লঙ্কা কাণ্ডের মূল হোতা, মুখ পোড়া হনুমান!

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০৩:২২:৩৪ দুপুর



ভগবান শ্রী রামের স্ত্রী দেবী সীতা পঞ্চবটী থেকে, রাবণ কর্তৃক অপহৃত হন। রাবণ সীতা দেবীকে রথে চড়িয়ে লঙ্কায় (বর্তমানে শ্রীলঙ্কা) নিয়ে কোন এক অজানা গুহায় লুকিয়ে রাখেন। এই ঘটনায় রাজা শ্রী রাম সংক্ষুব্ধ হয়ে যেভাবেই হোক স্ত্রীকে উদ্ধার করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করেন। তিনি সাহায্যের আশায় সব দিকে সংবাদ দেন, তাঁর ভয়ানক বিপদের সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন বানরের রাজা ‘সুগ্রীব’ ও হনুমান। লঙ্কায় যাবার জন্য উপযোগী কোন যান না থাকায় বানর রাজা সুগ্রীবের পরামর্শে ও তাঁর সাহায্যে সমুদ্রে পাথর ঢেলে বিরাট রাস্তা তৈরি করা হয়! সে রাস্তা পাড়ি দিয়ে শ্রী রামের বিরাট বাহিনী লঙ্কায় উপনীত হন।

ওদিকে লঙ্কার অধিবাসীরা রাবণের শাসনে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। রাবণের বিরুদ্ধে তাদের করার মত কিছুই ছিলনা। সীতাকে উদ্ধারে লঙ্কায় রাবণ ও রাম বাহীনির ভয়ানক যুদ্ধ শুরু হল। প্রচুর নাগরিক নিহত হল, নগর সভ্যতা ধ্বংস হল। তারপরও সীতার সন্ধান পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে এমনকি রাবণকে যুদ্ধে পরাস্ত করাও কঠিন হয়ে পড়ে। যুদ্ধের ডামাডোলের মাঝে রাবণকে হঠাতে, এক বুদ্ধি মাথায় আসে। হনুমানের লেজে প্রচুর কাঁথা বাঁধা হয়! সেই কাঁথার বিশাল বান্ডিলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। অতঃপর জ্বলন্ত কাঁথা সমেত হনুমানকে লঙ্কা শহরে ছেড়ে দেওয়া হয়! লেজে আগুন নিয়ে ভয়ে আতঙ্কে হনুমান এক লাফে এক বাড়ির ছাদে বসে তো আরেক লাফে অন্য বাড়িতে বসে। এভাবে যতবার বসে ততবার মুখের ফুঁ দিয়ে আগুন নেভানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে! দেখা গেল হনুমান এভাবে লাফাতে লাফাতে লঙ্কার প্রতিটি বাড়িতেই আগুন লাগিয়ে দেয় এবং সেই আগুনে পুরো লঙ্কা শহর কে জ্বালিয়ে ভস্ম করে দেয়! পৃথিবীর ইতিহাসে এই কাণ্ডকে লঙ্কা কাণ্ড হিসেবে অভিহিত করা হয়।

ওদিকে হনুমান ফু দিয়ে দিয়ে, না নিজের লেজের আগুন নিভাতে পারল! না লঙ্কা শহরকে বাঁচাতে পারল। অধিকন্তু লেজে লাগানো আগুন নিভানেরা ব্যর্থ চেষ্টা করতে করতে তার গোলাকার মুখ খানিই পুড়ে কাল করে ফেলল। তার পর থেকেই হনুমানের মুখ কাল হয়ে যায়। হনুমানের এই অযাচিত কাজে, দোষী-নির্দোষ সকল নাগরিকের বাড়ি-ঘর পোড়া যায়। সে জন্য তাকে মুখ পোড়া হনুমান হিসেবে অভিসম্পাত করা হয়। সে অভিশাপের ফলশ্রুতিতে তার অধস্তন বংশের সকল হনুমানের মুখ কাল হয়ে যায়। বর্তমানে আমাদের দেশে যেসব কালো মুখের হনুমান পাওয়া যায় এগুলো তারই অধঃস্থন বংশধর হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

বিষয়: বিবিধ

৫০৫৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File