“মাওলানা” নিয়ে ঝামেলা!!!
লিখেছেন লিখেছেন আবূসামীহা ২৬ অক্টোবর, ২০১৫, ০৭:৫৬:৫২ সন্ধ্যা
ইসলামের উপর পড়াশোনা করার লোকের সংখ্যা, মা-শা-আল্লাহ, বাড়ছে। একই সাথে বাড়ছে কনফিউশনও। এবং ইসলাম নিয়ে অজ্ঞতাও বাড়ছে ব্যাপকভাবে। নতুন পড়াশোনা করা অনেকে মূলত নিজেদের খেয়াল খূশীর উপাদান পায় তাদের অধ্যয়নে। মূলত “হাওয়া”র অনুসারী হয়ে পড়ে কিছু লোক। এরা আমাদের উলামাদের শত শত বছরের গবেষণাকে এক নিমিষে উড়িয়ে দেয়, নিজেদের হঠাৎ লব্ধ জ্ঞানে আলোকিত(?) হয়ে। কেউ কেউ রসূলুল্লাহর এমন হাদীসকেও উড়িয়ে দিচ্ছে যখন তখন, যা হাদীস বিশারদ উলামাগণ গ্রহণ করেছেন সহীহ (নির্ভুল) হিসেবে। শুধু তা নয়, এমন হাদীস কমন সেন্স ও বর্তমানে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত দিয়েও সত্য বলে প্রমাণিত। কিন্তু নিজের হাওয়া অনুসরণ করা ও রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করার প্রতিজ্ঞাকারীরা এটাকে উড়িয়ে দেয়।
আজকে অবশ্য ভিন্ন একটা প্রসঙ্গ। ইসলামকে অবমাননা করার কাজ কিছু লোকেরা প্রকাশ্যে করে। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা যায় তারা ইসলাম দরদী হয়ে গেছে। বেশ কিছু দিন আগে একজন বাম লেখক হঠাৎ সামু ব্লগে “মাওলানা” শব্দের ব্যবহার নয়ে লিখলেন। তিনি লিখলেন “মাওলানা” নাকি “মাওলা” + “আনা” এর মাধ্যমে এসেছে। অর্থাৎ এর মানে হল “আমি প্রভূ”। ভদ্রলোকের আরবী জ্ঞানের বাহার দেখে না হেসে পারি নি। তাই তাদের মতে মানুষকে মাওলানা বলা যাবে না, বা কেউ মাওলানা উপাধি পেতে পারে না।
সত্য হচ্ছে মাওলানা মূলত মাওলা+ নাহনু থেকে উদ্ভূত। মানে হল “আমাদের মাওলা”। এখন একজন ব্যক্তিকে “মাওলা” বা “মাওলানা” ডাকা যাবে কিনা? অবশ্যই যাবে এবং এতে কোন সমস্যা নেই। যে কোন মুসলিমকেই “মাওলানা” বলে সম্বোধন করা যাবে, তবে কোন কাফিরকে নয়। এটা এ কারণে যে মাওলা শব্দের অনেক মানে আছে। এর মধ্যে কয়েকটা হলঃ বন্ধু, প্রভূ, মালিক, অভিভাবক, মাস্টার, সাহায্যকারী, প্রেমিক, মিত্র, প্রতিবেশি, গোলাম, মুক্ত করা গোলাম, অনুগ্রহ দানকারী, অনুগ্রহ গ্রহীতা, জামাতা, ইত্যাদি। আরবীতে কিছু শব্দ আছে যেগুলো একই সময়ে পরস্পর বিপরীত অর্থ প্রকাশ করে। ওটা বুঝা যাবে তার প্রয়োগের ক্ষেত্র থেকে। “মাওলা” তেমনই একটি শব্দ। এটি প্রভূ ও ভৃত্য দুজনের জন্যই ব্যবহৃত হয়। মনিব ও গোলাম একজন আরেকজনের মাওলা।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের মাওলা প্রভূ, অভিভাবক, মনিব, রক্ষাকারী, অর্থে। একইভাবে একজন মুসলিম আরেক মুসলিমের মাওলা বন্ধু, সাথী, অভিভাবক, সহায়তাকারী, ইত্যাদি অর্থে। আর আমাদের উলামাগণ আমাদের বন্ধু, অভিভাবক এবং মাস্টার দীনের ক্ষেত্রে। তাই যে কোন আলিমকে একজন মুসলিম মাওলানা [আমাদের মাস্টার/অভিভাবক, বন্ধু] বা মাওলাওয়ী/মৌলবী [আমার মাস্টার/অভিভাবক, বন্ধু, ইত্যাদি] বলে সম্মানসূচক সম্বোধন করতে পারে। এতে দোষের তো কিছু নাই-ই বরং এটা অভিপ্রেত। কিন্তু একজন ব্যক্তি নিজেকে মাওলানা বা মৌলবী বলবে কিনা সেটা বিবেচনার বিষয়। কারণ, আমি বলতে পারিনা আমি মাওলানা [আমাদের মাওলা] অমুক। তাই কোন ব্যক্তি নিজের সম্পর্কে বলবে না আমি মাওলানা অমুক বা মৌলবী অমুক। কিন্তু অন্যরা তার সম্পর্কে বললে তখন বলবে মাওলানা অমুক বা মৌলবী অমুক।
আল্লাহ তা‘আলা আমাদের বুঝার তৌফীক্ব দিন! আমীন!
বিষয়: বিবিধ
১৩৫৬ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জাযাকাল্লাহ..
আমি যে "মাওলানা" খেতাবের যোগ্য হয়েছি সেটা মানুষ জানবে কেমনে?
আঠারোটা বচ্ছর কষ্ট করেও যদি আমি নিজেকে "মাওলানা" বলতে/লিখতে না-ই পারলাম, তবে এতো এতো কষ্টের ফায়দা টা কী???
ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। জাজাকাল্লাহ।
ওয়া জাজাকাল্লাহু খায়রা।
মহান আল্লাহ আমাদের মাওলানা আবূসামীহা-কে অনেক পুরষ্কার দান করুন, আমীন।
মহান আল্লাহ আমাদর সবাইকে হেদায়েত দিয়ে দুনিয়া ও আখেরাতে নেক কামিয়াবী দান করুন, আমীন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন