরাধে শাস্তি হবে দুনিয়া ও আখেরাতে। ফরমালিন যুক্ত করার কারনে ইসলামী নীতিতে ফাঁসি হয়। ইসলাম যেহেতু শাসন ক্ষমতায় নাই, তাই প্রয়োগও নাই। ইসলাম ব্যতীত যত শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, সেখানে অন্যায়কারী সর্বদা বেচে যায়। দূর্বল সর্বদা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। অবশ্যই প্রকৃত মুসলমানকে ক্ষমতায় যেতে হবে, তাহলে এসবের সূরাহা হবে। অনেক ধন্যবাদ।
২৬ মার্চ ২০১৪ রাত ১১:০৫
148406

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 7238

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 917

"> রায়হান রহমান লিখেছেন : হায়হায়, ইসলামের এত এত্ত সুন্দর আইন সব ভ্যনিস হইয়্যা গেল নাকি? প্রকৃত মুসলাম কিডা???
২৭ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৯:০৬
148470
আয়নাশাহ লিখেছেন : "অবশ্যই প্রকৃত মুসলমানকে ক্ষমতায় যেতে হবে, তাহলে এসবের সূরাহা হবে।" বলেন কি?
সৌদি আরবের বিখ্যাত দায়ী মতিউর রহমান মাদানী তো শেখ হাসিনাকেই ক্ষমতায় রাখতে চান কারণ তার বিরধীতা করা নাকি শরিয়তে জায়েজ নাই। নামাজ পড়তে পারলে আর বিবিকে পর্দা করাতে পারলেই নাকি দ্বীন কায়েম হয়ে গেলো। ব্যাস।
২৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:২৫
148517
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : প্রকৃত মুসলমানের ছোট্ট পরিচয় হল, তারা মানুষদের সৎ কাজের আদেশ দেয়, অসৎ কাজে বিরোধিতা করে। তারা যদি ক্ষমতা প্রাপ্ত হয়, তখন নামাজ কায়েম করে জাকাতের বিধান চালু করে। সুতরাং এই মানদন্ডে প্রকৃত মুসলিম বাছাই করে নিতে পারেন। ধন্যবাদ।
২৮ মার্চ ২০১৪ রাত ১০:৪৪
149170

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 7238

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 917

"> রায়হান রহমান লিখেছেন : আমরাতো দেখি নামাজ, রোজা, হজ্জ, জাকাত সমান তালেই চলে। তারপরও ইসলামগ্রস্থ মুমিনদের এই দেউলিয়া দশা কেন?
198506
২৭ মার্চ ২০১৪ রাত ১২:৫৪
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম লিখেছেন : আপনার লিখার জন্য ধন্যবাদ। অনেক দরকারী লিখা। তবে
ছোট ছোট কিছু প্রশ্ন ছিলো,যেগুলোর উত্তর জানতে ইচ্ছে করে।
১) হলুদ রং হলেই যে অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় আপনি কিভাবে নিশ্চিত হলেন?
যেসব পদার্থ লিপিড সল্যুবল সেগুলো কেবল মাত্র অ্যালকোহলে দ্রবীভূত। এমনতো হতে পারে যেসব হলুদ রং পানিতে দ্রবীভূত সেগুলো ব্যবহার করা হয়। আপনি যেসব ঔষুধ সেবন করেন সেগুলো নিয়ে কোন কিছু লিখেননি অনেক ঔষুদে অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় শুধুমা্ত্র সল্যুবিলিটি ইস্যুর জন্য। ইসলামে অ্যালকোহল বা মদ নিয়ে আয়াত গুলো এখানে উল্লেখ করলে ভালো হতো। কেউ যদি অ্যালকোহল পান করা বা ব্যবহার করা এক জিনিস আর অন্য জিনিস তৈরীতে অ্যালকোহল ব্যবহারের ব্যাখ্যা হয়তো আর এক জিনিস।
২) যেসব সুগন্ধিতে অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় সেসব সুগন্ধী কি ব্যবহার করা হারাম??
অ্যালকোহল একটি ভোলাটাইল পদার্থ অর্থ এটি বাতাসে মিশে যায় দ্রুত। এখন প্রশ্ন হলো যেসব সুগন্ধি তৈরীতে অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় সেসব সুগন্ধী ব্যবহার করলে অ্যালকোহলের ব্যবহার হয় কিনা প্রশ্ন থেকে যায়। কারন
১) কেউ অ্যালকোহলকে উদ্দেশ্য করে সুগন্ধী ব্যবহার করে না।
২) সেসব সুগন্ধী ব্যবহার করলেও অ্যালকোহল ভোলাটাইল পদার্থ হওয়ার কারনে শরীরে থাকেনা।
আপনি আমি অনেক কার্বোহাইড্রেড খাই যেগুলো ও অ্যালকোহল,
যেমন কিছু সুগার অ্যালকোহল আছে সেগুলোর ব্যাপারে প্রশ্ন থেকে যায়। যেমন আপনি আপেল খান, আপেল ম্যানিটল থাকে যা একটি সুগার অ্যালকোহল।
এবার আসা যাক E নাম্বার নিয়ে, আমি নিজে ও চেক করে দেখেছি। অনেকগুলোতে লিখাই থাকে প্রানীজ পদার্থ ব্যবহার করা হয়েছে। আবার কিছু থাকে যেগুলো সিনথেটিক। আপনি বাইকার্বোনেট এর নিচে দাগ দিয়েছেন, বাইকার্বোনেট একটি সল্ট আমি জানিনা এটির প্রানিজ উতস আছে কিনা, কারন এটি একটি খনিজ পদার্থ।

তবে আমি যতটুকু জানি, কেউ যদি কোন ই নাম্বার নিয়ে সন্দেহ পোষন করে তাহলে ঐ প্রোডাক্ট কম্পানীর সাথে যোগাযোগ করলে তারা সত্য বলে দেয় যে উতস কি। বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বে ভোক্তাদের অধিকারের ব্যাপারে এরা অনেক সচেতন।
আমি এটি বললাম যে যাতে করে লোকজন একটি উপায় বের করে নিতে পারে মধ্যম পন্থা হিসেবে।

জাযাকাল্লাহ খাইরান আপনার সুন্দর লিখার জন্য।
২৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:১৫
148509
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার দীর্ঘ প্রশ্ন ও মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ।

১. E100 টি পয়েন্ট টি উদাহরণের জন্যই লিখা হয়েছে। সেখানে আমার কথা ছিল যদি আমরা নিশ্চিত হই রঙটি হলুদ থেকে আহরিত তাহলে তো সমস্যা নাই, যদি তরল ও পাউডার হয় তাহলে যাচাই করে ব্যবহার করতে হবে। কেননা সেখানে কিছুটা সন্দেহের অবকাশ রয়েছে।

২. আসলে আমি রচনাটি লিখেছি পাঠকদের সতর্ক করার জন্য। এমনিতেই প্রবন্ধটি লম্বা হয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করা আমার উদ্দেশ্য ছিলনা কেননা পাঠক মাত্রই হালাল ও হারাম সম্পর্কে সম্যক অবগত। সে জন্য হালাল হারামের সম্পর্কিত আয়াতগুলো তুলে আনা হয়নি।

৩. ইসলামী শরীয়ত হারাম উপাদানের ঔষধ প্রয়োগের ক্ষেত্রে মুমিন কোন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে তাগিদ দিয়েছেন। এখানে প্রথমত ব্যক্তিকে ডাক্তার হতে হবে দ্বিতীয়ত মুমিন হতে হবে। মুমিন পাওয়া না গেলে অন্তত ডাক্তারের পরামর্শ তো লাগবেই। তবে ঔষধের যদি বিকল্প থাকে তাহলে সেটাই ব্যবহার করাকে গুরুত্ব দিয়েছে। এটা সবার ক্ষেত্রে স্বীকৃত একটি তথ্য।

৪. ইসলামী শরীয়তে একটি সীমারেখা আছে যাকে বলে হূদুদ। অর্থাৎ হারামের কিনারাও না ভিড়া। আতর ব্যবহার সুন্নাত, আর হারামের নিকটে যাওয়াও নিষেধ। যেহেতু সুগন্ধির বিকল্প আছে সেহেতু এলকোহল যুক্ত আতর ব্যবহার সঠিক হতে পারেনা। যদিওবা সেটা উড়ে যায়। উড়ে যাবে বলেই কেউ হারামকে পছন্দ করতে পারেনা, যদি না জীবন মরণের সমস্যা না হয়।

এক্ষেত্রে আবু যর (রাঃ)'র, পচনশীল একটি পা কেটে ফেলার দরকার হল। হেকিম পরামর্শ দিল আপনি মদ পান করুন, তাতে আপনি অনুভূতি শূন্য হবেন এবং আমার পক্ষে পা কাটা সহজ হবে। তিনি বললেন, যা আল্লাহর রাসুল অপছন্দ করেছেন, জীবনের বিনিময়েও আমি তাকে পছন্দ করতে পারিনা। আপনি আমার পা কাটুন আমি ব্যথা পেলেও আপনার কাজে বিঘ্ন ঘটাব না। এই ঘটনাটি দৃষ্টান্তের জন্য পেশ করলাম, শরীয়তের ব্যাখা নয়। আমি আলেমও নই তাই ব্যাখা করার উপযুক্ত নই।

৫. আমি উপরের যে চার্টের নিচে দাগ দিয়েছি, তা হারাম বুঝানোর জন্য দাগ করি নাই। স্যাম্পলের মাঝে E-CODES দেখতে কেমন পাঠকদের তা বুঝাতে ফটো খানা সন্নিবেশিত হয়েছে।

৬. আমাদের হালাল খাদ্যের মাঝেও হারাম সৃষ্টি হয়ে যায়। রাসুল (সাঃ) সেটার ও গাইড লাইন দিয়েছেন, যেমন কাঁচা আঙ্গুর আধা দিনের বেশী ভিজানো থাকলে তা খেতে নিষেধ করেছেন। আধা-পাকা খেজুরর জন্যও আলাদা সময় বলেছেন, শুকনা খেজুরের জন্য সময় নির্ধারণ করেছেন। এই মুহূর্তে সময় গুলো সঠিক মনে আসছেনা বলে উল্লেখ করলাম না। সুতরাং হালাল খাদ্য হারাম হয়ে যায় যদি সেটাতে এলকোহল ফর্ম করে।

৭. সকল ই নাম্বারকে এখানে হারাম বলা হয়নি। কিছু আছে সরাসরি হারাম, কিছু সন্দেহযুক্ত, অনেকগুলো সন্দেহ মুক্ত। আমার লিখনিটি নিশ্চয়ই E-CODES এর বিরুদ্ধে কোন প্রচারণা নয়, যেহেতু আমাদেরকে এসব মেনেই চলতে হচ্ছে, তাই সবাইকে সতর্ক ও সজাগ করার জন্য এই প্রতিবেদন।

অনেক ধন্যবাদ।
২৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:৪১
148527
আহমদ মুসা লিখেছেন : ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্য থেকেও অনেক কিছু জানতে পারলাম। শোকরিয়া
১০
198516
২৭ মার্চ ২০১৪ রাত ০১:০৯
উম্মু রাইশা লিখেছেন : কঠিন
২৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:১৬
148510
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনুধাবন করার চেষ্টা করলে আল্লাহ সহযোগীতা করবেন।
১১
198533
২৭ মার্চ ২০১৪ রাত ০২:০৯
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : E-CODES এর অনেকগুলো নাম্বার দিয়েছেন। আমাদের এখানে সচেতন সবাই এই কোড গুলো দেখে কিনে তবে এতগুলো নাম্বার জানা ছিলনা। আজকাল প্র্যাকটিসিং মুসলমানরা বেশী সচেতন হচ্ছেন বলে ব্যবসার খাতিরে এখন হালাল চাইনিজ রেস্টুরেন্ট, হালাল KFC খোলা হচ্ছে। ধন্যবাদ আপনাকে তথ্যবহুল পোষ্টটির জন্য।
২৭ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:০৩
148438
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম লিখেছেন : ভাই এখানে আরো দেখে নিয়েন
http://en.wikipedia.org/wiki/E_number
২৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:১৮
148511
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : খুব সুন্দর মন্তব্য। আমরা সচেতন আছি বলেই হালাল ব্যবসার প্রসার ঘটছে।
১২
198547
২৭ মার্চ ২০১৪ রাত ০৩:০৫
২৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:২২
148512
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনার নম্বর গুলো পাঠকের আরো বেশী উপকারে আসবে। আমি যে নম্বর গুলো দিয়েছি সেগুলো আমার আবিষ্কার নয়। আমি সেই গবেষকের নাম উল্লেখ করেছি। তার নাম Dr. M. Amjad Khan, Medical Research Institute, United States আপনাকে অাবারো ধন্যবাদ।
১৩
198663
২৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ১২:৫২
আহমদ মুসা লিখেছেন : অনেক গুরুত্বপূর্ণ, শিক্ষনীয় ও ভাবনার বিষয়ে একটি অসাধারণ দারুণ পোষ্ট শেয়ার করলেন। অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
পৃথিবীতে একশ ত্রিশ কোটির বেশী মুসলমানের সংখ্যা। অথচ চর্বিজাত দ্রব্যাদির প্রসেসিং সংক্রান্ত সুষ্টু শিল্প কারখানা ও প্রয়োজনীয় আইন কানুন প্রনয়ন ও বাস্তাবায়ন তাদের হাতে নেই। মুসলমানরা শুধু উৎপাদিত পণ্যের ভোক্তা হিসেবেই আছে। এসব পণ্যের উৎপাদনের কর্তৃত্ব যদি মুসলমানদের নিয়ন্ত্রণে থাকতো তবে হিংস ভাগ হারাম বস্তুর প্রচলন রোধ করা যেত। সৌদি আরবসহ মধ্যেপ্রাচ্যের বিলাসী দেশগুলো আছে শুধু ইউরোপ আমেরিকা বা চীন-জাপান নতুন কি জিনিস তৈরী করলো তা সবার আগে ভোগ করার প্রতিযোগিতায়। নিজেরা কিছু উদ্ভাবনের প্রতি এখনো পূরোদমে সচেতন হয়ে উঠেনি।
২৭ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০১:৫৯
148569
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : একেবারে সঠিক জায়গার রোগ ধরতে পেরেছেন। দুনিয়ার সকল মুসলিম ভোক্তা। বেশীরভাগ মুসলমান ইসলাম বলতে বৈরাগীর মত জীবন যাপন করাকেই মনে করে। সত্যকে সত্য বলা যাবেনা, মিথ্যাকে মিথ্যা না বলে বোবার মত থাকা আর সামনে যা পাওয়া যায় তার থেকে কবুতরের মত বাছাই করে খাওয়াকে হালাল খাবার মনে করে।

মুসলমানদের ভোক্তা বানাতেই ভারতেই আগ্রাসী নীতিতে পুরো দেশ পর্যদূস্ত। অনেক ধন্যবাদ।
১৪
199065
২৮ মার্চ ২০১৪ সকাল ০৫:৫৬
উম্মু রাইশা লিখেছেন : ভাই, ভ্যাকসিনে যে কিছু হারাম জিনিষ ব্যভার হয় সেগুলি লিখলে ভাল হত। বানরের টিস্যু, শুকরের টিস্যু, মানড ডি এন এ, ইত্যাদি ভাইরাস কালচার করতে ব্যব হার হয়।
http://www.vaccinationcouncil.org/2011/01/20/islam-vaccines-and-health-2/
৩১ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:৫৩
150586
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আমার এই লিখাটি দৃশ্যমান ব্যবহৃত সাধারণ জিনিষের উপর প্রতিবেদন ছিল। ম্যাডিসিন, ভ্যাকসিনের আরো গভীরে। তাই দুটো জিনিষকে একতে গুলিয়ে ফেলিনি। যদি সময় করতে পারি অবশ্যই করব। একটি প্রতিবেদন লিখতে যে পরিমান সময় চলে যায়। সেই সময়ে কয়েকটি গল্প কিংবা নাটক লিখা যায়।

এই বিষয়ে আগে আমাকে অনেক লিখাপড়া করতে হবে, তারপর লিখার প্রতি চিন্তা করতে পারব। অনেক ধন্যবাদ।
১৫
201744
০২ এপ্রিল ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৭
ইবনে আহমাদ লিখেছেন : অনেক দিন পর আপনার সেই আগের মত লিখা পেলাম। লিখাটি নয়া দিগন্তে বা জাতীয় কোন পত্রিকায় দিলে উপকার হত।
আগে আপনার লিখাগুলো খুবই সময় নিয়ে পড়তাম। বিডিতে আপনার সে রকম কোন লিখা আমি পড়িনি। বা চোখে পড়েনি।
ওমরা করতে আসছেন শুনেছি। নাম্বার চেয়েছিলাম আবু জারির ভাইর কাছে। আপনাকে স্বাগত বালাদুল হারামে।
আমরা জেদ্দায় একটি প্রোগ্রাম করার কথা চিন্তা করছি আপনাকে নিয়ে। প্রবাসী মজুমদার এ বিষয়ে একমত হয়েছেন। অপেক্ষায় আছি। দেখা করার একান্ত বাসনা নিয়ে।
১৪ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:১২
156071
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। দৈনিক পত্রিকাতে লিখা প্রকাশে অনেক লম্বা ঝামেলা। তাদের সাথে ভাল পরিচিতি থাকতে হয়। পরিচিতির কারণে অনেক অখ্যাত ব্যক্তিও বিখ্যাত হয়, আবার বিখ্যাত ব্যক্তিও ম্রিয়মান হয়।

আমি যা লিখি কল্যাণের নিয়তে লিখি, বাহবা কিংবা খেয়ালের বশবর্তী হয়ে লিখিনা। সে জন্য লিখাপড়া করি তারপর হাত লাগাই। ইদানীং খুব কম সময় পাই, তাই লিখাতে ধারাবাহিকতা নাই।

আলহামদুলিল্লাহ বালাদুল হারামে গিয়েছিলাম, তবে অন্যদের শারীরিক অসুস্থতার কারণে আপনাদের সাথে মিলিত হতে পারিনি। এটা আমার জন্য বড় দুঃখ ও বেদনার। আমাদের জন্য দোয়া করবেন।
১৬
207463
১৪ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ০৮:৫১
কেলিফোরনিয়া লিখেছেন : সংগ্রহে রাখলাম...। ধন্যবাদ ধন্যবাদ অনেক ধন্যবাদ
১৪ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১১:১৩
156072
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ, ভাল থাকুন।
১৭
208580
১৬ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৪:১২
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টটির জন্য।
১৬ এপ্রিল ২০১৪ সকাল ১০:৫০
157374
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ, ভালো থাকুন।
১৮
229077
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:১০
সাদাচোখে লিখেছেন : কষ্ট করে এ বিষয়ে পাঠযোগ্য করে লিখার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনাকে এর উপযুক্ত প্রতিদান দিক এ প্রার্থনা করছি।
০১ জুন ২০১৪ বিকাল ০৫:১৬
175773
নজরুল ইসলাম টিপু লিখেছেন : প্রথমেই আমিন, আল্লাহ আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দিন। ধন্যবাদ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File