"বরের চাহিদা" !!!!
লিখেছেন লিখেছেন আবূসামীহা ২৬ নভেম্বর, ২০১৫, ১০:২৮:২৬ রাত
“আমার মামাতো ভাইয়ের জন্য বউ এনেছিলাম আমাদের থেকে ৪৫ কিঃমিঃ দুরে এক অজপাড়া গ্রাম থেকে। পছন্দ করেছিলাম ওনার বড় ভাই আর আমি নিজে, বিদেশ ফেরত বলে বরের তেমন চাহিদা ছিলনা।”
উপরের কথাগুলো ফখরুল ইসলাম ওরফে লালসালুর একটা পোস্ট থেকে নেয়া হয়েছে। আমাদের সমাজের একটা সমস্যা হল এই "বরের চাহিদা"। তাঁরা বিয়ে করতে চান; আবার তাদের চাহিদাও আছে। হ্যাঁ চাহিদা থাকতে পারে। সে চাহিদাগুলো হতে পারে কনের সৌন্দর্য, তাঁর সম্পদ, তাঁর বংশ মর্যাদা, তাঁর বিদূষী হওয়া, দীনদার ও উত্তম আখলাক সম্পন্ন হওয়া, ইত্যাদি সংক্রান্ত বিষয়ে।
কিন্তু আমাদের আলোচ্য চাহিদা হল বর কর্তৃক কনে পক্ষ থেকে ধন-সম্পদ আদায়ের চাহিদা। এই চাহিদাটা অস্বাভাবিক এবং পৌরূষহীনতার প্রতীক। একজন পুরুষ একজন নারীকে বিয়ে করতে চাচ্ছে। সে নিজের ঘরে একজনকে আনতে চাচ্ছে। সে জন্য যাকে আনতে চাচ্ছে, চাহিদাটা হবার কথা তার। আর সে জন্য আমরা দেখি, ইসলামের ইতিহাসে, যখনই কোন পুরুষ বিয়ে করতে চেয়েছেন কনের কিছু চাহিদা পূরণ করেই বিয়ে করেছেন। তাদেরকে কনের মাহর পরিশোধ করতে হয়েছে বা কনের সাথে সে ব্যাপারে সমঝোতায় আসতে হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় সংস্কৃতির উত্তরাধিকারী আমাদের দেশীয় পুরুষরা কনের পরিবারের কাছে তাদের চাহিদা পেশ করে। এই চাওয়াটা নিতান্তই পৌরূষহীনতার বহিঃপ্রকাশ।
যে বিয়ে করে তাকেই মাহর আদায় করতে ইসলাম নির্দেশ দিয়েছে। একইভাবে বিয়ে করা পুরুষকেই রসূলুল্লাহ (সঃ) নির্দেশ দিয়েছেন ওয়ালিমা দেয়ার জন্য; দল বেঁধে কনের বাপের বাড়িতে খাওয়ার জন্য তাদেরকে চাপাচাপি করে লোক নিয়ে যাওয়ার জন্য না।
মুসলিম বাঙালী পুরুষরা, দয়া করে পৌরূষের প্রকাশ ঘটান আপনারা। আল্লাহ সাহায্য করুন।
বিঃদ্রঃ কোট করা অংশটা লালসালুর নিজের আত্মীয় সম্পর্কিত না। তিনি পরকীয়া সংক্রান্ত একটা ঘটনার উদাহরণ দিতে গিয়ে তাঁর কাছে লিখা আরেকজন থেকে উদ্ধৃতি দিয়েছেন।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৫ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বাংলাদেশের "বর"(পাত্র)দের কতজন "পুরুষ" সেটা রীতিমত গবেষণার বিষয়!!
যৌতুকের উৎপত্তি সম্বন্ধে সুনির্ধারিত কোনো ঐতিহাসিক তথ্য পাওয়া যায় না। অধুনা এ বিষয়ে গবেষকগণ এর উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ সম্বন্ধে যা লিখেছেন এর সারমর্ম হল, প্রাচীন হিন্দুসমাজে এর উৎপত্তি হয়েছে, এটি প্রায় স্বীকৃত।
ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, প্রাচীন হিন্দুসমাজে এটি ছিল কন্যাপণ (ইৎরফব চৎরপব) অর্থাৎ বরপক্ষ কনে পক্ষকে দিত। কনেপক্ষ বিয়ের মাধ্যমে তাদের একজন সদস্য হারাচ্ছে এর ক্ষতিপূরণের জন্য কনের পরিবারকে বরপক্ষ কর্তৃক বিভিন্ন সম্পদ দিত। কালক্রমে এটি বরপণে রূপ ধারণ করে| (The family Structure in Islam, By : Dr. Hammadah Abdul Ati); বাংলাপিডিয়া ৮/৪৫৫; ইসলাম ও যৌতুক, সিরাজুল হক সম্পাদিত, ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক প্রকাশিত, পৃ. ১৫)
উল্লেখ্য, হিন্দুদের এই কন্যাপণের সাথে ইসলামের মোহরের কোনো সম্পর্ক নেই। কেননা, কন্যাপণ দেওয়া হত ক্ষতিপূরণের জন্য কন্যার পরিবারকে, কন্যাকে নয়। আর মোহর দেওয়া হয় কন্যার সম্মানি হিসাবে স্বয়ং কন্যাকে, কন্যার পরিবারকে নয়।
হিন্দুসমাজের কন্যাপণ কালক্রমে বরপণে রূপান্তরিত হওয়ার পিছনে যেসব কারণ রয়েছে তা হল :
কুলিনত্ব
প্রাচীনকালে অনার্যরা সমাজে মর্যাদা পাওয়ার আশায় আর্যদের নিকট তাদের কন্যা সম্পাদন করত। বিনিময়ে মোটা অংকের সম্পদ দিত। তখন থেকেই যৌতুক প্রথা কালক্রমে একটি সামাজিক রূপ নেয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন