রাজনীতি, গণতন্ত্র ও খিলাফত এবং ফেইসবুক বিনোদন
লিখেছেন লিখেছেন আবূসামীহা ০৫ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৭:৫২:৩৯ সন্ধ্যা
ফেইসবুক বড় বিনোদনের জায়গা।
আজকে বড় একটা বিনোদন পাইলাম।
একটা পোস্টে পোস্টদাতা আমার কথোপকথন লক্ষ্য করুনঃ
========
পোস্টদাতাঃ রাজনীতি কে সাপোর্ট করে তারাই যাদের ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান নেই.রাজনীতি হল শোষণের প্রধান হাতিয়ার. রাজনীতি যারা করেন তারা নিঃসন্দেহে শয়তানের অনুসারী।
AbuSamihah Sirajul-Islamঃ মুহাম্মদ (সঃ), আবু বকর, উমর, উসমান, আলী প্রমূখ সবাই রাজনীতি করতেন৷
পোস্টদাতাঃ সেখানে কি অযোগ্য লোক নির্বাচিত হতো? সেখানে কি নারী নেতৃত্ব ছিল?
AbuSamihah Sirajul-Islamঃ কথাটা অযোগ্যতা ও নারী নেতৃত্ব নিয়ে নয়৷ কথা হচ্ছে রাজনীতি করা নিয়ে৷ রাজনীতি করা হারাম হলে ঐসব মহান ব্যক্তিদের সমস্যা হয়ে যাবে৷
পোস্টদাতাঃ জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস এটা একটি শিরকি কথা
আপনি হানাফী আলেম ড,আবুল কালাম আযাদ বাশারের বক্তব্য টি শুনুন ক্লিয়ার হয়ে যাবে.আর আহলে হাদিসের সব আলেম গনতন্ত্র কে হারাম বলেন
AbuSamihah Sirajul-Islamঃ আমরা কোন তন্ত্র নিয়ে কথা বলছি না৷ কথা বলছি রাজনীতি নিয়ে৷
পোস্টদাতাঃ রাজনীতি আবিষ্কার করেছে আব্রাহাম লিংকন আপনি বলতাছেন রাসুল সা: রাজনীতি করেছেন.কোথায় পান এগুলো
AbuSamihah Sirajul-Islamঃ আব্রাহাম লিন্কনের দাদা পরদাদার জন্মের আগেও রাজনীতি ছিল৷
পোস্টদাতাঃ গণতন্ত্র কুফরি এবং শির্ক। এর মূল কারণ ৩ টা- (১) গণতন্ত্রের মূল কথা ‘সকল ক্ষমতার মালিক/ উৎস জনগণ’ বা ‘জনগণের সার্বভৌমত্ব’। আর এগুলো সুস্পষ্ট কুফরি কথা এবং নিঃসন্দেহ শির্ক। মহান আল্লাহ বলেন- “তুমি কি জানো না যে নভোমন্ডল ও ভূমণ্ডলের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই। ...See More
AbuSamihah Sirajul-Islamঃ আমরা কোন তন্ত্র নিয়ে কথা বলছি না বলছি রাজনীতি করা নিয়ে৷
পোস্টদাতাঃ রাজনীতি বলতে কোনটা বুঝায় সেটা আগে বুঝুন সাহাবীগণ যেটা করেছেন সেটা ছিল খিলাফত
AbuSamihah Sirajul-Islamঃ সালাম৷ খুশী থাকুন!!!!!
===========
বিরাট বিনোদন। গণতন্ত্রের বিরোধিতাকারী হুজুররা গণতন্ত্র কী তাও বুঝে না, আর খিলাফত কি তাও বুঝে বলে মনে হয় না। গণতন্ত্রের বিরোধিতা করলে স্বৈরাচারী রাজতন্ত্র তখন হালাল থাকে। শব্দ দুইটার এত অপব্যবহার হয় যে আমার হাসি থামাতে পারি না। আর আমাদের আলোচ্য মুরীদতো রাজনীতি মানেই গণতন্ত্র বুঝেছেন।
বিষয়: বিবিধ
১৫০৮ বার পঠিত, ২৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রাজনীতি হল মানুষকে একটি নীতির আলোকে দেখাশুনা করা,একটি মতাদর্শের আলোকে মানুষকে সঙ্গঠিত করা এবং সে নীতির মাধ্যমে সমাজ রাষ্ট্র পরিচালনা করা। এ কাজটি প্রত্যেক নবী রসূলই করেছেন। আল্লাহর দ্বীন সমাজে,রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠাই ছিলো তাদের কাজ। তবে অনেকে মূল লক্ষের আগেই বিদায় নিয়েছেন,অনেকে তা করে দেখিয়েছেন,অনেকে কথাই আমাদেরকে জানানো হয়নি।
বর্তমান সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনার একটি বহুল প্রচলিত ব্যবস্থাপনা হল গনতন্ত্র। কোল্ড ওয়ারের সময় বহু সংখ্যক রাষ্ট্র সমাজতন্ত্রের ছায়ায় পরিচালিত হত। রাশিয়ার পতনের পর আমেরিকার এক মেরুভিত্তিক ব্যবস্থাপনায় বেশীরভাগ দেশই গনতন্ত্রের চেতনায় উজ্জিবিত হয়।
আব্রাাম লিংকন গনতন্ত্রের আধুনিক প্রবক্তা কিন্তু এটার জন্ম হয় গ্রীক দার্শনিক এরিষ্টটলের হাতে। সে ছিলো সম্রাট আলেকজান্ডারের শিক্ষক। পূর্বে এর রূপটা যথেষ্ট কঠোর ছিলো। একনায়ক সূলভ ছিলো। কিন্তু আধুনিক গণতন্ত্র অন্যের অধিকারকে সমর্থন করে এবং চিন্তার স্বাধীনতা প্রদান করে। আরও কিছু সুবিধা প্রদান করে জনগনকে। এটি প্রবর্তিত হয়ে আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। যদিও এর প্রয়োগ নির্ভর করে শাসকের সমষ্টির আচরনের উপর।
গনতন্ত্র অধিক অালোচিত হওয়ায় এবং এর ভেতর অনেক ভালো নীতি নৈতিকতা থাকায় এবং সেগুলোর সাথে ইসলামের বিরোধ না থাকায় অনেক আলিম আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার কৌশল হিসেবে এটাকে ইসলামের আলোকে ব্যাখ্যা করেছেন। এর মৌলিক অংশের সাথে ইসলামের সরাসরি সংঘর্ষ থাকায় সেটা বাদ দিয়ে এর চারিত্রক কিছু বৈশিষ্ট রেখে ও ইসলামের কিছু নীতি যুক্ত করে ইসলামিক গনতন্ত্র চালু করার চেষ্টা করেছেন। তারা বলেছেন গণতন্ত্রকে শর্ত সাপেক্ষে গ্রন করলে বা এর খোলসটা গ্রহন করলে সমস্যা নেই। এটি প্রযুক্তি গ্রহন করার মত বিষয়।
অপরদিকে অনেক আলেম বলেছেন, যেহেতু ইসলাম নিজে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং ইসালামের রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা খিলাফাহ রয়েছেই,তাই নতুন করে এই বিধানকে ছাটকাট করে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়োজন নেই,অমুসলিমদের তন্ত্রের দিকে ঝোকার প্রয়োজন নেই। তাছাড়া এখানে মানুষের সার্বভৌমত্বের স্থলে আল্লাহর সার্বভৌমত্ব প্রতিস্থাপন করা হলেও এর মূল কাঠামোতে সমস্যা আছে। যেমন গনতান্ত্রিক দেশে একটি দেশের জনগনকে কমপক্ষে ২ ভাগে ভাগ করা হয়, যথা সরকারী ও বিরোধী দল। অথচ ইসলামে কোনো কালেও মুসলিম জনগন এভাবে মানুষিকভাবে ২ ভাগে বিভক্ত ছিলোনা। বরং মুসলিমরা এক উম্মাহর কনসেপ্ট লালন করে। কোনোভাবেই দলের নামে জনগনকে দুভাবে ভাগ করা যাবেনা। এটা খুলাফায়ে রাশেদায় ছিলনা এবং পরবর্তীকালেও ছিলোনা। তাছাড়া ইসলামে কোনো দল ক্ষমতা পরিচালনা করেনা। তবে দল থাকতে পারে ইসলাম প্রতিষ্ঠায়। তাদের নাম ভিন্ন তবে কাজ এক। ফলে এক্ষেত্রে তারা ঐক্যবদ্ধ। বর্তমানে গণতন্ত্রের যে স্ট্রাকচার,তাতে এক উম্মাহকে স্পষ্টবাবে ভাগ করা হয় একটি ক্ষুদ্র এলাকাতেও,যা ইসলামের মূল কনসেপ্টের বিরোধী। আর একটি দল যখন রাষ্ট্রের বিভিন্ন পথে নিজেদের লোককে বসায় শাসন পরিচালনা,তখন অন্যরা বঞ্চিত হয়। তারা এই গনতন্ত্র অনুয়ায়ী সকল যোগ্য লোককে নিজেদের দলের ভেতর থেকে বাছাই করতে থাকে,অথচ অন্যদের ভেতরও যোগ্য লোক থাকতে পারে। এ বিষয়টি পুরো জনগনকে রেষারেষির ভেতর নিয়ে যায়,যদিও উভয়েই মুসলিম।
খিলাফাহ যেটা বলে সেটা হল হকপন্থী সব দলই একই দল। তারা ইসলাম প্রতিষ্ঠার পরিবেশ সৃষ্টি করবে। ইসলাম দ্বারা রাষ্ট্র শাসিত হবে এ মর্মে একমত হবে। এরপর নেতা নির্বাচন হবে উম্মাহর যোগ্য লোকদের মধ্য থেকে। নেতার যেসব গুন থাকা জরুরী তা তার মধ্যে থাকতে হবে। ইসলাম অনুযায়ী মানুষ নিজেই নিজেকে নির্বাচিত করতে পারেনা,বরং অন্যরা যোগ্যতা অনুযায়ী কারো নাম প্রস্তাব করে। মুত্তাকীদের সমন্বয়ে একটি নির্বাচন কমিশন মানুষের মধ্য থেকে যোগ্যদেরকে বাছাই করে গন নির্বাচনের আয়োজন করতে পারে। যেই নির্বাচিত হোক তার কাজ একটাই,সেটা হল কুরআন সুন্নাহ অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনা করা। খিলাফা সিস্টেমে শাসককে নিয়ন্ত্রন করতে আলাদা একটি আদালতই আছে,যেখানে প্রধান বিচারপতির কাছে শাসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা যায় এবং বিচারক সাধারন মানুষের মতই তার বিচার করে।....তো অনেক আলেম বলেছেন শুধু মৌলিকভাবেই নয় বরং গঠনতান্ত্রিক বহু বিষয়ে গনতন্ত্রের সাথে ইসলামের বিরোধ রয়েছে। তাছাড়া এটাকে কাটছাট করে ইসলামিক গণতন্ত্র বানানোর প্রয়োজনটাই বা কি, যখন ইসলামের ভেতরেই রাষ্ট্রপরিচালনার সুন্দর ব্যবস্থা রয়েছে এবং তা সাফল্যের সাথে ব্যবহৃতও হয়েছে।
যাইহোক আমি উভয় পক্ষের মতামত উপস্থাপন করেছি মাত্র। আমি চাই হানাহানির এই সময়ে উম্মাহ অন্তত মানুষিকভাবে তাদের ঐক্য বজায় রাখুক। আল্লাহ বলেন-"তোমরা সম্মিলিতভাবে আল্লার রজ্জুকে আকড়ে ধরো এবং পরষ্পর বিচ্ছিন্ন হয়োনা"....
আসলে ইসলাম মানে একটি বান্দরের খাঁচা। এই খাঁচায় বান্দরগুলো কখনো মিলেমিশে স্থির থাকতে পারেনা, সামান্য সুযোগ পেলে একে অন্যের মাথায় বারি দিয়ে বসে। আলী-আয়শা-মুয়াবিয়া-হুসেন-ইয়াজিদ .. এরা সবাই ছিল ইসলামী খাঁচার ঝানু বান্দর।
আর এখন তো প্রশ্নই উঠেনা। ইসলামী খাঁচায় যুক্ত হয়েছে ১০১ মত, মাহাজাব, কতল, খুন, বোমাবাজী।
এতকিছু দেখার পরও বালিতে মাথা গুজে আল্লা, আল্লা। হাস্যকর।
আসলে ইসলামী খেলাফত মানে একটি বান্দরের খাঁচা। এই খাঁচায় বান্দরগুলো কখনো মিলেমিশে স্থির থাকতে পারেনা, সামান্য সুযোগ পেলে একে অন্যের মাথায় বারি দিয়ে বসে। আলী-আয়শা-মুয়াবিয়া-হুসেন-ইয়াজিদ .. এরা সবাই ইসলামী খাঁচার ঝানু বান্দর।
আর এখন তো প্রশ্নই উঠেনা। ইসলামী খাঁচায় যুক্ত হয়েছে ১০১ মত, মাহাজাব, কতল, খুন, বোমাবাজী।
অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন