কুরবানীর গরু ছেরে [ছেড়ে] দেয়া ও বেহেশ্ত /জান্নাত না চাওয়ার ইবাদত!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
লিখেছেন লিখেছেন আবূসামীহা ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১০:০৮:৩৮ সকাল
একজন কুরবানির গরু জবেহ না করে ছেরে [ছেড়ে] দিয়েছেন। তাঁর ভাষায় তিনি ভোগ না করে তেগ [ত্যাগ] করেছেন। তাঁর সে পোস্টের লিঙ্ক একজন ভাই আমার কাছে ইনবক্স করেছিলেন বলে জানতে পেরেছিলাম। তো, তাঁর টাইম লাইন একটু ঘুরে আরো দেখলাম যে তিনি জান্নাত লাভের জন্য যে ইবাদত সে ইবাদত করতে চান না, তিনি খোদাকে সন্তুষ্ট করতে চান। তাই ইবাদত করে তিনি জান্নাত চান না।
এ জাতীয় কথা নতুন না। এই কথাগুলো আমরা অনেক শুনে এসেছি। দীনের মধ্যে বিদ‘আতি কথাগুলোর মধ্যে এই কথাগুলো অন্যতম।
ইবাদত আমরা নিজে থেকে উদ্ভাবন করি না। ইবাদত শেখানোর জন্য আল্লাহ তা‘আলা নবী ও রসূলদের [আলায়হিম আস-সালাম আজমা‘ঈন] প্রেরণ করেছেন বিভিন্ন সময়ে। তাঁরা আমাদের বাতলে দিয়ে গেছেন ইবাদত কীভাবে করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা নির্দেশ দিয়েছিলেন ইবরাহীমকে [আলায়হিস-সালাম] তাঁর প্রাণাধিক পুত্রকে কুরবানী করার। ইবরাহীম সে নির্দেশকে মাথা পেতে নিলে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর পুত্রের পরিবর্তে একটা প্রাণীকে কুরবানী করার ব্যবস্থা করে দেন। তারপর তিনি এই কুরবানী দেবার ব্যবস্থা মিল্লাতে-ইবরাহীমীর জন্য বিধিবদ্ধ করে দেন।
“আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্যে কুরবানী নির্ধারণ করেছি, যাতে তারা আল্লাহর দেয়া গবাদি পশু যবেহ কারার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে। অতএব তোমাদের আল্লাহ তো একমাত্র আল্লাহ সুতরাং তাঁরই আজ্ঞাধীন থাক এবং বিনয়ীগণকে সুসংবাদ দাও।" [২২:৩৪]
“এবং নির্দিষ্ট দিনগুলোতে আল্লাহর নাম স্মরণ করে তাঁর দেয়া গবাদি পশু যবেহ করার সময়। অতঃপর তোমরা তা থেকে আহার কর এবং দুঃস্থ-অভাবগ্রস্থকে আহার করাও।” [২২:২৮]
কুরবানীতে আল্লাহ গৃহপালিত [গবাদি] পশু জবেহ করার নির্দেশ দিয়েছেন, বুনো [বনের] পশু যবেহ করার নির্দেশ দেন নাই। আর এ থেকে নিজেদেরকে খেতে ও অন্যদেরকে খেতে দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন। রসূল মুহাম্মদ (সঃ) নিজে কুরবানী করে এবং তাঁর অনুসারীদেরকে কুরবানী করার নির্দেশ দিয়ে এই হুকুমের বাস্তবতা দেখিয়ে গিয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা গবাদি পশু কিনে তা ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেন নাই এবং মুহাম্মদ (সঃ)-ও এরকম করেন নাই। তাই যারা কুরবানী না দিয়ে গরু ছেড়ে দিয়েছে তারা সুস্পষ্টভাবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করেছে।
এরপরের কথা হল আল্লাহ তাঁর অনুগত বান্দাদের জন্য পুরষ্কার হিসাবে জান্নাত ও এর নিয়ামত রাজি সৃষ্টি করেছেন। এই জান্নাত কামনা করা এবং তা পাওয়ার জন্য চেষ্টা করাও ইবাদতের অন্তর্ভূক্ত। মু’মিন প্রতি নিয়ত আল্লাহর শাস্তি থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করার সাথে সাথে আল্লাহর কাছে এ থেকে পানাহ চায় এবং জান্নাত প্রাপ্তির দু’আ করে। আর এরূপ করতে শিখিয়েছেন মুহাম্মদ (সঃ)। রসূলকে (সঃ) পাঠানোই হয়েছে মানুষকে জান্নাতে প্রবেশের পথ বাতলানোর জন্য। আল্লাহ বলেন [তর্জমা]ঃ “[তিনি] এমন এক রসূল যিনি তোমাদেরকে আল্লাহর আয়াত পড়ে শোনান, যা তোমাদের সুস্পষ্ট হিদায়াত দান করে। যাতে তিনি ঈমান গ্রহণকারী ও সৎকর্মশীলদের অন্ধকার থেকে বের করে আলোতে নিয়ে আসেন। যে ব্যক্তিই আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে এবং নেককাজ করবে আল্লাহ তাকে এমন সব জান্নাতে প্রবেশ করাবেন যার নীচ দিয়ে ঝর্ণা বয়ে চলবে। এসব লোক সেখানে চিরদিন থাকবে। এসব লোকের জন্য আল্লাহ সর্বোত্তম রিযিক রেখেছেন।” [৬৫:১১]
তাই রসূলের পথ ও রসূলকে অনুসরণকারী ঈমানদার পথ অনুসরণ করতে হবে। যারা করবে না তাদের মনগড়া এসব সৎকাজ[?] মোটেও ক্ববূল করা হবে না; বরং তাদেরকে জাহান্নামের আগুনে ঝলসানো হবে। “আর যে ব্যক্তি রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে এবং ঈমানদারদের পথ পরিহার করে অন্য পথে চলে, অথচ তার সামনে সত্য–সঠিক পথ সুস্পষ্ট করে পেশ করা হয়েছে, তাকে আমি সেদিকেই চালাবো যেদিকে সে চলে গেছে এবং এরপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবো, যা আবাসস্থল হিসাবে নিকৃষ্টতম।” [৪: ১১৫]
وَمَن يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِن بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَىٰ وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّىٰ وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ ۖ وَسَاءَتْ مَصِيرًا
বিষয়: বিবিধ
১৪৪০ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন