আমার বাপের মৃত্যু দিবস আমার মনে নেই ! ঃ(
লিখেছেন লিখেছেন আবূসামীহা ২০ আগস্ট, ২০১৬, ০৪:৫০:২০ বিকাল
আমার আব্বা ঠিক কোন সালের কোন দিন মারা গিয়েছিলেন তা আমার মনে নেই। কিন্তু তা অনেক আগে নয় মাত্র ১২/১৩ বছর আগে। ব্যাপারটা হল, আমি মনে রাখার চেষ্টাও করি না। কারণ, দরকার নেই। একটা দিন মনে রেখে আমার বাপকে স্মরণে রাখার কোন দরকার আমার পড়ে না। আমি আয়নায় প্রতিবার আমার চেহরা দেখার সময়ই আমার বাপের প্রতিচ্ছায়া দেখতে পাই; আমি কখনো রাস্তায় হাটতে, কখনো শপিং মলে কেনা-কাটা করতে, কখনো মাঠে খেলতে থাকা অবস্থায়, কখনো স্কুলের ক্লাসে বাচ্চাদের পাঠদান রত অবস্থায়, কখনো আমার বাচ্চাদের সাথে ঘুরে বেড়ানোয় এবং প্রতিবার মুসল্লায় দাঁড়াতেই আমার পিতাকে স্মরণ করি। আমিতো প্রতিদিনই তাঁর জন্য আমার রব্বের দরবারে দু'আ করি। তাই আমার কোন দিবসের কথা মনে রাখা লাগে না। আর আমি আশা করি আমার বাবা তাঁর ইন্তিকালের সময় আমার উপর সন্তুষ্ট ছিলেন, যদিও আমি তাঁর পাশে উপস্থিত ছিলাম না সে সময়।
প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনেরা, বাপ-মায়ের দিবস ভিত্তিক ইন্তিক্বাল বার্ষিকী স্মরণ না করলেই কি হয় না? প্রতিদিন তাঁদের জন্য দু'আ করা যায় না? তাঁদের জীবিত থাকা অবস্থায় তাঁদেরকে সন্তুষ্ট রাখার চেষ্টায় কি রত থাকা যায় না? তাঁদের জন্য কি প্রতিদিন প্রতি সালাতে দু'আ করা যায় না?
বাপ-মায়ের বা যে কোন মানুষের মউতের দিনের একটা রেকর্ড থকা লাগে সরকারী কাজের জন্য। সেক্ষেত্রে আব্বার ইন্তিক্বালের দিনের সম্পর্কে আম্মার কাছে রেকর্ড আছে। সরকারী কাজে দরকার হলে সেখান থেকে নিয়ে নেয়া যাবে।
وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا ﴿٢٣﴾ وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا ﴿٢٤﴾
"তোমার রব্ব আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং তাদের সাথে দয়ার্দ্র-মর্যাদাপূর্ণ কথা বল। আর তাদের উভয়ের প্রতি আনত করো করুণার সাথে আনুগত্যের ডানা দুখানা, আর বলো -- ''আমার প্রভু! তাঁদের উভয়ের প্রতি রহম করো যেমন তাঁরা ছোটবেলায় আমাকে প্রতিপালন করে বড় করেছন।’’" [সূরা আল-ইসরা', ১৭: ২৩-২৪]
وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا ۚ حَتَّىٰ إِذَا بَلَغَ أَشُدَّهُ وَبَلَغَ أَرْبَعِينَ سَنَةً قَالَ رَبِّ أَوْزِعْنِي أَنْ أَشْكُرَ نِعْمَتَكَ الَّتِي أَنْعَمْتَ عَلَيَّ وَعَلَىٰ وَالِدَيَّ وَأَنْ أَعْمَلَ صَالِحًا تَرْضَاهُ وَأَصْلِحْ لِي فِي ذُرِّيَّتِي ۖ إِنِّي تُبْتُ إِلَيْكَ وَإِنِّي مِنَ الْمُسْلِمِينَ ﴿١٥﴾ أُولَـٰئِكَ الَّذِينَ نَتَقَبَّلُ عَنْهُمْ أَحْسَنَ مَا عَمِلُوا وَنَتَجَاوَزُ عَن سَيِّئَاتِهِمْ فِي أَصْحَابِ الْجَنَّةِ ۖ وَعْدَ الصِّدْقِ الَّذِي كَانُوا يُوعَدُونَ ﴿١٦﴾
"আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন শক্তি-সামর্থের পূর্ণতায় এবং বয়সেও চল্লিশ বছরে পৌছেছে, তখন বলতে লাগল, 'হে আমার পালনকর্তা, আমাকে এরূপ ভাগ্য দান কর, যাতে আমি তোমার নেয়ামতের শোকর করি, যা তুমি দান করেছ আমাকে ও আমার পিতা-মাতাকে এবং যাতে আমি তোমার পছন্দনীয় সৎকাজ করি। আমার সন্তানদেরকেও সৎকর্মপরায়ণ কর, আমি তোমার প্রতি তওবা করলাম এবং আমি আজ্ঞাবহদের অন্যতম। আমি এমন লোকদের সুকর্মগুলো কবুল করি এবং মন্দকর্মগুলো মার্জনা করি। তারা জান্নাতীদের তালিকাভুক্ত সেই সত্য ওয়াদার কারণে যা তাদেরকে দেওয়া হত।" [সূরা আহক্বাফ, ৪৫:১৫-১৬]
বিষয়: বিবিধ
১৩৩০ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে মনে রখায় দোষ আছে বলে মনে হয়না!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন