দুটি চ্যানেল বন্ধ করেই প্রমাণ করলেন এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে যা দেশবাসী দেখলে..........

লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ০৮ মে, ২০১৩, ০৬:৫০:৫৫ সন্ধ্যা



অবশেষে বিডিআর প্রধান ও পুলিশ বাহিনী প্রধান মুখ খুলেছেন, তারা উভয়েই বলেছেন, আমাদের দেখিয়ে দিন ও প্রমাণ করুন কোথায় শত শত মানুষ নিহত হয়েছে! মূল কথা হচ্ছে, পত্র পত্রিকায়, ব্লগে, সামাজিক ওয়েব সাইডে লক্ষ লক্ষ মন্তব্য এই বাহিনীকে লক্ষ্য করেই। তারা এই কথাটি ভুলে যাচ্ছেন যে, জনগণ তাদের উপর আস্তা হারিয়ে ফেলছেন। তারা বুঝতেই পারছেন না যে, আগে তাদেরকেই প্রমাণ করতে হবে যে, তারা জনগণের উদ্দেশ্যে সত্য কথা বলছেন। ফেসবুকে অগণিত তথ্য ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে যে, পিলখানায় লাশ বাহী ট্রাক ঢুকেছে। সেটার আলোকে অনেক দেরীতে হলেও বাহিনী প্রধান গন সবার কাছে প্রমাণ চেয়েছেন! কথাটি সত্য হোক আর মিথ্যা হোক, যেই পিলখানা থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন নিজে গিয়ে লাশ উদ্ধার করতে পারেন নি! সেখানে সাধারণ জনতা ঢুকে, কিভাবে প্রমাণ দিবে যে এখানে লাশ ঢুকেছিল।

আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী এই কারণে গড়ে তুলা হয়নি যে, তাদের ব্যারাকে ঢুকে জনগণ তাদের অন্যায় গুলো ধরিয়ে দিবে! আমাদের পুলিশ বাহিনী প্রধান কেমন করে বলতে পারলেন, যদি প্রমাণ থাকে তাহলে দেখান! তারা কেন জনগণের সেই শ্রদ্ধা, আস্তা, বিশ্বাস অর্জন করতে পারলেন না যে, যাহা বলা হয়েছে তা সত্য বলা হয়েছে। কেন তারা সেই আস্তার যায়গায় নাই, তারা যা বলল মানুষ তা বিশ্বাস করতে পারে! দিগন্ত ও ইসলামী টিভি বন্ধ করেই তো তারা প্রমাণ করে দিলেন যে, এখানে এমন কিছু ঘটবে যা দেশবাসী দেখলে কিংবা পরবর্তীতে জানতে পারলে হিতে বিপরীত হবে! সরকার এখনও ব্যাখা দেয় নাই, কেন চ্যানেল দুটো বন্ধ করা হয়েছে! সরকার হয়ত ভেবে থাকে মন্ত্রী-আমলা ছাড়া বাকী সবাই শুধু কামলার উপযুক্ত!



পুলিশ প্রধানের কথা আরো আশ্চর্য জনক, তিনি দাবী করেছেন নিহত ব্যক্তিদের আত্মীয়রা কোথায়? তারা কেন লাশের দাবী নিয়ে আসছেনা? তিনি চৌকশ বাহিনীর প্রধান হিসেবে নিশ্চয়ই জানেন যে, “কওমি মাদ্রাসার ছাত্রগুলো বছরে দুই বার বাড়ীতে যেতে পারে। এসব ছাত্র মাদ্রাসার ছাত্র গুলোই ঢাকার সমাবেশে এসেছিল এবং সেখানেই ঘুমন্ত অবস্থায় মারা পড়েছিল। এদের মাতা পিতা এখনও জানেনা তাদের সন্তান মারা গিয়েছে। অনেক পিতা-মাতা এত গরীব যে তাদের মোবাইল নাই। আগামী ঈদে তাদের সন্তান বাড়ীতে না গেলে তাদের মাতা-পিতা বুঝতে পারবে তাদের সন্তান হয়ত ঢাকায় শহীদ হয়েছে। এসব মাদ্রাসা গুলো ছাত্রদের শুধু পড়ায় না! শিক্ষার বিনিময়ে বিনামূল্যে খাদ্যের ব্যবস্থাও করে থাকে। পিতা-মাতা ছোটকালে জীবিত সন্তানটিকে মাদ্রাসায় রেখে আসে, বড় হলে পরে মাদ্রাসা শিক্ষা শেষ করে দেশের বাড়িতে ফিরে যায়, পিতা-মাতাকে তার কোন দায়িত্ব নিতে হয়না"।

তাছাড়া এত বড় সাহস কোন পিতা মাতার আছে? যার সন্তান হেফাজতের সমাবেশে যোগ দিয়েছে এবং সেই পুত্রের সন্ধানে থানার সামনে দিয়ে হেঁটে যাবে! বর্তমান সরকারের আমলে যখন একজন দাড়িওয়ালাকে পিটাতে পারলে প্রমোশন হয়। দাড়ি ওয়ালাকে হেস্ত ন্যস্ত করতে পারলে বড় কর্মকর্তার নজরে আসে। এমপিকে রাস্তায় পাগলা গরুর মত দৌড়ায়ে বেদম পিটুনি দিলে রাষ্ট্রীয় খেতাব মিলে। সেখানে দিন, হীন, কায়, ক্লেশ, ক্লান্ত দাড়িওয়ালা পিতা থানায় যাবে আরেক দাড়ি ওয়ালা সন্তানের খবর নিতে! কোন পিতার ঘারে দুটি মাথা নাই যে, একটি মাথার বিনিময়ে প্রশাসনের সাথে এত বড় বেয়াদবি করতে পারেন।



যাক, সকল টিভি চ্যানেলকে ঘটনাস্থলে ঢেকে, যদি নির্বিঘ্নে এই ধরনের একটি বিশাল সমাবেশকে পণ্ড করার যোগ্যতা দেখানো যেত, তাহলে পুরো দুনিয়ায় হৈ হৈ রব পড়ে যেত। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ত এমনকি বহু দেশ বাংলাদেশ থেকেই প্রশিক্ষক হিসেবে পুলিশ হাওলাত করে নিয়ে যেত। ব্যাপারটি এমনভাবে ঘটেনি, যেভাবে তারা কাজটি সমাধা করেছেন, তাতে হয়ত সরকারের কাছে বাহবা নিতে পারেন। তবে তাদের যোগ্যতাটা প্রশ্নাতীত হয়ে রইল। কেননা অত্যাধুনিক অস্ত্রের ব্যবহারে অগণিত মানুষ মেরে সমাবেশ পণ্ড করা কোন যোগ্যতার পরিচায়ক নয়। উল্টো তারা যে অন্যায় করেন নাই, সেই কথাটা জাতিকে বিশ্বাস করাতেই গলদঘর্ম। পুরো জাতি না তাদের কথা বিশ্বাস করছে, না পুরো জাতি তাদের কে বিশ্বাস করছে। বরং মাইকে যখন বলা হয় ছাত্রলীগের সাথে পুলিশ আসছে, তাদের প্রতিহত করতে যার যা আছে তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। অবাক করা ব্যাপার হল, জনগণ এসব কথাকে প্রমাণ ছাড়াই বিশ্বাস করছে এবং আবাল, বৃদ্ধ, বালক, বনিতা, নারী-পুরুষ সবাই প্রতিহত করতে রাস্তায় নামছে। বিশ্ব শান্তি মিশনে চাকুরীতে আপনাদের দরকার হতে পারে, তবে দেশের জনগণের কাছে আপনাদের প্রয়োজনীয়তা দিন দিন ফুরিয়ে যাচ্ছে, আপনাদের সম্মান গৌরব ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে, এখনও সময় আছে তা পুনরুদ্ধারের................

বিষয়: বিবিধ

১৬৪৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File