যারা আখিরাতের বরবাদীকে ভয় করো !
লিখেছেন লিখেছেন আবূসামীহা ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৭:০৬:১৩ সন্ধ্যা
অধিকাংশ মানুষ আখিরাতে বরবাদীর সম্মুখীন হবে। আদম সন্তামদের প্রতি হাজারে ৯৯৯ জনই আখিরাতে ক্ষতিগ্রস্তদের দলভূক্ত হবে। রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, "আল্লাহ, আজ্জা ওয়া জাল্ল, বলবেন, 'ওহে আদম!' তিনি জবাবে বলবেন, 'আমি হাজির আর সব কল্যাণ আপনার হাতে।' আল্লাহ বলবেন, "জাহান্নামের অধিবাসীদের নিয়ে আস।" তিনি বলবেন, "জাহান্নামের অধিবাসী কারা?" বলা হবে, "তারা হচ্ছে প্রতি হাজারে নয় শত নিরানব্বই জন।" রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, "এটাই সে সময় যখন প্রত্যেক বাচ্চা বুড়ো হয়ে যাবে, প্রত্যেক গর্ভবতী নারীর গর্ভপাত হয়ে যাবে, আর তুমি দেখতে পাবে মানুষদেরকে মাতালের ন্যায় যদিও প্রকৃতপক্ষে তারা মাতাল নয়, কিন্তু আল্লাহর আজাবের তীব্রতা এমন করে দেবে।" [মুসলিম, হাদীস নং ২২২]
আমি ভাবতাম এটা কী করে সম্ভব যে প্রতি হাজারে ৯৯৯ জনই জাহান্নামী, যেখানে পৃথিবীর জনসংখ্যার ১/৫ মুসলিম, মানে প্রতি হাজারে ২০০ জন? প্রথম কথা হচ্ছে এই ২০০ জনের একটা বিরাট অংশ আসলে ইসলাম গ্রহণ করে নি। যারা গ্রহণ করেছে তারা নানা ফিতনা-ফাসাদে জড়িয়ে আছে। ফলশ্রুতিতে মানবতার বিশাল এই অংশটা জাহান্নামী হতে যাচ্ছে। আমাদের এই উম্মতের [উম্মাহ ইসলামিয়াহর] প্রথম অংশটা ছিল নিরাপদ। এরপর এটা ফিতনা ফাসাদে আক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। তাই যারা আখিরাতের বরবাদী থেকে বাঁচতে চায় তাদেরকে সাবধান হতে হবে। রসূলুল্লাহর (ﷺ) নীচের হাদীসটা লক্ষ্য করুনঃ
তিনি (ﷺ) বলেছেনঃ "আমার আগে যত নবীই গত হয়েছেন তাদের সবার এই কর্তব্য ছিল যে তাঁরা তাঁদের উম্মতদের জন্য যা কল্যাণকর তা জানিয়ে যাবেন এবং তাদের জন্য যা তিনি অকল্যাণকর জানবেন সে ব্যাপারে তাদের সাবধান করবেন। জেনে রাখো, তোমাদের এই উম্মতের শান্তি ও নিরাপত্তা এর প্রথমাংশে নিহিত রয়েছে। আর এর শেষাংশে এটা ফিতনায় আক্রান্ত হবে এবং সে সমস্ত বিষয় দিয়েও যা তোমাদের মনঃপূত হবে না। উম্মতের এই অংশে একের পর এক বিরাট ফিতনা তোমাদের উপর আপতিত হতে থাকবে যাতে পরেরটার কাছে প্রথমটাকে মনে হবে তুচ্ছ। ফিতনায় পতিত হবার পরে ঈমানদার বলে উঠবে, 'এটা আমার ধ্বংস ডেকে আনবে'। সেই ফিতনা শেষ হবার পর আরো বড় একটা আসবে এবং ঈমানদার বলে উঠবে, 'এটা নিশ্চিতই আমাকে ধ্বংস করে ছাড়বে।' এবং এভাবে চলতেই থাকবে। এই অবস্থায় যে ব্যক্তি জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচতে চায় এবং জান্নাতে প্রবেশ করতে চায় [অর্থাৎ আখিরাতের বরবাদী থেকে বাঁচতে চায় ] সে যেন এমন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে যখন সে আল্লাহ ও আখিরাতের উপর ঈমান রাখে এবং মানুষের সাথে সে রকম আচরণ করে যে রকম আচরণ সে তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশা করে। আর যে কেউ কোন আমীরের আনুগত্যের শপথ করে সে যেন তাকে তার হাতের শপথ ও অন্তরের আন্তরিকতা দান করে। এবং যথাসাধ্য তার আনুগত্য করে।" [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ১৮৪৪]
তাই বলছিলাম আখিরাতের বরবাদী থেকে বাঁচবে খুব কম লোক। আসুন নিজেকে বাঁচাই। দুনিয়া উদ্ধারের আগে নিজেকে উদ্ধারের ধান্দায় ব্যস্ত হলে লাভ আমাদের সবার।
বিষয়: বিবিধ
১৮৮৭ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহতায়লা আমাদের উপর রহমত নাযিল করুন।
আল্লাহ আমাদের আখিরাতে বরবাদ হওয়া থেকে হিফাজত করুণ। দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ দান করুণ! চমৎকার রিমাইন্ডারের জন্য জাযাকাল্লাহ খাইর!
ওয়া ইয়্যাকি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন